দেশে প্রথম যাত্রা শুরু হলো স্টুডেন্টস হেলথ কার্ড
দেশ প্রথম যাত্রা শুরু হলো স্টুডেন্টস হেলথ কার্ড কার্যক্রমের চট্টগ্রামে । প্রাথমিক পর্যায়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) পরিচালিত ৫টি বিদ্যালয়ে এ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। পরবর্তীতে চসিকের অন্যান্য স্কুলে এই কার্যক্রম চাল করা হবে।
বুধবার (২১ মে) সকালে নগরের কাপাসগোলা সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে এ কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
উদ্বোধনী বক্তৃতায় মেয়র বলেন, শিশুদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা শুধু অভিভাবকের দায়িত্ব নয়, প্রতিষ্ঠান এবং সিটি করপোরেশনকেও সে দায়িত্ব নিতে হবে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে শুধু স্বাস্থ্য নয়, শিক্ষার্থীদের মধ্যে পরিচ্ছন্নতা, স্বাস্থ্যবিধি এবং দায়িত্ববোধের মতো মূল্যবোধ গড়ে তোলা সম্ভব হবে। ‘ক্লিন, গ্রিন ও হেলদি চট্টগ্রাম’ বাস্তবায়নে এ কর্মসূচি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি হবে।
মেয়র শাহাদাত হোসেন বলেন, হেলথ কার্ডের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা, টিকাদান এবং চিকিৎসাসংক্রান্ত তথ্য সংরক্ষণ করা যাবে। কার্ডে শিক্ষার্থীর নাম, জন্মতারিখ, বিদ্যালয়ের নাম, শ্রেণি, অভিভাবকের নাম ও যোগাযোগের তথ্য সংরক্ষণের সুযোগ থাকবে। ৫ থেকে ১৭ বছর বয়স পর্যন্ত সর্বমোট ১৪ বার স্বাস্থ্য পরীক্ষার রেকর্ড রাখা যাবে। প্রতি পরীক্ষায় ওজন, উচ্চতা, চোখ-কান, দাঁত, ত্বক-চুলের অবস্থা, রক্তচাপ ও হিমোগ্লোবিনসহ প্রয়োজনীয় তথ্য অন্তর্ভুক্ত থাকবে। কার্ডে একটি পৃথক অংশে টিকাদান সংক্রান্ত তথ্য সংরক্ষণের ব্যবস্থাও থাকবে। এতে বিসিজি, পোলিও, হেপাটাইটিস-বি, এমআর, পেন্টাভ্যালেন্ট, টাইফয়েড, ইনফ্লুয়েঞ্জা ও র্যাবিসসহ গুরুত্বপূর্ণ টিকার রেকর্ড রাখা যাবে। এর মাধ্যমে একটি সুস্থ ও সচেতন প্রজন্ম গড়ে তোলা সম্ভব হবে। চট্টগ্রামের এই মডেল ভবিষ্যতে দেশের অন্যান্য সিটি করপোরেশন ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও অনুসরণীয় হবে। এই প্রকল্পের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টাকেও অবহিত করা হয়েছে এবং তিনি এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন।
শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও চিকিৎসকদের মতে, এটি চসিকের এক অনন্য উদ্যোগ।
চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মুখ্য আলোচক ছিলেন শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী। সম্মানিত আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ইলিয়াছ উদ্দিন আহম্মদ। স্বাগত বক্তব্য দেন চসিকের প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা ড. কিসিঞ্জার চাকমা।
বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. শরীফ উদ্দিন। আরও উপস্থিত ছিলেন চসিক সচিব মো. আশরাফুল আমিন, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. ইমাম হোসেন (রানা), কাপাসগোলা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রোমা বড়ুয়া এবং ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নুর বানু চৌধুরী।
হেলথ কার্ড চালু করা পাঁচটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হলো-পাথরঘাটা সিটি কর্পোরেশন বালক উচ্চ বিদ্যালয়, গুল এজার বেগম সিটি কর্পোরেশন উচ্চ বিদ্যালয়, ইমারাতুন্নেসা কিন্ডারগার্টেন, পাঁচলাইশ কিন্ডারগার্টেন এবং কাপাসগোলা সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের।
ভোরের আকাশ/এসআই
সংশ্লিষ্ট
দেশে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে নতুন করে ৭৫৮ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।বুধবার (১৫ অক্টোবর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।নতুন আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় ২০২ জন এবং ঢাকার বাইরে ৫৫৬ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ঢাকার বাইরে বিভাগওয়ারি আক্রান্ত রোগীদের সংখ্যা হলো- ঢাকা বিভাগে (ঢাকাসহ) ১৫৮ জন, চট্টগ্রামে ৮৫ জন, বরিশালে ১৩৩ জন, ময়মনসিংহে ৫০ জন, খুলনায় ৬২ জন, রংপুরে ১৯ জন, রাজশাহীতে ৪৭ জন এবং সিলেটে ২ জন।স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর ডেঙ্গুতে মোট মৃত্যু হয়েছে ২৪২ জনের। একই সময়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন মোট ৫৭ হাজার ১৫ জন।ভোরের আকাশ/এসএইচ
