ইরানকে বৈঠকের প্রস্তাব আইএইএ’র, পাঠানো হয়েছে চিঠি
ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে তেহরানের সঙ্গে সরাসরি বৈঠকে বসতে চায় জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষণ সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি (IAEA)। এ লক্ষ্যে সংস্থাটির মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রসি ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সৈয়দ আব্বাস আরাগচি-কে একটি আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠিয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স (সাবেক টুইটার)-এ পোস্ট করা এক বার্তায় বিষয়টি নিজেই নিশ্চিত করেন গ্রসি। তিনি লিখেছেন, “ইরান যদি আইএইএ’র সঙ্গে সহযোগিতা ফের শুরু করে, তাহলে তাদের পরমাণু প্রকল্প নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলা বিতর্ক কূটনৈতিকভাবে সমাধান করা সম্ভব হবে।”
চিঠিটি পাঠানোর খবরটি আসে এমন এক সময়ে, যখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে।
তবে এখনো ইরানের পক্ষ থেকে এই চিঠির বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি। যদিও তেহরান বরাবরই দাবি করে আসছে, তাদের পরমাণু কর্মসূচি সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ এবং পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই।
প্রসঙ্গত, ১৯৭০ সালে ইরান জাতিসংঘের এনপিটি (NPT) বা পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। তখন ইরানে শাসন করছিলেন শাহ রেজা পাহলভী। সেই চুক্তির আওতায় ইরান আইএইএ’র সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল এবং জানায়, দেশটি কখনোই পরমাণু অস্ত্র তৈরির পথ বেছে নেবে না।
তবে, গত ৬ জুন আইএইএ এক বিবৃতিতে জানায়, ইরান যে মাত্রার সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম মজুত করছে, তা দিয়ে পরমাণু অস্ত্র তৈরি করা সম্ভব। এরপর ১৩ জুন ইরানের বিভিন্ন স্থাপনায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ওই হামলার কারণ হিসেবে আইএইএ’র প্রতিবেদনকেই উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “ইরানকে পরমাণু অস্ত্র তৈরির প্রচেষ্টা থেকে বিরত রাখতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।”
এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে ১৬ জুন ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাঘাই বলেন, “ইরানে ইসরায়েলি হামলার ক্ষেত্র তৈরি করে দিয়েছে আইএইএ। তাদের প্রতিবেদনই হামলার অজুহাত হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।”
সূত্র: টাইমস অব ইসরায়েল
ভোরের আকাশ//হ.র
সংশ্লিষ্ট
দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশ থাইল্যান্ড এবং কম্বোডিয়ার মধ্যে ফের উস্কে উঠেছে সংঘাত।সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সকালে থাইল্যান্ডের সেনারা কম্বোডিয়া সীমান্ত এলাকায় বিমান হামলা চালায়।থাইল্যান্ডের দাবি, হামলার আগে কম্বোডিয়ার সেনারা তাদের সৈন্যদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়, যার ফলে একজন থাই সৈন্য নিহত ও চারজন আহত হন।এক বিবৃতিতে থাই সেনাবাহিনী জানিয়েছে, রোববার স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ১৫মিনিটে সি সা কেত প্রদেশের সীমান্ত লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে কম্বোডীয় সেনবাহিনী। এতে দু’জন থাই সেনা আহত হন। এ ঘটনার পর পাল্টা জবাব দেয় থাই সেনবাহিনীও। স্থানীয় সময় ২টা ৫০ পর্যন্ত স্থায়ী হয় সংঘাত।বিবৃতে থাই সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আহত দুই সেনার একজনের পায়ে গুলি লেগেছে, অপরজন বুকে আঘাত পেয়েছেন। সংঘাত থামার পরপরই কম্বোডিয়ার সীমান্তবর্তী চার থাই প্রদেশ বুরি রাম, সুরিন, সি সা কেত এবং উবন রাতচাথানি থেকে কয়েক হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়েছে থাইল্যান্ডের সেনা ও সীমান্তরক্ষী বাহিনী।রোববার জাতিসংঘে কম্বোডিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছিল থাইল্যান্ড। সেখানে বলা হয়েছিল থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সীমান্ত এলাকায় থাই ভূখণ্ডে গোপনে বড় এলাকা জুড়ে ল্যান্ডমাইন পেতেছে কম্বোডিয়া। এসব ল্যান্ডমাইনের বিস্ফোরণে বেশ কয়েকজন থাই ও চীনা নাগরিক আহত হয়েছেন। জাতিসংঘকে এ ঘটনা তদন্তের জন্য আহ্বান জানিয়েছিল থাই সরকার।থাইল্যান্ড এ অভিযোগ জানানোর কিছু সময়ের মধ্যেই সি সা কেত প্রদেশ সংঘাত শুরু হয় দু’দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে।সীমান্ত নিয়ে বিবাদের জেরে দীর্ঘ ১৫ বছরের যুদ্ধবিরতি ভেঙে গত জুলাই মাসে সংঘাতে জড়িয়েছিল থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া।৫ দিন ধরে চলা সেই সংঘাতে নিহত হয়েছিলেন দু’দেশের ৩২ জন নাগরিক এবং আহত হয়েছিলেন আরও কমপক্ষে ৩০ জন। পরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের হস্তক্ষেপে যুদ্ধবিরতি শুরু হয় থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়ার মধ্যে।সূত্র : ব্যাংকক পোস্ট, রয়টার্সভোরের আকাশ/মো.আ.
