ছবি: ভোরের আকাশ
জীবননগরে আমন ও রবি শস্যের ভরা মৌসুমে রাসায়নিক সারের তীব্র সংকট দেখা গেছে। এতে বিপাকে পড়েছে চাষিরা। ড্রাগন, মাল্টা, পেয়ারা সহ বিভিন্ন ফলের চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। তাছাড়া মাঠে শীতকালীন সবজি, পেঁপে, কলা, আখ, ধান সহ নানা শস্যের চাষ রয়েছে। এসব ফসল চাষে যে পরিমাণ রাসায়নিক সারের প্রয়োজন সে তুলনায় সার পাচ্ছে না বলে কৃষকেরা অভিযোগ করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জীবননগরে ইউরিয়া ও এমওপি সারের তেমন ঘাটতি না থাকলেও টিএসপি ও ডিএপি সারের তীব্র সংকট রয়েছে। চাষিরা ডিলারদের কাছে সার নিতে গিয়ে বারবার খালি হাতে ফিরে আসছে। অনেক জায়গায় সার কিনতে কৃষকের লম্বা লাইন দিতে দেখা গেছে।
চাষিরা অভিযোগ করে বলেছেন, ডিলারদের কাছে সার থাকে না অথচ বেশি টাকা দিলে খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে সার পাওয়া যায়।
শামিম হোসাইন নামের এক চাষি বলেন, বৃষ্টির পরে জমিগুলো জো হচ্ছে। এখন সার প্রয়োগের উপযুক্ত সময়। কিন্তু কোথাও সার পাওয়া যাচ্ছে না। ডিলারের কাছে যখনই যাই তারা বলে সার নেই। আমি পেয়ারা, আখ, শীতকাল সবজি ও আমন ধান চাষ করেছি। এখন আমার ৩/৪ বস্তা সার দরকার। কিন্তু সার পাচ্ছি না।
আরেক কৃষক আসকার আলী জানান, টিএসপি সার কেনার জন্য গতকাল ভোর থেকে ডিলারের দোকানের সামনে লাইনে দাঁড়িয়ে মাত্র ২৫ কেজি সার পেয়েছি। আমার ৭ বিঘা জমিতে চাষ। কতোটুকু সারে কিছুই হবে না।
ডিলারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, টিএসপি সারের চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ কম। এই পরিমাণ সার দিয়ে কৃষকের এতো বেশি চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। বরাদ্দের সার আসলেই সেটা ২/১ দিনের মধ্যেই শেষ হয়ে যাচ্ছে।
কিছু অসাধু খুচরা ব্যবসায়ীরা সাধারণ মানুষদের কৃষক সাজিয়ে ডিলারের নিকট থেকে সার তুলে সেগুলো দোকানে বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জীবননগর কৃষি কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন বলেন, জীবননগর উপজেলায় সারের তেমন সংকট নেই। আমাদের জমিতে যতটুকু প্রয়োজন তার ছাড়া ৫/৬ গুণ বেশি সার প্রয়োগ করে সারের সংকট তৈরি করছি। যে জমিগুলোতে ২০ কেজি টিএসপি সার প্রয়োগের দরকার সেখানে আমরা ১০০ কেজি টিএসপি সার প্রয়োগ করছি। অতিরিক্ত রাসায়নিক সার ও কীটনাশক প্রয়োগের ফলে আমাদের জমির স্বাস্থ্য নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। জমির উর্বরতা শক্তি কমে আসছে। এমন হতে থাকলে আগামী ২০/২৫ বছর পর এসব জমি গুলো প্যারালাইজড হয়ে যেতে পারে।
রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমিয়ে কৃষি জমিতে বেশি বেশি করে জৈব সার ব্যবহার করতে হবে। তাহলে মাটির স্বাস্থ্য ভালো থাকবে ও সারের সংকট তৈরি হবে না।
ভোরের আকাশ/জাআ
সংশ্লিষ্ট
বিমানবন্দর যাওয়ার পথে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সোনারগাঁ উপজেলার পিরোজপুর এলাকায় মারিখালী সেতুর ওপর বুধবার (৮ অক্টোবর) ভোরে বিদেশ যাত্রীর গাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এসময় ডাকাত দল ছুরিকাঘাত করে এনামুল হক (৪৯) নামে গ্রীস প্রবাসীর সঙ্গে থাকা নাগরিকত্ব কার্ড, নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন লুট করে নিয়ে যায়। ডাকাতিতে বাধা দেওয়ায় ডাকাত দল প্রবাসী এনামুল হক ও গাড়ীর চালক আবু মুসাকে ছুরিকাঘাতে আহত করে। পরে কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের একটি দল প্রবাসী ও চালককে উদ্ধার করে মহাসড়কের পাশে মদনপুর এলাকায় আল বারাকা নামে একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে প্রাথমিক চিকিৎসা করায়। এ ঘটনায় গ্রীস প্রবাসী এনামুল হক বাদী হয়ে বুধবার বিকালে সোনারগাঁ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।