<
× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

নয়া পে-স্কেল কার্যকরে জনদুর্ভোগ বৃদ্ধির শঙ্কা

মো. রেজাউর রহিম

প্রকাশ : ০৪ নভেম্বর ২০২৫ ১২:৩৮ এএম

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

দেশে দীর্ঘবছরের ফ্যাসিস্ট আওয়ামী শাষণামলে দ্রব্যমূল্যেও ওপর কোনো নিয়ন্ত্রণ ছিল না। প্রায় প্রতিদিনি, প্রতি সপ্তাহেই কোনো য্যেক্তি কারণ ছাড়াই নিত্যপণ্যের দাম বাড়তো। অভিযোগ ছিল, তৎকালীন সরকারের একশ্রেণির লোকের মদদে ‘সিন্ডিকেট’ করে পণ্যের দাম বাড়ানো হতো। আওয়ামী সরকারের পতনের পর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার পর কিছুদিন দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে থাকলেও আস্তে আস্তে আবার সক্রিয় হয়ে ওঠে পুরোনো সেই সিন্ডিকেট। ইচ্ছে মাফিক দাম বাড়াতে থাকে পণ্যের। তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দ্রব্যমূল্য মানুষের ক্রয়কক্ষমতার মধ্যে রাখতে সর্বাত্বক প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। যদিও বিষয়টি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

এ অবস্থায় আবার সরকারি কর্মচারীদের জন্য আসছে নতুন পে-স্কেল, যা আগামী জানুয়ারি থেকে কার্যকর হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে। আর সরকারি কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধির এ অজুহাতে লাগামহীন দ্রব্যমূল্য আরও একবার বৃদ্ধির আশংকা করছেন দেশের সাধারণ মানুষ। সার্বিক অবস্থায়, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে পণ্যমূল্য বৃদ্ধি, বাসাভাড়া ও জীবনযাত্রার ব্যয় অরেকদফা বৃদ্ধি জনদুর্ভোগ আরো বাড়িয়ে দেবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।  

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী জানুয়ারি থেকে কার্যকর হচ্ছে নতুন পে-স্কেল। নতুন পে-স্কেলে সরকারি কর্মচারীদের বেতন নব্বই থেকে সাতানব্বই শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো হচ্ছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এক সিদ্ধান্তে দেশের প্রায় ১৬ লাখ সরকারি চাকরিজীবীর বেতন এক লাফে প্রায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি পচ্ছে। আর সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তা ও এমপিওভুক্ত শিক্ষকসহ নতুন স্কেলের আওতায় পড়বে প্রায় ২২ লাখ পরিবার। এসব পরিবারে এখন আনন্দের বন্যা বইলেও বিষাদের সুর বাজতে শুরু করেছে দেশের বেসরকারি কর্মচারীদের প্রায় চার কোটি পরিবারে। কারণ সরকারি কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধির এ অজুহাতে লাগামহীন দ্রব্যমূল্য আরও একবার বাড়ার আশংকায় দুশ্চিন্তায় পড়েবে বলে আশংকা বিশেষজ্ঞদের।

সূত্র জানায়, অন্যদিকে নতুন পে-স্কেল কার্যকর হলে ২২ লাখ সরকারি কর্মচারীই আয়করের আওতাভুক্ত হবেন। আর নতুন পে স্কেল কার্যকর হলে বাতিল হবে তাদের বেতনবহির্ভূত ভাতা ও সম্মানী। অন্যদিকে, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিকট থেকে বাসা ভাড়াবাবদ কেটে নেওয়া সরকারি আয় বাড়বে বলেও আশা করছে সরকার। তবে নতুন পে স্কেল কার্যকর হলে বিপরীতে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ভোগাবে পুরো জাতিকে। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠে দেশের সব সুযোগ-সুবিধা কি শুধু সরকারি কর্মচারীদের জন্যই প্রযোজ্য হবে? দেশের বেসরকারি খাতে কর্মরত কয়েক কোটি মানুষের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির বিষয়টি কি সরকার আমলে নেবে না? বেসরকারি কর্মচারীরা কি দেশের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক? এসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সরকারের ‘সমতা নীতি অনুসরণ জরুরি বলেও মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। অন্যথায় দেশে বিদ্যমান বৈষম্য আরো বৃদ্ধি ও সামাজিক-অর্থনৈতিক ‘ভারসাম্যহীনতা’ আরো বাড়তে পারে, যা সার্বিকভাবে রাষ্ট্রের জন্য কল্যাণকর নয় বলেও মনে করেন তারা।    

