টঙ্গী (গাজীপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৯ জুলাই ২০২৫ ১১:০৯ এএম
সংগৃহীত ছবি
গাজীপুরের টঙ্গীতে খোলা ম্যানহোলে পড়ে নিখোঁজ সেই নারীর মরদেহ ৩৬ ঘণ্টা পর উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সকাল ৯টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল টঙ্গীর বাষ্পট্টি বিলের মাঝখান থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে।
এর আগে, রোববার (২৭ জুলাই) রাত ৮টার দিকে টঙ্গী পশ্চিম থানাধীন হোসেন মার্কেট এলাকায় ভারী বৃষ্টির মধ্যে হাঁটার সময় খোলা একটি ম্যানহোলে পড়ে যান জ্যোতি। পানির প্রবল স্রোতে তিনি মুহূর্তেই তলিয়ে যান।
দুর্ঘটনার পর রাতেই উদ্ধার অভিযান শুরু করে ফায়ার সার্ভিস। তবে পরদিন সোমবার রাত পর্যন্ত তার কোনো খোঁজ না পাওয়ায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয়রা। সন্ধ্যার পর তারা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। প্রায় দুই ঘণ্টা অবরোধ চলার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
নিহত জ্যোতি রাজধানীর মিরপুর ১০ নম্বর সেক্টরের বাসিন্দা এবং একটি ওষুধ আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ‘মনি ট্রেডিং’-এ সেলসম্যান হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি চুয়াডাঙ্গা জেলার ৪ নম্বর ওয়ার্ড মসজিদপাড়ায়। তিনি ওলিউল্লাহ আহাম্মদ বাবলুর মেয়ে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, টঙ্গীর বিভিন্ন এলাকায় অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থার ফলে সড়কের পাশের ১২ ফুট প্রশস্ত ড্রেন সংকুচিত করে ৬ ফুটে নামিয়ে আনা হয়েছে। ফলে বর্ষা মৌসুমে প্রবল স্রোত সৃষ্টি হয় এবং খোলা ম্যানহোলে পড়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বাড়ে। এর আগেও একাধিক প্রাণহানি ঘটেছে বলে দাবি তাদের।
ফায়ার সার্ভিসের টঙ্গী ইউনিটের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো. শাহিন আলম বলেন, “দুর্ঘটনাস্থলের ম্যানহোলটি প্রায় ১০ ফুট গভীর ছিল এবং প্রবল বর্ষণের কারণে পুরোপুরি পানিতে ডুবে গিয়েছিল। দীর্ঘ অনুসন্ধান শেষে আজ সকাল ৯টায় আমাদের ডুবুরি দল মরদেহটি উদ্ধার করে।”
টঙ্গী পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইসকান্দার হাবিবুর রহমান বলেন, “আমরা ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে সমন্বয় করে উদ্ধার কাজ পরিচালনা করেছি। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।”
স্থানীয়রা বলেন, "নিরাপদ চলাচলের ব্যবস্থা ও ঢাকনাযুক্ত ম্যানহোল নিশ্চিত না করা হলে এমন প্রাণহানি অব্যাহত থাকবে। জ্যোতির মৃত্যু যেন আর কোনো পরিবারের জীবনে না নামে—এটাই আমাদের দাবি।"
ভোরের আকাশ/এসএইচ