ইউরোপে পৌঁছানোর আশায় ভূমধ্যসাগরের বিপজ্জনক জলপথ পাড়ি দিতে গিয়ে আরও এক মর্মান্তিক ট্র্যাজেডির শিকার হলেন অভিবাসনপ্রত্যাশীরা। গ্রিসের ক্রিট দ্বীপের কাছাকাছি একটি আধাভাসা নৌকা থেকে কমপক্ষে ১৭ জন অভিবাসী ও আশ্রয়প্রার্থীর মরদেহ উদ্ধার করেছে দেশটির কোস্টগার্ড।শনিবার (৬ ডিসেম্বর) ক্রিটের দক্ষিণ পশ্চিমে প্রায় ২৬ নটিক্যাল মাইল (৪৮ কিলোমিটার) দূরে এই মরদেহগুলো পাওয়া যায়।গ্রিস কোস্টগার্ডের একজন মুখপাত্র এএফপিকে জানিয়েছেন, মৃতদের সবাই পুরুষ এবং তারা তরুণ ছিলেন। নৌকাটির দুই পাশ বসে যাওয়ায় যাত্রীদের খুব কম জায়গায় গাদাগাদি করে থাকতে হয়েছিল।এই ঘটনায় মাত্র দুইজনকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তারা গুরুতর অবস্থায় বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। উদ্ধার হওয়া দুই ব্যক্তি কোস্টগার্ডকে জানিয়েছেন, খারাপ আবহাওয়ার কারণে নৌকাটি ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছিল। তাদের কাছে পর্যাপ্ত খাবার, পানি বা ঠান্ডা থেকে রক্ষা পাওয়ার মতো কোনো ব্যবস্থা ছিল না। এমনকি উদ্ধার হওয়ার সময়ও নৌকাটির ভেতরে পানি ঢুকে ডুবে যাচ্ছিল বলে তারা জানান।ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহগুলো পাঠানো হয়েছে, যা নিশ্চিত করবে পানিশূন্যতা বা অন্য কোনো কারণে তাদের মৃত্যু হয়েছে কি না।তুরস্কের একটি কার্গো জাহাজ প্রথম এই নৌকাটিকে দেখতে পেয়ে গ্রিক কর্তৃপক্ষকে খবর দেয়। এরপর গ্রিক কোস্টগার্ড দ্রুত দুটি জাহাজ পাঠায়। উদ্ধার তৎপরতায় ইইউ সীমান্তরক্ষী সংস্থা ফ্রন্টেক্সও যোগ দেয়।আল জাজিরা জানিয়েছে, গত এক বছরে অভিবাসীরা লিবিয়া থেকে ইউরোপে পৌঁছানোর পথ হিসেবে নতুন করে ক্রিট দ্বীপকে বেছে নিয়েছেন। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে, চলতি বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ১৬ হাজার ৭৭০ জনের বেশি আশ্রয়প্রার্থী ক্রিটে পৌঁছেছেন।এমন পরিস্থিতিতে গ্রিসের রক্ষণশীল সরকার গত জুলাই মাসে অভিবাসীদের আশ্রয় আবেদনের শুনানি স্থগিত করে দিয়েছে। মূলত, ২০১১ সালে মুয়াম্মার গাদ্দাফিকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকেই লিবিয়ায় যে বিশৃঙ্খলা ও অস্থিরতা চলছে, তার ফলেই এই বিপজ্জনক সমুদ্রপথ পাড়ি দিয়ে ইউরোপে পাড়ি জমানোর প্রবণতা বেড়েছে।ভোরের আকাশ/তা.কা
গাজায় ইসরায়েলি দখলদারত্ব শেষ হলেই কেবল স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করবে উপত্যকাটির প্রতিরোধ গোষ্ঠী হামাস। শনিবার (৬ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে সশস্ত্র সংগঠনটির আলোচক দলের প্রধান খলিল আল-হায়া। তিনি বলেন, ইসরায়েলের দখলদারি ও আগ্রাসনের কারণেই আমরা সঙ্গে অস্ত্রশস্ত্র রাখছি। দখলদারির অবসান ঘটলে এসব অস্ত্র রাষ্ট্রের হাতে তুলে দেওয়া হবে।রাষ্ট্র বলতে একটি সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের কথা বুঝিয়েছেন বলে আল-হায়ার দফতর জানিয়েছে।