ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছানোর পর জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেনের ওপর হামলার ঘটনায় কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন দলটির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এ বিষয়ে মুখ খুললেন তিনি।
মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকালে ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে তিনি আখতারের ওপর হামলা নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া জানান।
হাসনাত আব্দুল্লাহ লিখেন, হাসিনার পুলিশ লীগ, কোট-কাচারিও আখতারকে দমন করতে পারেনি। আর এসব উচ্ছিষ্ট, জনগণ কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত দালালরা বিদেশে বসে প্রতিবাদের প্রতীক আখতারকে দমন করতে পারবে?
তিনি লিখেন, আওয়ামী দালালদের পক্ষে টকশো আর যুগলবন্দি কলামে যারা ‘সম্মতি’ উৎপাদন করে, তাদেরও কেন প্রত্যাখ্যান করা উচিত — এটা না বুঝলে, কিছুদিন পর এই আক্রমণের শিকার হতে আপনি প্রস্তুত থাকুন।
এ সময় নিজের একটি পুরোনো স্ট্যাটাস শেয়ার করেন হাসনাত। সেখানে তিনি লিখেন, আমার ভাই Akhter Hossen এর মুক্তি চাই। যেকোনো বিতর্কের ঊর্ধ্বে থেকে, ডাকসু ইতিহাসে সর্বজন-সমাদৃত ও সফল নেতা আমার ভাই আখতার।
তিনি লিখেন, এই ছবি হৃদয়ে ক্রমশ রক্তক্ষরণ করছে। আপনি যে মতের, দলের বা আদর্শেরই হোন না কেন। রশি বেঁধে কোরবানির বাজারে গরু তোলার মতো আখতার ভাইকে কোর্টে তোলার এই ছবি আপনাকে ব্যথিত না করলে, জেনে নিয়েন মজলুমের এই শৃঙ্খলে আপনিও আটকা পরবেন। খুব শীঘ্রই।
ভোরের আকাশ/মো.আ.
সংশ্লিষ্ট
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল একদিনে ৭০টি নতুন কমিটি ঘোষণা করেছে। একইসঙ্গে বিলুপ্ত করা হয়েছে ৩টি পুরনো কমিটি।বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।দলীয় সূত্র জানায়, সাংগঠনিক তৎপরতা জোরদার ও নতুন নেতৃত্ব তৈরি করতেই ছাত্রদল এই ব্যাপক রদবদলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে বিলুপ্ত হওয়া তিন কমিটির জায়গায় শিগগিরই নতুন কমিটি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি। ভোরের আকাশ/হ.র
ব্যক্তিস্বার্থকে কেন্দ্র করেই প্রবাসীরা দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে ধারণা করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকসহ রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা। বিদেশের মাটিতেও বিএনপি এবং আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন দলের সংঘর্ষ-সহিংতার কারণে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রশ্ন উঠছে, কারস্বার্থে প্রবাসীরা রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন, এটাই ভাবছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।বিশ্লেষকদের ধারণা, নিজ দেশে ক্ষমতার স্বাদ পাওয়া বা ক্ষমতার কাছাকাছি আসার সহজ উপায় হলো প্রবাসীদের মধ্যে বলয় তৈরি করে দেশের বড় কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত হওয়া। রাজনৈতিক ক্ষমতাকে অবলম্বন করে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার মানসে তাদের এই প্রয়াস। তাছাড়া, ক্ষমতাসীন দলের নেতৃস্থানীয়দের আশীর্বাদপুষ্ট হয়ে এসব প্রবাসী যখন দেশে আসেন, তখন স্থানীয়রা এদের যোগাযোগের পরিধি দেখে এদেরকে অনেকটা সমীহ করে চলে। সর্বোপরি, প্রবাসীদের মধ্যে ব্যক্তি লাভের হিসেবটাই রয়েছে অনেক বেশি।