ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবি ইসলামী যুব আন্দোলনের
রাজধানীতে গাজায় ফিলিস্তিনিদের ওপর গণহত্যা বন্ধ ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ-এর ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর শাখা।
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) জুমার নামাজ শেষে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেটে আয়োজিত এ বিক্ষোভ সমাবেশে দলটির নেতা-কর্মীরা অংশ নেন।
সমাবেশস্থলে ইসরাইল বিরোধী বিভিন্ন স্লোগান শুনতে পাওয়া যায়। ‘তুমি কে, আমি কে-মুসলিম মুসলিম’, ‘বয়কট, বয়কট-ইসরায়েল বয়কট’, ‘মুসলিম জাতি জেগে ওঠো, ফিলিস্তিন স্বাধীন করো’সহ বিভিন্ন স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো এলাকা।
ইসলামী যুব আন্দোলনের নেতারা বলেন, বিশ্বসন্ত্রাসী আমেরিকা ও ইসরায়েলের সহযোগিতায় গাজায় যে গণহত্যা চালাচ্ছে, তা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও যুদ্ধনীতির পরিপন্থি। হামাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের নামে নিরীহ শিশু, নারী ও সাধারণ মানুষদের হত্যা করা হচ্ছে।
তারা বলেন, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর একপেশে ভূমিকা ও নীরবতায় আমরা হতাশ। এখন পর্যন্ত প্রায় ৬০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে, তবুও যুদ্ধ থামাতে কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেই। আমরা ওআইসি-সহ সব আন্তর্জাতিক সংস্থাকে আহ্বান জানাচ্ছি-ফিলিস্তিনে চলমান আগ্রাসন বন্ধে সক্রিয় ও কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।
এ সময় সমাবেশস্থল থেকে দেশবাসীকে আন্দোলনে সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
ভোরের আকাশ/বিব
সংশ্লিষ্ট
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ‘পর্যাপ্ত সংস্কার এবং শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের বিচার সম্পন্ন করে জাতীয় নির্বাচন দিলে আমরা সে নির্বাচনে অংশ নিতে প্রস্তুত। সংস্কার ও বিচারের আগে কোনো নির্বাচন নয়।শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টায় লাকসাম সরকারি পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে কুমিল্লার লাকসাম উপজেলা ও পৌরসভা জামায়াতের আয়োজনে কর্মি সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আরও বলেন, দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে বাংলাদেশ হাসিনা নামক এক জগদ্দল পাথরের নিচে চাপা ছিল। দীর্ঘ সময় লাকসামে উম্মুক্ত পরিবেশে কর্মী সম্মেলন করতে পারিনি আমরা। ২০২৪ সালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের গণআন্দোলনের মাধ্যমে বাঙালী জাতি মুক্ত হয়েছে। আজ এই উন্মুক্ত পরিবেশ ফিরে পেয়ে মহান রবের কাছে শুকরিয়া আদায় করছি।১৪, ১৮ ও ২৪ এর নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, ১৪ সালে তারা ষড়যন্ত্র করে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচন করেছিল তারা। কেউ নির্বাচনে যায়নি। ২০১৮ সালের নির্বাচন ছিল ইতিহাসের আরেক কালো অধ্যায়। যেখানে রাতেই ভোট দিয়ে দিয়েছে বিগত সরকার। আর এসব নির্বাচনে হাসিনাকে সঙ্গ দিয়েছে জাতীয় পার্টি।তিনি আরও বলেন, আমরা একটা কালো যুগ পার করেছি। এই সম্মেলনের কেউ নেই যার বিরুদ্ধে মামলা নেই এবং জেল খাটেনি। সংবিধানের ৩৬-৩৯ ধারায় বলা আছে বাক স্বাধীনতার কথা। কিন্তু বিগত স্বৈরাচার সরকার মানুষের সেই অধিকার হরণ করেছিল। মানুষকে ভোট দিতে দেয়নি।সম্মেলনের বক্তব্যের শেষে তিনি কুমিল্লা দক্ষিণ জেলার চারটি আসনে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। প্রার্থীরা হলেন- কুমিল্লা-৮ আসনে শফিকুল আলম (হেলাল), কুমিল্লা-৯ আসনে এ কে এম সৈয়দ সরওয়ার উদ্দিন সিদ্দিকী, কুমিল্লা-১০ আসনে ইয়াছিন আরাফাত এবং কুমিল্লা-১১ আসনে সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন- জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম মাছুম। বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য আবদুর রব, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আমির মু. শাহজাহান, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা সেক্রেটারি এ কে এম সৈয়দ সরোয়ার উদ্দিন সিদ্দিকী, ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসের শুরা সদস্য মুহাম্মদ ইয়াসিন আরাফাত, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি আবদুল মমিন, মুহাম্মদ মাহফুজুর রহমান, লাকসাম উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির জহিরুল ইসলাম, কুমিল্লার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-১–এর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মুহাম্মদ বদিউল আলম (সুজন)।লাকসাম পৌরসভা জামায়াতে ইসলামীর আমির মু. জয়নাল আবেদীন পাটোয়ারীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন লাকসাম পৌরসভা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি মু.শহিদ উল্যাহ ও উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি মু. জোবায়ের ফয়সাল।ভোরের আকাশ/এসএইচ
গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর নানা ইস্যুতে নিজেদের মধ্যে মতানৈক্য থাকলেও শেষ পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের বৈঠকের খবরে দল দুটির তৃণমূলে ইতিবাচক বার্তা পৌঁছেছে। লন্ডনে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান ও নায়েবে আমির ডা. আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরের বৈঠকের পর দল দুটির মধ্যে সৃষ্ট টানাপোড়েনও কমবে বলেও মনে করছেন তৃণমূল নেতাকর্মীরা। ওই বৈঠকের পর জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়েও দুই দলের শীর্ষ নেতারা কাছাকাছি বক্তব্য দিয়েছেন। ফলে নিজের মধ্যে বিভেদ ঘুচানোর পাশাপাশি ফের দুই দলের মধ্যে ঐক্যেও জোর দিচ্ছেন অনেকে।আওয়ামী লীগের পতনের পর নিজেদের মধ্যে মতপার্থক্য সৃষ্টির কথা স্বীকার করে এই ঐক্যের কথা বলছেন দল দুটির নেতারা। তাদের চাওয়া দল দুটির মধ্যে জাতীয় ঐক্য। ঐক্য ধরে না রাখতে না পারলে ফের স্বৈরাচার মাথাচাড়া দেয়ার পাশাপাশি দেশে ভারতীয় আধিপত্য বিস্তারের সুযোগ পাবে বলেও মনে করছেন তারা।নিজেদের মধ্যে ঐক্য অটুট রেখে একটি জাতীয় নির্বাচন আদায় করে দেশে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনাই নিজেদের জন্যে চ্যালেঞ্জ বলেও মনে করছেন বিএনপি-জামায়াত নেতারা।বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস দৈনিক ভোরের আকাশকে বলেন, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে যারাই মাঠে ছিল তাদের নিয়ে বিএনপি ঐক্য চাইছে। জোটবদ্ধ না থাকলেও কিন্তু আমরা অনেক দল মিলে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন করেছি। এখনো আমরা ঐক্য চাইছি। জামায়াতের ইস্যুতেও আমাদের একই অবস্থান, যা আমি জামায়াতের অনুষ্ঠানে গিয়েও বলেছি।জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ দৈনিক ভোরের আকাশকে বলেন, দীর্ঘদিন থেকেই আমরা ঐক্যবদ্ধ আছি। আগামীতেও দেশ ও জাতির স্বার্থে বিএনপি ও জামায়াত এক থাকবে ইনশাআল্লাহ। মাঠের কথাবার্তা যাই হোক না কেন, দুই দলের মৌলিক চাওয়া এক।দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে জোটবদ্ধভাবে আন্দোলন করেছে বিএনপি ও জামায়াত। মাঝে মধ্যে টানাপোড়েন সৃষ্টি হলেও তা বড় ধরনের কোনো প্রভাব পড়েনি দল দুটির সম্পর্ক বা জাতীয় কোনো ইস্যুতে অবস্থান নেয়ার ক্ষেত্রে। যদিও ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর কয়েকটি বিষয় নিয়ে দল দুটিতে টানাপোড়েনের সৃষ্টি হয়। কার্যত জাতীয় নির্বাচনের সময়সূচির প্রশ্ন, আগে সংস্কার নাকি নির্বাচন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন, রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ এবং জুলাই ঘোষণাপত্র-এসব ইস্যুতেই দুই দলের মধ্যে টানাপোড়েন চলছে।এসব ইস্যুতে শীর্ষ পর্যায় থেকে শুরু করে একেবারে তৃণমূল পর্যন্ত দ্বিধাবিভক্ত বক্তব্য দিচ্ছেন দল দুটির নেতাকর্মীরা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দল দুটির নেতাকর্মীদের বাকযুদ্ধ এখন স্বাভাবিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্থানীয়ভাবে প্রভাব সৃষ্টি করা থেকে শুরু করে নানা ইস্যুতে দেশের বিভিন্ন স্থানে দল দুটির নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ ও হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে বেশ কয়েকটি। এছাড়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ নিয়েও দল দুটির মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়।দীর্ঘদিন ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের পর বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে এই দ্বন্দ্ব দেশের সচেতন মানুষকে ভাবিয়ে তুলেছে। এমতাবস্থায় যুক্তরাজ্যের লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠক করেছেন জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান ও নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের বাসায় তাদের এ বৈঠক হয়। বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে এ বৈঠকের কথা স্বীকার না করলেও জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান গতকাল বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি স্বীকার করেছেন।তিনি বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের খবর নিতেই তিনি সেখানে গিয়েছিলেন। সেখানে জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ বিভিন্ন ইস্যুতে তাদের কথা হয়েছে।এর আগেই বিএনপি চেয়ারপারসনের সাবেক প্রেস সচিব মারুক কামাল খান সোহেল তার ফেসবুকে এ বিষয়ে একটি পোস্ট করেন। তাতে তিনি লেখেন, সম্প্রতি ইউরোপ সফর শেষে লন্ডন পৌঁছে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান ও নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের সাবেক প্রধানমন্ত্রী, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে দেশে ফিরেছেন। জিয়া দম্পতির বড় ছেলে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বাসায় গিয়ে তারা দেখা করেন।দীর্ঘ এ সাক্ষাৎপর্বে তারেক রহমানও উপস্থিত ছিলেন। তিনি আরো লিখেছেন, বেগম জিয়ার সঙ্গে জামায়াতের দুই শীর্ষনেতার সাক্ষাতে কী কী বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে তা জানা যায়নি। এই সাক্ষাৎ রাজনীতির রসায়নে নতুন কোনো ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে, নাকি নিছক সৌজন্য সাক্ষাৎ হয়েই থাকবে, তা বুঝতে হলে আমাদের চোখ রাখতে হবে সামনের দিকে। দেশের বড় দুটি রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাদের বৈঠকের প্রতিফলন দেখা গেছে জামায়াত আমিরের বক্তব্যে।গত বুধবার ঢাকায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জামায়াত আমির নির্বাচন প্রসঙ্গে বলেন, আগামী রমজানের আগেই তিনি জাতীয় সংসদ নির্বাচন চান কারণ, জুন মাসের দিকে প্রচণ্ড গরম ও পরবর্তীতে বর্ষাকাল চলে আসায় নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হতে পারে। তাই আগেই নির্বাচন চান তিনি।গতকালও তিনি নির্বাচন প্রসঙ্গে কথা বলেছেন। সেখানে তিনি বলেছেন, তিনটি শর্ত পূরণ হলে নির্বাচন দ্রুত সম্ভব। প্রথমত দৃশ্যমান মৌলিক সংস্কার, দ্বিতীয়ত গণহত্যাকারীদের দৃশ্যমান বিচার ও তৃতীয়ত রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সম্মানবোধের মাধ্যমে সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হবে।এদিকে গত বছর ৫ আগস্টের পর থেকে চলমান বিভাজনের মধ্যেই দল দুটির শীর্ষ নেতাদের বৈঠকের পর নেতাকর্মীদের মাঝে কোনো প্রভাব পড়েছে কিনা- তা জানতে দৈনিক ভোরের আকাশের পক্ষ থেকে দলটি দুটির বিভিন্ন পর্যায়ে যোগাযোগ করা হয়।