ছবি: সংগৃহীত
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে ভঙ্গুর অর্থনীতি বড় ধরনের সংকট থেকে রক্ষা পেয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন।
রোববার (১০ আগস্ট) রাজধানীর একটি হোটেলে সিপিডি আয়োজিত ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ৩৬৫ দিন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা জানান।
ফাহমিদা খাতুন বলেন, বড় এক ধরনের সংকট থেকে অর্থনীতিকে রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে, যা একটি উল্লেখযোগ্য সাফল্য। তবে মূল্যস্ফীতি এখনও উচ্চ পর্যায়ে রয়েছে, বিনিয়োগ কমে গেছে, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাচ্ছে না এবং রাজস্ব আহরণও বাড়ছে না। তাই এই বিষয়গুলোকে আগামী ছয় মাস ও নতুন সরকারকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে।
তিনি আরও জানান, গত এক বছরে অন্তর্বর্তী সরকার বেশ কিছু সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে, যার মধ্যে ব্যাংক খাতের সংস্কার অন্যতম। এর ফলে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি বৃদ্ধি পেয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও ভালো অবস্থায় রয়েছে এবং পতন রোধ করা গেছে।
নির্বাহী পরিচালক বলেন, বিনিয়োগে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে, যা কাটিয়ে উঠতে হবে। যদিও অন্তর্বর্তী সরকারের সময় নতুন দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগ আসা সম্ভব নয়, কিন্তু বিনিয়োগের পরিবেশ তৈরি করলে ভবিষ্যতে ক্ষমতায় আসা সরকারের জন্য তা সুবিধাজনক হবে।
তিনি আরো বলেন, আমরা ইতোমধ্যে জানি ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আগামী পাঁচ-ছয় মাসে নতুন করে সংস্কার কার্যক্রম কতটা বাস্তবায়িত হবে বা সুপারিশমালা কতটা অনুসরণ করা হবে, তা বলা কঠিন। এখন পর্যন্ত সংস্কারের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপগুলো ধীরগতিতে নেওয়া হয়েছে।
সিপিডির সম্মানীয় ফেলো প্রফেসর মুস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী ও বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ. মনসুরসহ বিভিন্ন দলের নেতা ও ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।
ভোরের আকাশ/এসএইচ
সংশ্লিষ্ট
দেশে দিন দিন ইলিশের উৎপাদন কমছে। আবহাওয়ার পরিবর্তনের পাশাপাশি প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট নানা কারণে দেশে ক্রমান্বয়ে কমার ফলে ভরা মৌসুমেও মিলছে না কাঙ্ক্ষিত ইলিশ। ফলে দেশের বাজারে আকাশচুম্বি হয়ে যাচ্ছে সুস্বাদু এবং মানুষের কাছে অতিপ্রিয় ইলিশ মাছের দাম।গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আগের বরের তুলনায় দেশে ইলিশের উৎপাদন কমেছে প্রায় ৭ শতাংশ। আর চলতি বছরের আগস্ট-সেপ্টেম্বরের ভরা মৌসুমে আহরণের পরিমাণ ২৯ হাজর ৫১৯ টন। গতবছর একই সময়ে উৎপাদন হয়েছিল ৪০ হাজার ২৯১ টন। অর্থাৎ দুই মাসে গত বছরের চেয়ে উৎপাদনের পরিমাণ ১০ হাজার ৭৭১ টন কম বলে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।