শেরপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৪ মার্চ ২০২৫ ০৫:৩৫ পিএম
শেরপুরে হত্যা মামলায় ৮ আসামীর নাম চার্জশীট থেকে বাদ দেওয়ার অভিযোগ
শেরপুরে জমি বিরোধের জেরে আলোচিত দুই হত্যা মামলায় এক-দুইসহ ৮ জন আসামীকে চার্জশিট থেকে বাদ দেওয়ার অভিযোগ মামলার অদন্তকারী কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) মো. জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে। এরই প্রতিবাদে (২৪ মার্চ) সোমবার সকাল ১১টায় সদর উপজেলার জঙ্গলদী মধ্যপাড়া নতুন মসজিদ প্রাঙ্গণে নিহত মোগল খাঁ ও লালু খাঁ এর পরিবারের সদস্যরা এক সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নিহত কামাল উদ্দিন ওরফে লালু খাঁ এর মেয়ে লাভলী আক্তার।
এসময় তিনি বলেন, জঙ্গলদী মধ্যপাড়া গ্রামের মৃত রইছ উদ্দিনের ছেলে মামলার ১নং আসামী মো. দুলাল মিয়া গংদের সাথে মো. কামাল উদ্দিন ওরফে লালু খাঁ ও মোগল খাঁ পরিবারের ৫ একর ৮৮ শতাংশ কৃষি জমি নিয়ে বিরোধ এবং আদালতে মোকদ্দমা চলে আসছিল। তারই জের ধরে গত ২০২৪ সালের ১২ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে একই এলাকার প্রতিবেশী মৃত রইছ উদ্দিনের ছেলে মো. দুলাল মিয়া ও মৃত আমজাদ হোসেনের ছেলে মো. কামরুজ্জামানের নেতৃত্বে চিহ্নিত ৪২ জন ও অজ্ঞাতনামা আরো ১০-১৫ জন ধারালো অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে সন্ত্রাসী কায়দায় হামলা চালায়। এসময় মামলার ১নং আসামী মো. দুলাল মিয়া অন্যান্য আসামীদের সহযোগিতায় কামাল উদ্দিন ওরফে লালু খাঁকে বুকে এক কাইল্লা দিয়ে আঘাত করলে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। তাৎক্ষণিক তার ভাই মোগল খাঁ তাকে উদ্ধার করতে গেলে মামলার ৮নং আসামী সুনিল মিয়ার ছেলে মো. সীমান্ত বাবু শাবল দিয়ে মোগল খাঁ এর নাভীর নিচে আঘাত করে ওই সহোদর দুই ভাইকে হত্যা করে।
এঘটনায় নিহত কামাল উদ্দিন ওরফে লালু খাঁ এর স্ত্রী সরুফা বেগম বাদী হয়ে ৪২ জনকে চিহ্নিত ও ১০-১৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে শেরপুর সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এদিকে মামলার আসামীরা উচ্চ আদালতে থেকে জামিনে বেরিয়ে এসে মামলার বাদীসহ নিহত এর পরিবারের সদস্যদের হুমকি ধামকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন।
এছাড়াও ওই আলোচিত হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি তদন্ত) মো. জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, তিনি আসামীদের পক্ষ হয়ে এবং মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে ১নং আসামী মৃত রইছ উদ্দিনের ছেলে মো. দুলাল মিয়া (৪২), মৃত আমজাদ হোসেনের ছেলে মো. কামরুজ্জামান (৩৮), মৃত ডেঙ্গু সুতারের ছেলে মো. আঃ গনি (৫০), অপর ভাই মো. রবিন (২০), মৃত গোলাপ হোসেনের ছেলে মো. হেলাল মিয়া (৪০), ছালেম উদ্দিনের ছেলে আব্দুস সামাদ (৫০), আশরাফ আলীর ছেলে নয়ন মিয়া (২০) ও হযরত আলীর ছেলে আশরাফ আলী (৩৯) সহ ৮ জন চিহ্নিত আসামীদের চার্জশীট থেকে বাদ (অব্যাহতি) দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন।
ভুক্তভোগীরা বলেন, ন্যায় বিচারের স্বার্থে এমন আলোচিত হত্যা মামলার পুনরায় সুক্ষ্য তদন্ত করে ওইসব বাদ দেওয়া আসামীদের চার্জশীটে নাম অর্ন্তভুক্ত করার দাবি জানান। এব্যাপারে পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কঠোর হস্তক্ষেপ এবং হত্যার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তাদের।
সংবাদ সম্মেলনে নিহত দুই সহোদর পরিবারের সদস্যদের মধ্যে সরুফা বেগম, শফিকুল ইসলাম, শফিক, নূর মোহাম্মদ, আব্দুল গণি, আব্দুল বারেক, আশরাফ আলী, এরশাদ আলী, ইয়ানুছ আলীসহ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকসহ এলাকার নারী-পুরুষ উপস্থিত ছিলেন।
ভোরের আকাশ/এসএইচ