প্রথমত : নিজ দেশের চেয়ে প্রবাসে থাকাকালে রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাদের কাছাকাছি আসার সুযোগ হয়। দ্বিতীয়ত : বাধাঁহীনভাবে শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে গভীর সেতুবন্ধন তৈরি হয়। তৃতীয়ত : নিজেকে সমাজে জাহির করার একটা উপায় তৈরি হয়। চতুর্থ: ব্যক্তিস্বার্থের ক্ষেত্রেই বড় উদ্দেশ্য থাকে নিজ দেশে ক্ষমতার স্বাদ পাওয়া বা ক্ষমতার কাছাকাছি আসার পথ উম্মোচন হয়। পঞ্চম: যে দলের সঙ্গে প্রবাসে যুক্ত থাকেন, দেশে ফিরে দলটির মনোনয়ন নিয়ে এমপি, মন্ত্রী ও মেয়র হওয়ার স্বপ্ন থাকে। ৬ষ্ঠ: কেউ আবার প্রবাসে সময় কাটানোর জন্য এবং পরিচয় সংকটের কারণে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন।রাজনীতি করলে কোনো না কোনো একটা পদবি পাওয়া যা তিনি পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। কেউ আবার মন্ত্রী-এমপিদের সঙ্গে লিয়াজোঁ করে বাংলাদেশের নানান দুর্নীতি করার একটি লক্ষ্য থাকে। বাংলাদেশে যে সরকারই ক্ষমতায় থাকুক, তাদের সান্নিধ্যে আসতেই অনেক প্রবাসীরা লোভে পড়ে রাজনীতিতে যুক্ত হয়। এছাড়াও প্রবাসে রাজনীতিতে যুক্ত থাকলে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা গ্রহনের পথ সুগম হয় বলে মনে করছেন দেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রধানত দুই ধরনের মানুষ রাজনীতি করেন ১. আদর্শগত কারণে। ২. দেশে একজন মন্ত্রী-এমপির সান্নিধ্যে যাওয়া যেমন কঠিন, প্রবাসে তাদের পাওয়া ততই সহজ। এ জন্যই এখানে যে কোনো এমপি মন্ত্রী আসলে তাদের সংবর্ধনা দেওয়ার মধ্যদিয়ে সহজেই ঘনিষ্ঠ হওয়া যায়। যার অন্যতম লক্ষ্য ব্যক্তিস্বার্থ আদায় করা। অনেকে আবার রাজনীতি করতে চান প্রবাসে। অর্থাৎ যে দেশে থাকেন সে দেশের মূল ধারার রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার আগ্রহ থেকে। কেউ কেউ আবার অন্য দেশের নাগরিকত্ব নিলেও তারা নিজ দেশের উন্নয়নের জন্য অর্থাৎ বাংলাদেশের স্বার্থে এই রাজনীতি করছেন বলেও মনে করছেন রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা।রাজনৈতিক দলগুলোর একাধীক নেতা বলছেন, প্রবাসীদের থেকে রাজনৈতিকভাবে কোনো উপকার না হলেও ফান্ড তো আসছে। সেখানে তাদের অনেক বড় লভ্যাংশ আছে। প্রচুর আয় হচ্ছে। এছাড়া অনেক নেতাই সেখানে গিয়ে দিনের পর দিন থাকছেন, তাদের ভরণ-পোষণের তো একটা ব্যাপার আছে! বড় বড় নেতা সে সুযোগ নিচ্ছেন, তা কিন্তু নয়। এ সুযোগ বিভিন্ন স্তরের ক্ষুদ্র নেতারাও নিচ্ছেন। প্রবাসে স্থায়ী ও অস্থায়ীভাবে যেসব বাংলাদেশী বসবাস করছেন, তারা কেন নিজ দেশ থেকে সুদূর বিদেশে অবস্থানের পরও নিজেদেরকে স্বদেশের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত রাখছেন। বাংলাদেশকে ভালোবাসেন প্রবাসে রাজনীতি সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা।দেশের মানুষের জন্য তাদের মন কাঁদে। দলের আদর্শ এবং চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে তা ছড়িয়ে দিতে চান বিশ্বময়। দেশি রাজনীতি কেন বিদেশে এমন বিষয় নিয়ে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা ও বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষের সঙ্গে। এতে উঠে এসেছে ইতিবাচক এবং নেতিবাচক উভয় ধরনের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য।যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে বিএনপিসহ কয়েকটি দলের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত কয়েকজনের সঙ্গে কথা বললে তারা দাবি করেন, অন্য দেশের নাগরিকত্ব নিলেও তারা নিজ দেশের উন্নয়নের জন্য অর্থাৎ বাংলাদেশের স্বার্থে এই রাজনীতি করছেন। তবে, বিগত সময়ের পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, প্রবাসে থেকে রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্তরা দেশে এসে বিএনপি ও আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন দলের মনোনয়ন পেয়ে এমপি, মন্ত্রী ও মেয়র হওয়ার নজির রয়েছে। শীর্ষ নেতৃত্বের আশীর্বাদে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী লন্ডন থেকে দেশে এসে সিলেটে দলটির মেয়র প্রার্থী হয়েছিলেন। তবে জুলাই গণ-অভ্যত্থানে আওয়ামী লীগের শাসনের পতন হলে দেশ ছেড়ে আবার লন্ডন চলে গেছেন মি. চৌধুরী। পতিত আওয়ামী সরকারের আমলে তথ্য সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি। তিনি বেলজিয়াম আওয়ামী লীগের সাধারণ সস্পাদক ছিলেন। তানভীর হাসান ছোটমনি জার্মান আওয়ামী লীগের যুগ্ম সধারণ সস্পাদক ছিলেন।তিনি টাঙ্গাইল-২ আসনের সাংসদ ছিলেন। হাবিবুর রহমান যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্মসধারন সম্পাদক ছিলেন। হল্যান্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা জুড়ী উপজেলার নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান এম এ মোঈদ ফারুক। প্রবাস থেকে একাধীক ব্যক্তি বাংলাদেশে এসে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে এমপি-মন্ত্রী হয়েছেন-বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়। পাশাপাশি বিদেশে থাকা বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নেতাকর্মী ও সমর্থকদের ক্ষেত্রেও অনেক উদাহরণ রয়েছে এবং এখন নতুন করেও তৈরি হচ্ছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান গত ১৭ বছর আওয়ামী লীগের শাসনকাল ধরে লন্ডনে অবস্থান করছেন। সেকারণে যুক্তরাজ্যে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নেতাকর্মী ও সমর্থকদের তৎপরতা রয়েছে খুব বেশি।ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত বছর ৫ আগস্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনার দেশ থেকে পলায়নের মধ্যদিয়ে দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর লন্ডন বিএনপির অনেকেই এখন দেশে এসেছেন। শুধু যুক্তরাজ্য নয়, যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোতে বসবাসকারী বিএনপির রাজনীতিতে সম্পৃক্ত অনেকেই আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার চিন্তা থেকে বাংলাদেশমুখী হয়েছেন বলে দলটির একাধীক সূত্রে জানা গেছে।এ বিষয়ে লন্ডন প্রবাসী এক সাংবাদিক বলেন, ব্রিটেনে প্রবাসী বাংলাদেশিদের রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার পেছনে নানা বাস্তবতা কাজ করে। কেউ কেউ বাংলাদেশে ক্ষমতার কাঠামোর কাছাকাছি থাকতে চান, কেউ আবার দেশে জমি রক্ষা, ব্যবসা-বাণিজ্য কিংবা তদবিরের মাধ্যমে আর্থিকভাবে লাভবান হন।