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে প্রায় ছয় কোটি মানুষ কর্মসংস্থানে যুক্ত আছেন। এদের মধ্যে প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি মানুষ অনানুষ্ঠানিক খাতে কাজ করেন।

সংশ্লিষ্টদের মতে, দীর্ঘদিন ধরে বেতন না বাড়ায় তারা অর্থনৈতিক চাপে রয়েছে। বাড়িভাড়া, খাদ্য ও অন্যান্য জীবনের প্রয়োজনীয় খরচ মেটাতে তারা হিমশিম খাচ্ছেন। করোনা মহামারি ও বৈশ্বিক সংকটের কারণে তাদের আর্থিক দুরবস্থা আরও গভীর হয়েছে। বেতন বৃদ্ধির সুযোগ না পেয়ে তারা হতাশায় ভুগছেন। এমন প্রেক্ষাপটে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের এক সভায় সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বাড়ানোর জন্য নতুন পে কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। কমিশনের প্রধান করা হয় সাবেক অর্থ সচিব ও পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান জাকির আহমেদ খানকে।

বাড়তি বিড়ম্বনায় পড়বে দেশের নিম্ন আয়ের মানুষ
অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে এমনিতেই দুর্দিন চলছে, নেই পর্যাপ্ত কর্মসংস্থান। এছাড়া  সরকারি-বেসরকারি উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের গতিও অত্যন্ত শ্লথ। ব্যবসা-বাণিজ্যেও বিরাজ করছে মন্দাবস্থা। সাধারণ মানুষ পারিবারিক ব্যয় সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন। বিশেষ করে খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসার মতো মৌলিক চাহিদা পূরণে অনেকেই কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতে সরকার দেশের সরকারি কর্মচারীদের ২২ লাখ পরিবারকে সুবিধা দিতে গিয়ে পুরো জাতিকে নতুন করে চাপে ফেলতে যাচ্ছে। অথচ যাদের জন্য এত আয়োজন দ্রব্যমূল্যে উত্তাপ তাদের গায়েও আঁচ লাগাবে। তাছাড়া বাড়তি অর্থের জোগান নিশ্চিত করতে সাধারণ মানুষের ওপর বাড়বে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ করের বোঝা। সবমিলিয়ে জনতুষ্টির জন্য অনির্বাচিত সরকার যে উদ্যোগ হাতে নিয়েছে তার চাপ গিয়ে পড়বে নবনির্বাচিত সরকারের ঘাড়ে।

নির্বাচনের আগেই বাস্তবায়ন  
এদিকে, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য নতুন বেতন কাঠামো অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদের মধ্যেই গেজেটের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হবে জানিয়ে এর আগে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেনন, নতুন পে স্কেল বাস্তবায়নের জন্য পরের রাজনৈতিক সরকার আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করা হবে না। চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে স্কেল বাস্তবায়নের জন্য অর্থের বরাদ্দ দেওয়া হবে।  

তিনি বলেন, আগামী বছরের মার্চ বা এপ্রিলে নতুন পে-স্কেল যদি কার্যকর করতে হয়, তাহলে চলতি অর্থবছরের বাজেটে এজন্য অর্থ বরাদ্দ দিতে হবে। বাজেট সংশোধন শুরু হবে ডিসেম্বরে, সেখানে নতুন পে-স্কেল কার্যকর করার বিধান যুক্ত করা হবে। নতুন পে-স্কেলের ফলে দ্রব্যমূল্যের ওপর যেন নেতিবাচক প্রভাব না পড়ে- সে জন্য সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ করবে বলেও জানান অর্থ উপদেষ্টা।

বৈষম্য আরও প্রকট হওয়ার আশংকা 
এদিকে, দেশে বিদ্যমান মূল্যস্ফীতি কমানোর প্রচেষ্টার সঙ্গে সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বৃদ্ধি বিষয়টি সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় এবং বৈষম্য আরো বৃদ্ধি করবে বলে মনে করেন বিশেষষজ্ঞরা।

