সংগৃহীত ছবি
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ঘোষণা করেছেন, আগামী সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ফ্রান্স আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেবে। জি৭ জোটভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে এটি হবে প্রথম স্বীকৃতি।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) এক্সে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এই ঘোষণা দেন।
এক্স পোস্টে ম্যাক্রোঁ লিখেন, ‘এই মুহূর্তে সবচেয়ে জরুরি হলো গাজায় যুদ্ধের অবসান ও সাধারণ মানুষের জীবন রক্ষা করা।’ তিনি আরও লিখেন, ‘শান্তি সম্ভব। আমাদের এখনই একটি যুদ্ধবিরতি দরকার, সব বন্দীর মুক্তি এবং গাজার জনগণের জন্য বিপুল মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করতে হবে।’
ম্যাক্রোঁ লিখেন, ‘একই সঙ্গে হামাসকে নিরস্ত্র করতে হবে, গাজাকে সুরক্ষিত করতে হবে ও পুনর্নির্মাণ করতে হবে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করে তা পুনর্গঠন করতে হবে। আমাদের ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন করতে হবে, তার টিকে থাকার পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।’
ম্যাক্রোঁ আরও বলেন, এসব করতে হলে ফিলিস্তিনকে নিরস্ত্রীকরণে সম্মত হতে হবে ও ইসরায়েলকে সম্পূর্ণ স্বীকৃতি দিতে হবে। আর এই পদক্ষেপই এই অঞ্চলের সবার নিরাপত্তায় ভূমিকা রাখবে। এর কোনো বিকল্প নেই।
এক্স পোস্টে ম্যাক্রোঁ বলেন, ফ্রান্সের নাগরিকেরা মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি চায়। ফরাসি, ইসরায়েলি, ফিলিস্তিনি, ইউরোপীয় ও আন্তর্জাতিক অংশীদার— সবার দায়িত্ব এটা প্রমাণ করা যে, শান্তি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী এ বিষয়ে নিজের দৃঢ় প্রতিজ্ঞার কথা চিঠি লিখে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্টকে (মাহমুদ আব্বাস) জানিয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন মাখোঁ।
ভোরের আকাশ/জাআ
সংশ্লিষ্ট
পেরুর লিমা শহর থেকে লা মের্সেডগামী একটি বাস দুর্ঘটনার কবলে পড়ে কমপক্ষে ১৫ জন নিহত হয়েছেন। এ দুর্ঘটনায় প্রায় ৩০ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার (২৫ জুলাই) পালকা জেলায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।জুনিন অঞ্চলের স্বাস্থ্য পরিচালক ক্লিফোর কুরিপাকো জানান, শুক্রবার পালকা জেলায় বাসটি সড়ক থেকে ছিটকে পড়ে একটি খাড়ির খাদে পড়ে যায়।তরমা শহরের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আলদো তিনেও বলেন, নিহত ১৫ জনের মরদেহ শনাক্ত করার কাজ চলছে। বাসটি এক্সপ্রেসো মোলিনা লিডার ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি পরিবহন সংস্থার ছিল। ডাবল ডেকার ওই বাসটিতে ৬০ জনের বেশি যাত্রী ছিলেন। দুর্ঘটনায় বাসটি ছিটকে পড়ে উল্টে গিয়ে একটি নদীর পাশে পড়ে যায়।স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর প্রচারিত ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, বাসটি দুর্ঘটনায় ভেঙে দুই টুকরো হয়ে গেছে। কর্তৃপক্ষ উদ্ধার অভিযান চালিয়ে আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসা দিচ্ছে। ইতিমধ্যে দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ।ভোরের আকাশ/এসএইচ
গত বৃহস্পতিবার থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার সীমান্ত এলাকায় দুই দেশের মধ্যে মারাত্মক সংঘর্ষ শুরু হয়, যা শুক্রবার সকালেও অব্যাহত রয়েছে। এই সশস্ত্র সংঘাত দুই দেশের দীর্ঘদিনের সীমান্ত বিতর্কে নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। সংঘর্ষে দুইপক্ষই একে অপরকে দায়ী করেছে এবং ভারী অস্ত্র, রকেট এবং বিমান হামলায় জড়িয়ে পড়েছে।সীমান্তের বিতর্কিত অঞ্চলগুলোতে সংঘর্ষ শুরু হয় হালকা অস্ত্রের গুলিবর্ষণ দিয়ে। কিন্তু খুব দ্রুত পরিস্থিতি কঠিন হয়ে ওঠে এবং উভয়পক্ষ ভারী অস্ত্র যেমন ফিল্ড আর্টিলারি, বিএম-২১ রকেট সিস্টেম ব্যবহার করে গোলাবর্ষণ চালায়। থাইল্যান্ডের সামরিক বাহিনী জানায়, কম্বোডিয়ার সেনারা প্রথমে টানা গোলাবর্ষণ করে, যার জবাবে তারা পাল্টা হামলা চালায়। সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে অন্তত ছয়টি ভিন্ন স্থানে, যেখানে সীমান্তের মানুষ মারাত্মক সংকট ও ভয়াবহ ঝুঁকিতে পড়েছে।