পুলিশ ও ভূক্তভোগী বিদেশ যাত্রী জানান, কুমিল্লা থেকে রাতে (ঢাকা-মেট্রো-গ ৪৫-৪৩৪৫) একটি প্রাইভেটকার যোগে শাহজালাল আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দর যাওয়ার উদ্দ্যেশে রওনা দেয়। চলন্ত পথে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পিরোজপুর এলাকায় মারিখালী সেতুর ওপর ভোর ৪টা ২০ মিনিটের দিকে তাদের গাড়ীর সামনে কয়েকটি মালবাহী ট্রাক ধীর গতি থাকায় ডাকাত দল তাদের গাড়ীটির গতিরোধ করে। এসময় ৭/৮ জনের একটি ডাকাত দল প্রাইভেটকারের গ্লাস ভেঙ্গে গাড়ীর চালক ও প্রবাসী যাত্রীকে ছুরি, রামদা দেশীয় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে গ্রীস প্রবাসীর সঙ্গে থাকা নাগরিকত্ব কার্ড, নগদ টাকা ও দুটি মোবাইল ফোন লুট করে নিয়ে যায়।এ সময় ডাকাতিতে বাধা দেওয়ায় ডাকাতদল প্রবাসী যাত্রী ও চালককে ছুরিকাঘাত করে আহত করে। পরে কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের একটি দল প্রবাসী ও চালককে উদ্ধার করে মহাসড়কের পাশে মদনপুর এলাকায় আল বারাকা নামে একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে প্রাথমিক চিকিৎসা করায়। গ্রীস প্রবাসী এনামুল হক কুমিল্লা জেলার নাঙ্গলকোট ভাসেন্ডা এলাকার নুর মিয়ার ছেলে, গাড়ীর চালক আবু মুসা কুমিল্লা জেলার দেবীদার বেহারমন্ডল এলাকার আব্দুস সাত্তারের ছেলে।সোনারগাঁ থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) রাশেদুল হাসান খান জানান, গ্রীস প্রবাসী এনামুল হক বাদী হয়ে সোনারগাঁ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। ভোরের আকাশ/এসএইচ
পিরোজপুরের কাউখালীতে ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানে বুধবার (৮ অক্টোবর) দিনব্যাপী মৎস্য অধিদপ্তর ও নৌ পুলিশ যৌথভাবে উপজেলার বিভিন্ন নদী নালা ও খালে অভিযান পরিচালনা করে চিড়াপাড়া নদী ও খাল থেকে পাঁচটি চায়না দুয়ারী জাল, দশটি চরগরা ও একটি সুতার জাল জব্দ করে, যার আনুমানিক মূল্য প্রায় দেড় লক্ষাধিক টাকা।অভিযানের নেতৃত্ব দেন কাউখালী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান।কাউখালী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান জানান, মা ইলিশ রক্ষায় আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্বজল মোল্লার নির্দেশে জনসম্মুখে অবৈধ জালগুলো পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে।ভোরের আকাশ/জাআ
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ চৌরাস্তা মোড় থেকে আঠারবাড়ী আঞ্চলিক সড়কের নয়শিমুল পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার রাস্তার নির্মাণ কাজ দীর্ঘ ৫ বছরেও শেষ হয়নি। ফলে জনসাধারণের চলাচলের পাশাপাশি দূরপাল্লার যানবাহন ও হাসপাতালগামী রোগীরা পড়েছেন চরম দুর্ভোগে। রাস্তার দ্রুত সংস্কারের দাবিতে মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) ঈশ্বরগঞ্জ চৌরাস্তা মোড়ে সর্বস্তরের জনসাধারণের উদ্যোগে এক মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০২০-২১ অর্থবছরে ঈশ্বরগঞ্জ থেকে আঠারবাড়ী পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের কাজ পায় ‘তাহের ব্রাদার্স’ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এরই মধ্যে ১২ কি:মি: কাজ শেষ হলেও, ঈশ্বরগঞ্জ চৌরাস্তা মোড় থেকে নয়শিমুল পর্যন্ত ২ কিমি এবং সোহাগী বাজার রেলক্রসিং থেকে বগাপুতা পর্যন্ত ১ কিমি রাস্তার কাজ গত ৪ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে। ফলে ৩ কিমি এই সড়ক বর্তমানে অসংখ্য গর্ত আর খানাখন্দে পরিণত হয়েছে, যা সম্পূর্ণভাবে চলাচলের অযোগ্য।