× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার
চোখজুড়ানো শান্ত স্নিন্ধতা

চোখজুড়ানো শান্ত স্নিন্ধতা


দূর থেকে তাকালেই মনে হয়- পথজুড়ে ছড়িয়ে আছে রঙিন ফুলের ঢেউ। কোথাও সোনালি ঝলক, কোথাও আবার বেগুনির কোমল ছায়া। বাতাস এলেই দুলছে, ঝরছে। গাছে গাছে সবুজের চোখজুড়ানো শান্ত স্নিগ্ধতা ছড়িয়ে আছে। গ্রীষ্মের খরতাপেও এখানে হেঁটে গেলে গরমটা যেন আর গায়ে লাগে না।সোমবার মৌলভীবাজারের একটি প্রান্ত, কমলগঞ্জের আদমপুর বাজার থেকে শুরু হয়ে কোনাগাঁও গ্রামের দিকে কজন এগিয়ে চলছি। সঙ্গে গ্রামে গ্রামে চারণের মতো ঘুরে বেড়ানো সংগঠক ও লোকগবেষক আহমদ সিরাজ, কমলগঞ্জ উপজেলা মধুচাষি উদ্যোক্তা উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি আলতাফ মাহমুদ ও মধুচাষি মঙ্গল মিয়া। দীর্ঘ এই সড়ক এখন ফুলের ‘অরণ্য’। সোনালু, জারুল, কৃষ্ণচূড়া, পলাশ, কাঞ্চনের মিলনমেলা। সড়কের দুই পাশে শুধু বাড়িই নয়, খোলা মাঠও আছে। এসব মাঠে এখন পাকা, আধা পাকা বোরো ফসল আহ্লাদে ঢুলুঢুলু করছে। এখন মাঝেমধ্যে বৃষ্টি হয়, তাই পাতারা আরও সবুজ হয়ে উঠছে। এখানে প্রতিদিন পথিকের মন ভরিয়ে দিচ্ছে।সেদিন ‘পাহাড়ে মুক্তোর বাড়ি’ও রকম পাহাড়ঘেঁষা একটি বাড়ি থেকে ফেরার পথে কোনাগাঁওয়ে একটি বাড়ির কাছে এসে থমকে দাঁড়াতে হয়। ওখানে বাড়ির প্রবেশপথে, ফটকের কাছে একটি লাল সোনাইলগাছ ফুলে ফুলে রঙের হাট খুলে বসেছে। সবুজ গ্রামের ভেতর অমন মন উচাটন করা ফুল সচরাচর চোখে পড়ে না। ওখানে গ্রামের ভেতর জারুল, কৃষ্ণচূড়া কিংবা অন্য কোনো বুনোফুল যতটা দেখা যায়, লাল সোনাইলের অতটা দেখা মেলে না। গ্রামের ভেতরে অনেকের কাছে ফুলটি এখনো অচেনা। ওখানে বাড়িটিকে আলাদা করেছে ওই লাল সোনাইল।বাড়ির মালিক জেনেশুনেই হয়তো গাছটিকে পথের পাশে, ফটকের কাছে লাগিয়েছিলেন। এখন ফুলে ফুলে ভরে উঠেছে গাছ। কিছুটা লম্বাটে, সবুজ পাতা ছাপিয়ে গোলাপি রঙের এই ফুল বাতাসকে সঙ্গে করে হেলেদুলে এখন সময় কাটায়। শহরে মাঝেমধ্যে কারও বাসাবাড়ির আঙিনায়, কারও বাড়ির পথের পাশে একা চুপ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় দু-একটা লাল সোনাইল। বাতাস এলে পাপড়ি খসে পড়ে, পথকে রঙিন করে। ফুলগুলো এমনই, এই ফুলে চোখ রাখতে হয় পথচারীকে।কমলগঞ্জ-কুরমা সড়ক ধরে যাওয়ার পথে মধ্যভাগে আরও কিছু গাছের সঙ্গে দাঁড়িয়ে আছে একটি সোনালি-হলুদ রঙের সোনালুগাছ। গাছটির শাখাপ্রশাখাজুড়ে সোনার মতো রঙের ফুল অসংখ্য ঝুমকা হয়ে ঝুলে আছে। গাছের পাতারা ম্লান হয়ে আছে ফুলের কাছে। বিকেলের রোদে ফুলগুলো আরও উজ্জ্বল, আরও ঝকঝকে, আরও রঙিন।এই সড়কের ইসলামপুর এলাকায় এক স্থানে লাল হয়ে আছে একটি কৃষ্ণচূড়ার গাছ। গাছটিতে যেন আগুন লেগেছে শূন্যের ওপর। ওড়নার মতো উড়ছে সেই থোকা থোকা আগুন, আগুনের লকলকে শিখা। বৈশাখের শেষ বেলার রোদে আরও জ্বলজ্বলে হয়ে আছে কৃষ্ণচূড়ার ফুল। অনেক দূর থেকেই অন্য সব গাছ ছাপিয়ে সেই তাকেই আগে চোখে পড়ে। গাছটি শুধু ওখানেই নয়, আরও অনেক জায়গাতেই এখন ‘পুষ্পপাগল কৃষ্ণচূড়ার শাখা’ দুলছে। সবুজের বুকে অমন অসহ্য সুন্দর লালে চোখজোড়া আটকে যায়। কমলগঞ্জের কোনাগাঁও, মধ্যভাগসহ আরও কিছু স্থানে ও রকমই কয়েকটি কৃষ্ণচূড়াগাছ আছে।কমলগঞ্জ-কুরমা সড়ক ধরে আসা-যাওয়ার পথে শুধু কৃষ্ণচূড়াই নয়, হঠাৎ বেগুনি রঙের সঙ্গে দেখা হয়েছে। কোনো বাড়ির দিকে ঝোপের ভেতর, বাঁশবনের কাছে, খেতের পাশে একটা–দুটো জারুলগাছ। জলার্দ্র নরম বেগুনি ফুলে কী যে মায়া! বাতাস এলে একবার ওদিকে ফুলগুলো কাত হয়, একবার ওদিকে ঢলে পড়ে। সড়কের ইসলামপুর এলাকায় এ রকমই একটি গাছ আছে। গাছটিতে ঝেঁপে ফুল এসেছে।গাছটির শাখাগুলোজুড়ে ‘ফুলে ফুলে ঢলে ঢলে’ অবস্থা। পথের অনেকটা দূর থেকেই গাছটি চোখে পড়ে। হয়তো গ্রাম এখন এ রকমই, কোথাও না কোথাও ফুটে আছে কৃষ্ণচূড়া, কোথাও জারুল। এক-দুটো সোনালু, হয়তো লাল সোনাইল নীরবে ফুটেছে কোথাও। এখানে সবাই কত কিছু ভুলে যায়, তবু গাছগুলো সময় হলে ফুলে-ফলে জেগে ওঠে, রাঙা হয়ে ওঠে। এখনো গাছে গাছে বাংলার ঋতুকে কিছুটা কেন, অনেকটাই বোঝা যায়। ভোরের আকাশ/এসআই