যুক্তরাষ্ট্রের চিত্রটাও একইরকম বলে জানিয়েছেন নিউইয়র্কের বসবাসরত একাধিক ব্যক্তি। প্রবাসে যারা দেশের কোনো দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত, সেই দল ক্ষমতায় গেলে তাদের জন্য তদবির করা সহজ মনে করছেন লন্ডনে বসবাসকারী একাধিক বাংলাদেশি।তারা বলেন, দেশে মন্ত্রী, এমপিদের সঙ্গে দেখা করা বেশ কঠিন। কিন্তু দলের নেতারা যখন লন্ডনে আসেন, তখন সেখানকার সমর্থকেরা তাদের সংবর্ধনা দেওয়াসহ যথেষ্ট সময় দিয়ে থাকেন। এগুলোও এক ধরনের বিনিয়োগ। সেই নেতারা মন্ত্রী-এমপি হলে অতীতের বিনিয়োগের প্রতিদান পাওয়ারও সুযোগ তৈরি হয়।ভোরের আকাশ/এসএইচ
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সব ধরনের লিগ্যাল সমস্যার সমাধান হলেই দেশে ফিরবেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত বাংলা সংবাদপত্র ‘ঠিকানা’-তে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন মির্জা ফখরুল।মির্জা ফখরুল বলেন, উনি দেশে আসবেন যে মুহূর্তে উনার সব লিগ্যাল প্রবলেমগুলো সলভ হয়ে যাবে। যে মুহূর্তে আমরা মনে করব যে, পলিটিক্যালি টাইম ইজ রেডি ফর হিজ অ্যারাইভাল। তার ফেরার ক্ষেত্রে এখনো লিগ্যাল প্রবলেম আছে। উনাকে তো আমরা চাচ্ছি। উনি আমাদের নেতা, এই জাতির নেতা এখন। তার সমস্ত সিকিউরিটি সমস্ত কিছু আমাদের নিতে হবে। সেই জন্যই আমরা পার্টি সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে আমরা যখন মনে করব যে পলিটিক্যালি তার আসার সময় হয়েছে, তখন তিনি আসবেন।এদিকে, বৃহস্পতিবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে প্রয়াত সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজারে ফুল দিয়ে সতদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের শেষ লগ্নের নেতৃত্ব দিতে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে দেশে ফিরবেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তিনি বলেন, আমি কয়েকদিন আগেও বলেছি। আপনারা দেখতে পাবেন, কয়েক সপ্তাহের মধ্যে তারেক রহমান এসে কেবল বিএনপির নির্বাচনী প্রক্রিয়া নয়, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের শেষ লগ্নের নেতৃত্ব দেবেন। জাতীয়তাবাদী দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শুধু বিএনপির নেতৃত্ব দেবেন না। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে যারা সম্পৃক্ত ছিলেন তাদের সবার নেতা তারেক রহমান বলেন তিনি।তিনি বলেন, এই দলের ইতিহাস, এই দলের নেতাদের ইতিহাস কোনো দিনই জনগণের পক্ষে ছিল না। তারা প্রতিহিংসার রাজনীতিতে বিশ্বাস করেন, জনগণের ওপরে চেপে বসার রাজনীতিতে বিশ্বাস করেন। তিনি মন্তব্য করেন, বিএনপির নেতাকর্মীরা তারেক রহমানের আহ্বানে দেশের প্রতিটি ঘরে ঘরে ভোটারদের কাছে, জনগণের কাছে ৩১ দফা কর্মসূচি নিয়ে যাচ্ছেন। তারা সেই কাজে ব্যস্ত আছেন এবং কর্মচাঞ্চল্য চলছে।তিনি আরও বলেন, নির্বাচন সামনে রেখে ১৮ মাস আগে থেকে আমাদের এই কাজ শুরু হয়েছে। আপনারা যেটাকে নির্বাচনী প্রক্রিয়া বলেন, অর্থাৎ মনোনয়ন, বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীর সংখ্যা যা সিট আছে তার চেয়ে ১০ গুণ বেশি। কাজেই কে প্রার্থী হবেন কে হবেন না, তা আমাদের স্থানীয় নেতা, জেলার নেতা ও আমাদের দলের পক্ষ থেকে জরিপ এবং সর্বোপরি জনগণের ভালোবাসায় যারা এলাকায় জনপ্রিয় বিএনপি তাদের মনোনয়ন দেবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।ভোরের আকাশ/এসএইচ