এ বিষয়ে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন ভোরের আকাশকে বলেন, মূল্যস্ফীতি সব শ্রেণির মানুষের ওপর প্রভাব ফেলে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে বেসরকারি খাতে বেতন বৃদ্ধির কার্যকর উদ্যোগ নেই। এভাবে সরকারি-বেসরকারি খাতে কর্মরত মানুষের মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টি করাকে বেসরকারি খাতের মানুষের ‘দ্বিতীয় শ্রেণি’র নাগরিক বানানোর নামান্তর বলে উল্লেখ করেন তিনি।

সরকারের অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতা মারাত্মক পর্যাযে রয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, নতুন পে-স্কেল বাস্তবায়নের ফলে সামাজিক-অর্থনৈতিক বৈষম্য আরও প্রকট হবে, যা দেশে ‘সামাজিক ভারসাম্যহীনতা’  সৃষ্টি সামাজিক সংহতি নষ্ট করতে পারে।

২২ লাখের জন্য চার কোটি মানুষের ভোগান্তি
নতুন পে-স্কেলের কারণে দ্রব্যমূল্য হু হু করে বেড়ে যাবে আশঙ্কা প্রকাশ করে একটি বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম ভোরের আকাশকে বলেন, সরকার ২২ লাখ পরিবারকে সুবিধা দিতে গিয়ে দেশের চার কোটি পরিবারকে ভোগান্তিতে ফেলতে যাচ্ছে। বেতন বৃদ্ধি তো দূরের কথা বেসরকারি সেক্টরের কর্মীদের চাকরি রক্ষাই দায় হয়ে পড়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের তো আয় বাড়বে না। কিন্তু পে-স্কেলের উসিলায় বাসা ভাড়া বেড়ে যাবে। জিনিসপত্রের দাম বাড়বে। জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে গেলে আমরা কীভাবে সামাল দেব?

চাপের সঙ্গে আয়ও বাড়বে 
নতুন পে-স্কেলের ফলে সৃষ্ট চাপের বিষয়টি স্বীকার করেছেন জাতীয় পে-কমিশনের সভাপতি সাবেক অর্থ সচিব জাকির আহমেদ খান। অর্থ বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারী কল্যাণ সমিতির নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে তিনি বলেন, আমাদের হাতে সীমিত সম্পদ আছে। এর মধ্য থেকেই সর্বোচ্চ বেতন বাড়ানোর প্রস্তাব থাকবে।

অর্থ বিভাগের বরাতে তিনি জানান, নতুন পে-স্কেল চালু হলে সরকারের ওপর কিছু বাড়তি অর্থনৈতিক চাপ তৈরি হবে। তবে এই কাঠামো অনুযায়ী সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আয়ও আগের তুলনায় বৃদ্ধি পাবে, যা তাদের ক্রয়ক্ষমতা বাড়াবে এবং সরকারের রাজস্ব আয়ও বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করা হচ্ছে।

সর্বোচ্চ সর্বনিম্ন মূল বেতন ১৫,৯২৮ টাকা 
সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য একটি ন্যায়সঙ্গত ও কার্যকরী নতুন বেতন কাঠামোর সুপারিশ প্রণয়নের লক্ষ্যে গঠিত বেতন কমিশনের কাজ এগিয়ে চলেছে। ইতোমধ্যে অনলাইনে চারটি প্রশ্নমালায় প্রাপ্ত সর্বসাধারণের মতামত ও সুপারিশ যাচাই-বাছাই ও পর্যালোচনা করা হচ্ছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিভিন্ন সংগঠন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করে তাদের সুপারিশ প্রদান করেছে। প্রাপ্ত সুপারিশ ও মতামত কমিশন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এবং সরকারের সামর্থ্য বিবেচনা করে বেতন কাঠামোর একটি খসড়াও দাঁড় করিয়েছে। 