২ দিন আগে

যাদের কোন দিবস নেই

যাদের কোন দিবস নেই


রাত পোহালেই মহান মে দিবস। বিশ্বের শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের দিন। ১৮৮৬ সালের এই দিনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের হে মার্কেটের শ্রমিকরা আট ঘণ্টা কাজের দাবিতে জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। ওই দিন তাদের আত্মদানের মধ্য দিয়ে শ্রমিক শ্রেণির অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। দিবসটি উপলক্ষ্যে দেওয়ালজুড়ে কিছু পোস্টার সাঁটানো হয়, শহরে মিছিল হয়, বক্তৃতা হয়। কিন্তু আশপাশের ক্লান্ত শ্রমিকদের জীবন তেমন বদলায় না। তারা হয়তো জানেনই না, আজকের দিনটিকে ‘শ্রমিকের অধিকার দিবস’ বলা হয়। কারণ অধিকার নিয়ে তারা ভাবেন না। তারা শুধু ভাবেন কালকের দিনটি যেন আরও একটি মজুরির দিন হয়। তাদের জীবনের গল্প নিয়েই এ আয়োজন।গাবতলীর তুরাগ নদীর তীরঘেঁষা একটি দোকানে দেখা গেল বাঁশের চিকন ফালি হাতে দ্রুতগতিতে জোড়া লাগাচ্ছেন এক যুবক। পাশে বসে মাঝবয়সী লোক গ্যালভানাইজড তার দিয়ে সেগুলো বাঁধছেন। ছোট্ট দোকানে তৈরি করা বাঁশের ঝুড়িগুলো তাদের আয়ের উৎস। ঝুড়ি তৈরির কাজ সহজ নয়। শুরুটা হয় ভালো মানের বাঁশ বেছে নেওয়ার মাধ্যমে। সেই বাঁশ চিড়ে বানাতে হয় পাতলা ফালি। যা নির্দিষ্ট সময় পানিতে ভিজিয়ে নরম করতে হয়। এরপর শুরু হয় ঝুড়ি বোনার কাজ। নকশা অনুযায়ী চলে বুনন। শাক-সবজির ঝুড়ি, মাছধরার ঝাঁকি, চাল রাখার দোন থেকে শুরু করে রঙিন শো-পিস-সবই বানান তারা। কিছু ঝুড়িতে বাড়ানো হয় সৌন্দর্য। যাতে বাজারে ভালো দাম পাওয়া যায়। এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত পরিবারগুলো বছরের পর বছর কাজ করে আসছেন। বাবা-মায়ের হাতে শেখা কৌশল আজ জীবিকার অস্ত্র হয়ে উঠেছে। ঝুড়ি বিক্রি করে যা আয় হয়, তা দিয়েই চলে সংসার।কারিগর সোহেল মিয়া বলেন, ‘আমাদের বানানো ঝুড়ি ছাড়া অনেক কাজই থেমে যাবে। এটি ব্যস্ত এলাকা, ঝুড়ির চাহিদা বেশি। কোরবানিতে চাপ বাড়ে। তেমন কোনো ছুটি নাই, না এলে হাজিরা নাই।’শহরের কারখানার শ্রমিকদের পাশাপাশি হস্তশিল্পের নীরব শিল্পীদের স্মরণ করা উচিত। যারা দিনের পর দিন হাতেগড়া শিল্পকর্ম দিয়ে জীবনের হাল ধরছেন। কেউ ট্রলার থেকে বালু নামান, কেউ পাথর ভাঙেন। ঝুড়ি ভরে নামান মালামাল। কেউ আবার জাহাজ-লঞ্চে মাল তোলেন বা নামান। তৈরি ঝুড়িগুলোর বড় অংশ সেখানেই বিক্রি হয়ে যায়। এই পণ্যের বড় বাজার গড়ে উঠেছে মূলত এসব শ্রমজীবী মানুষের প্রয়োজনেই। তাদের নেই কোনো ছুটি বা উৎসব। তবুও প্রতিদিন রুটিন মাফিক কাজ করে যাচ্ছেন টিকে থাকার লড়াইয়ে।ভ্যানে পেছনে গোবরের স্তূপ। সামনে চেনা পথের ধুলো। ঘমে একাকার শরীর। মুখজুড়ে বয়সের রেখা, সাদা চুলে ঝরে পড়া সময়ের ছাপ। তবুও থেমে নেই চাকা, থেমে নেই জীবনসংগ্রাম। নরসিংদীর মনোহরদীর গ্রামীণ পথে দেখা মিললো এই পরিশ্রমী বৃদ্ধের। তার কাছে মে দিবস মানে একটি দিন। প্রয়োজন আর দায়িত্বের কাছে উৎসব নিছক বিলাসিতা। তিনি যাচ্ছেন জমিতে সার প্রয়োগ করতে। যেখানে চলছে ফসলের প্রস্তুতি। এই পরিশ্রমী মানুষেরাই কৃষিকে ধরে রেখেছেন। প্রয়োজন মেটাতেই নিজ ভ্যানে করে তিনি সংগ্রহ করেছেন গোবর। ছুটছেন ফসলি জমির দিকে। আয় বেশি হোক কিংবা কম, জীবনের গতি থেমে নেই। থামেনি শ্রমের চাকা। একাই ছুটছেন।