বোরোয় ‘কারেন্ট পোকা’
গাইবান্ধা প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১০ মে ২০২৫ ০১:০৯ পিএম
চোখের সামনে চিটা হয়ে যাচ্ছে কৃষকের ধান
ব্লাস্ট রোগ, স্থানীয়ভাবে যাকে বলা হয় ‘কারেন্ট পোকা’। আর এই পোকার আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়েছে প্রান্তিক চাষিরা। তাই ক্ষেতের ফসল রক্ষা করতে পারছেন না এ জেলার কৃষকরা। চোখের সামনে কষ্টের ফসল ধানের শীষ চিটা হয়ে মরে যাচ্ছে। ফসল বাঁচাতে স্থানীয় দোকান থেকে ঔষুধ-কীটনাশক প্রয়োগ করেও কোনো সুফল পাচ্ছে না।
গাইবান্ধা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলার সাত উপজেলায় চলতি মৌসুমে ১ লক্ষ ২৯ হাজার ২০ হেক্টর জমিতে বোরো (ইরি) ধানের আবাদ হয়েছে। গাইবান্ধা সদর উপজেলার চাঁপাদহ গ্রামের প্রান্তিক কৃষক মেজা মিয়া। ধার দেনা করে নিজের ও বর্গা নেওয়া ৫ বিঘা জমিতে ইরি-বোরো ধান চাষ করেছেন। আবাদও ভালো হয়েছে। থোকা থোকা ধানের শীষে ভরে উঠেছে তার জমি। পাকতে শুরু করেছে ধান। কিন্তু ধান পাকার আগেই ব্লাস্ট রোগে শীষ চিটা হয়ে মরে যাচ্ছে। কষ্টের ফসল নষ্ট হতে দেখে জমিতে এসে কান্না করা ছাড়া কিছুই করতে পারছেন না এই চাষি।
এখন মাঠে মাঠে বাতাসে দুলছে বোরো ধানের শীষ, দুলছে চাষির স্বপ্ন। সেই স্বপ্নে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে নেক ব্লাস্ট। ধান পাকার সময়ে ব্লাস্ট রোগে চিটা হয়ে যাচ্ছে কৃষকের কষ্টের ফসল। মাঠের দিকে দূর থেকে তাকালে পাকা ধান মনে হলেও বাস্তবে তা নয়, পাতা ধূসর রঙ ধারণ করে সাদা হয়ে যাচ্ছে আধা পাকা ধানের শীষ। প্রতিদিনই আক্রান্ত হচ্ছে নতুন নতুন বোরো ক্ষেত। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। একই অবস্থা ওই গ্রামের কৃষক ফুয়াদ মিয়ার। স্থানীয় কীটনাশক বিক্রেতাদের পরামর্শে বার বার ওষুধ ছিটিয়েও রক্ষা করতে পারছেন না তার জমি। ফলে হতাশা গ্রস্থ হচ্ছেন তিনি।
এ বিষয়ে গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. খোরশেদ আলম বলেন, ধানের রোগ-বালাই বিষয়ে সর্বোচ্চ সর্তকতা অবলম্বন করা হচ্ছে। ক্ষেতের ৮০ শতাংশ ধান পাকলেই কাটতে হবে। কৃষকদের সচেতন করার লক্ষেই সব কৃষি কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। এরপরও কোনো অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ভোরের আকাশ/আজাসা