ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি হামলায় একদিনে কমপক্ষে আরও ২০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও শতাধিক। এতে করে অবরুদ্ধ এই উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা প্রায় ৫২ হাজার ৯৩০ জনে পৌঁছেছে। এছাড়া গত ১৮ মার্চ গাজায় নতুন করে ইসরায়েলি হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় ২৮০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। বুধবার (১৪ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।বার্তাসংস্থাটি বলছে, গাজা উপত্যকায় গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে আরও ২০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যার ফলে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের গণহত্যামূলক আগ্রাসনে ভূখণ্ডটিতে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫২ হাজার ৯২৮ জনে পৌঁছেছে বলে বুধবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি আক্রমণে আরও ১২৫ জন আহত হয়েছেন। এর ফলে সংঘাতের শুরু থেকে আহতের সংখ্যা বেড়ে ১ লাখ ১৯ হাজার ৮৪৬ জনে পৌঁছেছে। অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় পড়ে থাকলেও উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারেননি।দীর্ঘ ১৫ মাস সামরিক অভিযানের পর যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপে গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ইসরায়েল। তারপর প্রায় দু’মাস গাজায় কম-বেশি শান্তি বজায় ছিল; কিন্তু গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহারের প্রশ্নে হামাসের মতানৈক্যকে কেন্দ্র করে মার্চ মাসের তৃতীয় গত সপ্তাহ থেকে ফের গাজায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল।স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় নতুন করে শুরু হওয়া ইসরায়েলি বিমান হামলায় এখন পর্যন্ত প্রায় ২ হাজার ৮০০ ফিলিস্তিনি নিহত এবং আরও ৭ হাজার ৮০০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। ইসরায়েলের বর্বর এই হামলা চলতি বছরের জানুয়ারিতে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙে দিয়েছে।জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছিলেন। এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের অধিকাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
১৫ মে ২০২৫ ১০:২৭ পিএম
নিজ বাড়িতে ধর্ষণের শিকার হামাসের হাত থেকে মুক্ত ইসরায়েলি নারী
হামাসের কাছ থেকে মুক্তি পাওয়ার পর নিজ বাড়িতে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন ইসরায়েলি নারী মিয়া শেম। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হাতে অপহৃত হয়ে গাজায় বন্দী থাকা এই নারী সম্প্রতি তেল আবিবে এক প্রশিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করেছেন।মিয়া জানান, অভিযুক্ত ব্যক্তি তাকে হলিউডের একজন প্রযোজকের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার কথা বলে তার বাড়িতে একটি সাক্ষাতের আয়োজন করেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন আরও একজন পুরুষ, যিনি পরে জানা যায় হলিউড প্রযোজক নন। ঘটনার দিন মিয়া অসুস্থ বোধ করলে পরিবার বিষয়টি সন্দেহ করে এবং তাকে পুলিশের কাছে যেতে উৎসাহিত করে। পুলিশের মাধ্যমে যৌন নির্যাতন-পরবর্তী সেবা কেন্দ্রে গেলে পরীক্ষায় ধর্ষণের প্রমাণ পাওয়া যায়।মিয়া বলেন, “বন্দিদশায় আমার সবচেয়ে বড় ভয় ছিল ধর্ষণ—কিন্তু মুক্ত হওয়ার পর নিজ বাসাতেই সেই ভয় বাস্তব হয়ে দেখা দিল।” অভিযুক্তকে প্রাথমিকভাবে গ্রেপ্তার করা হলেও পরে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয় এবং তদন্ত চলমান রয়েছে। ইসরায়েলি গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকারে মিয়া পুরো ঘটনা জনসমক্ষে তুলে ধরেন এবং বলেন, “আমি লুকাতে চাই না, বরং চাই সত্য প্রকাশ হোক।”ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সিসিটিভি ফুটেজ, মেসেজ, ও পারিবারিক পর্যবেক্ষণ তদন্তের আওতায় আনা হয়েছে। পুলিশের তদন্তের পাশাপাশি বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক জনসচেতনতা তৈরি হচ্ছে।ভোরের আকাশ//হ.র
০৭ মে ২০২৫ ১২:১২ পিএম