এ ব্যাপারে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার ভোরের আকাশকে বলেন, এখনও বাংলাদেশ বিশ্বে ইলিশ উৎপাদনে শীর্ষে রয়েছে। অবৈধ জাল ও জাটকা নিধন পুরোপুরি বন্ধ না হওয়া এবং জলবায়ু পরিবর্তন, নদীর নাব্য হ্রাস ও অভয়াশ্রমসংলগ্ন এলাকায় উন্নয়ন প্রকল্পের কারণে ইলিশ উৎপাদন কমেছে। তিনি বলেন, জাটকা সুরক্ষা ও প্রজনন মৌসুমে নির্বিঘ্ন পরিবেশ নিশ্চিত করতে অভিযান পরিচালনাসহ কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।কারেন্ট জালসহ অবৈধ জালের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা আরো বলেন, ইলিশের দাম সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে রাখতে আহরণের সময় অর্থাৎ নদী বা সাগর থেকে খুচরো বাজারে আসা পর্যন্ত হাতবদল কমানোর পরিকল্পনাও হাতে নেওয়া হয়েছে।তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে লবণাক্ততার প্রভাব বৃদ্ধি এবং সময়মতো বৃষ্টি হওয়া না হওয়ার সঙ্গে ইলিশের ডিম ছাড়ার একটা সম্পর্ক আছে। এজন্য ইলিশের স্বাভাবিক উৎপাদন অব্যাহত রাখতে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব ঠেকানোর জন্য গবেষণা বাড়ানোর চিন্তা করা হচ্ছে। ইলিশের উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ঠিকমতো করতে পারলে আমাদের জাতীয় এ সম্পদকে আন্তর্জাতিকভাবে তুলে ধরা সম্ভব হবে।মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সামুদ্রিক মাছ হলেও ডিম ছাড়তে স্রাতস্বীনী নদীতে আসে ইলিশ। আর নানন দুষণে ভয়াবহভাবে কমে আসছে ইলিশের উৎপাদন। উপযোগী আবহাওয়া ও ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে মোট ইলিশের ৮৬ শতাংশই উৎপাদন হয় নদীমাতৃক বাংলাদেশে। তবে এটি বেশ সংবেদনশীল মাছ। প্রতিকূল আবহাওয়ায় খুব ঘন ঘনই পরিবর্তন করে গতিপথ। সম্প্রতি বাংলাদেশেও জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে পাল্টে যাচ্ছে ইলিশের আবাস ও জীবনাচরণ। নদ-নদীর দূষণে কমছে উৎপাদনও।এদিকে, দুই থেকে তিন ইঞ্চি জাটকা ইলিশ বাজারে বিক্রি হওয়ায় প্রজননও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।জানা গেছে, শুধু বরিশালের পোর্ট রোডের মোকামে প্রতিদিন ১৫০ থেকে ২০০ মণ জাটকা বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে, একদিকে উৎপাদন কম হওয়ায় বাজারে দাম মাত্রাতিরিক্ত বাড়ায় রুপালি ইলিশ এখন সাধারণ মানুষের কাছে অনেকটাই হয়ে গেছে ‘দুর্লভ বস্তু’।মৎস্য অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, নদীর মোহনাগুলোর গভীরতা কমে যাওয়ায় ইলিশ প্রবেশে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। মোহনা সাধারণত ৫ থেকে ১০ কিলোমিটার প্রশস্ত এবং পানির গভীরতা কমপক্ষে ৫০ থেকে ১০০ ফুট থাকার কথা। আর ইলিশ নির্বিঘ্নে চলার জন্য প্রায় ৩০ ফুট গভীর পানি প্রয়োজন। মোহনাগুলো ভাটার সময় পলি জমে ৮ থেকে ৯ ফুটে চলে আসে। ডুবোচর, বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ এবং গরম পানি নির্গমনের কারণে নদীর নাব্য সংকটও বাড়ছে।জানা গেছে, প্রতিবছর জুলাই, আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসকে ইলিশের ভরা মৌসুম ধরা হয়। বছরে মোট আহরিত ইলিশের দুই-তৃতীয়াংশই এক সময় দক্ষিণাঞ্চলের নদনদীতে পাওয়া যেত। এ বছর জুলাই-আগস্টে ভরা মৌসুমে আহরিত ইলিশের উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ২৯,৫১৯.