চারপাশে পাথর আর কাদা মাটি। আর মাথার ওপর নির্মম রোদ। একজন মা, পাথর ভাঙছেন অবিরাম। পাশে দাঁড়িয়ে ছোট্ট ছেলে। ছেলেটির কোলে জড়িয়ে আছে আরেকটি শিশু। কোলের শিশুটি ঘুমিয়ে গেছে। কখনো নড়ে ওঠে। ছেলেটি ভাইকে আঁকড়ে রেখেছে। তুরাগ নদীর পাড়ে গাবতলীর এই নির্দয় দুপুরে এমন দৃশ্য দেখে চোখ ভিজে আসে। মনে হয়, পৃথিবীর সমস্ত বক্তৃতা, মিছিল, ব্যানার হার মানে মায়ের ঘামেভেজা মুখের সামনে। এই মা জানেন না, মে দিবস কী? তার কাছে মে দিবস মানে পাথর ভাঙা, ঘাম ঝরানো, শিশুর মুখে ভাত তুলে দেওয়ার যুদ্ধ। পাথর ভাঙার শব্দে লুকিয়ে আছে ভালোবাসার, ত্যাগের, টিকে থাকার গান।বুড়িগঙ্গার বুকে নৌকায় ভেসেই কেটে গেছে জীবনের অনেকগুলো বছর। এখন সে বৃদ্ধ, গায়ের জোর কিছুটা কমেছে। তবুও প্রতিদিন সকালে নেমে পড়েন নদীর জলে। কারণ নৌকাই তার আয়ের উৎস। বুড়িগঙ্গার পাড়ে নৌকার পাটাতন মেরামত করছিলেন তিনি। ‘নৌকা ভাঙলে আমি ভাঙি, এটারে ঠিক না কইরা পারুম কেমনে?’ নদীর জলেই তার পথচলা। কেউ নৌকা চালিয়ে মানুষ পার করেন, কেউ মাছ ধরেন, কেউ চুম্বক দিয়ে তোলেন পানির নিচে লুকিয়ে থাকা লোহার জিনিসপত্র। তিনিও তা-ই করতেন একসময়। এখন আর পারেন না। তবুও মাঝনদী অবধি গিয়ে বসে থাকেন। নৌকার পাল তুলে তাকিয়ে থাকেন আকাশের দিকে। শ্রমিক দিবস না জানা মাঝি। ‘এইডাই আমার জীবন।’বুড়িগঙ্গার পাড়ে চোখে ঘুম আর হাতে হাতুড়ি নিয়ে হাজির জহির। লঞ্চের মরিচা ধরা লোহার গায়ে জোরে জোরে আঘাত করে যাচ্ছে। সহকর্মী রফিক পেছন থেকে টেনে নিচ্ছেন মোটা শিট, যেটা কেটে পুরোনো জায়গায় বসানো হবে। কেউ গরম আগুনে ঝালাই করছেন, আবার কেউ রঙের বালতিতে তুলি ডুবিয়ে ধাতব গায়ে রঙের প্রলেপ দিচ্ছেন। সবকিছু ছাপিয়ে যা চোখে পড়ে, তা হলো মানুষের ঘাম, ক্লান্তি এবং ঠোঁটে আটকে থাকা নিঃশব্দ সহ্য। শুধু বুড়িগঙ্গা নদী নয়, যে খানেই ছোট-বড় লঞ্চ, কার্গো, বার্জ এর মত নৌযানগুলো যখন চালার অযোগ্য হয়ে পড়ে; তখন তার শুশ্রূষায় নেমে পড়েন এই শ্রমিকরা। কেউ মরিচা পড়া অংশ কেটে বাদ দেন, কেউ নতুন লোহার পাত লাগান, কেউ আবার অগ্নিশিখার মতো আগুনে ঝালাই করেন। প্রতিটি ধাপে থাকে ঝুঁকি, ধুলাবালি, বিষাক্ত গ্যাস এবং দীর্ঘ শ্রমঘণ্টা। তবুও থেমে থাকেন না তারা। যেন জীবন থামলেও, কাজ থামে না।প্রচণ্ড গরমে গেঞ্জির হাতা ছিঁড়ে চোখ বাঁচান ধোঁয়ার ঝাপটা থেকে। মুখে মাস্ক নেই, নিরাপত্তা সরঞ্জামের উপস্থিতিও কম। পায়ে ছেঁড়া স্যান্ডেল কিংবা খালি পায়ে আগুনের পাশে দাঁড়িয়ে কাজ করছেন। ‘ভাই, এই কাজ ছাড়া আর কিছু পারি না। বাসায় বাচ্চারা তাকায়া আছে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে এই কাজ করতে হয়’। বললেন মাঝবয়সী শ্রমিক জাহাঙ্গীর। তাদের কাজগুলো দৈনিক মজুরি ৫০০-৭০০ টাকার মধ্যে। অনেকেই সপ্তাহে সাতদিনই কাজ করেন। কারণ কাজ না করলে পেট চলে না। অথচ স্বাস্থ্যসেবা, নিরাপত্তা বা ছুটির কোনো নিশ্চয়তা নেই। রোগ, দুর্ঘটনা কিংবা বৃদ্ধ বয়স সবই তাদের জন্য নিজের ভাগ্যের হাতে ছেড়ে দেওয়া। মে দিবস কি তাও জানেন না তিনি।এই মে দিবসে তাদের জন্য কোনো পুষ্পস্তবক নয়, শুধু দরকার একটি সম্মানজনক জীবনের স্বীকৃতি। দরকার নিরাপদ কর্মপরিবেশ, ন্যায্য মজুরি আর ভবিষ্যতের এক টুকরো নিশ্চয়তা।  ভোরের আকাশ/এসআই