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন হলে দেশের ভয়াবহ পরিণতি হবে। ফের স্বৈরাচারের জাঁতাকলে পিষ্ট হবে দেশ। তবে ‘পতিত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনে জামায়াতে ইসলামীর ইন্ধন দেখা যাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে রিজভী এ কথা বলেন।।বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ পুনর্বাসনের আগ্রহ ও ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে চাওয়া নিয়ে জামায়াতের ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য থাকতে পারে। শেখ হাসিনার দেয়া গণহত্যার যে নির্দেশনা সামনে আসছে তাতে ভারতের মদদ ছিল।তিনি বলেন, অনেকে যারা বলেন, ফ্যাসিস্টদের প্রত্যাবর্তন ঘটানোর জন্য চিন্তা করছেন, তাদের সাথে বন্ধুত্ব করার জন্য চিন্তা করছেন তারা কী ইতিহাস থেকে কোনো শিক্ষা নেননি? আমাদের দেশে ইসলামপন্থি একটি রাজনৈতিক দল বরাবরই আমার মনে হয়েছে আওয়ামী লীগকে সন্তুষ্ট করার জন্য কাজ করছেৃ. তারা এদেশে রাজনীতি করার সুযোগ পেয়েছেন শহীদ জিয়াউর রহমানের কাছ থেকে তারা (জামায়াতে ইসলামী) নিষিদ্ধ দল ছিলো, শহীদ জিয়া তাদেরকে রাজনীতি করার সুযোগ দিয়েছেন।রিজভী বলেন, ’৮৬ সালে নির্বাচন যাওয়া সেটাও তারা আওয়ামী লীগ নির্বাচনে গেছে.. মানুষকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এক আর কাজ করেছে আারেক। ঠিক একইভাবে তারা (জামায়াতে ইসলামী) ও করেছে। এরপরে আমরা দেখেছি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আওয়ামী লীগ যে আন্দোলন করল সেই আন্দোলনেও তারা জ্বালাও-পোড়াও যে আন্দোলন হয়েছিল সেই আন্দোলনেও আওয়ামী লীগের সাথে তারাও করেছে। বিভিন্ন জায়গায় ওই সময়ে তারা হত্যাও করেছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র টিটোকে শিবির (ইসলামী ছাত্রশিবির) গুলি করে হত্যা করেছিল ১৯৯৫-৯৬ সালে যে আন্দোলন হয়েছিল.. এটা তো কারো ভুলে যাওয়ার কথা নয়। ২০০৮ সালের নির্বাচনে যাওয়াৃ ম্যাডাম (খালেদা জিয়া)যেতে চাননিৃতাদেরই নেতারা বাধ্য করেছিল, না হলে তারা স্বতন্ত্রভাবে করবে। এখন আবার তারা স্বরূপে বেরিয়েছেন এবং আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন করছেন।তিনি বলেন, কখনোই কোনো রক্ত পিপাসু, গণতন্ত্র ধ্বংসকারী এবং নিজের দেশের যে হত্যা করে ক্ষমতাকে চিরতরে আঁখড়ে রাখার যার ভাসনা ছিলো এরকম বাংলাদেশি মডেলে যে ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছিলেন শেখ হাসিনা সেই ফ্যাসিবাদের পুনরুত্থান বা পুনর্জাগরণের কোনো সুযোগ বাংলাদেশে নাই।এদেশের মানুষ মধ্যপন্থি, এদেশের মানুষ ধর্মভীরু কিন্তু গণতন্ত্র প্রিয়। তারা কথা বলতে চায় নির্ভয়ে, তারা এক-দুই বেলা কম খেলেও তাদের কণ্ঠের আওয়াজ তীব্র করতে চায়। সেদেশের মানুষকে জোর করে ফ্যাসিবাদের নতুন ধারায় কেউ মনে করে যে নিয়ে আসতে চাইবে এটা জনগণ হতে দেবে না।