৪৬ টন।গত বছর একই সময়ে আহরণ হয়েছিল ৪০,২৯১.২৪ টন। অর্থাৎ গতবছরের একই সময়ের চেয়ে উৎপাদন কমেছে ১০,৭৭১.৭৮ টন। সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সারাদেশে ইলিশ উৎপাদন কমে পাঁচ লাখ ২৯ হাজার টনে দাঁড়িয়েছে। আগের বছর ২০২২-২৩ সালে ছিল পাঁচ লাখ ৭১ হাজার টন। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের হিসাব এখনও হয়নি, তবে ধারণা করা হচ্ছে, পরিমাণ আরও কম হবে। এর আগে প্রতিবার ইলিশ উৎপাদন সামান্য হলেও বাড়ত। ২০১৮-১৯ সালে পাঁচ লাখ ৩২ হাজার, ২০১৯-২০ সালে পাঁচ লাখ ৫০ হাজার, ২০২০-২১ সালে পাঁচ লাখ ৬৫ হাজার, ২০২১-২২ সালে পাঁচ লাখ ৬৬ হাজার টন ইলিশ আহরিত হয়েছিল।জানা গেছে, প্রজনন মৌসুমে ইলিশ ধরা বন্ধ, জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থান বা সহায়তাসহ নানা উদ্যোগের কারণে দেশে টানা কয়েক বছর বেড়েছিল ইলিশ উৎপাদন। ইলিশ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট দুই কারণই এজন্য দায়ী। একদিকে তাদের মতে, একদিকে বঙ্গোপসাগরে পানির তাপমাত্রা বাড়ার ফলে ইলিশের প্রজনন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।অন্যদিকে, নদীর প্রবাহ কমে যাওয়ায় ইলিশের বিচরণও হয়ে পড়েছে সীমিত। এছাড়া মেঘনার মোহনায় ডুবোচরের সংখ্যা বৃদ্ধি, নদী ও উপকূলীয় দূষণ এবং অতিরিক্ত আহরণও ইলিশ উৎপাদনে বিপর্যয়ের অন্যতম কারণ। সব সংকট কাটিয়ে শিগগির যদি নদীকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা না যায়, তবে ইলিশ বাংলাদেশের জলসীমা ছেড়ে অন্য পথে চলে যেতে পারে বলেও আশংকা করছেন তারা। এ পরিস্থিতিতে আগামী ৩ অক্টোবর মধ্যরাত থেকে শুরু হচ্ছে ২২ দিনের মা ইলিশ রক্ষায় নিষেধাজ্ঞা, যা চলবে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত। এর পর নভেম্বর থেকে শুরু হবে আট মাসের জাটকা আহরণে নিষেধাজ্ঞা।এ উপলক্ষে আজ সোমবার মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে ‘মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান ২০২৫’ এবং সারা দেশে ইলিশের প্রাপ্যতা, মূল্য ও সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করবেন বলে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।উল্লেখ্য, বাংলাদেশের জাতীয় মাছ ইলিশ ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবেও স্বীকৃতি পেয়েছে। ‘ওয়ার্ল্ড ফিশ’র পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, বিশ্বের মোট ইলিশের ৮৬ শতাংশই উৎপাদন হয় বাংলাদেশে।ইলিশ আহরণে বড় ধাক্কাএদিকে, খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বরিশাল, বরগুনা, পটুয়াখালী, খুলনা, ভোলা, কক্সবাজার, চাঁদপুরসহ দেশের অন্য উপকূলের নদীতেও পর্যাপ্ত ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে না। এজন্য জেলেদের পাশাপাশি হতাশ ব্যবসায়ীরাও। আর ইলিশ সংকটের প্রভাব পড়ছে বাজারে। এ অবস্থায় সমুদ্রের ইলিশের দামও আকাশছোঁয়া।