খলিল আল-হায়া আরও বলেন, আমরা গাজায় যুদ্ধবিরতি পর্যবেক্ষণ এবং সীমান্তে নজরদারির জন্য জাতিসংঘের বাহিনী মোতায়েনের প্রস্তাব মেনে নিয়েছি। তবে শুধু হামাসকে নিরস্ত্রীকরণের লক্ষ্যে কোনো আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েন করা হলে, তা মেনে নেওয়া হবে না।গত ১০ অক্টোবর থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতি চললেও তা লঙ্ঘন করে উপত্যকাটিতে হামলা চালানো ইসরায়েলের নিত্যদিনের ঘটনা। এতে প্রতিদিন হতাহত হচ্ছেন অনেকে। স্থানীয় সময় শনিবার (৬ ডিসেম্বর) ‘ইয়েলো লাইন’ অতিক্রমের অভিযোগে আবারও নিরীহ ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলি ছোঁড়ে নেতানিয়াহুর বর্বর সেনাবাহিনী।পূর্বাঞ্চলে হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বিভিন্ন স্থাপনা। প্রাণ বাঁচাতে শহরের অন্য প্রান্তে আশ্রয়ের খোঁজে ছুটছেন বাসিন্দারা। একইদিন, পশ্চিম তীরের বাসিন্দাদের ওপর হামলা চালায় অবৈধ বসতি স্থাপনকারীরাএদিকে, রাফা সীমান্ত শুধুমাত্র গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের বের করে দেওয়ার জন্য খুলে দিয়ে মিশরে পাঠানোর পরিকল্পনার বিরোধিতা করেছেন মুসলিম দেশের নেতারা। দোহায় এক সম্মেলন শেষে যৌথ বিবৃতিতে দেশগুলো জানায়, ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় হওয়া চুক্তি অনুযায়ী রাফা সীমান্ত দুই দিক থেকেই খুলে দেওয়া উচিত। একই সঙ্গে ফিলিস্তিনিদের নিজ ভূখণ্ডে থেকে তা পুনর্নির্মাণের বিষয়েও সহমত জানান তারা।ভোরের আকাশ/মো.আ.
যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা সীমান্তে ৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প হয়েছে। তবে এর জেরে সুনামির কোনো আশঙ্কা নেই এবং এখন পর্যন্ত প্রাণহানি বা ক্ষয়ক্ষতির কোনো তথ্য আসেনি।যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার স্থানীয় শনিবার (৬ ডিসেম্বর ) বেলা ১১টা ৪১ মিনিটে হয়েছে এ ভূমিকম্প। এক বিবৃতিতে মার্কিন ভূতত্ত্ব জরিপ সংস্থা ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভে (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, ভূমিকম্পের কেন্দ্র বা এপিসেন্টার হলো যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা অঙ্গরাজ্য এবং কানাডার ইউকন প্রদেশের সীমান্তবর্তী এবং প্রত্যন্ত একটি এলাকা। আলাস্কার জুনেউ শহর থেকে ২৩০ কিলোমিটার উত্তরপশ্চিমে এবং ইউকনের রাজধানী হোয়াইটহর্স থেকে এটি ২৫০ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থান এই এপিসেন্টারের।এপিসেন্টার ভূপৃষ্ঠের মাত্র ১০ কিলোমিটার গভীরে এপিসেন্টারটির অবস্থান ছিল বলে জানিয়েছে ইউএসজিএস।কানাডার রয়েল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশ হোয়াইটহর্স শাখার সার্জেন্ট ক্যালিস্টা ম্যাকলিওড এএফপিকে বলেছেন, ভূমিকম্পটি বেশ শক্তিশালী ছিল এবং বহু মানুষ সেটির কম্পন অনুভব করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই ভূমিকম্পের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে পোস্ট করেছে। তবে আমরা এখনও প্রাণহানি বা ক্ষয়ক্ষতির কোনো তথ্য পাইনি।ভোরের আকাশ/তা.কা