২ সপ্তাহ আগে

বাংলায় হাতপাখার বিবর্তন

বাংলায় হাতপাখার বিবর্তন


হাতপাখা তৈরি ও ব্যবহারের ইতিহাস বহু প্রাচীন। গ্রীষ্মকালে প্রশান্তির জন্য ব্যবহৃত হাতে চালিত পাখা। শুরু হয়েছিল প্রায় পাঁচ হাজার বছর আগে। প্রাচীন মিশরে ফেরাউনদের রাজসভায় দাঁড়িয়ে থাকা দাসেরা সোনার কাঠামোতে বাঁধা ময়ূর পালকের পাখা দুলিয়ে রাজাকে শীতল রাখত। চীনের হান রাজবংশ কিংবা জাপানের হেইয়ান যুগেও হাতপাখা ছিল সম্মানের প্রতীক। ভারতের মন্দির-আশ্রমেও দেবতাদের উদ্দেশ্যে হাতপাখা দিয়ে বাতাস করার প্রচলন ছিল। সময়ের স্রোতে বদলেছে সভ্যতা, পাল্টেছে প্রযুক্তি, কিন্তু হাতপাখা তার সরল রূপ ধরে রেখেছে আপন মহিমায়। বদলেছে কেবল তার ভূমিকা, নির্মাণশৈলী ও মানুষের সঙ্গে সম্পর্কের ধরণ। একবার পেছন ফিরে তাকালে দেখা যায় হাতপাখার এক দীর্ঘ ও বৈচিত্র্যময় অভিযাত্রা।হাতপাখার ব্যবহার: ধারনা করা হয়, হাতপাখার ব্যবহার শুরু হয়েছিল প্রায় পাঁচ হাজার বছর আগে। তৎকালীন রাজাদের সিংহাসনের দুই পাশে ডানে-বাঁয়ে দাঁড়িয়ে বাতাস করার প্রচলন ছিল। অনেকেই শৌখিন বেশে কাছারিঘরে ছাদ বরাবর কড়িকাঠে ঝুলিয়ে রাখতেন। প্রচীন কালে চিন ও জাপান থেকে ইউরোপীয় বণিকরা প্রথম হাতপাখা নিয়ে আসেন। সেই হাতপাখাগুলিতে মণিমুক্তো, সোনারুপো, হাতির দাঁত, বিভিন্ন সামাজিক প্রেক্ষাপট, রাজনৈতিক ঘটনা, ধর্মীয় কাহিনি, ফুল, ফল, পাখি, নানা নিয়মাবলী আঁকা থাকত। কারণ এইসব চিত্র দেখেই সাধারণ মানুষ বর্তমান সমাজ সম্বন্ধে কিছুটা ধারনা পেতেন। প্রথমদিকে পাখাগুলি একটি ভাঁজের হলেও পরবর্তীতে পাখা ভাঁজে ভাঁজে তৈরি হতে শুরু হয়। আঠারো শতকের প্রথম দিকে ইউরোপের হাত ধরে হাতপাখা তৈরির শুভসূচনা হলেও, চিনের পাখার বাজার কিন্তু রমরমিয়ে চলতে শুরু করে। পুরনো দিনের সেই পাখাগুলির বেশ কিছু নমুনা এখনও সংগ্রহশালায় রয়েছে। জানা যায়, হেলেন অফ ট্রয়, আইভরি পার্ল ফন্টেজ, ট্রাইফোল্ড-এর মতো প্রায় ৩৫০০ বেশি দুষ্প্রাপ্য পাখা লন্ডনের গ্রিনউইচ জাদুঘরের সংগ্রহশালায় দেখতে পাওয়া যায়।বাংলার হাতপাখার ব্যবহার: শুধু বিশ্বের দরবারে নয়, হাতপাখার প্রচলন কিন্তু গ্রাম বাংলায় সর্বত্র দেখতে পাওয়া যায়। অতীতকাল থেকে বর্তমানকালেও এই হাতপাখার ব্যবহার রয়ে গিয়েছে। গ্রাম বাংলার বেশ কিছু ঘরের আজও নিয়মিত হাতপাখার ব্যবহার লক্ষ করা যায়। অতীতে রাজা-মহারাজাদের রাজপ্রাসাদে কিংবা আদালতে বিচারকের কক্ষে এই হাতপাখা ব্যবহার করা হত। ক্লান্ত পথিক, পরিশ্রান্ত শ্রমিক বাড়ি ফিরে হাতপাখার হাওয়া খেয়ে তার ঘর্মাক্ত শরীরকে একটু বিশ্রাম দিত। কিন্তু বর্তমানে পাখার ব্যবহার এতটা না হলেও, বেশ কিছু বিশেষ কাজে যেমন- ষষ্ঠী, ঠাকুর বরণ ইত্যাদি কাজগুলোতে পাখার সম্পূর্ণ ব্যবহার রয়েছে।