ছবি: সংগৃহীত
আফগান সীমান্তে পাকিস্তান নিরাপত্তা বাহিনী ও পাকিস্তান তালেবানদের ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। তালেবানের ক্রমবর্ধমান আক্রমণের মধ্যে দেশটির বাজাউর এবং দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানে মারাত্মক অভিযানের সময় এ সংঘর্ষ হয়।
পৃথক তিনটি অভিযানের সময় অনন্ত ১৯ পাক সেনা এবং ৩৫ জন তালেবান সদস্য নিহত হন।
শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা। এতে বলা হয়, সম্প্রতি আফগান সীমান্তের কাছে পাকিস্তানি তালেবান সশস্ত্র গোষ্ঠীর তিনটি আস্তানায় অভিযান চালায় সেনারা। এ সময় এই হতাহতের ঘটনা ঘটে।
শনিবার দেশটির সেনাবাহিনী জানিয়েছে, উত্তর-পশ্চিম খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের একটি জেলা বাজাউরে ২২ জন তালেবান সদস্য নিহত হয়েছে। দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তান জেলায় পৃথক অভিযানে আরও ১৩ জন নিহত তালেবান সদস্য নিহত হন।
সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়, ‘দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানে ১২ জন সেনা বীরত্বের সঙ্গে লড়াই করে, চূড়ান্ত ত্যাগ স্বীকার করে শহীদ হন। লোয়ার দির এলাকায় আরেকটি সংঘর্ষে, সেনারা একটি জঙ্গি আস্তানা আবিষ্কার করার পর বন্দুকযুদ্ধে সাত সেনা এবং নিহত হন ১০ জন বিদ্রোহী যোদ্ধা।’
এদিকে তেহরিক-ই-তালেবান (টিটিপি) পাকিস্তান তালেবান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক বার্তায় হামলার দায় স্বীকার করেছে। ইসলামাবাদের দাবি, আফগানিস্তানে অবস্থিত এই গোষ্ঠীটি আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন তালেবানদের থেকে পৃথক কিন্তু তাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।
ইসলামাবাদের অভিযোগ, পাকিস্তান তালেবানরা আফগানিস্তানের মাটি ব্যবহার করে পাকিস্তানে হামলা চালায়। এজন্য পাক সেনাবাহিনী কাবুলের তালেবান সরকারকে তার দায়িত্ব পালন করতে এবং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য তার মাটি ব্যবহার না করতে দিতে আহ্বান জানিয়েছে।
সেনাবাহিনী নিহত যোদ্ধাদের “খোয়ারিজ” হিসেবে বর্ণনা করেছে পাকিস্তান। এছাড়া ইসলামাবাদের অভিযোগ তারা (তালেবান) ভারত মদদপুষ্ট, যদিও তারা অভিযোগের পক্ষে কোনো প্রমাণ দেয়নি।
পাকিস্তান দীর্ঘদিন ধরে ভারতকে পাকিস্তান তালেবান এবং বেলুচিস্তানের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সমর্থন করার অভিযোগ করে আসছে, এই অভিযোগ নয়াদিল্লি অস্বীকার করে। সাম্প্রতিক এই সংঘর্ষ ও হতাহতের ব্যাপারে কাবুলের তালেবান বা নয়াদিল্লির তরফ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।
ভোরের আকাশ/মো.আ.