এছাড়াও ঈশ্বরগঞ্জ ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে যাতায়াত মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জাকির হোসাইন জানান, রাস্তার বেহাল অবস্থার কারনে হাসপাতালে রোগীর উপস্থিতির হার কমেছে শতকরা ৩৫ ভাগ। আগে প্রতিদিন গড়ে ৫ শতাধিক রোগী হাসপাতালে চিতিৎসা সেবা নিতে আসতো। রাস্তার বর্তমান দুরাবস্থার কারনে রোগীর উপস্থিতির সংখ্যা কমে ৩ শতাধিকে দাঁড়িয়েছে।মানববন্ধনে অংশ নিয়ে সাত দিনের আল্টিমেটাম ও হুঁশিয়ারি দিয়ে সাবেক সংসদ সদস্য শাহ্ নুরুল কবীর শাহীন বলেন, ঈশ্বরগঞ্জ মোড় থেকে হাসপাতাল পর্যন্ত রাস্তাটি এতটাই বেহাল যে, কোনো পরিবহন রোগী নিতে চায় না। আমরা আগামী ৭ দিনের মধ্যে কাজ শুরুর দাবি জানাচ্ছি, অন্যথায় বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।এছাড়াও মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আমিরুল ইসলাম ভূঁইয়া মনি, যুগ্ম আহ্বায়ক আতিকুর রাজ্জাক ভূঁইয়া হীরা, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা সভাপতি মুফতি হাবিবুল্লাহ প্রমুখ।ঈশ্বরগঞ্জ সওজ-এর উপসহকারী প্রকৌশলী আব্দুস সালাম জানান, সড়কের ভূমি অধিগ্রহণের ৮ ধারা কার্যক্রম ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। আশা করছি, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই নির্মাণ কাজ শুরু হবে।মানববন্ধনে উপজেলার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ, ব্যবসায়ী, শ্রমিক, শিক্ষার্থী, পরিবহন শ্রমিক ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ একত্রিত হয়ে রাস্তা সংস্কারের জোর দাবি জানান।ভোরের আকাশ/জাআ
চেক প্রতারণার পৃথক তিনটি মামলায় সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার চক জয় কৃষ্ণপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মমতাজ মহলকে তিন বছরের কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। একই সাথে সমপরিমান টাকা ফেরতের অর্থদন্ড দিয়েছে আদালত।বুধবার (৮ অক্টোবর) দুপুরে সিরাজগঞ্জের যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালত-৩ ও অর্থঋণ আদালতের বিচারক মিশকাত শুকরানা এই কারাদন্ডের আদেশ দেন।গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের অতিরিক্ত পিপি দেলোয়ার হোসেন মন্টু বলেন, পৃথক তিনটি মামলায় আদালত আজ মমতাজ মহলকে এক বছর করে মোট তিন বছরের কারাদন্ড দিয়েছেন। একই সঙ্গে সমপরিমান টাকা ফেরতের অর্থদন্ড দেওয়া হয়েছে।মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, প্রধান শিক্ষিকা মমতাজ মহল সাংসারিক কাজে বিশেষ টাকার প্রয়োজন হওয়ায় তাড়াশ উপজেলা সদরের রাম চন্দ্র কর্মকারের ছেলে খোকন চন্দ্র কর্মকারের নিকট হতে ২০২২ সালের ২৩ জুন তারিখে ২০ লাখ টাকা, তাড়াশ উপজেলার শ্রী কৃষ্ণপুর গ্রামের ভাষা শেখের ছেলে ইসমাইল হোসেনের নিকট থেকে ২০২২ সালের ১৮ জুলাই তারিখে ৫ লাখ টাকা ও তাড়াশ উপজেলা সদরের খিদির চন্দ্র সাহার ছেলে রতন কুমার সাহার নিকট থেকে ২০২২ সালে ২০ লাখ টাকা হাওদাত গ্রহন করেন। পাওনা টাকা তিন মাসের মধ্যে পরিশোধ করার কথা ছিলো।নির্ধারিত সময়ে টাকা ফেরত দিতে ব্যর্থ হন মমতাজ মহল। পরবর্তীতে মামলার বাদীদের তাড়াশ শাখার পূবালী ব্যাংক ও সোনালী ব্যাংকের একটি করে ভুয়া চেক দেন। ব্যাংকে চেক গুলো জমা দেয়া হলে তা প্রত্যাখ্যাত হয়, কারণ আসামির একাউন্টে পর্যাপ্ত অর্থ ছিল না। ফলে অভিযোগকারীরা আদালতে চেক প্রতারণার মামলা দায়ের করেন।আজ আদালতের বিচারক মমতাজ মহলকে পৃথক তিনটি মামলায় ৩ বছরের কারাদন্ড ও সমপরিমাণ টাকা ফেরতের নির্দেশ দেন।ভোরের আকাশ/জাআ