সরকারি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে বিশেষায়িত চিকিৎসাসেবার ন্যূনতম সুুযোগ সুবিধা নেই। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসেবার উচ্চ ব্যয়ের চাপ কমাতে উপজেলাকেন্দ্রিক একটি শক্তিশালী স্বাস্থ্য ও চিকিৎসাসেবা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একাধিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পদ রয়েছে। কিন্তু তাদের পদ খালি। অ্যানেস্থেসিয়া, গাইনি ও সার্জারি চিকিৎসকের অভাবে অপারেশন চলে না। প্রাইমারি চিকিৎসাসেবার কেন্দ্র হিসেবেই ভূমিকা রেখে আসছে উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলো। ফলে ছোট সমস্যা নিয়েও গ্রামাঞ্চলের রোগীদের ছুটে যেতে হয় বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলোতে।বিশেষজ্ঞরা বলেন, দেশের স্বাস্থ্য ও চিকিৎসাসেবা প্রদানে উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। এসব প্রতিষ্ঠানের অপারেশন থিয়েটারে টিউমার, ফোঁড়া, অর্থোপেডিকসসহ বিভিন্ন ছোট ও মাঝারি অপারেশনের ব্যবস্থা থাকার কথা রয়েছে। শুধু তাই নয়, প্রতিটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গাইনি, মেডিসিন, শিশু, কার্ডিওলজি, অর্থোপেডিকস, সার্জারি, চর্ম ও যৌন, চক্ষু, নাক-কান ও গলা বিশেষজ্ঞসহ ১১ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পদ রয়েছে। পদসমূহ খালি রয়েছে।চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসেবার উচ্চ ব্যয়ের চাপ কমাতে সরকারি উদ্যোগে উপজেলা পর্যায়ে বিশেষায়িত চিকিৎসাসেবার পরিধি বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, চিকিৎসা ব্যয় ও ওষুধের দামও লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েই চলেছে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহের উন্নত চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসেবা ব্যয় দেশের অধিকাংশ মানুষের নাগালের বাইরে। তার চাপ গিয়ে পড়ছে বিনামূল্যে বা নামমাত্র খরচে স্বাস্থ্য ও চিকিৎসাসেবা প্রদানকারী সরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহের ওপর। সরকারি হাসপাতালের তুলনায় অনেক গুণ বেশি চিকিৎসা খরচ হয়ে থাকে বেসরকারি হাসপাতালে। আর্থিক সঙ্কটে জটিল রোগে আক্রান্ত রোগীর অকালে মৃত্যুর ঘটনাও বিরল নয়। এমতাবস্থায় বেসরকারি হাসপাতালগুলোর চিকিৎসাসেবার উচ্চ ব্যয় থেকে দরিদ্র জনগণকে বাঁচাতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মুশতাক হোসেন ভোরের আকাশকে বলেন, বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবার অবকাঠামো ও উন্নয়ন অতুলনীয় এবং বিশ্বের জন্য অনুকরণীয় হয়ে উঠেছে। কেন্দ্র থেকে মফঃস্বল পর্যন্ত তথ্য-প্রযুক্তিতে সাজানো হয়েছে। স্বাস্থ্যসেবার এমন অবকাঠামো বিশ্বের কোথাও নেই।তিনি বলেন, দেশের স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা ব্যয় বিবেচনায় সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্যে অনেক পার্থক্য বিদ্যমান। দেশের বেসরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান চালু রাখা অনেক ব্যয়বহুল। তাই ওই সব প্রতিষ্ঠানে খরচও অনেক। তবে থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে সীমিত পরিসরে হলেও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও সার্জারি নিশ্চিত করা গেলে সাধারণ মানুষের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার স্রোত হ্রাস পেত।ডক্টরস ফর হেলথ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক রশিদী-ই মাহবুব ভোরের আকাশকে বলেন, সরকারি উদ্যোগ জেলা ও থানা পর্যায়ে বিশেষায়িত চিকিৎসাসেবার পরিধি বাড়াতে হবে। থানা পর্যায়ে উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা থাকলে মানুষ অর্থ ব্যয় ও কষ্ট করে জেলা পর্যায়ে যাবে না। আর জেলা পর্যায়ে পর্যাপ্ত সরকারি ব্যবস্থা থাকলে বিভাগীয় পর্যায়ে যাবে না। এটা তো সহজ হিসাব।বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ ভোরের আকাশকে বলেন, টাকার অভাবে উন্নত চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করতে পারে না মানুষের সংখ্যা কম নয়। সারাদেশে নামমাত্র খরচে চিকিৎসাসেবা প্রদান, ওষুধ বিতরণ, রোগীদের খাওয়া-দাওয়া ইত্যাদি সেবা দিয়ে যাচ্ছে সরকার। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোক্তাদেরও এগিয়ে আসা উচিত। সরকারি উদ্যোগে থানা পর্যায়ে বিশেষায়িত চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত হলে বেসরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে রোগীদের যাওয়া কমে যাবে।উপজেলা পর্যায়ের চিকিৎসকদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, উপজেলা হাসপাতালের পদ থাকা সত্ত্বেও বেশির ভাগ পদগুলো খালি থাকে। স্থানীয়ভাবে শূন্য পদগুলোতে সঙ্গে সঙ্গে নিয়োগ দেওয়া সম্ভব, অনেক দেশেই এই ব্যবস্থা আছে। হাসপাতালের ভর্তি রোগীরা প্রায় সকল ঔষধ বিনা পয়সায় পেয়ে থাকে কিন্তু বর্হিবিভাগ রোগীদের জন্য ঔষধ বরাদ্দ খুব কম এ বিষয়ে পরির্বতন আনতে হবে।এছাড়া নানাবিধি অসুবিধার কারণে মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বিশেষায়িত হাসপাতালে অনেক বেশি রোগীর ভিড় থাকায় রোগীদের মানসম্মত চিকিৎসা দেওয়া যাচ্ছে না। উপজেলা হাসপাতালে রোগীরা ডাক্তার পায়না, ঠিকমত ওষুধ পায় না। ফলে তারা জেলা ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভিড় করে। যে কারণে এসব হাসপাতালে এক সঙ্গে অনেক রোগী থাকায় আমরা মানসম্মত চিকিৎসাসেবা দিতে পারছে না। চিকিৎসা সেবায় কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র হয়ে রোগীরা উপজেলা ও জেলাভিত্তিক ইনডোর স্বাস্থ্যসেবা পেতে ডিজিটাল রেফারেল সিস্টেম চালু করতে হবে এবং অপেক্ষাকৃত জটিল রোগের জন্য উপজেলা থেকেই জেলা, বিভাগীয় ও বিশেষায়িত হাসপাতালগুলোতে রেফারেল সিস্টেমের মাধ্যমে রোগী পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে।ডক্টরস ফর হেলথ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক রশিদী-ই মাহবুব বলেন, জনগণের স্বাস্থ্যের ব্যাপারটিকে যদি আমরা ‘জনস্বাস্থ্য’ নামে আখ্যায়িত করি, তাহলে আমাদের নজর দিতে হবে বৃহত্তর জনগোষ্ঠী যেখানে বাস করে, তাদের স্বাস্থের দিকে। আমরা প্রথমে চাইব, তারা যেন অসুস্থ না হয়। আর অসুস্থ হলে প্রাথমিক চিকিৎসা এবং সম্ভব হলে পরবর্তী স্তরের চিকিৎসা যেন কাছাকাছি পায়। সেটি তাদের কাছে কি আছে? নেই।আমাদের যে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো আছে, তাতে দেখা যাচ্ছে ছয় হাজার মানুষের জন্য একটি ক্লিনিক! এই ধরনের একটি নিউক্লিয়াস পৃথিবীর কোনো দেশেই নেই। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে আমাদের প্রাথমিকসেবা যদিও এখান থেকে শুরু হয়, তবুও সত্যিকারভাবে প্রাথমিক সেবাটা মানুষ পায় উপজেলা হাসপাতাল থেকে। তার নিচে আরও দুটো টায়ার আছে, এর একটি মুখ্য, তা হচ্ছে ইউনিয়ন হেলথ সেন্টার। এর বাইরে অনেক জায়গায় সাবসেন্টার রয়েছে। ইউনিয়ন হেলথ কমপ্লেক্স থেকে কমিউনিটি ক্লিনিক পর্যন্ত এই জায়গার মান বৃদ্ধি করতে পারলে আমরা মিরাকেল করতে পারি। তাহলে আমাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় অন্যরা পেরে উঠবে না। যেমন- একটি উপজেলা হাসপাতালে দশ জনের মতো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আছেন, সেখানে যাতায়াতের সুবিধাও খুবই উন্নত। তাহলে আমাদের রোগীরা উপজেলা হাসপাতালেই বেশিরভাগ চিকিৎসাসেবা পেয়ে যাচ্ছেন।তিনি আরও বলেন, উপজেলাগুলোর স্বাস্থ্যসেবার মান যদি উন্নত করি, আগামী দিনের সংস্কারে যদি এটি প্রাধান্য পায় এবং এগুলোকে যদি শক্তিশালী ও মানসম্মত করা যায়; পাশাপাশি এখানে প্রয়োজনগুলোর ঘাটতি যদি না রাখি, তাহলে আমাদের দেশের সর্বাঙ্গীনভাবে একটি বৃহৎ জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা আমরা খুব সুন্দরভাবে নিশ্চিত করতে পারি।