আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ : ১৯ আগস্ট ২০২৫ ০৮:২০ পিএম
১৬ বছর পর নির্বাচনে আইন প্রয়োগের ক্ষমতা ফিরে পাচ্ছে সশস্ত্র বাহিনী
দীর্ঘ ১৬ বছর পর জাতীয় নির্বাচনে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা হিসেবে আবারও দায়িত্ব পালনের ক্ষমতা পাচ্ছে সশস্ত্র বাহিনী। ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) ১৯৭২’ সংশোধনের মাধ্যমে সেনাবাহিনীকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সংজ্ঞায় অন্তর্ভুক্ত করার প্রক্রিয়া চলছে।
নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ কালের কণ্ঠকে বলেন, “জনগণ এবং রাজনৈতিক দলগুলো বিশ্বাস করে, সেনাবাহিনী মাঠে থাকলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব। সংশোধনের ফলে সেনারা আর কারো নির্দেশের অপেক্ষায় থাকতে হবে না; নিজেরাই নির্বাচনী আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পদক্ষেপ নিতে পারবে।”
নির্বাচন কমিশন গত ১১ আগস্ট আরপিও সংশোধনের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। এটি রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে কার্যকর করা হবে। সংশোধন কার্যকর হলে নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের সময় সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা পুলিশ কর্মকর্তাদের মতোই নির্বাচনী অপরাধে কাউকে বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার করতে পারবেন।
এর আগে ২০০১ সালে সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আরপিওতে সংশোধন এনে সেনাবাহিনীকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। তবে ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে সেনাবাহিনীকে সেই সংজ্ঞা থেকে বাদ দেয়। ফলে জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোতে সেনারা কার্যত ক্ষমতাহীন থেকে যায়।
বর্তমান সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান সম্প্রতি অফিসার্স অ্যাড্রেসে জানান, নির্বাচনের তারিখ ইতিমধ্যে ঘোষণা হয়েছে এবং সেনাবাহিনী নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনে প্রস্তুত। তিনি সব সেনা সদস্যকে আইন মেনে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান।
নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ বলেন, “আরপিও সংশোধন নিয়ে কাজ চলছে। খুব দ্রুতই উপদেষ্টা পরিষদে পাঠানো হবে।”
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানিয়েছেন, আসন্ন নির্বাচনে ৮০ হাজারের বেশি সেনাসদস্য মোতায়েন করা হবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, অতীতে সেনাবাহিনীকে কার্যকরভাবে ব্যবহার না করায় একের পর এক প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন হয়েছে। এবার সশস্ত্র বাহিনীকে প্রয়োজনীয় ক্ষমতা দিয়ে মাঠে রাখলে জনগণ আস্থা পাবে এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হবে।
নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সদস্য ড. আবদুল আলীম বলেন, “ছবিসহ ভোটার তালিকা ও জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি—এমন ঐতিহাসিক কাজও সশস্ত্র বাহিনীর অবদান। তাদের নিরপেক্ষ ভূমিকা নির্বাচনকে বিশ্বাসযোগ্য করে তোলে। এবার সশস্ত্র বাহিনী ক্ষমতাসহ মাঠে থাকবে, যা ভোটারদের জন্য স্বস্তির বার্তা।”
ভোরের আকাশ//হ.র