রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধ
তারেক অপু, আশুগঞ্জ
প্রকাশ : ১৯ এপ্রিল ২০২৫ ১২:০০ এএম
ইউক্রেনের হামলায় আশুগঞ্জের তরুণ নিহত
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার এক তরুণ নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তার এক সহযোদ্ধা গত বৃহস্পতিবার মুঠোফোনে পরিবারকে এ তথ্য জানিয়েছেন। তারা রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধ করছিলেন।
নিহত মোহাম্মদ আকরাম হোসেন (২৫) উপজেলার লালপুর ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়। সংসারের হাল ধরতেই রাশিয়ায় পাড়ি জমিয়েছিলেন তিনি।
জানা গেছে, আকরামের এক বোনের বিয়ে দিতে গিয়ে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন তার বাবা মোরশেদ মিয়া। পরে ছেলে আকরাম নরসিংদীর পলাশ উপজেলার আমতলীর একটি ট্রেনিং সেন্টারে ওয়েল্ডারের কাজ শেখেন। পরে ঋণ করে প্রায় আট মাস আগে তাকে রাশিয়ায় পাঠানো হয়। খরচ হয় সাড়ে ছয় লাখ টাকা।
রাশিয়ায় যাওয়ার পর গত আট মাস সেখানকার একটি প্রতিষ্ঠানে ওয়েল্ডার হিসেবে কাজ করেন। প্রতি মাসে ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ করে টাকা দেশে পাঠান তিনি। আড়াই মাস আগে রাশিয়াতেই দালালের খপ্পড়ে পড়ে আকরাম দেশটির সেনাবাহিনীতে চুক্তিভিত্তিক যোদ্ধা হিসেবে যুক্ত হন। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার হয়ে অংশ নেন। রাশিয়ার হয়ে ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ নেওয়ার ছবি ফেসবুকে পোস্টও করেছিলেন আকরাম।
নিহত আকরামের বাবা মোরশেদ মিয়া বলেন, ছেলে জানিয়েছিলেন- রাশিয়ার সেনাবাহিনীর সদস্যরা কথা না শুনলে মারধর করতেন। গত কয়েক দিন আগে ছেলে জানিয়েছিলেন, রাশিয়ায় তার ব্যাংক হিসাবে ৪ লাখ টাকা জমা হয়েছে। গত রোববার বেলা ১১টার দিকে ছেলের সঙ্গে সর্বশেষ কথা হয়। পরিস্থিতি ভালো না বলে জানিয়েছিলেন।
বৃহস্পতিবার মাগরিবের নামাজের পর রাশিয়া থেকে ফোন করে একজন জানান, ইউক্রেনের হামলায় আকরাম নিহত হয়েছেন। লাশ দেশে ফেরত আনতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মোরশেদ মিয়া।
আকরামের মা মোবিনা বেগম বলেন, ছেলের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ হতো। ১৩ এপ্রিল থেকে পরিবারের সঙ্গে আকরামের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। রাশিয়ায় পরিচিতজনেরাও তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিলেন না।
আকরামের পরিবারের বরাত দিয়ে লালপুর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. কামাল উদ্দিন বলেন, রাশিয়ার সরকার তাকে নাগরিকত্ব দিয়েছিল। তাকে প্রশিক্ষণ দিয়ে যুদ্ধে পাঠায়।
রাশিয়া থেকে মুঠোফোনে তার এক সহযোদ্ধা জানিয়েছেন, ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় আকরাম নিহত হয়েছেন। পরিবারের সদস্যরা আকরামের লাশ দেশে আনতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
এ বিষয়ে আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাফে মোহাম্মদ ছড়া বলেন, বিষয়টি জানার পরপরই প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। মন্ত্রণালয় বলেছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে যোগাযোগ করতে।
ভোরের আকাশ/এসএইচ
রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধ
তারেক অপু, আশুগঞ্জ
প্রকাশ : ২০ ঘন্টা আগে
আপডেট : ৩ ঘন্টা আগে
ইউক্রেনের হামলায় আশুগঞ্জের তরুণ নিহত
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার এক তরুণ নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তার এক সহযোদ্ধা গত বৃহস্পতিবার মুঠোফোনে পরিবারকে এ তথ্য জানিয়েছেন। তারা রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধ করছিলেন।
নিহত মোহাম্মদ আকরাম হোসেন (২৫) উপজেলার লালপুর ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়। সংসারের হাল ধরতেই রাশিয়ায় পাড়ি জমিয়েছিলেন তিনি।
জানা গেছে, আকরামের এক বোনের বিয়ে দিতে গিয়ে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন তার বাবা মোরশেদ মিয়া। পরে ছেলে আকরাম নরসিংদীর পলাশ উপজেলার আমতলীর একটি ট্রেনিং সেন্টারে ওয়েল্ডারের কাজ শেখেন। পরে ঋণ করে প্রায় আট মাস আগে তাকে রাশিয়ায় পাঠানো হয়। খরচ হয় সাড়ে ছয় লাখ টাকা।
রাশিয়ায় যাওয়ার পর গত আট মাস সেখানকার একটি প্রতিষ্ঠানে ওয়েল্ডার হিসেবে কাজ করেন। প্রতি মাসে ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ করে টাকা দেশে পাঠান তিনি। আড়াই মাস আগে রাশিয়াতেই দালালের খপ্পড়ে পড়ে আকরাম দেশটির সেনাবাহিনীতে চুক্তিভিত্তিক যোদ্ধা হিসেবে যুক্ত হন। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার হয়ে অংশ নেন। রাশিয়ার হয়ে ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ নেওয়ার ছবি ফেসবুকে পোস্টও করেছিলেন আকরাম।
নিহত আকরামের বাবা মোরশেদ মিয়া বলেন, ছেলে জানিয়েছিলেন- রাশিয়ার সেনাবাহিনীর সদস্যরা কথা না শুনলে মারধর করতেন। গত কয়েক দিন আগে ছেলে জানিয়েছিলেন, রাশিয়ায় তার ব্যাংক হিসাবে ৪ লাখ টাকা জমা হয়েছে। গত রোববার বেলা ১১টার দিকে ছেলের সঙ্গে সর্বশেষ কথা হয়। পরিস্থিতি ভালো না বলে জানিয়েছিলেন।
বৃহস্পতিবার মাগরিবের নামাজের পর রাশিয়া থেকে ফোন করে একজন জানান, ইউক্রেনের হামলায় আকরাম নিহত হয়েছেন। লাশ দেশে ফেরত আনতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মোরশেদ মিয়া।
আকরামের মা মোবিনা বেগম বলেন, ছেলের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ হতো। ১৩ এপ্রিল থেকে পরিবারের সঙ্গে আকরামের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। রাশিয়ায় পরিচিতজনেরাও তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিলেন না।
আকরামের পরিবারের বরাত দিয়ে লালপুর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. কামাল উদ্দিন বলেন, রাশিয়ার সরকার তাকে নাগরিকত্ব দিয়েছিল। তাকে প্রশিক্ষণ দিয়ে যুদ্ধে পাঠায়।
রাশিয়া থেকে মুঠোফোনে তার এক সহযোদ্ধা জানিয়েছেন, ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় আকরাম নিহত হয়েছেন। পরিবারের সদস্যরা আকরামের লাশ দেশে আনতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
এ বিষয়ে আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাফে মোহাম্মদ ছড়া বলেন, বিষয়টি জানার পরপরই প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। মন্ত্রণালয় বলেছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে যোগাযোগ করতে।
ভোরের আকাশ/এসএইচ