এ বিষয়ে বিএনপির ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক দৈনিক ভোরের আকাশকে বলেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সবসময় বলে আসছেন ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে যারা ছিল তাদের নিয়ে তিনি আগামী একসঙ্গে চলবেন। এমনকি নির্বাচিত হলে সবাই নিয়ে জাতীয় সরকার গঠনের কথাও তিনি বারবার বলছেন।তিনি বলেন, দেশে যে অদৃশ্য অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিরাজ করছে, সেখান থেকে উত্তরণে একটি জাতীয় নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। দেশ তথা নির্বাচন প্রশ্নে জামায়াতসহ ফ্যাসিবাদবিরোধী সবার সঙ্গে ঐক্য থাকাটাই মঙ্গল বলেও মনে করেন তিনি। দুই দলের শীর্ষ নেতাদের বৈঠকের বিষয়টি তিনি ইতিবাচকভাবে দেখছেন।যশোর জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক গোলাম কুদ্দুস দৈনিক ভোরের আকাশকে বলেন, দেশে ফ্যাসিবাদ এবং ভারতীয় আধিপত্য ঠেকাতে আসলেই ঐক্যের বিকল্প নেই। একটি বিশেষ গোষ্ঠী ভারতীয় এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতেই বিএনপি ও জামায়াতকে আলাদা করতে চায়। দুই দলের মধ্যে সংঘাত সৃষ্টি করতে চায়। মূলত ওই চক্রটিই জামায়াতের নামে কথিত কিছু ‘তকমা’ লাগিয়ে অপপ্রচার করে।তিনি বলেন, আসলে শীর্ষ নেতাদের বৈঠকের খবর আমরা গণমাধ্যমে শুনেছি। সেখানে কী আলোচনা হয়েছে আমরা জানি না। তারপরও বিষয়টি পজিটিভ। দলের একজন কর্মী হিসেবে বলতে চাই, জামায়াত কোনো সময় অনৈক্য চায়নি। এছাড়া বিএনপি ও জামায়াতের উপজেলা পর্যায় থেকে শুরু করে ওয়ার্ড পর্যন্ত কথা বলে জানা গেছে, শীর্ষ নেতাদের বৈঠকের বিষয়টি তৃণমূলে ইতিবাচক সাড়া ফেলেছে।জানা গেছে, ১৯৯৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুতে বিএনপির সঙ্গে মনোমালিন্য হওয়ায় আওয়ামী লীগের সঙ্গে মিলে আন্দোলন করে জামায়াত। পরে ক্ষমতায় এসে জামায়াতকে নিধনে নামে আওয়ামী লীগ। পরে ফের আওয়ামী লীগ ঠেকাতে ১৯৯৯ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট হয়। ২০০১ সালে জোটবদ্ধ নির্বাচন করে সরকার গঠন করে দল দুটি। সম্পর্কে উত্থান-পতন হলেও জোট ভাঙেনি।২০১৩ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত তৎকালীন সরকারের বিরুদ্ধে জোটবদ্ধ আন্দোলন করে বিএনপি ও জামায়াত। ২০১৮ সালের নির্বাচনে নিবন্ধন হারানো জামায়াতের নেতারা বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে প্রার্থী হন। ২০২২ সালে দু’দল আনুষ্ঠানিকভাবে জোট ভেঙে দিয়ে যুগপৎ আন্দোলনে নামে। প্রথম দিকে জামায়াত যুগপৎ আন্দোলনে থাকলেও মাঝে কিছু সময় নানা অভিযোগ এন জামায়াত সেখান থেকে সরে দাঁড়ায়।পরবর্তীতে ফের ২০২৪ এর নির্বাচনে আগে ও পরে বিএনপির সঙ্গে মিল রেখে অভিন্ন কর্মসূচি পালন করে জামায়াত। গত বছর জুলাইয়ে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এ আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকার গণহত্যা চালায়। বিএনপি ও জামায়াতকে আন্দোলনের জন্য দায়ী করে ঢালাও মামলা এবং গ্রেপ্তার করে। ২৬ জুলাই জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে জাতীয় ঐক্যের ডাক দেয় বিএনপি।ভোরের আকাশ/এসএইচ
বিএনপির চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এ মাসে দেশে ফিরছেন না। তার দেশে ফেরার সিদ্ধান্তে পরিবর্তন হয়েছে। বিশ্বস্ত সূত্রের তথ্যানুযায়ী আগামী ১৯ এপ্রিল তার দেশে ফেরার কথা ছিল। দেশে ফেরার দিনক্ষণ ঠিক থাকলেও চিকিৎসার সুবিধার্থে তিনি এ মাসে ফিরছেন না। পিছিয়ে গেছে তার দেশে ফেরা। চিকিৎসার জন্য তিন মাসেরও বেশি দিন লন্ডনে অবস্থান করছেন বাংলাদেশের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী। পারিবারিক আবহে নিবিড় চিকিৎসায় তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হওয়ায় দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত হয়েছিল।বিএনপি চেয়ারপার্সনের পরিবারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছেন, এ মাসে তিনি দেশে ফিরছেন না। বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন অসীম গতকাল বৃহস্পতিবার দৈনিক ভোরের আকাশকে বলেন, ‘ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) এ মাসে আসছেন না। ধীরে-সুস্থে তিনি দেশে ফিরবেন।’এ বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন সফর নিয়ে গতকাল আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আগামী মাসের যেকোনো সময় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দেশে ফিরতে পারেন।তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা দেখতে গিয়েছিলাম। দেশে যেহেতু তার সঙ্গে দেখা হয়নি, এটি একেবারেই সৌজন্য সাক্ষাৎ ছিল। নির্দিষ্ট কোনো আলোচনা হয়নি। খালেদা জিয়া এখন মানসিকভাবে কিছুটা সুস্থ আছেন। তিনি দেশে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।বাংলাদেশের ‘গণতন্ত্রের প্রতীক’ ৭৯ বছর বয়সী বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ শারীরিক নানা অসুস্থতায় ভুগছেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ৭ জানুয়ারি রাতে লন্ডনে যান। কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি’র পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে লন্ডনে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। জটিল রোগীদের দীর্ঘ দূরত্বে স্থানান্তরের জন্য অত্যাধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জামে সজ্জিত এই এয়ারবাস। বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর শারীরিক অবস্থার কথা জানার পর এই বিশেষ উড়োজাহাজটি পাঠান কাতারের আমির।লন্ডনে পৌছার পর গত ৮ জানুয়ারি থেকে ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত লন্ডনের দ্য ক্লিনিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন খালেদা জিয়া। এরপর লন্ডনে অবস্থানরত তার বড় ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বাসায় থেকে চিকিৎসা নেন তিনি। তারেক রহমানের বাসায় ফেরার পর গত দুই মাসে খালেদা জিয়াকে আর হাসপাতালে নিতে হয়নি। কোনো পরীক্ষার প্রয়োজন হলে দ্য ক্লিনিকের চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞরা বাসায় গিয়ে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছেন।ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত বছর ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান। আওয়ামী লীগের পতনের পরদিন ৬ আগস্ট খালেদা জিয়ার মুক্তির আদেশ দেন রাষ্ট্রপতি। তখন তিনি এভারকেয়ারে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তার শারীরিক অবস্থা এতটাই খারাপ ছিল যে তাকে লণ্ডনে নিতে হয় বিশেষ এয়ারবাসে করে। যে এয়ারবাসটি পাঠিয়েছিলেন কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি। এয়ারবাসটি ফ্লাইং ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ) হিসেবে বিবেচিত। এটা জরুরি অবস্থায় সর্বাধুনিক চিকিৎসা প্রযুক্তিতে সজ্জিত।জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি সাজা হবার পর কারাগারে পাঠানো হয় খালেদা জিয়াকে। ২০২০ সালের ২৫ মার্চ আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাহী আদেশে সাজা স্থগিত করে শর্তসাপেক্ষে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয়। এর পর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ছয় মাস পর পর তার সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ বাড়াচ্ছিল পতিত আওয়ামী লীগ সরকার। অসুস্থ খালেদা জিয়াকে বহুবার হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে। চিকিৎসক ও তার পরিবারের সদস্যরা তাকে বিদেশ নেওয়ার জন্য সরকারের কাছে আহ্বান জানালেও তাতে মন গলেনি তথাকথিত ‘মানবতার জননী’ ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার। কারাগারে থাকাবস্থায় বেগম খালেদা জিয়ার লিভার প্রতিস্থাপন খুব জরুরি হয়ে পড়ে।২০২০ সালের পর তাকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকবার আওয়ামী লীগ সরকারের কাছে আবেদন করা হলেও তাতে সাড়া দেয়নি তখনকার ফ্যাসিস্ট সরকার। যদিও করোনার সময় সরকারের নির্বাহী আদেশে শর্ত সাপেক্ষে ৬ মাসের জন্য সাজা স্থগিত করে খালেদা জিয়াকে কারামুক্তি দেওয়া হয়। এই মুক্তির মেয়াদ ছয় মাস পরপর বাড়ানো হয় কয়েকদফা। কিন্তু তখনকার সরকার খালেদা জিয়াকে বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দেয়নি।এর মধ্যে বেশ কয়েকবার গুরুতর অসুস্থ হন ‘আপসহীন’ খেতাবপ্রাপ্ত সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। পরে দেশি-বিদেশি চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে অস্ত্রোপচার করা হয়। ‘কথিত’ দুর্নীতির মামলায় সাজা দিয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে কারাবন্দি করা হয়েছিল। ওই মামলায় সাজা দিয়ে দুই বছরের বেশি সময় নির্জন কারাগারে রাখা হয়েছিল তাকে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাষ্ট্রপতির আদেশে খালেদা জিয়াকে পুরোপুরি মুক্তি দেওয়া হলেও তিনি রাষ্ট্রপতির ওই আদেশের দিকে না তাকিয়ে আইনিভাবে মামলা মোকাবিলা করেন। দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট থেকে তিনি ‘কথিত’ দুর্নীতির দুই মামলা থেকেই খালাস পান। যেসব মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হিসেবে তিনি কারাবন্দি হয়েছিলেন, সেসব মামলার সাজা বাতিল করে রায় দেন সুপ্রিম কোর্ট।ভোরের আকাশ/এসএইচ
নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নিবন্ধনের আবেদনের সময়সীমা ৯০ দিন বাড়ানোরে অনুরোধ জানিয়েছে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি)। সেই সঙ্গে দলটির প্রতিনিধি দল রোববার সিইসির সঙ্গেও বৈঠকের কথা রয়েছে।বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদের দপ্তরে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে। সিইসির একান্ত সচিব আশ্রাফুল আলম ও এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক এবং সংস্কার সময়ন্ব কমিটির কো-অর্ডিনেটর এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।নির্বাচন কমিশন বলছে, ঘোষিত সময় ২০ এপ্রিল পর্যন্ত অপেক্ষা করে সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে কমিশন পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে। ডিসেম্বরে ভোটের লক্ষ্য ধরে ১০ মার্চ গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে নির্বাচন কমিশন-ইসি। ২০ এপ্রিল হচ্ছে আবেদনের শেষ সময়সীমা।জানতে চাইলে সিইসি একান্ত সচিব বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবের দপ্তরে এনসিপির পক্ষ থেকে সংস্কার ও দল নিবন্ধনের সময় বাড়ানোর বিষয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। দলটির প্রতিনিধি দলের সঙ্গে রোববার (২০ এপ্রিল) দুপুরে সিইসির বৈঠকের সময়সূচি রয়েছে।এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার জানান, মৌলিক সংস্কার ও নতুন দল নিবন্ধনের জন্য আবেদনের সময়সীমা ন্যূনতম ৯০ দিন বাড়ানোর অনুরোধ জানানো হয়েছে।তিনি বলেন, আমাদের একটি টিম ইসির সঙ্গে দেখা করে উদ্বেগগুলো জানাবে। সেখানে নিবন্ধন সময়সীমা বাড়ানোসহ বেশ কিছু বিষয়ে আমাদের আলাপ হবে।চিঠির শেষাংশে এনসিপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশের আলোকে প্রয়োজনীয় আইন ও বিধি প্রণয়ন বা সংশোধন করে নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হওয়া দরকার। এ ছাড়া মৌলিক সংস্কারের আলোকে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন, নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন, বিদ্যমান নিবন্ধিত দলের নিবন্ধন হালনাগাদ করাও আবশ্যক। এমন অবস্থায় দ্রুত নির্বাচন কমিশনসংক্রান্ত মৌলিক সংস্কার এবং নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের জন্য আবেদনের সময়সীমা অন্যূন ৯০ দিনের বাড়ানোর অনুরোধ করা হয় চিঠিতে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবি ইসলামী যুব আন্দোলনের