ব্যবসায়ীরা জানান, ভরা মৌসুমে এত কম ইলিশের এমন সংকট আগে দেখা যায়নি, ইলিশের সংখ্যা দিন দিন কমছেই। দক্ষিণাঞ্চলে মেঘনা নদীর মোহনা ও তেঁতুলিয়া নদী দীর্ঘদিন ধরে দেশের ইলিশ উৎপাদনের প্রধান কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। কয়েক বছর আগেও এটিকে ‘ইলিশের খনি’ বলা হতো। তবে ক্রমবর্ধমান ইলিশ সংকটের কারণে শুধু মেঘনা নয়, অভ্যন্তরীণ নদী ও সাগরেও ব্যাপকভাবে কমেছে ইলিশ। এছাড়া চাঁদপুর থেকে মনপুরা পর্যন্ত বিভিন্ন চ্যানেলে চর পড়েছে, নাব্য কমে ট্রলার চলার পথও সংকীর্ণ হয়ে গেছে বলে ব্যবসায়ী ও জেলেরা জানিয়েছেন।নদী-সমুদ্রে সংকট, দায়ী মানুষও বিভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে, নদীতে মাছ বিচরণের ক্ষেত্রে দূষণ সরাসরি প্রভাব ফেলেছে। প্রথমত, পানিতে নির্দিষ্ট পরিমাণ পিএইচ লেভেল সাতের নিচে নামলে পানির মান খারাপ হতে থাকে। ওই পানিতে মাছের বসবাসের উপযোগিতা ধীরে ধীরে কমতে থাকে। একইভাবে পানিতে দ্রবণীয় অক্সিজেনের মাত্রা কম থাকলেও মাছ বসবাস করতে পারে না।বাংলাদেশের নদীতে যে ধরনের দূষণ দেখা যায়, তাতে ইলিশের মতো সামুদ্রিক মাছের জন্য টিকে থাকা কঠিন বলে জানান নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মো. মহিনুজ্জামান।তিনি বলেন, দেশে জাহাজ ভাঙা শিল্পের কারণে নদীতে ভারী ধাতুর পরিমাণ আশঙ্কাজনকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে। একইসঙ্গে জাহাজের তেল, বর্জ্যসহ বিভিন্নভাবে নদী দূষিত হচ্ছে। এছাড়া ইলিশ মাছ বিচরণের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ জায়গা প্রয়োজন হয়। নদীতে বাঁধ, অবকাঠামো নির্মাণের কারণে সে জায়গাগুলো সরু হয়ে এসেছে।জানা গেছে, চাঁদপুরের ষাটনল থেকে বরিশালের হিজলা পর্যন্ত ৪৩২ কিলোমিটার এলাকা ইলিশের অভয়াশ্রম। তবে এসব এলাকায়ও ইলিশ এখন নিরাপদ নয়। মৎস্য অধিদপ্তরের জরিপ বলছে, মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদীর মোহনা ও আশপাশের ১৭ স্থানে ইলিশের চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।এর মধ্যে ১৪টি মেঘনাতেই। আর ভোলা, পটুয়াখালী, চাঁদপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় ডুবোচরের সংখ্যা বৃদ্ধিতে ইলিশের স্বাভাবিক স্থানান্তর (মাইগ্রেশন) ব্যাহত হচ্ছে। ডুবোচর ইলিশের ডিম ছাড়ার মৌসুমে উজানে চলাচল প্রায় বন্ধ করে দেয়, যা ইলিশ উৎপাদন কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ।বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের প্রধান ইলিশ বিচরণক্ষেত্র হলো- মেঘনা, তেঁতুলিয়া, পায়রা, বিষখালী ও আন্ধারমানিক। দক্ষিণাঞ্চলের ছয়টি মোহনা দিয়েই সাধারণত ইলিশ দেশের অভ্যন্তরীণ নদীগুলোতে ঢুকে থাকে।ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের পরিচালক মোল্লা এমদাদুল্লাহ জানান, মোহনা ও অভ্যন্তরীণ নদীতে নাব্য সংকট, ইলিশ প্রজনন ক্ষেত্র ধ্বংস, অবৈধ জাল ব্যবহারসহ আরও কয়েকটি সমস্যা রয়েছে। এ সমস্যা সমাধান না হলে সামনের দিনগুলোতে ইলিশ সংকট আরো বাড়তে পারে।বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের (নদী কেন্দ্র) সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আনিছুর রহমান বলেন, এখন চাঁদপুর অঞ্চলে ইলিশ কম পাওয়াটা স্বাভাবিক। কারণ বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা নদী দূষণ এবং পদ্মা-মেঘনায় চর ও ডুবোচরের কারণে সমস্যা হচ্ছে। আমরা ইলিশ চলাচলের পথ সুগমের ব্যবস্থা নিচ্ছি না। ইলিশের স্বাভাবিক চলাচলের জন্য চলাচলের জন্য নদী ডেজিং করা জরুরি বলে উল্লেখ করেন তিনি।আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ১৯০১ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে বাংলাদেশের বার্ষিক গড় তাপমাত্রা বেড়েছে প্রায় ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২০৫০ সালের মধ্যে সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা আরও বাড়বে। অথচ ইলিশের প্রজননের আদর্শ তাপমাত্রা ২৬ থেকে ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে একদিকে ডিম ফোটার হার কমছে, অন্যদিকে ইলিশের পোনার মৃত্যুহারও বাড়ছে।আবহাওয়াবিদ বজলুর রশীদ বলেন, তাপমাত্রা বাড়ার বৈশ্বিক প্রবণতা বাংলাদেশের মৎস্যসম্পদ, বিশেষ করে ইলিশ উৎপাদনকে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এছাড়া শিল্পবর্জ্য, কীটনাশক ও প্লাস্টিকের পদ্মা-মেঘনায় দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যাচ্ছে। এতে ইলিশের শ্বাসপ্রশ্বাস ও খাদ্যচক্রও ব্যাহত হচ্ছে।আকাশছোঁয়া দামে মানুষের বিড়ম্বনাট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের তুলনায় এ বছর ইলিশের দাম বেড়েছে প্রায় ৩৩ শতাংশ।কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর তথ্যানুযায়ী, ২০১০ সালে দেশে ইলিশের গড় দাম ছিল কেজিপ্রতি ৪১৭ টাকা, ২০১৯ সালে ৭৮৯ টাকা আর ২০২৫ সালে ইলিশের কেজি গড়ে প্রায় আড়াই হাজার টাকা। আর ইলিশের দাম মাত্রাতিরিক্ত হওয়ায় মানুষ বিড়ম্বনায় পড়েছেন, বিশে করে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ মাত্রাতিরিক্ত দামের কারণে ভুলতে বসেছেন ইলিশের স্বাদ।বড় প্রকল্প নেওয়ার তাগিদমৎস্য অধিদপ্তর জানায়, নদী খনন ও নাব্য সংকট নিরসন ছাড়া ইলিশ সংকটের স্থায়ী সমাধান সম্ভব নয়। ইলিশের উৎপাদন স্বাভাবিক রাখতে এবং বৃদ্ধিকল্পে নিতে হবে বড় প্রকল্প। নদী ও মোহনায় ড্রেজিং, প্রজনন ক্ষেত্র রক্ষা, অবৈধ ট্রলিং প্রতিরোধ এবং জাটকা সুরক্ষা জরুরি।মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবদুর রউফ বলেন, নাব্য সংকটের পাশাপাশি ইলিশ প্রজনন ক্ষেত্রগুলোও ধ্বংস হয়েছে। সাগর সুরক্ষায় মৎস্য অধিদপ্তরের কার্যক্রম নেই। এ সুযোগে অবৈধ ট্রলিং ও জাটকা নিধনের কারণে উৎপাদন কমছে।দাম নির্ধারণে ট্যারিফ কমিশনের সুপারিশএদিকে ভরা মৌসুমেও ইলিশের চড়া দামের পরিপ্রেক্ষিতে দাম নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (বিটিটিসি)। ইলিশের আকার অনুযায়ী সর্বোচ্চ খুচরা দাম নির্ধারণ করার সুপারিশ করেছে সংস্থাটি। গতকাল ট্যারিফ কমিশন ইলিশ মাছের দাম নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। ওই প্রতিবেদনে দাম নির্ধারণের এই সুপারিশ করা হয়েছে। ট্যারিফ কমিশন সূত্রে জানা যায়, ইলিশের অস্বাভাবিক দামের কারণে বাজারে বেশ অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। গত পাঁচ বছওে ইলিশের দাম ৫৭ শতাংশ বেড়েছে। একইভাবে গত চার বছরে রপ্তানি মূল্যও বেড়েছে। চলতি সেপ্টেম্বরে ইলিশের কেজি ২ হাজার ২০০ টাকা পর্যন্ত উঠেছে।