বাংলার আবহাওয়ার দাবদাহের সঙ্গে তাল মেলাতে তালপাতা, খেজুরপাতা, কিংবা বাঁশের সাহায্যে স্থানীয়ভাবে হাতপাখা তৈরি শুরু হয়। এই হাতপাখা হয়ে ওঠে প্রতিটি ঘরের নিত্যসঙ্গী। দুপুরের কড়াচড়া রোদ কিংবা বিদ্যুৎহীন রাত হাতপাখার নরম বাতাসে ঘুমিয়ে পড়ত মানুষ। শুধু ব্যবহারিক চাহিদা মেটানো নয়, হাতে বোনা এই পাখাগুলো কখনো কখনো হয়ে উঠত স্নেহের বাহকও।সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে হাতপাখায় যুক্ত হতে থাকে শিল্পের ছোঁয়া। সাধারণ তালপাতার পাখা ছাড়াও দেখা যায় বাঁশের চিকন বুননে তৈরি পাখা, যার গায়ে আঁকা রঙিন ফুল, পাখি, নকশা। গ্রামীণ মেলায়, বৈশাখী উৎসবে কিংবা বিয়ের উপহার সামগ্রী হিসেবে বাহারি হাতপাখার সমারোহ চোখে পড়ে। একরকম হাতপাখা হয়ে দাঁড়ায় ব্যক্তিগত রুচি ও সৌন্দর্যবোধের প্রকাশ।বিশ শতকের মধ্যভাগ থেকে যখন ঘরে ঘরে বৈদ্যুতিক পাখা পৌঁছাতে শুরু করল, হাতপাখার প্রয়োজনীয়তা কমতে থাকে। এসির ঠান্ডা বাতাসের আরামে মানুষ হাতপাখাকে ভুলতে শুরু করে। শহরাঞ্চলে তো বটেই, গ্রামেও আজ বিদ্যুৎ থাকায় আগের মতো প্রতিটি বাড়িতে হাতপাখার ঝুলন্ত সারি দেখা যায় না। তবুও বিদ্যুৎ চলে গেলে কিংবা খুব গরমের দিনে অথবা বিশেষ কোনো ধর্মীয় অনুষ্ঠানে এখনো হাতপাখার টুকটুকে বাতাসের কদর অক্ষুণ্ন। গ্রামবাংলার চাষের মাঠে বিশ্রামরত কৃষকের হাতে এখনো চোখে পড়ে পুরোনো হাতপাখার দোলা।যদিও ব্যবহারিক গুরুত্ব কমেছে, হাতপাখা আজও হারিয়ে যায়নি। বরং হস্তশিল্পের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে নতুন পরিচয় পেয়েছে। বিভিন্ন মেলায়, হস্তশিল্প প্রদর্শনীতে বা ঘরের দেয়াল সাজানোর উপকরণ হিসেবে হাতপাখা নতুন জীবন পেয়েছে। নস্টালজিয়ার টানেই হোক বা ঐতিহ্য সংরক্ষণের চেষ্টা, হাতপাখা আজও টিকে আছে বাংলার মাটির সুবাস নিয়ে।হাতপাখা ইতিহাসের জীবন্ত সঙ্গী, সংস্কৃতির বুনন ও ভালোবাসার স্মারক। আধুনিক জীবনের চাকচিক্যের মাঝেও হাতপাখার দোল মনে করিয়ে দেয়, আমরা একদিন তালপাতার বাতাসে স্বপ্ন দেখতাম, মাটির ঘ্রাণে জীবন খুঁজে পেতাম।ভোরের আকাশ/এসআই