রাজধানীতে গাজায় ফিলিস্তিনিদের ওপর গণহত্যা বন্ধ ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ-এর ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর শাখা।
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) জুমার নামাজ শেষে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেটে আয়োজিত এ বিক্ষোভ সমাবেশে দলটির নেতা-কর্মীরা অংশ নেন।
সমাবেশস্থলে ইসরাইল বিরোধী বিভিন্ন স্লোগান শুনতে পাওয়া যায়। ‘তুমি কে, আমি কে-মুসলিম মুসলিম’, ‘বয়কট, বয়কট-ইসরায়েল বয়কট’, ‘মুসলিম জাতি জেগে ওঠো, ফিলিস্তিন স্বাধীন করো’সহ বিভিন্ন স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো এলাকা।
ইসলামী যুব আন্দোলনের নেতারা বলেন, বিশ্বসন্ত্রাসী আমেরিকা ও ইসরায়েলের সহযোগিতায় গাজায় যে গণহত্যা চালাচ্ছে, তা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও যুদ্ধনীতির পরিপন্থি। হামাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের নামে নিরীহ শিশু, নারী ও সাধারণ মানুষদের হত্যা করা হচ্ছে।
তারা বলেন, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর একপেশে ভূমিকা ও নীরবতায় আমরা হতাশ। এখন পর্যন্ত প্রায় ৬০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে, তবুও যুদ্ধ থামাতে কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেই। আমরা ওআইসি-সহ সব আন্তর্জাতিক সংস্থাকে আহ্বান জানাচ্ছি-ফিলিস্তিনে চলমান আগ্রাসন বন্ধে সক্রিয় ও কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।
এ সময় সমাবেশস্থল থেকে দেশবাসীকে আন্দোলনে সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
ভোরের আকাশ/বিব
সংশ্লিষ্ট
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ‘পর্যাপ্ত সংস্কার এবং শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের বিচার সম্পন্ন করে জাতীয় নির্বাচন দিলে আমরা সে নির্বাচনে অংশ নিতে প্রস্তুত। সংস্কার ও বিচারের আগে কোনো নির্বাচন নয়।শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টায় লাকসাম সরকারি পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে কুমিল্লার লাকসাম উপজেলা ও পৌরসভা জামায়াতের আয়োজনে কর্মি সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আরও বলেন, দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে বাংলাদেশ হাসিনা নামক এক জগদ্দল পাথরের নিচে চাপা ছিল। দীর্ঘ সময় লাকসামে উম্মুক্ত পরিবেশে কর্মী সম্মেলন করতে পারিনি আমরা। ২০২৪ সালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের গণআন্দোলনের মাধ্যমে বাঙালী জাতি মুক্ত হয়েছে। আজ এই উন্মুক্ত পরিবেশ ফিরে পেয়ে মহান রবের কাছে শুকরিয়া আদায় করছি।১৪, ১৮ ও ২৪ এর নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, ১৪ সালে তারা ষড়যন্ত্র করে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচন করেছিল তারা। কেউ নির্বাচনে যায়নি। ২০১৮ সালের নির্বাচন ছিল ইতিহাসের আরেক কালো অধ্যায়। যেখানে রাতেই ভোট দিয়ে দিয়েছে বিগত সরকার। আর এসব নির্বাচনে হাসিনাকে সঙ্গ দিয়েছে জাতীয় পার্টি।তিনি আরও বলেন, আমরা একটা কালো যুগ পার করেছি। এই সম্মেলনের কেউ নেই যার বিরুদ্ধে মামলা নেই এবং জেল খাটেনি। সংবিধানের ৩৬-৩৯ ধারায় বলা আছে বাক স্বাধীনতার কথা। কিন্তু বিগত স্বৈরাচার সরকার মানুষের সেই অধিকার হরণ করেছিল। মানুষকে ভোট দিতে দেয়নি।সম্মেলনের বক্তব্যের শেষে তিনি কুমিল্লা দক্ষিণ জেলার চারটি আসনে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। প্রার্থীরা হলেন- কুমিল্লা-৮ আসনে শফিকুল আলম (হেলাল), কুমিল্লা-৯ আসনে এ কে এম সৈয়দ সরওয়ার উদ্দিন সিদ্দিকী, কুমিল্লা-১০ আসনে ইয়াছিন আরাফাত এবং কুমিল্লা-১১ আসনে সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন- জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম মাছুম। বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য আবদুর রব, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আমির মু. শাহজাহান, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা সেক্রেটারি এ কে এম সৈয়দ সরোয়ার উদ্দিন সিদ্দিকী, ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসের শুরা সদস্য মুহাম্মদ ইয়াসিন আরাফাত, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি আবদুল মমিন, মুহাম্মদ মাহফুজুর রহমান, লাকসাম উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির জহিরুল ইসলাম, কুমিল্লার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-১–এর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মুহাম্মদ বদিউল আলম (সুজন)।লাকসাম পৌরসভা জামায়াতে ইসলামীর আমির মু. জয়নাল আবেদীন পাটোয়ারীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন লাকসাম পৌরসভা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি মু.শহিদ উল্যাহ ও উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি মু. জোবায়ের ফয়সাল।ভোরের আকাশ/এসএইচ
গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর নানা ইস্যুতে নিজেদের মধ্যে মতানৈক্য থাকলেও শেষ পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের বৈঠকের খবরে দল দুটির তৃণমূলে ইতিবাচক বার্তা পৌঁছেছে। লন্ডনে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান ও নায়েবে আমির ডা. আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরের বৈঠকের পর দল দুটির মধ্যে সৃষ্ট টানাপোড়েনও কমবে বলেও মনে করছেন তৃণমূল নেতাকর্মীরা। ওই বৈঠকের পর জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়েও দুই দলের শীর্ষ নেতারা কাছাকাছি বক্তব্য দিয়েছেন। ফলে নিজের মধ্যে বিভেদ ঘুচানোর পাশাপাশি ফের দুই দলের মধ্যে ঐক্যেও জোর দিচ্ছেন অনেকে।আওয়ামী লীগের পতনের পর নিজেদের মধ্যে মতপার্থক্য সৃষ্টির কথা স্বীকার করে এই ঐক্যের কথা বলছেন দল দুটির নেতারা। তাদের চাওয়া দল দুটির মধ্যে জাতীয় ঐক্য। ঐক্য ধরে না রাখতে না পারলে ফের স্বৈরাচার মাথাচাড়া দেয়ার পাশাপাশি দেশে ভারতীয় আধিপত্য বিস্তারের সুযোগ পাবে বলেও মনে করছেন তারা।নিজেদের মধ্যে ঐক্য অটুট রেখে একটি জাতীয় নির্বাচন আদায় করে দেশে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনাই নিজেদের জন্যে চ্যালেঞ্জ বলেও মনে করছেন বিএনপি-জামায়াত নেতারা।বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস দৈনিক ভোরের আকাশকে বলেন, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে যারাই মাঠে ছিল তাদের নিয়ে বিএনপি ঐক্য চাইছে। জোটবদ্ধ না থাকলেও কিন্তু আমরা অনেক দল মিলে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন করেছি। এখনো আমরা ঐক্য চাইছি। জামায়াতের ইস্যুতেও আমাদের একই অবস্থান, যা আমি জামায়াতের অনুষ্ঠানে গিয়েও বলেছি।জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ দৈনিক ভোরের আকাশকে বলেন, দীর্ঘদিন থেকেই আমরা ঐক্যবদ্ধ আছি। আগামীতেও দেশ ও জাতির স্বার্থে বিএনপি ও জামায়াত এক থাকবে ইনশাআল্লাহ। মাঠের কথাবার্তা যাই হোক না কেন, দুই দলের মৌলিক চাওয়া এক।দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে জোটবদ্ধভাবে আন্দোলন করেছে বিএনপি ও জামায়াত। মাঝে মধ্যে টানাপোড়েন সৃষ্টি হলেও তা বড় ধরনের কোনো প্রভাব পড়েনি দল দুটির সম্পর্ক বা জাতীয় কোনো ইস্যুতে অবস্থান নেয়ার ক্ষেত্রে। যদিও ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর কয়েকটি বিষয় নিয়ে দল দুটিতে টানাপোড়েনের সৃষ্টি হয়। কার্যত জাতীয় নির্বাচনের সময়সূচির প্রশ্ন, আগে সংস্কার নাকি নির্বাচন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন, রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ এবং জুলাই ঘোষণাপত্র-এসব ইস্যুতেই দুই দলের মধ্যে টানাপোড়েন চলছে।এসব ইস্যুতে শীর্ষ পর্যায় থেকে শুরু করে একেবারে তৃণমূল পর্যন্ত দ্বিধাবিভক্ত বক্তব্য দিচ্ছেন দল দুটির নেতাকর্মীরা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দল দুটির নেতাকর্মীদের বাকযুদ্ধ এখন স্বাভাবিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্থানীয়ভাবে প্রভাব সৃষ্টি করা থেকে শুরু করে নানা ইস্যুতে দেশের বিভিন্ন স্থানে দল দুটির নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ ও হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে বেশ কয়েকটি। এছাড়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ নিয়েও দল দুটির মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়।দীর্ঘদিন ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের পর বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে এই দ্বন্দ্ব দেশের সচেতন মানুষকে ভাবিয়ে তুলেছে। এমতাবস্থায় যুক্তরাজ্যের লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠক করেছেন জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান ও নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের বাসায় তাদের এ বৈঠক হয়। বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে এ বৈঠকের কথা স্বীকার না করলেও জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান গতকাল বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি স্বীকার করেছেন।তিনি বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের খবর নিতেই তিনি সেখানে গিয়েছিলেন। সেখানে জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ বিভিন্ন ইস্যুতে তাদের কথা হয়েছে।এর আগেই বিএনপি চেয়ারপারসনের সাবেক প্রেস সচিব মারুক কামাল খান সোহেল তার ফেসবুকে এ বিষয়ে একটি পোস্ট করেন। তাতে তিনি লেখেন, সম্প্রতি ইউরোপ সফর শেষে লন্ডন পৌঁছে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান ও নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের সাবেক প্রধানমন্ত্রী, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে দেশে ফিরেছেন। জিয়া দম্পতির বড় ছেলে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বাসায় গিয়ে তারা দেখা করেন।দীর্ঘ এ সাক্ষাৎপর্বে তারেক রহমানও উপস্থিত ছিলেন। তিনি আরো লিখেছেন, বেগম জিয়ার সঙ্গে জামায়াতের দুই শীর্ষনেতার সাক্ষাতে কী কী বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে তা জানা যায়নি। এই সাক্ষাৎ রাজনীতির রসায়নে নতুন কোনো ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে, নাকি নিছক সৌজন্য সাক্ষাৎ হয়েই থাকবে, তা বুঝতে হলে আমাদের চোখ রাখতে হবে সামনের দিকে। দেশের বড় দুটি রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাদের বৈঠকের প্রতিফলন দেখা গেছে জামায়াত আমিরের বক্তব্যে।গত বুধবার ঢাকায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জামায়াত আমির নির্বাচন প্রসঙ্গে বলেন, আগামী রমজানের আগেই তিনি জাতীয় সংসদ নির্বাচন চান কারণ, জুন মাসের দিকে প্রচণ্ড গরম ও পরবর্তীতে বর্ষাকাল চলে আসায় নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হতে পারে। তাই আগেই নির্বাচন চান তিনি।গতকালও তিনি নির্বাচন প্রসঙ্গে কথা বলেছেন। সেখানে তিনি বলেছেন, তিনটি শর্ত পূরণ হলে নির্বাচন দ্রুত সম্ভব। প্রথমত দৃশ্যমান মৌলিক সংস্কার, দ্বিতীয়ত গণহত্যাকারীদের দৃশ্যমান বিচার ও তৃতীয়ত রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সম্মানবোধের মাধ্যমে সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হবে।এদিকে গত বছর ৫ আগস্টের পর থেকে চলমান বিভাজনের মধ্যেই দল দুটির শীর্ষ নেতাদের বৈঠকের পর নেতাকর্মীদের মাঝে কোনো প্রভাব পড়েছে কিনা- তা জানতে দৈনিক ভোরের আকাশের পক্ষ থেকে দলটি দুটির বিভিন্ন পর্যায়ে যোগাযোগ করা হয়।