ভোরের আকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৭ অক্টোবর ২০২৫ ০৭:৪৭ পিএম
ফাইল ছবি
যারা ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ মানে না, তাদের এই দেশে ভোট চাওয়া এবং নির্বাচন করার অধিকার নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু। মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের উদ্যোগে আয়োজিত ‘সুষ্ঠু ও অর্থবহ নির্বাচনে দেশপ্রেমিক গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, যারা ৭১ সালে পাকিস্তানের পক্ষে ছিলেন, তারা এখন বাংলাদেশকে আফগানিস্তান, সিরিয়া, ইরাক বানাতে চান। যারা ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ মানে না, ৩০ লাখ শহীদের রক্ত এবং জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণাকে স্বীকার করেন না, তাদের এদেশে ভোট চাওয়ার অধিকার নেই। তাদের এদেশে নির্বাচন করারও অধিকার নেই।
জামায়াত-শিবিরকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনারা ১৭টি বছর একটি রাজনৈতিক দল এবং একটি ছাত্র সংগঠনের ছত্রছায়ায় থাকলেন, হালুয়াথরুটি, মাখন খেলেন। শেখ মুজিবকে জাতির পিতা এবং শেখ হাসিনাকে মা ডাকলেন। তাদের সঙ্গে একত্র হয়ে হেলমেট পরে আমাদের পিটালেন। অন্যান্য ছাত্র সংগঠনগুলো ১৫ বছর ঠিকমতো ক্লাস এবং হলে থাকতে পারেনি। অপরদিকে আপনারা আরাম-আয়েশে হলে ছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করে আপনারা বিপ্লবী হয়ে গেলেন।
ডাকসু নির্বাচন নিয়ে বুলু বলেন, ৮০-৮৫ পারসেন্ট ভোট কাস্ট হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২৫-৩০ পারসেন্ট ভোট ছাত্রলীগের ছিল। ছাত্রদল ৫ হাজার ৮০০ ভোট পেয়েছে। আমি বলব, এটা ঐতিহাসিক সাফল্য। কারণ আমরা (ছাত্রদলকে বুঝিয়েছেন) মাত্রই বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতে পেরেছি। আর বাকি যে ৩০ পারসেন্ট ছাত্রলীগের ভোট, এই ভোটগুলো কাস্ট হলো কিভাবে? এর পরে নীলক্ষেতে ব্যালট পাওয়া গেছে। সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে যিনি ভিপি হলেন, ওনার ভোটগুলো কোথা থেকে আসল? ছাত্রলীগের ভোটগুলোই তো দুই নম্বরিভাবে এখানে কাস্টিং হয়েছে। ডাকসুর ভোট নিয়ে তদন্ত হওয়া উচিত।
বিএনপির এই ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ৪২টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তারেক রহমানের দীর্ঘ আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে আড়াই বছর আগে ৩১ দফা উপস্থাপন করা হয়েছে। এই ৩১ দফার চেয়ে ভালো কোনো কিছু আছে বলে আমার মনে হয় না।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, কোনো অবস্থাতেই সংবিধানের মৌলিক পরিবর্তনের অধিকার আপনাদের নেই। যারা এই গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় আসলেন, তারা পিএসরা এখন ৪০০-৫০০ কোটি টাকার মালিক হয়ে গেছে। এই হচ্ছে তাদের লুটপাটের চিত্র।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হচ্ছে কিনা এটা নিয়ে মানুষের মনে সংশয় আছে। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মধ্য ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন হবে।
তিনি বলেন, আগামী নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতেই হবে। এর বাইরে হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আগামী নির্বাচন ঠিকমতো করাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় সংস্কার। আমরা সবাইকে নিয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব।
সভাপতির বক্তব্যে মুক্তিযোদ্ধা কমরেড হারুণ চৌধুরী বলেন, সরকার ভাষা আন্দোলন এবং মুক্তিযুদ্ধকে বাদ দিয়ে কোনো কিছু করলে আমাদের আপত্তি আছে। ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু হয়, সেই আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তিনি।
সভায় সভাপতিত্ব করেছেন বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা কমরেড হারুণ চৌধুরী। সঞ্চালনা করেছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক খান মো. নূরে আলম।
ভোরের আকাশ/এসএইচ