ভোরের আকাশ ডেস্ক
প্রকাশ : ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১২:৫৬ পিএম
সংগৃহীত ছবি
ফল খাওয়ার মানে হলো পুষ্টির পাওয়ার পাশাপাশি অতিরিক্ত ওজন কমানোর একটি স্মার্ট উপায়। ফলে থাকে প্রচুর পুষ্টি, কম ক্যালোরি এবং উচ্চ ফাইবার, যা ওজন কমানোর জন্য উপযুক্ত। সঠিক সময়ে এবং সঠিক উপায়ে ফল খাওয়ার মাধ্যমে ওজন কমানো সহজ হতে পারে। ফিটনেসের জন্য স্বাস্থ্যকর এবং টেকসই পদ্ধতির জন্য ফলকে আপনার সুষম খাদ্যের একটি অংশ করে নিন।
আধুনিক জীবনযাত্রায় অনেকে নিজেকে সময় দেওয়ার মতো সময়ও খুঁজে পান না। সারা দিন বিভিন্ন কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। আর এই ব্যস্ততার মধ্যে খাদ্যাভ্যাসেও পরিবর্তন চলে আসে। অনিয়ন্ত্রিত এই খাদ্যাভ্যাসের কারণে ওজন বাড়াসহ শরীরে দেখা দেয় নানা সমস্যা।
স্বাস্থ্য, সৌন্দর্য ধরে রাখা বা ওজন কমানোর জন্য অনেক সময় মানুষ অদ্ভুত ডায়েট ট্রেন্ডের দিকে আকৃষ্ট হন। এর মধ্যে একটিই হলো শুধু ফল খাওয়া বা ফ্রুট অনলি ডায়েট। সামাজিক মাধ্যমে প্রায়ই এই দাবি দেখা যায় যে, ফল খেলে ত্বক উজ্জ্বল হয়, শরীর হালকা লাগে এবং ওজন দ্রুত কমে।
কিন্তু এটি কি সত্যিই সম্ভব? শুধু ফল খেয়ে কি আমরা বেঁচে থাকতে পারি?
প্রথমেই জানা জরুরি, ফলভিত্তিক ডায়েট কী। এই ডায়েটে মানুষ তাদের খাবার প্রায় সম্পূর্ণভাবে ফল পর্যন্ত সীমিত রাখে। কেউ কেউ সামান্য বাদাম বা বীজ অন্তর্ভুক্ত করেন, কিন্তু প্রধান খাবার ফলই থাকে। ফলের মধ্যে থাকে পানি, ফাইবার, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও ভিটামিন, যা স্বাস্থ্যবানদের জন্য উপকারী।
কিন্তু শুধু ফলের ওপর নির্ভর করলে অনেক গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদানের অভাব হতে পারে।
আমরা যখন শুধু ফল খাই, তখন সবচেয়ে প্রথম সমস্যা হয় প্রোটিনের অভাব। আমাদের শরীরের পেশী মেরামত, কোষ ও টিস্যু গঠনের জন্য প্রোটিন প্রয়োজন। এই অভাব পূরণ না হলে দুর্বলতা, ক্লান্তি ও পেশীর ক্ষয় হতে পারে। এ ছাড়া ভিটামিন বি ১২, ক্যালসিয়াম, আয়রন ও ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিডের অভাবের ঝুঁকি বাড়ে।
এসব উপাদান হাড়, রক্ত, মস্তিষ্ক ও হৃদয়ের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আরেকটি বড় সমস্যা হলো মেটাবলিজম ও রক্তে শর্করার পরিবর্তন। ফলের মধ্যে প্রাকৃতিক চিনি বা ফ্রুক্টোজ থাকে। যদি শুধু ফল খাওয়া হয়, তাহলে এই চিনি হঠাৎ বৃদ্ধি পেতে পারে এবং রক্তে শর্করা ওঠানামা করতে পারে।
যারা ডায়াবেটিস বা ইনসুলিন প্রতিরোধের সমস্যায় ভুগছেন, তাদের জন্য এটি বিপজ্জনক হতে পারে। পাশাপাশি, প্রোটিন ও ফ্যাটের অভাব মেটাবলিজমকে ধীর করে দেয়, ফলে শুরুতে ওজন কমানোর আকাঙ্ক্ষা প্রভাবিত হতে পারে।
পাচনতন্ত্রেও এর গভীর প্রভাব পড়ে। ফলের মধ্যে ফাইবার থাকে, যা হজমে সহায়ক। কিন্তু আমরা যদি শুধু জুস বা হাতে গোনা কিছু ফলের ওপর নির্ভর করি, তাহলে অন্ত্রে থাকা ভালো ব্যাকটেরিয়ার ওপর প্রভাব পড়তে পারে। ফলস্বরূপ পেট ফোলা, গ্যাস বা হজমজনিত সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।
মানসিক স্বাস্থ্যের দিক থেকে দেখা যায়, খুব সীমিত, কড়া ও দীর্ঘ সময় ধরে শুধু ফল খাওয়া মানসিক চাপ, খাওয়ার প্রতি অনিয়ন্ত্রিত অভ্যাস ও সামাজিক চাপ সৃষ্টি করতে পারে। মানুষ খাবারের চিন্তায় উদ্বিগ্ন থাকে, আকাঙ্ক্ষা বৃদ্ধি পায় এবং সামাজিক মেলামেশাও কঠিন হয়ে পড়ে।ভিটামিন ও সাপ্লিমেন্ট কিনুন
সুষম ডায়েটে ফল অন্তর্ভুক্ত করলে হৃদরোগ, স্ট্রোক, ক্যান্সার ও প্রদাহের ঝুঁকি কমে। ফলের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও ফাইটোকেমিক্যাল আমাদের শরীরকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। ফাইবার আমাদের পেট ভরা অনুভব করায় এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হয়।
ভোরের আকাশ/তা.কা