তবে উপজেলায় অনেকগুলো পোস্ট আছে, কিন্তু তাদের সময়মতো পাওয়া যাচ্ছে না। তাদের উপজেলাগুলোতে প্রাপ্যতা নিশ্চিত করার জন্য কী করা যেতে পারে? সরকারিভাবে পদ সৃষ্টি করে দেওয়া আছে এবং পদায়নও করা আছে। কিন্তু শুধু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দিলেই হবে না, এর সঙ্গে আনুষাঙ্গিক সমস্ত সার্ভিস নিশ্চিত করতে হবে। কিন্তু সার্ভিস নিশ্চিত না, তাহলে তাকে সেখানে পদায়নের লক্ষ্যটা কী? স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে কেন আমরা এমন কাউকে পদায়ন করবো যাকে জনগণ পাবে না বা যে ব্যবহৃত হবে না? সুতরাং প্রথম যে কাজটি করতে হবে তা হচ্ছে সরকারকে সার্বিক সংস্কারের আগে ধাপে ধাপে চিকিৎসকদের বিষয়টিকে সংস্কার করতে হবে। এ বিষয়ে সরকারকে একটি কৌশলগত পরিকল্পনা হাতে নিতে হবে।উপজেলা হেলথ কমপ্লেক্সকে শক্তিশালী করতে করণীয় : বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোকে এমনভাবে সাজাতে হবে যেন স্থানীয় মানুষজনের সার্বিক চিকিৎসা সেখানেই সম্ভব হয়। এতে সেখানকার জনোগোষ্ঠীর বিশেষজ্ঞ স্বাস্থ্যসেবা যা দরকার, তার বিরাট অংশই তারা পাবেন সেখানে। শুধুমাত্র এর চেয়ে উন্নত সেবার জন্যই তারা জেলা হাসপাতালগুলোতে যাবেন। আর জেলা হাসপাতালগুলোর চেয়ে উন্নত সেবার প্রয়োজনে তারা যাবেন বিশেষায়িত হাসপাতালে। অগ্রাধিকারভিত্তিতে সংস্কার প্রথম দরকার উপজেলা হাসপাতালগুলোতে। এখানে সংস্কার করলে দেশব্যাপী সংস্কারের প্রভাব পড়বে। আমরা উপজেলা হাসপাতালগুলোতে যদি জনবল নিশ্চিত করতে পারি, একই সঙ্গে প্রয়োজনীয় আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা নিশ্চিত করতে পারি, তাহলে আমরা উপজেলাতেই পূর্ণাঙ্গ একটা ইউনিট পেতে পারি যেখানে জনগণ সার্বিক স্বাস্থ্যসেবাটা পাবে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
সারা দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরো ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে এডিস মশাবাহিত রোগটিতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৮৪১ জন।মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।এতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর মধ্যে বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১২৫ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১০৬ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ২১৪ জন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১৭৩ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১২৮ জন, খুলনা বিভাগে বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ২৬ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১৯ জন, রাজশাহী বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪৭ জন, সিলেট বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) তিন জন রয়েছেন।২৪ ঘণ্টায় কোন ৭৯৩ জন ডেঙ্গুরোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। চলতি বছরে এ যাবত মোট ৫৩ হাজার ৩৫৪ জন রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। চলতি বছরের ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে ৫৬ হাজার ২৫৭ জন। এর মধ্যে ৬১ দশমিক এক শতাংশ পুরুষ এবং ৩৮ দশমিক নয় শতাংশ নারী রয়েছেন।ভোরের আকাশ/এসএইচ
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৮৫৭ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এই সময়ের মধ্যে ৩ জন মারা গেছেন। চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ২৩৩ জনের এবং হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৫৫ হাজার ৪১৬ জন।সোমবার (১৩ অক্টোবর) স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ৮৫৭ জন ভর্তি হয়েছেন।এর মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে ১৩৮, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে ১৪৫, বরিশালে ১৬৩, ঢাকায় ১৩৬, চট্টগ্রামে ৮৭, খুলনায় ৬০, ময়মনসিংহে ৩৯, রাজশাহীতে ৭৬, রংপুরে ৭ ও সিলেটে ৬ জন রয়েছে।এ নিয়ে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত সবমিলিয়ে ৫৫ হাজার ৪১৬ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।ভোরের আকাশ/এসএইচ