প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয় বাজারমূল্যের চেয়ে কম দামে ইলিশ রপ্তানি হয়। সেপ্টেম্বরে স্থানীয় বাজারে এক কেজি ইলিশের দাম সর্বনিম্ন ৯০০ টাকা এবং সর্বোচ্চ দাম ২ হাজার ২০০ টাকা। কিন্তু চলতি মাসে ভারতে রপ্তানি করা প্রতি কেজি ইলিশের দাম পড়েছে গড়ে ১ হাজার ৫৩৪ টাকা। ভারতে এখন পর্যন্ত ৯৭ টনের বেশি ইলিশ রপ্তানি হয়েছে।প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বিদ্যমান রপ্তানি মূল্যে যদি ব্যবসায়ীরা মুনাফা করতে পারেন, তাহলে স্থানীয় বাজারের মূল্যে ব্যবসায়ীরা উৎপাদন মূল্যের (সংগৃহীত মূল্য) তুলনায় অস্বাভাবিক হারে মুনাফা করছেন। ট্যারিফ কমিশন বলছে, গত চার মাসে ইলিশের দামের ঊর্ধ্বগতি বেশ লক্ষণীয় ছিল।গত জুনে প্রতি কেজি ইলিশের দাম ছিল ৬০০ থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা। জুলাইয়ে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৯০০ থেকে ২ হাজার টাকা। আগস্টে সরবরাহ বাড়ার ফলে দাম কিছুটা কমে হয় ৮০০ থেকে ২ হাজার টাকা। তবে সেপ্টেম্বরে তা বেড়ে ৯০০ থেকে ২ হাজার ২০০ টাকায় উন্নীত হয়। এছাড়া গত পাঁচ বছরে স্থানীয় বাজারে ইলিশের দাম কীভাবে বেড়েছে তার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে ট্যারিফ কমিশনের প্রতিবেদনে।এ বিষয়ে ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান মইনুল খান বলেন, সরেজমিন সমীক্ষায় দেখা যায়, ইলিশ মাছ প্রায় শতভাগ দেশীয় পণ্য হলেও বাজারে কৃত্রিমভাবে দাম বাড়ানো হচ্ছে। ইলিশ আহরণে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বা ডলারের উঠা-নামার কোন প্রভাব নেই। সমীক্ষায় চিহ্নিত হয়েছে, আহরণ পরবর্তী সময়ে মধ্যস্বত্বভোগীদের নানা স্তর ও তাদের অতিরিক্ত মুনাফা।তিনি বলেন, মূলত দাদন ব্যবসায়ীদের কারসাজি এর পেছনে বেশি ভূমিকা রাখছে। সমীক্ষায় এসব স্তর কমানোর উদ্যোগ নেওয়া, দাদন ব্যবসায়ীদের মনিটর করা এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ইলিশ মাছের খরচ বিশ্লেষণ করে এর সাইজ অনুযায়ী সর্বোচ্চ দাম নির্ধারণের সুপারিশ করা হয়েছে। এতে ইলিশের প্রান্তিক বিক্রেতা ন্যায্য দাম পাবে, অন্যদিকে ভোক্তাদের কাছে তা নির্ধারিত দামে বিক্রি হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।ভোরের আকাশ/এসএইচ
বাংলাদেশের জন্য প্রথমবারের মতো বিদেশি ঋণ গ্রহণে সীমা বেঁধে দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। সংস্থাটির শর্ত অনুযায়ী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সর্বোচ্চ ৮৪৪ কোটি ডলার পর্যন্ত ঋণ নিতে পারবে বাংলাদেশ।গত জুনে ঋণের চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির ১৩৪ কোটি ডলার ছাড়ের পর আইএমএফ ‘বাংলাদেশ কান্ট্রি রিপোর্ট’ প্রকাশ করে। সেখানে পরবর্তী কিস্তি পেতে যেসব শর্ত মানতে হবে, তার মধ্যে নতুন এ সীমা অন্যতম।শর্ত অনুযায়ী, ত্রৈমাসিকভিত্তিক ঋণের পরিমাণও নির্ধারণ করে দিয়েছে সংস্থাটি। প্রথম তিন মাসে সর্বোচ্চ ১৯১ কোটি, ছয় মাস শেষে ৩৩৪ কোটি, নয় মাসে ৪৩৪ কোটি এবং পুরো অর্থবছরে সর্বোচ্চ ৮৪৪ কোটি ডলার পর্যন্ত ঋণ নেওয়া যাবে। প্রতি তিন মাস অন্তর বিদেশি ঋণের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করবে আইএমএফ।অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) জানিয়েছে, গত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সরকার ৮৫৭ কোটি ডলার বিদেশি ঋণ নিয়েছিল। চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইতে ঋণ নেওয়া হয়েছে ২০ কোটি ২৪ লাখ ডলার। অর্থাৎ গত অর্থবছরের তুলনায় এবার কিছুটা কম ঋণ নিতে হবে।আইএমএফ ২০২৩ সালে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ অনুমোদন করলেও তখন এমন কোনো শর্ত ছিল না। তবে গত জুনে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি ছাড়ের সময় ঋণের পরিমাণ আরও ৮০ কোটি ডলার বাড়ানো হয় এবং মেয়াদ ছয় মাস বাড়ে। এরপর থেকেই নতুন শর্ত যুক্ত হয়েছে। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ এ কর্মসূচি থেকে মোট ৩৬০ কোটি ডলার পেয়েছে।অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আইএমএফের সর্বশেষ ঋণ স্থায়িত্ব বিশ্লেষণ (ডিএসএ) অনুসারেই এ সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। ওই বিশ্লেষণে বাংলাদেশকে টানা দুই অর্থবছর ধরে ‘মধ্যম ঝুঁকি’র দেশ হিসেবে মূল্যায়ন করা হয়েছে। আগে ‘কম ঝুঁকি’ বিবেচনায় থাকলেও রপ্তানি ও রাজস্ব আয়ের তুলনায় ঋণ পরিশোধের চাপ বেড়ে যাওয়ায় এখন ঝুঁকির মাত্রা বাড়ানো হয়েছে।ডিএসএ অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ঋণ-রপ্তানি অনুপাত দাঁড়ায় ১৬২.৭ শতাংশে, যা প্রাক্কলিত ১১৬-১১৮ শতাংশের তুলনায় অনেক বেশি। বিদেশি ঋণ-রাজস্ব অনুপাতও বেড়েছে। ফলে নতুন করে ঋণ নেওয়ার সক্ষমতা সীমিত হয়েছে।ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় মেগা প্রকল্প ও করোনা খরচের কারণে বিদেশি ঋণ ব্যাপকভাবে বেড়ে গিয়েছিল। এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ১৩ বছরে বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ তিনগুণেরও বেশি বেড়েছে—যা দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে দ্রুত ঋণ বৃদ্ধির রেকর্ড।সরকারি তথ্য বলছে, ২০০৯-১০ অর্থবছরে বৈদেশিক ঋণ ছিল ২০৩ কোটি ডলার, যা ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দাঁড়িয়েছে ৮০২ কোটি ডলারে। তবে অন্তর্বর্তী সরকারের কর্মকর্তাদের মতে, অতীতের তুলনায় এখন ঋণ নেওয়ার প্রবণতা কিছুটা কমেছে।ভোরের আকাশ/তা.কা
জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ দাবির মিথ্যা অভিযোগ করে শেষ পর্যন্ত সাময়িক বরখাস্ত হয়েছিলেন প্রতিষ্ঠানটির সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজুল ইসলাম। পাশাপাশি বেতন গ্রেডের নিম্নতর ধাপে অবনমিত করা হয়েছে। যদিও পরবর্তীতে বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে।অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব মো. আবদুর রহমান খানের সই করা আদেশ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। গত ২৫ সেপ্টেম্বর এ বিষয়ে আদেশ করা হয়েছে বলে শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির এক কর্মকর্তা।