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৩ শিশুসহ নিহত ১৬
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান হামলায় ৩ শিশুসহ অন্তত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। রোববার (৪ মে) এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে হামাস-নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। খবর: আরর নিউজ।গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল জানান, উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসে রাতভর ইসরায়েলি বিমান হামলায় ছয়জন প্রাণ হারান। এর মধ্যে আল-মাওয়াসির এলাকার একটি অ্যাপার্টমেন্টে একই পরিবারের পাঁচজন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুই বছর বয়সী দুইটি শিশুও রয়েছে।তিনি আরও জানান, আল-মাওয়াসিরের একটি তাঁবুতে চালানো অপর হামলায় নিহত হয়েছেন আরও ১০ জন, যাদের মধ্যে একজন শিশু ও সাতজন নারী রয়েছেন।এই ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানতে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করে সংবাদমাধ্যম এএফপি। তবে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।এর আগে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে দাবি করে, গত দুই দিনে গাজা জুড়ে তারা ১০০টিরও বেশি স্থানে হামলা চালিয়েছে। এতে “অস্ত্রের গুদাম” ধ্বংস এবং “বেশ কয়েকজন সন্ত্রাসী”কে হত্যা করা হয়েছে বলেও জানায় তারা।২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর ইসরায়েল গাজায় ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করে। চলতি বছরের শুরুতে উভয় পক্ষ যুদ্ধবিরতিতে গেলেও, তা ভেঙে ১৮ মার্চ থেকে পুনরায় আক্রমণ শুরু করে ইসরায়েল।গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, মার্চের পর নতুন করে শুরু হওয়া হামলায় এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৪৩৬ জন নিহত হয়েছেন। সবমিলিয়ে চলমান সংঘাতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫২ হাজার ৫৩৫ জনে।ভোরের আকাশ//র.ন
০৫ মে ২০২৫ ০৫:৪৪ পিএম
গাজায় নিহতের সংখ্যা ৫১ হাজার ছাড়াল
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের সাম্প্রতিক বিমান হামলায় আরও অন্তত ২৩ জন ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন ৫০ জনেরও বেশি। এই সহিংসতায় গাজায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা পৌঁছেছে প্রায় ৫১ হাজারে। গত ১৮ মার্চ গাজায় নতুন করে ইসরায়েলি হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে ১৬০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। বুধবার (১৬ এপ্রিল) এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।সংবাদমাধ্যমটি বলছে, মঙ্গলবার ভোর থেকে গাজা উপত্যকা জুড়ে ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে আরও ২৩ জন নিহত হয়েছেন বলে বেশ কয়েকটি চিকিৎসা সূত্র আল জাজিরাকে জানিয়েছে। এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডজুড়ে আরও হামলা ও হতাহতের খবর আসা অব্যাহত রয়েছে।গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ১৮ মাস আগে গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে কমপক্ষে ৫১ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত এবং আরও ১ লাখ ১৬ হাজার ৩৪৩ জন আহত হয়েছেন।হামাস জানিয়েছে, ইসরায়েলি সৈন্যদের পাহারায় থাকা তাদের সংগঠনের এক ফিলিস্তিনি বন্দির অবস্থান সম্পর্কে তারা এখন আর কিছু জানে না। ওই এলাকায় ইসরায়েলের সরাসরি বোমাবর্ষণের পর তাদের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।জাতিসংঘ জানিয়েছে, দীর্ঘ এই যুদ্ধের ফলে গাজার ৮৫ শতাংশ মানুষ নিজেদের ঘরবাড়ি হারিয়েছেন। একইসঙ্গে ধ্বংস হয়েছে গাজার ৬০ শতাংশ অবকাঠামো। মানবিক বিপর্যয়ের মাত্রা দিন দিন ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। খাবার, পানি, ওষুধ এবং আশ্রয়ের সংকট মারাত্মক পর্যায়ে পৌঁছেছে।এর আগেও, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ উঠেছে। গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে।এছাড়া, গাজায় চলমান আগ্রাসনের জন্য ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) গণহত্যার অভিযোগে মামলাও চলছে।ভোরের আকাশ/এসএইচ