২ সপ্তাহ আগে

পাহাড়ে সাতরঙা উৎসব

পাহাড়ে সাতরঙা উৎসব


নতুন বছরকে বরণ ও পুরোনো বছরকে বিদায় জানাতে প্রতিবছর ‘বৈসাবি’ উৎসব পালন করে থাকেন পাহাড়ে বসবাসরত ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠেী। শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে পাহাড়িদের প্রধান এ সামাজিক উৎসব। পার্বত্য চট্টগ্রামের আনাচে-কানাচে এরই মধ্যে বৈসাবি উৎসবের রং লেগেছে। বর্ণিল সাজে সেজেছে পাহাড়। ঘরে ঘরে আনন্দের ধ্বনি। বসেছে আনন্দ-উল্লাস আর নাচ-গানের আসর।পুরনো বছরের বিদায় ও নতুন বছরের আগমনের উৎসব বৈসাবিকে ঘিরে নতুন সাজে সেজেছে পাহাড়ি জনপদ বান্দরবান। তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী ঘিলা খেলার মধ্য দিয়ে জেলায় জেলায় আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে এ উৎসব। পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও রাজধানীতে বসবাসরত পাহাড়ি তরুণ-তরুণী, বৃদ্ধ, জায়া-জননীরা মিলেমিশে প্রাণের এ উৎসবে অংশ নিতে যাচ্ছে।  শনিবার রাজধানীতে বৈসাবি শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে। বেইলি রোডের পার্বত্য কমপ্লেক্স হতে রমনা পার্কের লেকে ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে পাহাড়ি-বাঙালিরা মেতে উঠবে ‘বৈসাবি’ উৎসবে। চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা ও তঞ্চঙ্গ্যা তরুণ-তরুণীদের রং-বেরঙের সাজ আনন্দ বাড়িয়ে দেবে কয়েকগুণ। জনশ্রুতি রয়েছে, বৈসাবির শিকড় মূলত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৌদ্ধ সংস্কৃতির সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত। থাইল্যান্ড, মিয়ানমার, লাওস ও কম্বোডিয়া একই সময়ে নববর্ষ উদযাপিত হয়-যা ‘সংক্রান’ নামে পরিচিত।ধারণা করা হয়, শত শত বছর আগে আরাকান ও বার্মা (বর্তমান মিয়ানমার) থেকে মারমা জনগোষ্ঠী পার্বত্য চট্টগ্রামে আসার সময় তাদের সাংগ্রাই উৎসব সঙ্গে নিয়ে আসে। একইভাবে চাকমা ও ত্রিপুরাদের নিজস্ব সংস্কৃতি ও উৎসবও ধীরে ধীরে একসঙ্গে মিলিত হয়ে ‘বৈসাবি’ নামকরণ হয়েছে।চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরা বৃহত্তর মঙ্গোলয়েড জনগোষ্ঠীর অন্তর্গত। বৈশাখ মাসে তিব্বত থেকে শুরু করে বাংলাদেশ পর্যন্ত নতুন বছর শুরু হয়। পার্বত্য এলাকার জনগোষ্ঠীর সবাই নিজেদের নববর্ষ পালন করে থাকে এ সময়টিতে। বৈসাবি নামটি তিনটি জনগোষ্ঠীর উৎসবের আদ্যক্ষর নিয়ে তৈরি হয়েছে। চাকমাদের ‘বিঝু’, মারমাদের ‘সাংগ্রাই’ ও ত্রিপুরাদের ‘বৈসু’-এই তিন উৎসব সমন্বয়ে ‘বৈসাবি’। তবে শুধু বৈসাবি পাহাড়ের সব সম্প্রদায়ের নববর্ষ ও চৈত্র সংক্রান্তির অনুষ্ঠানের বহুমাত্রিকতাকে প্রকাশ করে না।