ছয়টি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান নিয়ে থাইল্যান্ড সীমান্ত এলাকায় খুঁটি গেড়েছে। গতকাল শুক্রবার সকালে এই বিমানগুলোর একটি কম্বোডিয়ার সামরিক অবস্থানে বোমা হামলা চালায়। থাইল্যান্ড কর্তৃপক্ষের দাবি, সেটার লক্ষ্য ছিল বিশেষ সংগঠিত সামরিক লক্ষ্যবস্তু। তবে এই যুদ্ধবিমান হামলায় বেসামরিক জনগণও ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনাকে কম্বোডিয়া ‘বেপরোয়া ও নৃশংস সামরিক আগ্রাসন’ হিসেবে বর্ননা করেছে।থাইল্যান্ডের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সংঘর্ষে তাদের কমপক্ষে ১২ জন নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে ১১ জন বেসামরিক মানুষ এবং ৮ বছরের এক শিশু রয়েছে। আহতের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অপরদিকে, কম্বোডিয়ার পক্ষ থেকে হতাহতের বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ পায়নি। তবে সীমান্তবর্তী গ্রামগুলো থেকে শিশু, প্রবীণ ও নারীসহ হাজার হাজার মানুষ নিরাপদ স্থানে সরে এসেছে বলে তার জানায়। বালির বস্তা ও টায়ার দিয়ে তৈরি কংক্রিট বাংকার বা শরনার্থী ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছে তারা।এর আগে, গত বুধবার থাইল্যান্ড সরকার কম্বোডিয়ার রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করে এবং নিজের রাষ্ট্রদূতকে নমপেন শহর থেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছে। এর আগে, থাইল্যান্ড দাবি করেছিল যে কম্বোডিয়ার সেনারা স্থলমাইন পুঁতে রেখেছিল, যার বিস্ফোরণে এক থাই সেনা সদস্য পা হারিয়েছেন। কম্বোডিয়া এই অভিযোগ অস্বীকার করে ‘মিথ্যা’ বলে অভিহিত করেছে। তখন থেকেই দুই দেশের রাজনৈতিক সম্পর্ক অবনতি হতে শুরু করে। কূটনৈতিক টানাপোড়েনও বেড়ে যায়।কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেত জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে একটি লিখিত চিঠি পাঠিয়ে থাইল্যান্ডকে ‘অভিযোগহীন ও পূর্বপরিকল্পিত সামরিক আগ্রাসনের’ দায়ে অভিযুক্ত করেছেন। তিনি জাতিসংঘকে দ্রুত একটি জরুরি বৈঠক ডাকার আহ্বান জানিয়েছেন।সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক মহল উদ্বিগ্ন। বিশেষ করে থাইল্যান্ডের মিত্র যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ দ্রুত সহিংসতা বন্ধে আহ্বান জানিয়েছে।মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের উপমুখপাত্র টমি পিগট এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, বেসামরিক লোকের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার খবর তারা গভীরভাবে শোকাহত ও উদ্বিগ্ন। তিনি বলছেন, দ্রুত শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের একত্রিত প্রচেষ্টার প্রয়োজন।থাইল্যান্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী ফুমথাম ওয়েচায়াচাই এক বিবৃতিতে বলেন, তারা শান্তিপূর্ণ সমাধানের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, কিন্তু আত্মরক্ষার জন্য বাধ্য হয়েছে প্রতিক্রিয়া জানাতে।তিনি বলেন, আমরা আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, তবে এর বাইরে অস্ত্রের ব্যবহার হয়েছে।পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান, যেন আলোচনার মাধ্যমে সংহতি বৃদ্ধি এবং সংঘাত সমাধানের পথ খোলা হয়। কম্বোডিয়া সামরিক ও কূটনৈতিকভাবে কঠোর অবস্থানে রয়েছে এবং জাতিসংঘে এই ঘটনা আন্তর্জাতিক আইনের যথাযথ বাস্তবায়নের দাবি তুলেছে।গতকাল জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় খবর ছিল যে, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে অতি জরুরি আলোচনার মাধ্যমে এই সংঘর্ষ ও মানবিক পরিস্থিতি নিয়ে গভীর মনোযোগ দেওয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিক্রিয়া ও দৃষ্টিভঙ্গি আলোচনায় প্রধান আলোচনার বিষয় ছিল।