আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ : ১৭ আগস্ট ২০২৫ ১১:১২ পিএম
সংগৃহীত ছবি
হাইস্কুলের পরীক্ষায় ফেল করেছিলেন। এজন্য ২৬ বছর ধরে নিজ বাড়িতে স্বেচ্ছায় গৃহবন্দি জীবন কাটিয়েছেন এক নারী। নজিরবিহীন এমন ঘটনা ঘটেছে আলজেরিয়ায়। মর্মান্তিক ঘটনাটি চলতি সপ্তাহে সামনে এসেছে। যা পুরো আলজেরিয়াকে নাড়িয়ে দিয়েছে।
১৯৯৯ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে নাদিয়া তার হাইস্কুলের পরীক্ষায় অংশ নেন। কিন্তু তিনি পরীক্ষায় অকৃতকার্য হন।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম এন্নাহার টিভি আলজেরিয়া চলতি সপ্তাহে নাদিয়া নামে ওই নারীকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এরপর বিষয়টি নিয়ে রীতিমতো হাইচই শুরু হয়।
সংবাদমাধ্যমটি জানায়, ১৯৯৯ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে নাদিয়া তার হাইস্কুলের পরীক্ষায় অংশ নেন। কিন্তু তিনি পরীক্ষায় অকৃতকার্য হন। এতে গভীর মানসিক আঘাত পান তিনি।
এরপর নাদিয়া নিজেকে চার দেয়ালের মধ্যে বন্দি করে ফেলেন। এভাবে গত ২৬ বছর ধরে স্বেচ্ছা গৃহবন্দির জীবন কাটিয়েছেন তিনি। সম্প্রতি প্রতিবেশীরা বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানোর পর তাকে আবর্জনা ও দুর্গন্ধে ভরা তার বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়।
এন্নাহার টিভিতে প্রচারিত ভিডিওতে দেখা যায়, নাদিয়া তাদের বাড়িতে যেখানে একাকি থাকতেন, সেখানে জরাজীর্ণ অবস্থা এবং জিনিসপত্র এলোমেলোভাবে সারাবাড়ি ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে।
প্রতিবেশীরা জানান, কেউ তার কাছে যেতে পারত না। যেতে চাইলে তিনি চিৎকার করতেন। এমনকি মাঝে মাঝে আক্রমণও করতেন। তার ভাইবোনেরা একই বাড়িতে থাকলেও তারা তাকে সামলাতে পারতেন না।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে খবর পাওয়ার পর পুলিশ ও সিভিল ডিফেন্স দল অবশেষে নাদিয়াকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে।
এই ঘটনা আলজেরিয়াজুড়ে ক্ষোভ ও অবিশ্বাসের জন্ম দিয়েছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, কীভাবে এত দীর্ঘ সময় ধরে একজন ব্যক্তির গৃহবন্দি জীবন চলতে পারে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কেউ কেউ দেশটির মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তার অভাবের দিকে আঙুল তুলেছেন। একজন লিখেছেন, ‘পরীক্ষায় ফেল করার পর যদি তিনি একজন মনোবিজ্ঞানীর কাছে যেতেন, তাহলে তিনি সুস্থ হয়ে উঠতে পারতেন।
অন্যরা পরীক্ষায় তার ব্যর্থতার ক্ষেত্রে পরিবার বা সমাজের দায় রয়েছে কিনা তা তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। বর্তমানে নাদিয়ার বয়স ৪৩ বছর। কিন্তু এই বয়সেই তার চুলগুলো ধূসর হয়ে গেছে। উদ্ধার হওয়ার পর বর্তমানে তার মানসিক চিকিৎসা চলছে।
ভোরের আকাশ/জাআ