এ বিষয়ে বিএনপির ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক দৈনিক ভোরের আকাশকে বলেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সবসময় বলে আসছেন ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে যারা ছিল তাদের নিয়ে তিনি আগামী একসঙ্গে চলবেন। এমনকি নির্বাচিত হলে সবাই নিয়ে জাতীয় সরকার গঠনের কথাও তিনি বারবার বলছেন।তিনি বলেন, দেশে যে অদৃশ্য অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিরাজ করছে, সেখান থেকে উত্তরণে একটি জাতীয় নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। দেশ তথা নির্বাচন প্রশ্নে জামায়াতসহ ফ্যাসিবাদবিরোধী সবার সঙ্গে ঐক্য থাকাটাই মঙ্গল বলেও মনে করেন তিনি। দুই দলের শীর্ষ নেতাদের বৈঠকের বিষয়টি তিনি ইতিবাচকভাবে দেখছেন।যশোর জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক গোলাম কুদ্দুস দৈনিক ভোরের আকাশকে বলেন, দেশে ফ্যাসিবাদ এবং ভারতীয় আধিপত্য ঠেকাতে আসলেই ঐক্যের বিকল্প নেই। একটি বিশেষ গোষ্ঠী ভারতীয় এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতেই বিএনপি ও জামায়াতকে আলাদা করতে চায়। দুই দলের মধ্যে সংঘাত সৃষ্টি করতে চায়। মূলত ওই চক্রটিই জামায়াতের নামে কথিত কিছু ‘তকমা’ লাগিয়ে অপপ্রচার করে।তিনি বলেন, আসলে শীর্ষ নেতাদের বৈঠকের খবর আমরা গণমাধ্যমে শুনেছি। সেখানে কী আলোচনা হয়েছে আমরা জানি না। তারপরও বিষয়টি পজিটিভ। দলের একজন কর্মী হিসেবে বলতে চাই, জামায়াত কোনো সময় অনৈক্য চায়নি। এছাড়া বিএনপি ও জামায়াতের উপজেলা পর্যায় থেকে শুরু করে ওয়ার্ড পর্যন্ত কথা বলে জানা গেছে, শীর্ষ নেতাদের বৈঠকের বিষয়টি তৃণমূলে ইতিবাচক সাড়া ফেলেছে।জানা গেছে, ১৯৯৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুতে বিএনপির সঙ্গে মনোমালিন্য হওয়ায় আওয়ামী লীগের সঙ্গে মিলে আন্দোলন করে জামায়াত। পরে ক্ষমতায় এসে জামায়াতকে নিধনে নামে আওয়ামী লীগ। পরে ফের আওয়ামী লীগ ঠেকাতে ১৯৯৯ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট হয়। ২০০১ সালে জোটবদ্ধ নির্বাচন করে সরকার গঠন করে দল দুটি। সম্পর্কে উত্থান-পতন হলেও জোট ভাঙেনি।২০১৩ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত তৎকালীন সরকারের বিরুদ্ধে জোটবদ্ধ আন্দোলন করে বিএনপি ও জামায়াত। ২০১৮ সালের নির্বাচনে নিবন্ধন হারানো জামায়াতের নেতারা বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে প্রার্থী হন। ২০২২ সালে দু’দল আনুষ্ঠানিকভাবে জোট ভেঙে দিয়ে যুগপৎ আন্দোলনে নামে। প্রথম দিকে জামায়াত যুগপৎ আন্দোলনে থাকলেও মাঝে কিছু সময় নানা অভিযোগ এন জামায়াত সেখান থেকে সরে দাঁড়ায়।পরবর্তীতে ফের ২০২৪ এর নির্বাচনে আগে ও পরে বিএনপির সঙ্গে মিল রেখে অভিন্ন কর্মসূচি পালন করে জামায়াত। গত বছর জুলাইয়ে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এ আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকার গণহত্যা চালায়। বিএনপি ও জামায়াতকে আন্দোলনের জন্য দায়ী করে ঢালাও মামলা এবং গ্রেপ্তার করে। ২৬ জুলাই জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে জাতীয় ঐক্যের ডাক দেয় বিএনপি।ভোরের আকাশ/এসএইচ
বিএনপির চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এ মাসে দেশে ফিরছেন না। তার দেশে ফেরার সিদ্ধান্তে পরিবর্তন হয়েছে। বিশ্বস্ত সূত্রের তথ্যানুযায়ী আগামী ১৯ এপ্রিল তার দেশে ফেরার কথা ছিল। দেশে ফেরার দিনক্ষণ ঠিক থাকলেও চিকিৎসার সুবিধার্থে তিনি এ মাসে ফিরছেন না। পিছিয়ে গেছে তার দেশে ফেরা। চিকিৎসার জন্য তিন মাসেরও বেশি দিন লন্ডনে অবস্থান করছেন বাংলাদেশের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী। পারিবারিক আবহে নিবিড় চিকিৎসায় তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হওয়ায় দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত হয়েছিল।বিএনপি চেয়ারপার্সনের পরিবারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছেন, এ মাসে তিনি দেশে ফিরছেন না। বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন অসীম গতকাল বৃহস্পতিবার দৈনিক ভোরের আকাশকে বলেন, ‘ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) এ মাসে আসছেন না। ধীরে-সুস্থে তিনি দেশে ফিরবেন।’এ বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন সফর নিয়ে গতকাল আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আগামী মাসের যেকোনো সময় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দেশে ফিরতে পারেন।তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা দেখতে গিয়েছিলাম। দেশে যেহেতু তার সঙ্গে দেখা হয়নি, এটি একেবারেই সৌজন্য সাক্ষাৎ ছিল। নির্দিষ্ট কোনো আলোচনা হয়নি। খালেদা জিয়া এখন মানসিকভাবে কিছুটা সুস্থ আছেন। তিনি দেশে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।বাংলাদেশের ‘গণতন্ত্রের প্রতীক’ ৭৯ বছর বয়সী বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ শারীরিক নানা অসুস্থতায় ভুগছেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ৭ জানুয়ারি রাতে লন্ডনে যান। কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি’র পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে লন্ডনে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। জটিল রোগীদের দীর্ঘ দূরত্বে স্থানান্তরের জন্য অত্যাধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জামে সজ্জিত এই এয়ারবাস। বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর শারীরিক অবস্থার কথা জানার পর এই বিশেষ উড়োজাহাজটি পাঠান কাতারের আমির।লন্ডনে পৌছার পর গত ৮ জানুয়ারি থেকে ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত লন্ডনের দ্য ক্লিনিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন খালেদা জিয়া। এরপর লন্ডনে অবস্থানরত তার বড় ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বাসায় থেকে চিকিৎসা নেন তিনি। তারেক রহমানের বাসায় ফেরার পর গত দুই মাসে খালেদা জিয়াকে আর হাসপাতালে নিতে হয়নি। কোনো পরীক্ষার প্রয়োজন হলে দ্য ক্লিনিকের চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞরা বাসায় গিয়ে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছেন।ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত বছর ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান। আওয়ামী লীগের পতনের পরদিন ৬ আগস্ট খালেদা জিয়ার মুক্তির আদেশ দেন রাষ্ট্রপতি। তখন তিনি এভারকেয়ারে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তার শারীরিক অবস্থা এতটাই খারাপ ছিল যে তাকে লণ্ডনে নিতে হয় বিশেষ এয়ারবাসে করে। যে এয়ারবাসটি পাঠিয়েছিলেন কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি। এয়ারবাসটি ফ্লাইং ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ) হিসেবে বিবেচিত। এটা জরুরি অবস্থায় সর্বাধুনিক চিকিৎসা প্রযুক্তিতে সজ্জিত।জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি সাজা হবার পর কারাগারে পাঠানো হয় খালেদা জিয়াকে। ২০২০ সালের ২৫ মার্চ আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাহী আদেশে সাজা স্থগিত করে শর্তসাপেক্ষে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয়। এর পর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ছয় মাস পর পর তার সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ বাড়াচ্ছিল পতিত আওয়ামী লীগ সরকার। অসুস্থ খালেদা জিয়াকে বহুবার হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে। চিকিৎসক ও তার পরিবারের সদস্যরা তাকে বিদেশ নেওয়ার জন্য সরকারের কাছে আহ্বান জানালেও তাতে মন গলেনি তথাকথিত ‘মানবতার জননী’ ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার। কারাগারে থাকাবস্থায় বেগম খালেদা জিয়ার লিভার প্রতিস্থাপন খুব জরুরি হয়ে পড়ে।২০২০ সালের পর তাকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকবার আওয়ামী লীগ সরকারের কাছে আবেদন করা হলেও তাতে সাড়া দেয়নি তখনকার ফ্যাসিস্ট সরকার। যদিও করোনার সময় সরকারের নির্বাহী আদেশে শর্ত সাপেক্ষে ৬ মাসের জন্য সাজা স্থগিত করে খালেদা জিয়াকে কারামুক্তি দেওয়া হয়। এই মুক্তির মেয়াদ ছয় মাস পরপর বাড়ানো হয় কয়েকদফা। কিন্তু তখনকার সরকার খালেদা জিয়াকে বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দেয়নি।এর মধ্যে বেশ কয়েকবার গুরুতর অসুস্থ হন ‘আপসহীন’ খেতাবপ্রাপ্ত সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। পরে দেশি-বিদেশি চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে অস্ত্রোপচার করা হয়। ‘কথিত’ দুর্নীতির মামলায় সাজা দিয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে কারাবন্দি করা হয়েছিল। ওই মামলায় সাজা দিয়ে দুই বছরের বেশি সময় নির্জন কারাগারে রাখা হয়েছিল তাকে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাষ্ট্রপতির আদেশে খালেদা জিয়াকে পুরোপুরি মুক্তি দেওয়া হলেও তিনি রাষ্ট্রপতির ওই আদেশের দিকে না তাকিয়ে আইনিভাবে মামলা মোকাবিলা করেন। দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট থেকে তিনি ‘কথিত’ দুর্নীতির দুই মামলা থেকেই খালাস পান। যেসব মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হিসেবে তিনি কারাবন্দি হয়েছিলেন, সেসব মামলার সাজা বাতিল করে রায় দেন সুপ্রিম কোর্ট।ভোরের আকাশ/এসএইচ
নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নিবন্ধনের আবেদনের সময়সীমা ৯০ দিন বাড়ানোরে অনুরোধ জানিয়েছে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি)। সেই সঙ্গে দলটির প্রতিনিধি দল রোববার সিইসির সঙ্গেও বৈঠকের কথা রয়েছে।বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদের দপ্তরে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে। সিইসির একান্ত সচিব আশ্রাফুল আলম ও এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক এবং সংস্কার সময়ন্ব কমিটির কো-অর্ডিনেটর এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।নির্বাচন কমিশন বলছে, ঘোষিত সময় ২০ এপ্রিল পর্যন্ত অপেক্ষা করে সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে কমিশন পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে। ডিসেম্বরে ভোটের লক্ষ্য ধরে ১০ মার্চ গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে নির্বাচন কমিশন-ইসি। ২০ এপ্রিল হচ্ছে আবেদনের শেষ সময়সীমা।জানতে চাইলে সিইসি একান্ত সচিব বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবের দপ্তরে এনসিপির পক্ষ থেকে সংস্কার ও দল নিবন্ধনের সময় বাড়ানোর বিষয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। দলটির প্রতিনিধি দলের সঙ্গে রোববার (২০ এপ্রিল) দুপুরে সিইসির বৈঠকের সময়সূচি রয়েছে।এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার জানান, মৌলিক সংস্কার ও নতুন দল নিবন্ধনের জন্য আবেদনের সময়সীমা ন্যূনতম ৯০ দিন বাড়ানোর অনুরোধ জানানো হয়েছে।তিনি বলেন, আমাদের একটি টিম ইসির সঙ্গে দেখা করে উদ্বেগগুলো জানাবে। সেখানে নিবন্ধন সময়সীমা বাড়ানোসহ বেশ কিছু বিষয়ে আমাদের আলাপ হবে।চিঠির শেষাংশে এনসিপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশের আলোকে প্রয়োজনীয় আইন ও বিধি প্রণয়ন বা সংশোধন করে নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হওয়া দরকার। এ ছাড়া মৌলিক সংস্কারের আলোকে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন, নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন, বিদ্যমান নিবন্ধিত দলের নিবন্ধন হালনাগাদ করাও আবশ্যক। এমন অবস্থায় দ্রুত নির্বাচন কমিশনসংক্রান্ত মৌলিক সংস্কার এবং নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের জন্য আবেদনের সময়সীমা অন্যূন ৯০ দিনের বাড়ানোর অনুরোধ করা হয় চিঠিতে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
মন্তব্য করুন