সাবেক প্রধানমন্ত্রীর টেলি সংলাপ ভয়ংকর উল্লেখ কওে রিজভী বলেন, যে প্রধানমন্ত্রী সরাসরি গুলির জন্য নির্দেশ দিচ্ছেন এবং গতকালকে যে আলাতগুলো আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে ডকুমেন্ট ও টেলিফোন কথোপকথনের ক্লিফসহ এসব যে কেউ শুনলে শিহরিতো হয়ে উঠবে। আমরা যারা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছি, আন্দোলন করেছি, রাজনীতি করেছি আমরা প্রত্যেকে মৃত্যুর মুখোমুখি ছিলাম। শেখ হাসিনার বর্বরতা আমরা স্বচক্ষে দেখেছি, নিজেরা নিপীড়নের শিকার হয়েছি, দিনের পর দিন রিমান্ডে থেকেছি, মাসের পর মাস জেলখানায় থেকেছিৃ তার ভয়াবহতা আমরা দেখেছি। কিন্তু এর গভীরে যে আরও ভয়াবহতা ছিলো.. তারা একটি আন্দোলনকে দমানোর জন্য কী ভয়ংকর পরিণতির দিকে নিয়ে গিয়েছিলো সেটা এখন প্রতিদিনকার যে আলামতগুলো আদালতে জমা হচ্ছে, সেখানে উপস্থাপন করা হচ্ছে তা থেকে বুঝা যায়। সাবেক প্রধানমন্ত্রীর টেলিফোন কথোপকথনের যে বিষয়গুলো উপস্থাপন করা হচ্ছে তাতেই আমাদের মধ্যে উদ্বেগ-শঙ্কা দেখা দিচ্ছে। যদি এই ফ্যাসিবাদী শক্তির আবার পুনরুত্থান ঘটে তাহলে ৫ আগস্টের আন্দোলনকামী মানুষ, গণতন্ত্রকামী মানুষের কী ভয়ংকর পরিণতি ভোগ করতে হবে সেটা চিন্তা করে শরীরের লোম শিহরে উঠে। হেলিকপ্টার থেকে গুলি করার নির্দেশ দিচ্ছেন, যত সরকারি ভবনে আগুন জ্বালিয়েছে, মেট্রোরেলের স্টেশনে যে আগুন লাগানো হলো সব শেখ হাসিনার নির্দেশে হয়েছে সেটা আজ সেই টেলিফোনের কথোপকথনে থেকে বেরিয়ে আসছে, সত্য বেরিয়ে আসছে।অথচ ওই সমস্ত নাশকতার ঘটনায় তখন আন্দোলনকারী মানুষদের ওপরে চাপানো হয়েছে। আমারকে ওই সময়ে মেট্রোরেল স্টেশনের পুড়ানোর মামলায় আসামি করা হয়েছিল, নজরুল ইসলাম খানসহ আরও অনেকে সময়ে যারা গ্রেফতার হয়েছেন। অথচ এখন আমরা প্রমাণ পাচ্ছি এইসব ঘটনার সব নির্দেশনা দিয়েছেন শেখ হাসিনা নিজেই। নাশকতার যে অভিযোগ ওই সময় করা হয়েছে সেই নাশকতা তিনি(শেখ হাসিনা) নিজে সৃষ্টি করেছেনৃ.। তিনি (শেখ হাসিনা) এমন এক সর্বনাশা খেলায় মেতেছিলেন যার ফলে দেশ, জাতি এবং মানুষের জানমাল বিপন্ন হয়েছিল ওইসময়ে।কতিপয় উপদেষ্টা-আমলারা কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন সম্পর্কে রিজভী বলেন, এই অন্তবর্তীকালীন সরকারের কিছু উপদেষ্টার কর্মকাণ্ডে সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠছে। আজকের গণমাধ্যমে এসেছে, উপদেষ্টা সজীব ভূঁইয়া তার নিজ এলাকায় সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ নিয়েছেনৃ.প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা। এটা এক ধরনের বৈষম্য এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কাজ।তিনি অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের সুযোগ কাজে লাগিয়ে নিজের এলাকা উন্নয়নের নামে ভবিষ্যতে এমপি হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সাধারণ মানুষ। একজন উপদেষ্টা কিংবা একজন সরকারি উচ্চ পর্যায়ের আমলা কী নিজের এলাকায় হাজার হাজার কোটি টাকার সরকারি বরাদ্দ নিয়ে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চালাতে পারেন? সারা দেশকে বঞ্চিত রেখে এটি করা সম্পূর্ণরূপে অনৈতিক এবং নীতিবিরোধী। আমরা শুনেছি, কেবিনেট সচিব একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের প্রতি অনুগত। তিনি হয়তো অবসরের পরে নির্বাচনেও অংশ নিতে পারেন। এটি দুঃখজনক এবং সরকারি শৃঙ্খলা ও স্বচ্ছতার পরিপন্থি।ভোরের আকাশ/এসএইচ