বর্ষবরণ ও বর্ষবিদায় উৎসবকে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর লোকজন ভিন্ন ভিন্ন নামে পালন করে। চাকমারা বিঝু, মারমারা সাংগ্রাই, ত্রিপুরারা বৈসু, তঞ্চঙ্গ্যারা বিসু হিসেবে পালন করে ‘বৈসাবি’ উৎসবকে। বছরের শেষ দুই দিন ও নতুন বছরের প্রথম দিন এই উৎসব পালন করা হয়। বিঝু চাকমা সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান আনন্দ-উৎসব। বাংলা বছরের শেষ দুই দিন ও নববর্ষের দিন এই উৎসব পালন করা হয়। ১২ এপ্রিল পালন করা হয় ফুলবিঝু।এদিন ভোরের আলো ফোটার আগেই ছেলেমেয়েরা বেরিয়ে পড়ে ফুল সংগ্রহের জন্য। সংগৃহীত ফুলের একভাগ দিয়ে বুদ্ধকে পূজা করা হয়, আর অন্যভাগ জলে ভাসিয়ে দেওয়া হয়। বাকি ফুলগুলো দিয়ে ঘরবাড়ি সাজানো হয়। চৈত্র মাসের শেষ দিন অর্থাৎ ১৩ এপ্রিল পালন করা হয় মূল বিঝু। এদিন সকালে বুদ্ধমূর্তি স্নান করিয়ে পূজা করা হয়। ছেলে-মেয়েরা তাদের বৃদ্ধ ঠাকুরদা-ঠাকুরমা এবং দাদু-দিদাকে স্নান করায় এবং আশীর্বাদ নেয়। এদিন ঘরে ঘরে পোলাও, পায়েস, পাচনসহ (বিভিন্ন রকমের সবজির মিশ্রণে তৈরি এক ধরনের তরকারি) অনেক সুস্বাদু খাবার রান্না করা হয়।১৪ এপ্রিল বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন পালন করা হয় গোজ্যেপোজ্যে দিন (অবসর বা বিশ্রাম নেয়ার সময়)। রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান পাহাড়ে বসবাসকারী জনপদগুলো এ দিনে মেতে ওঠে ভিন্ন এক আনন্দে। বড় কোনো গাছ থাকলে তার নিচে প্রদীপ জ্বালিয়ে তাকে সম্মান জানানো হয় এ দিনে। বিঝু উৎসব চলাকালে কোনো জীবিত প্রাণী হত্যা করা নিষেধ রয়েছে চাকমা সম্প্রদায়ের মধ্যে।চৈত্র মাসের শেষ দুইদিন এবং বৈশাখ মাসের প্রথম দিন এই তিন দিনব্যাপী পালিত হয় ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান উৎসব বৈসু। প্রথম দিনকে বলা হয় হারি বৈসু, দ্বিতীয় দিনকে বৈসুমা এবং তৃতীয় বা শেষ দিনটিকে বলা হয় বিসি কতাল। মূলত আগামী দিনের সুখ ও সমৃদ্ধির জন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করা হয়ে থাকে এ দিনে। হারি বৈসুতে ভোরবেলায় গাছ থেকে ফুল তোলার হিড়িক পড়ে যায়। সেই ফুল দিয়ে বাড়িঘর সাজানো ও পবিত্র স্থানগুলোতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। বৈসাবি উৎসবের জনপ্রিয় খাবার ‘গণত্মক বা পাচন’ রান্না হবে প্রায় সব ত্রিপুরাদের ঘরে। ২৫ থেকে ৩০ ধরনের সবজির মিশ্রণে রান্না করা হয় এ বিশেষ সবজি।