খসড়া প্রস্তাবে গ্রেড-১ এর কর্মকর্তাদের মূল বেতন এক লাখ ৫০ হাজার ৫৯৪ টাকা করার সুপারিশ করা হয়েছে। গ্রেড-২ এক লাখ ২৭ হাজার ৪২৬ টাকা, গ্রেড-৩ এক লাখ ৯ হাজার ৮৪ টাকা, গ্রেড-৪ এ ৯৬ হাজার ৫৩৪ টাকা, গ্রেড-৫ এ ৮৩ হাজার ২০ টাকা, গ্রেড-৬ এ ৬৮ হাজার ৫৩৯ টাকা, গ্রেড-৭ এ ৫৫ হাজার ৯৯০ টাকা, গ্রেড-৮ এ ৪৪ হাজার ৪০৬ টাকা, গ্রেড-৯ এ ৪২ হাজার ৪৭৫ টাকা, গ্রেড-১০ এ ৩০ হাজার ৮৯১ টাকা মূল বেতনের প্রস্তাব করা হয়েছে। জাতীয় বেতন কমিশন গ্রেড-১১ এ ২৪ হাজার ১৩৪ টাকা, গ্রেড-১২ তে ২১ হাজার ৮১৭ টাকা, গ্রেড-১৩ তে ২১ হাজার ২৩৮ টাকা, গ্রেড-১৪ তে ১৯ হাজার ৬৯৩ টাকা, গ্রেড-১৫ তে ১৮ হাজার ৭২৮ টাকা, গ্রেড-১৬ তে ১৭ হাজার ৯৫৫, গ্রেড-১৭ তে ১৭ হাজার ৩৭৬ টাকা, গ্রেড-১৮ তে ১৬ হাজার ৯৯০ টাকা, গ্রেড-১৯ তে ১৬ হাজার ৪৪১ টাকা এবং গ্রেড-২০ এর কর্মচারীদের জন্য ১৫ হাজার ৯২৮ টাকা মূল বেতন নির্ধারণের প্রস্তাব দিয়েছে।

বাতিল হচ্ছে বিশেষ ভাতা  
এদিকে বেশকিছু উন্নত দেশের অনুকরণে প্রস্তাবিত বেতন কাঠামোয় প্রায় সবধরনের অতিরিক্ত ভাতা ও সম্মানি বাতিল হচ্ছে। প্রস্তাবে ‘সাকুল্য বেতন’ কিংবা ‘পারিশ্রমিক’ নামে বিকল্প বেতন কাঠামো গঠনের কথা বলা হয়েছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বর্তমান বেতনের পাশাপাশি বিভিন্ন কমিটির সভা, সেমিনার ও প্রশিক্ষণে অংশ নেওয়ার জন্য সম্মানী কিংবা ভাতা নিয়ে থাকেন। এমন ভাতা গ্রহণকে অনৈতিক অভিহিত কওে তা বাতিল করা হচ্ছে। এতে বছরে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা বাড়তি খরচ কমবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে বিষয়টি কতটা কার্যকর হবেÑ সে প্রশ্নও রয়েছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।  

আগে সঠিক সমন্বয় হয়নি
যদিও নতুন পে-স্কেলের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম বলেন, দীর্ঘ ১০ বছর পর বেতন কমিশন গঠিত হয়েছে। গত এক দশকে মূল্যস্ফীতি অনেক বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে, কিন্তু বেতন বৃদ্ধির সঙ্গে এর সঠিক সমন্বয় হয়নি। সরকার মনে করছে, নতুন একটি বেতন স্কেল থাকা উচিত যা বর্তমান বাস্তবতার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। গঠিত কমিশন সার্বিক দিক মূল্যায়ন করে যথোপযুক্ত প্রস্তাব উপস্থাপন করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

রাজস্ব আয় বৃদ্ধির আশা
পে-স্কেল বাস্তবায়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর দাবি, নতুন পে-স্কেল কেবল সরকারের ব্যয় বাড়াবে না, আয়ও বাড়াবে। বর্তমান বেতন কাঠামোতে সর্বনিম্ন বেতন স্কেল ৮ হাজার ২৫০ টাকা জানিয়ে তারা বলেন, নতুন কাঠামো অনুযায়ী এটি ১৬ হাজার টাকার বেশি হতে পারে, যার ফলে সর্বনিম্ন বেতন প্রাপ্ত কর্মকর্তারাও আয়করসংক্রান্ত নিয়মের আওতায় আসবেন।