বরখাস্তের আদেশ সূত্রে জানা যায়, জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. এনায়েত হোসেনের বিরুদ্ধে তার অধস্তন কর্মকর্তা সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজুল ইসলাম এক লাখ টাকা ঘুষ দাবির অভিযোগ করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে অধিদপ্তর থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্তে প্রমাণিত হয় যে, মো. রিয়াজুল ইসলাম উদ্দেশ্যমূলকভাবে তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মো. এনায়েত হোসেনের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছেন। অভিযোগটি ভুয়া প্রমাণিত হবে বুঝতে পেরে পরে তিনি তদন্ত কমিটির কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেন। অসত্য অভিযোগ দায়ের করায় রিয়াজুল ইসলামের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮-এর বিধি ৩(খ) অনুযায়ী ‘অসদাচরণ’ এর অভিযোগে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়। একই বিধিমালার ১২(১) অনুযায়ী তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।এরপর কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করা হলে রিয়াজুল ইসলাম জবাব দেন এবং ব্যক্তিগত শুনানির আবেদন করেন। গত ১৬ সেপ্টেম্বর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানি শেষে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় শাস্তি হিসেবে তাকে বেতন গ্রেডের নিম্নতর ধাপে অবনমন করা হয়। জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫-এর ৯ম গ্রেড (বেতন স্কেল ২২,০০০-৫৩,০৬০ টাকা) অনুযায়ী তার নতুন বেতন নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৯ হাজার ৫৭০ টাকা। একই সঙ্গে তার সাময়িক বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার করা হয়।ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মো. এনায়েত হোসেনকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে হয়রানি করার কারণে তার বিরুদ্ধে লঘুদণ্ড হিসেবে বেতন গ্রেডের নিম্নতর ধাপে অবনমিত করার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।ভোরের আকাশ/তা.কা
টানা আট দফা বাড়ার পর কমতে শুরু করেছে স্বর্ণের দাম। তিন দফা বাড়ার পর আবারও ভরিপ্রতি দামে কাটছাঁট করেছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাতে নতুন দাম ঘোষণা করা হয়, যা রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) থেকে কার্যকর হবে।বাজুসের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী—প্রতি ভরি ২২ ক্যারেট স্বর্ণের দাম কমে দাঁড়িয়েছে ১,৯২,৯৬৯ টাকা।২১ ক্যারেট স্বর্ণের দাম হবে ১,৮৪,১৯৮ টাকা।১৮ ক্যারেটের দাম ১,৫৭,৮৮৪ টাকা।সনাতন পদ্ধতিতে প্রতি ভরি স্বর্ণ বিক্রি হবে ১,৩১,০৪৫ টাকায়।এর আগে শনিবার পর্যন্ত প্রতি ভরি ২২ ক্যারেট স্বর্ণের দাম ছিল ১,৯৪,৮৫৯ টাকা, ২১ ক্যারেট ১,৮৬,০০৬ টাকা, ১৮ ক্যারেট ১,৫৯,৪২৪ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতিতে ১,৩২,৩৫২ টাকা।বাজুস জানিয়েছে, পরবর্তী ঘোষণা না আসা পর্যন্ত এই দাম কার্যকর থাকবে। তবে বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে ৫ শতাংশ ভ্যাট এবং ন্যূনতম ৬ শতাংশ মজুরি যোগ হবে। গয়নার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরি ভিন্ন হতে পারে। ভোরের আকাশ/হ.র