এছাড়া পিঠা, সেমাই, মুড়ি-মুড়কি, চানাচুর, বিভিন্ন ধরনের ফল ও ঠাণ্ডা পানীয় তো থাকছেই। ত্রিপুরা ও মারমাদের পানি উৎসব প্রায় কমবেশি অনেকের কাছে জনপ্রিয়। এটি বৈসাবি উৎসবেরই একটি অংশ। এই উৎসবে সবাই পরস্পরের দিকে পানি ছুঁড়ে আনন্দ উল্লাসে মেতে ওঠেন, যেন গত বছরের সব দুঃখ, গ্লানি ও পাপ ধুয়ে যায়। এর আগে হয় জলপূজা। এর মাধ্যমে পরস্পরের বন্ধন আরো দৃঢ় হয়। মারমা সম্প্রদায়ের মধ্যে তাদের প্রিয় মানুষটির দিকে পানি ছিটানোর মাধ্যমে সবার সামনে ভালোবাসা প্রকাশ করা হয়। ভালোবাসার এমন বর্ণাঢ্য উচ্ছ্বাস ও অনুভূতি ‘গান্ধর্ব্য’ কেবল বৈসাবি উৎসবেই শোভা পায়।বান্দরবানের তঞ্চঙ্গ্যা জনগোষ্ঠী তিন দিনব্যাপী ঐতিহ্যবাহী বিষু উৎসব পালন করে থাকে। এদিন সাংগু নদীতে কলাপাতায় ভক্তি ও শ্রদ্ধাভরে গঙ্গাদেবীর পূজা করে থাকেন তারা। ঘিলা খেলার মাধ্যমে তঞ্চঙ্গ্যা জনগোষ্ঠীর বিষু উৎসব শুরু হয়। সঙ্গে থাকে ২০ থেকে ৩০ পদের সবজি দিয়ে ঐতিহ্যবাহী পাচন রান্না আর ভোজন। বান্দরবানের মারমা সম্প্রদায় এবার চার দিনব্যাপী সাংগ্রাই উৎসবের আয়োজন করেছে।উৎসবকে ঘিরে দুদিনব্যাপী পানিখেলা, পিঠা তৈরি, বলীখেলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা আয়োজন চলবে। সাংগ্রাই উৎসবের মূল আকর্ষণ-মৈত্রী পানিবর্ষণ জলকেলি উৎসব অনুষ্ঠিত হবে। মারমা তরুণ-তরুণীরা মেতে উঠবে জলকেলি বা পানি ছিটানো খেলায়। এছাড়া দিনব্যাপী চলবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বৌদ্ধ বিহারসমূহে (ক্যায়াং) অনুষ্ঠিত হবে মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্বালন। এই সময় হাজার হাজার প্রদীপ প্রজ্জ্বালনের মাধ্যমে পাহাড়ি নারী-পুরুষরা প্রার্থনায় দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা করবেন। অসমের জাতীয় উৎসব হলো বিহু। বিহু সমাজের সবাই এই উৎসব উদযাপন করে থাকে। এর মূল অংশ হলো কৃষি ভিত্তিক উৎসব। বি শব্দটির অর্থ প্রার্থনা এবং শু শব্দের অর্থ শান্তি ও সমৃদ্ধি। বিশু শব্দ থেকে বিবর্তনের ধারায় বিহু শব্দের উৎপত্তি। জনশ্রুতি আছে বিহু মূলত আসামের চুটিয়া উপজাতিদের মধ্যে প্রচলিত।এক্ষেত্রে হু শব্দটি তারা দান অর্থে ব্যবহার করে থাকে। পার্বত্য চট্টগ্রামে অসম জাতি চৈত্র সংক্রান্তিতে বিহু উৎসব উদযাপন করে থাকে। বান্দরবানে ম্রো সম্প্রদায় চৈত্র সংক্রান্তিতে পালন করে চাংক্রান উৎসব। প্রতিবছর বর্ষবরণ উপলক্ষে ম্রো সম্প্রদায়ের পিঠা উৎসব, ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা ও তাদের তৈরি বিশাল আকারের বাঁশের প্লোং বাঁশি বাদ্যযন্ত্র উৎসবের আকর্ষণকে বহুমাত্রায় বাড়িয়ে দিয়েছে।এছাড়া উৎসব ঘিরে পানিখেলা, তৈলাক্ত বাঁশে বেয়ে ওঠা, লাঠি দিয়ে শক্তি প্রদর্শন প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন রয়েছে।ভোরের আকাশ/এসএইচ

১ মাস আগে

রুদ্ধ হতে পারে রাজনীতির পথ

রুদ্ধ হতে পারে রাজনীতির পথ

২৭ মার্চ ২০২৫ ০৫:২৫ পিএম

ধর্ষণের শাস্তি হোক মৃত্যুদণ্ড ও অঙ্গ কর্তন!

ধর্ষণের শাস্তি হোক মৃত্যুদণ্ড ও অঙ্গ কর্তন!

২৩ মার্চ ২০২৫ ০১:১৪ পিএম