ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি, দিনাজপুর
প্রকাশ : ১৩ নভেম্বর ২০২৫ ১১:৫৬ এএম
ছবি: ভোরের আকাশ
দিনাজপুরে আমন ধান কর্তনের উৎসব আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে। গতকাল বুধবার (১২ নভেম্বর) দুপুরে সদরের সুন্দরবন ইউনিয়নের কালিকাপুর গ্রামে জেলা প্রশাসক মো. রফিকুল ইসলাম প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এই শস্য কর্তন উৎসবের উদ্বোধন করেন।
জেলা প্রশাসক রফিকুল ইসলাম কৃষকদের সঙ্গে একাত্ম হয়ে নিজ হাতে ব্রি-৫১ জাতের ধান কেটে উদ্বোধন করেন শস্য কর্তন কর্মসূচির। মাথায় টুপি, ঘাড়ে গামছা, হাতে কাস্তে—নিজের শৈশবের কৃষিকাজের স্মৃতি স্মরণ করে তিনি বলেন, আমার বাবা ছিলেন কৃষক। ছোটবেলায় বাবার সঙ্গে ধান কাটা, মাড়াইয়ের কাজে অংশ নিয়েছি। আজ আবার সেই দিনগুলোর স্মৃতি ফিরে পেলাম।
এ সময় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ আফজাল হোসেন ও দিনাজপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহীন সুলতানা, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মাসুম তুষারসহ উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষক-কৃষাণীরা উপস্থিত ছিলেন।
কালিকাপুর গ্রামের চাষিরা জানান, ব্রি-৫১ ধানটি আগাম জাত হওয়ায় বীজতলা থেকে কাটা পর্যন্ত ১২৫ থেকে ১৩০ দিনের মধ্যে ফসল ঘরে তোলা যায়।ধান কাটার পরপরই একই জমিতে আলু বা ভুট্টা চাষের প্রস্তুতি নিতে হয়,একই জমি থেকে দুই মৌসুমে ফসল ঘরে তুলতে পারব।
দিনাজপুর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মাসুম তুষার জানান, ব্রি-৫১ ধান জাতটি আগাম ও উচ্চফলনশীল। এ জাতের ধান চাষে কম খরচে বেশি ফলন পাওয়া যায়। এতে কৃষকরা দ্রুত জমি ফাঁকা করে রবি মৌসুমের ফসল আবাদ করতে পারেন। ফলে কৃষকরা অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ আফজাল হোসেন বলেন, দিনাজপুর জেলায় চলতি মৌসুমে ২ লাখ ৬০ হাজার ৮৬২ হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ হয়েছে, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি। এতে প্রায় ৮ লাখ ৮৫ হাজার মেট্রিক টন চাল উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে, যার বাজারমূল্য ৪ হাজার কোটি টাকারও বেশি।
জেলা প্রশাসক রফিকুল ইসলাম ধান কর্তনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কবিতার পঙক্তি উদ্ধৃত করে বলেন, সব সাধকের বড় সাধক আমার দেশের চাষা, দেশমাতারই মুক্তিকামী দেশের সে যে আশা।
তিনি আরও বলেন, দিনাজপুর কৃষিতে স্বয়ংসম্পূর্ণ একটি জেলা। এখানকার উৎপাদিত ধান স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের অন্যান্য জেলায় পাঠানো হয়। কৃষকরা এখন প্রযুক্তি নির্ভর কৃষিতে অভ্যস্ত হচ্ছেন। সরকার প্রদত্ত কৃষি অ্যাপস ব্যবহারের মাধ্যমে তারা সারের যৌক্তিক ব্যবহার, কীটনাশক প্রয়োগ ও সেচ ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা অর্জন করেছেন।”
এ সময় কৃষকদের উদ্দেশে বলেন, “কৃষকরাই দেশের চালিকাশক্তি। তাদের ঘামে সিক্ত এই মাটির ফসলেই বাংলাদেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। সরকার কৃষকদের পাশে আছে, থাকবে—যাতে তারা তাদের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্যমূল্য পান।
অনুকূল আবহাওয়া ও সরকারি সহায়তায় এবার দিনাজপুরে আমন ধানের ফলন আশানুরূপ হয়েছে। মোঃ আব্দুল হাফিজভ্রাম্যমান প্রতিনিধি।
ভোরের আকাশ/তা.কা