পিরোজপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৮ জুলাই ২০২৫ ০৬:০৬ পিএম
ছবি: ভোরের আকাশ
মৃত্যুর ১৪ বছর পর পিরোজপুরের কাউখালীতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গুম এবং গুপ্ত হত্যার শিকার ব্যবসায়ী নাজমুল হক মুরাদের সঠিক পরিচয় নির্ধারণ করতে কবর থেকে দ্বিতীয়বার লাশ উত্তোলন করে ডিএনএ সংগ্রহ করা হয়েছে।
সোমবার (২৮ জুলাই) সকালে পিরোজপুরের কাউখালীর পার সাতুরিয়া গ্রামের পারিবারিক কবরস্থান থেকে মরদেহের নমুনা সংগ্রহ করা হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন গুম কমিশনের সদস্য মানবাধিকার কর্মী নূর খান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) স্বজল মোল্লা।
ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে তার পরিচয় নিশ্চিত হতে গুম সংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারির কার্যালয় থেকে অনুরোধের প্রেক্ষিতে পিরোজপুরের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আশরাফুল আলম খান গত ১৫ জুলাই (মঙ্গলবার) এ আদেশ দেন।
জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদেশ পালনে কাউখালী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুদীপ্ত দেবনাথ, সিভিল সার্জনের প্রতিনিধি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ইসতিয়াক আহমেদ, কাউখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোলায়মান, মামলার বাদি মুরাদের ভাই মিরাজুল ইসলামের উপস্থিতিতে মরদেহের নমুনা সংগ্রহ করেন।
জানা গেছে, একটি হত্যা মামলার আসামি কাউখালীর ব্যবসায়ী মুরাদ, রাজাপুর উপজেলার নৈকাঠী গ্রামের মিজান জোমাদ্দার ও ফোরকানকে ২০১১ সালের ১৭ এপ্রিল ঢাকার উত্তরা থেকে র্যাব পরিচয়ে ধরে নিয়ে যায়। এরপরে তাদের কোনো সন্ধান পায়নি পরিবার। ১০ দিন পরে ২৭ এপ্রিল ঢাকার তুরাগ তীরে বালুর নিচ থেকে বস্তাবন্দি তিন যুবকের গলিত লাশ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। পরে তিন জনের পরিবার তাদের লাশ শনাক্ত করে প্রত্যেকের বাড়িতে দাফন করে।
এদিকে, তারা কাউখালীতে আইনজীবী গিয়াস উদ্দিন খান মাসুদ হত্যা মামলায় গুপ্ত হত্যায় নিহত দু'জন আসামি থাকায় মামলার বাদি নিহত দুই আসামির ডিএনএ টেস্টের আবেদন করলে, স্বরাষ্ট্র মস্ত্রণালয়ের নির্দেশে ঢাকার সিএমএম আদালতের চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট এ কে এম এনামুল হক ২০১১ সালের জুন মাসে মুরাদ ও মিজানের ডিএনএ টেস্টের নির্দেশ দেন।
২০১১ সালের ৪ জুলাই কাউখালীর পার সাতুরিয়া গ্রামে নাজমুল হক মুরাদের লাশ কবর থেকে উত্তোলন করে লাশের দাতসহ বিভিন্ন উপকরণ সংগ্রহ করে ডিএনএ টেস্টের জন্য পাঠানো হয়। পরে ডিএনএ টেস্টে কাউখালীতে দাফন করা লাশ মুরাদের নয় বলে প্রমাণিত হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন তৎকালীন হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসি আ. রাজ্জাক। মামলায় মিজান ও মুরাদকে জীবিত দেখিয়ে ১০ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছিল পুলিশ।
কিন্তু দীর্ঘ ১৪ বছর পর ছোট ভাই নাজমুল হক মুরাদের সঠিক সন্ধান এবং তদন্ত করে সুষ্ঠু বিচার দাবি করে গুম সংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারি নিকট আবেদন করেন তার মেঝো ভাই মিরাজুল হক লিপু। পরে চলতি বছরের ২৮ এপ্রিল গুম সংক্রান্ত কমিশনের দু'জন সদস্য কাউখালীতে আসেন। তারা পরিবারের সদস্যদের সাথে ঘটনার বিবরণ শুনে মুরাদের লাশ ডিএনএ পরীক্ষার জন্য নির্দেশ দেন।
ভোরের আকাশ/জাআ