এর আগে এই কর্মকর্তারা আয়করমুক্ত ছিলেন। সর্বনিম্ন বেতনভোগী সরকারি কর্মচারীদের কাছ থেকে বড় অঙ্কের ‘আয়কর’ পাবে সরকার, যা নতুন বেতন কাঠামোর বাড়তি অর্থ সংস্থানে জোগান দেবে। তাছাড়া চাকরিজীবীদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ সরকারি আবাসনে থাকছেন। বেতন কাঠামো সমন্বয়ের ফলে সরকারি বাসার ভাড়ার হার বাড়বে। ফলে ওই উৎস থেকেও সরকারের রাজস্ব আদায় বাড়বে বলে দাবি তাদের।

বেসরকারি চাকরিজীবীদের জন্য নির্দেশনা
এদিকে নবগঠিত বেতন কমিশনের পে-স্কেলে বেসরকারি চাকরিজীবীদের বেতন সমন্বয়ের বিষয়েও প্রস্তাবনা থাকবে বলে জানা গেছে। তবে বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তারা বিষয়টিকে সরকারের অযাচিত হস্তক্ষেপ হিসেবে দেখছেন।

ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) মহাসচিব মো. আলমগীর বলেন, সরকারের চাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে বেসরকারি কর্মজীবীদের বেতন-ভাতার বিষয়ে পে-কমিশনে জমা দেওয়ার জন্য এফবিসিসিআই এখন প্রস্তাব প্রস্তুত করছে। প্রস্তাবনায়, সরকারি কর্মজীবীদের অনুকরণে বেসরকারি কর্মজীবীদের ক্ষেত্রেও সর্বনিম্ন বেতন ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা করার প্রচ্ছন্ন নির্দেশনা থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ভোরের আকাশ/এসএইচ

  • শেয়ার করুন-
সরকারি খরচে বিদেশ সফর বন্ধ, কেনা যাবে না গাড়ি

সরকারি খরচে বিদেশ সফর বন্ধ, কেনা যাবে না গাড়ি

১ জুলাই থেকে বিশেষ সুবিধা পাবেন চাকরিরত ও পেনশনভোগীরা

১ জুলাই থেকে বিশেষ সুবিধা পাবেন চাকরিরত ও পেনশনভোগীরা

এ আন্দোলনের শেষ কোথায়

এ আন্দোলনের শেষ কোথায়

এখনই বিলুপ্ত হচ্ছে না এনবিআর

এখনই বিলুপ্ত হচ্ছে না এনবিআর

অর্থসংস্থানে দুশ্চিন্তা কাটল

অর্থসংস্থানে দুশ্চিন্তা কাটল

 বগুড়ায় খালেদা জিয়া-তারেক রহমানের মনোনয়নে নেতাকর্মীদের উচ্ছ্বাস

বগুড়ায় খালেদা জিয়া-তারেক রহমানের মনোনয়নে নেতাকর্মীদের উচ্ছ্বাস

 সাবধান! পেঁপে না-কি বিষ খাচ্ছেন, জানেন তো আপনি

সাবধান! পেঁপে না-কি বিষ খাচ্ছেন, জানেন তো আপনি

 যে আসন থেকে মনোনয়ন পেলেন এ জেড এম জাহিদ

যে আসন থেকে মনোনয়ন পেলেন এ জেড এম জাহিদ

 নয়া পে-স্কেল কার্যকরে জনদুর্ভোগ বৃদ্ধির শঙ্কা

নয়া পে-স্কেল কার্যকরে জনদুর্ভোগ বৃদ্ধির শঙ্কা

 বল এখন রাজনৈতিক দলের কোর্টে

বল এখন রাজনৈতিক দলের কোর্টে

সংশ্লিষ্ট

নয়া পে-স্কেল কার্যকরে জনদুর্ভোগ বৃদ্ধির শঙ্কা

নয়া পে-স্কেল কার্যকরে জনদুর্ভোগ বৃদ্ধির শঙ্কা

বাজুসের নতুন প্রেসিডেন্ট এনামুল হক খান

বাজুসের নতুন প্রেসিডেন্ট এনামুল হক খান

ইসলামী ব্যাংকের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ হ্যাকড

ইসলামী ব্যাংকের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ হ্যাকড

বাজেট বাস্তবায়নে সর্বোচ্চ গুরুত্ব

বাজেট বাস্তবায়নে সর্বোচ্চ গুরুত্ব