সীমান্তবর্তী গ্রামাঞ্চলের সাধারণ মানুষ মারাত্মক বিপদে পড়ে গেছে। তারা সরকারি ও আন্তর্জাতিক সাহায্যের অভাবে কংক্রিট বাংকার ও অস্থায়ী আশ্রয়স্থলে আশ্রয় নিয়েছে। শিশুরা ও প্রবীণরা চরম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েছে। এই সংকট দীর্ঘস্থায়ী হলে মানবাধিকার ও সামাজিক উন্নয়নে ব্যাঘাত ঘটবে বলে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা প্রকাশ করছেন।সাড়ে এক দশকের মধ্যে এটি সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী সীমান্ত সংঘাত, যা থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়ার পুরনো বিরোধকে আরও জটিল করে তুলেছে। সামরিক সংঘাত, কূটনৈতিক বিরোধ ও সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বন্ধ করতে বিশ্ব সম্প্রদায়কে তৎপর হওয়া জরুরি। এর জন্য দরকার কূটনৈতিক উদ্যোগ।ভোরের আকাশ/এসএইচ
শুক্রবার দিনভর ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর গোলাবর্ষণে ফিলিস্তিনের গাজায় কমপক্ষে আরও ৮৯ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়াও আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৪৬৭ জন। এতে সোমবারের পর ইসরায়েলি হামলায় গাজায় মোট নিহতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৫৯ হাজার ৬৭৬ জনে। এদের পাশাপাশি আহত হয়েছেন আরও ১ লাখ ৪৩ হাজার ৯৬৫ জন ফিলিস্তিনি। শুক্রবার (২৫ জুলাই) সন্ধ্যার পর এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালায় গাজা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা। এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যার পাশাপাশি ২৫১ জনকে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় তারা। হামাসের হামলার জবাব দিতে এবং জিম্মিদের মুক্ত করতে ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। ১৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে টানা অভিযান চালানোর পর যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যস্থতাকারী অন্যান্য দেশগুলোর চাপে বাধ্য হয়ে গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে ইসরায়েল। কিন্তু বিরতির দু’মাস শেষ হওয়ার আগেই গত ১৮ মার্চ থেকে ফের গাজায় অভিযান শুরু করে আইডিএফ। দ্বিতীয় দফার এ অভিযানে গত আড়াই মাসে গাজায় নিহত হয়েছেন ৮ হাজার ৫২৭ জন এবং আহত হয়েছেন আরও প্রায় ৩১ হাজার ৯৩৪ জন ফিলিস্তিনি।জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এ পর্যন্ত বেশ কয়েকবার গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধের জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে আহ্বান জানিয়েছে।তবে নেতানিয়াহু স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, হামাসকে পুরোপুরি দুর্বল ও অকার্যকর করা এবং জিম্মিদের মুক্ত করা এই অভিযানের লক্ষ্য এবং লক্ষ্য পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে গাজায়।ভোরের আকাশ/এসএইচ
গাজায় যুদ্ধবিরতির আলোচনার মধ্যস্থতা থেকে সরে দাঁড়েয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) এক বিবৃতিতে এ ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্টের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি স্টিফ উইটকফ।আজ শুক্রবার (২৫ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য দিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।উইটকফের অভিযোগ, হামাসের যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানোর কোনো আগ্রহ নেই। এ সময় তিনি বিকল্প উপায়ে ইসরায়েলি জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার হুঁশিয়ারিও দেন।এর আগে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুও তার প্রতিনিধিদের কাতার থেকে নিজ দেশে ফিরিয়ে আনেন। ফলে ফিলিস্তিনিদের ভাগ্য নিয়ে আবারও দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা।এদিকে, যুদ্ধবিরতি চুক্তি না হওয়ার পেছনে ইসরায়েলকে দায়ী করে আসছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস। তাদের অভিযোগ, নেতানিয়াহু স্থায়ীভাবে সংঘাত বন্ধে আগ্রহী নন।ভোরের আকাশ/জাআ