সংশ্লিষ্ট
স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দাম্পত্য কলহ রূপ নিয়েছে সহিংসতায়। ঝগড়ার একপর্যায়ে স্ত্রী দাঁত দিয়ে স্বামীর কান কামড়ে ছিঁড়ে ফেলেন। এরপর স্বামী-স্ত্রী দুজনেই থানায় একে অপরের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন।চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যের কানপুরে। বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।সংবাদমাধ্যমটি বলছে, উত্তর প্রদেশের কানপুরে ভয়াবহ দাম্পত্য কলহে এক নারী তার স্বামীর ডান কান কামড়ে ছিঁড়ে ফেলেছেন। সোমবার রাতে ঘরে ঝগড়ার একপর্যায়ে এ ঘটনা ঘটে।আহত স্বামীর নাম অমিত সোনকার। তিনি জানান, তার স্ত্রী সারিকা প্রথমে তাকে মারধর করেন, এরপর দাঁত দিয়ে কান কামড়ে ছিঁড়ে ফেলেন।তিনি আরও বলেন, “সে আমার সঙ্গে থাকতে চায় না। টাকার পাশাপাশি আলাদা বাড়ি চাচ্ছে। কিন্তু আমরা তো গরিব মানুষ, বাজারে সবজি বিক্রি করে সংসার চালাই। এত টাকা কোথায় পাব?”অমিত দাবি করেন, তিনি সোফায় ঘুমিয়ে ছিলেন, তখন স্ত্রী ঝগড়া শুরু করেন এবং তাকে আক্রমণ করেন। তার ভাষায়, “আমি আত্মরক্ষার জন্য ঠেলে সরিয়ে দিলে সে আমাকে মারধর করে। পরে বিছানায় দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় হঠাৎ আমার কান কামড়ে ফেলে।”অমিত আরও অভিযোগ করেন, তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়েও আক্রমণ করা হয়েছে।আট বছর আগে প্রেমের সম্পর্ক থেকে তাদের বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে সম্পর্ক ভেঙে গেছে এবং আদালতে তাদের বিবাহবিচ্ছেদের মামলা চলছে।অমিত সোনকার কান ব্যান্ডেজ করা অবস্থায় থানায় অভিযোগ করেছেন এবং জানিয়েছেন, তিনি আর স্ত্রীর সঙ্গে থাকতে চান না। অপরদিকে, স্ত্রী সারিকাও স্বামীর কাছ থেকে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে দাবি করে পাল্টা অভিযোগ করেছেন।পুলিশ জানিয়েছে, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে আগে থেকেই বিবাহবিচ্ছেদের মামলা চলছিল। সেই জটিলতা থেকেই এই ঘটনা ঘটেছে। উভয়ের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা নেওয়া হয়েছে, তদন্ত চলছে।ভোরের আকাশ/মো.আ.
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও চীনা নেতা শি জিনপিংয়ের মধ্যে বহুল প্রত্যাশিত বৈঠক নিয়ে আলোচনার সময় বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) ছয়টি মার্কিন কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেছে চীন।সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) জানিয়েছে, চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তিনটি কোম্পানিকে ‘অনির্ভরযোগ্য সত্তার তালিকায়’ অন্তর্ভুক্ত করেছে, যা কার্যত তাদেরকে বেইজিংয়ের সঙ্গে বাণিজ্য থেকে নিষিদ্ধ করে। মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, “কোম্পানিগুলো তাইওয়ানের সাথে সামরিক-প্রযুক্তিগত সহযোগিতায় জড়িত হয়েছে, যা চীনের জাতীয় সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা ও উন্নয়ন স্বার্থকে মারাত্মকভাবে ক্ষুন্ন করছে।”মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘কোম্পানিগুলো তাইওয়ানের সাথে তথাকথিত সামরিক-প্রযুক্তিগত সহযোগিতায় জড়িত হয়েছে, যা চীনের জাতীয় সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা এবং উন্নয়ন স্বার্থকে মারাত্মকভাবে ক্ষুন্ন করছে।’চীনের ‘অনির্ভরযোগ্য সত্তার তালিকায়’ যুক্ত করা কোম্পানিগুলো হলো– মনুষ্যবিহীন যানবাহন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান সারনিক টেকনোলজিস, স্যাটেলাইট প্রযুক্তি কোম্পানি অ্যারকম এবং সাবসি ইঞ্জিনিয়ারিং ফার্ম ওশানিয়ারিং ইন্টারন্যাশনাল।পৃথকভাবে, আরও তিনটি মার্কিন কোম্পানিকে চীনের রফতানি নিয়ন্ত্রণ তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে।এর ফলে তারা সামরিক এবং বেসামরিক উভয় ক্ষেত্রেই ‘দ্বৈত ব্যবহারের’ পণ্যের চীনা চালান গ্রহণ করতে পারবে না।কোম্পানিগুলো হলো– সামরিক জাহাজ নির্মাতা হান্টিংটন ইঙ্গলস ইন্ডাস্ট্রিজ, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ফ্যাসিলিটিস ম্যানেজার প্লানেট ম্যানেজমেন্ট গ্রুপ এবং ইন্টেলিজেন্স ফার্ম গ্লোবাল ডাইমেনশনস।এই তিন কোম্পানি ‘চীনের জাতীয় নিরাপত্তা এবং স্বার্থকে বিপন্ন করছে’ বলে জানিয়েছে চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ভোরের আকাশ/হ.র
নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে সশরীরে উপস্থিত হতে না পারলেও ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) ভিডিও ভাষণের মাধ্যমে স্বদেশ, নির্বাসন ও প্রবাসে থাকা ফিলিস্তিনিদের উদ্দেশে বার্তা দিয়েছেন, “স্বাধীনতার ভোর আসবেই। আমরা আমাদের স্বদেশ ছেড়ে যাব না।”তিনি বলেন, “যত বড় ক্ষত বা দীর্ঘ দুর্ভোগই হোক না কেন, তা আমাদের বেঁচে থাকার ও টিকে থাকার ইচ্ছাকে ভেঙে দিতে পারবে না। ফিলিস্তিন আমাদের। জেরুজালেম আমাদের হৃদয়ের রত্ন এবং চিরন্তন রাজধানী। আমরা আমাদের স্বদেশ ছেড়ে যাব না।”আব্বাস আরও জানিয়েছেন, ফিলিস্তিনিরা জলপাই গাছের মতো শিকড় গেঁড়ে থাকবে, ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে উঠে দেশ পুনর্গঠন করবে এবং পবিত্র ভূখণ্ড থেকে আশা, সত্য ও ন্যায়ের বার্তা পাঠাবে।তিনি ভাষণে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরেছেন:গাজায় যুদ্ধ বন্ধ: অবিলম্বে এবং স্থায়ীভাবে যুদ্ধের অবসান।মানবিক সহায়তা: জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থার মাধ্যমে মানবিক ত্রাণ নিশ্চিত এবং ক্ষুধাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার বন্ধ।বন্দী বিনিময়: উভয় পক্ষের সকল জিম্মি ও বন্দীর মুক্তি।দখলদারত্ব ও বসতি স্থাপন: গাজা থেকে দখলদার বাহিনীর প্রত্যাহার, ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ বা স্থানান্তরের প্রতিরোধ, বসতি স্থাপনকারীদের সন্ত্রাস বন্ধ এবং জমি ও পবিত্র স্থান রক্ষার নিশ্চয়তা।গাজা উপত্যকার দায়িত্ব: ফিলিস্তিনি সরকারের নেতৃত্বে প্রশাসন পরিচালনা ও পশ্চিম তীরের সঙ্গে সংযুক্তিকরণ।পুনর্গঠন ও বাস্তুচ্যুতি: গাজার বাসিন্দাদের তাদের ভূখণ্ডে রাখা এবং পুনর্গঠন ও পুনরুদ্ধার বাস্তবায়ন।অর্থনৈতিক অবরোধ: ইসরায়েলের মাধ্যমে আটকানো ফিলিস্তিনিদের অর্থ মুক্ত করা ও শহর, গ্রাম ও শরণার্থী শিবির থেকে বাধা তুলে নেওয়া। ভোরের আকাশ/হ.র
ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে অঙ্গীকার করেছেন, “তেহরান কখনো পারমাণবিক বোমা তৈরি করার চেষ্টা করবে না।” তিনি এই মন্তব্য করেছেন এমন সময়, যখন ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির কারণে জাতিসংঘের ওপর নিষেধাজ্ঞা (‘স্ন্যাপব্যাক’) পুনর্বহালের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা তীব্রভাবে চলছে। খবর আলজাজিরার।যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানি (ই৩) ইরানের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের জন্য ৩০ দিনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে, যার সময়সীমা ২৭ সেপ্টেম্বরের কাছাকাছি পৌঁছেছে। ই৩ অভিযোগ করেছে, ইরান ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত পারমাণবিক চুক্তি (যৌথ ব্যাপক কর্ম পরিকল্পনা) মেনে চলতে ব্যর্থ হয়েছে।ই৩ জানিয়েছে, ইরান যদি জাতিসংঘের পরিদর্শকদের প্রবেশাধিকার পুনরুদ্ধার করে, ইউরেনিয়াম মজুদ নিয়ে উদ্বেগ দূর করে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেয়, তবে তারা নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল ছয় মাস পর্যন্ত বিলম্বিত করতে পারে।জাতিসংঘে পেজেশকিয়ানের সঙ্গে বৈঠকের পর ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এক্স-এ লিখেছেন, “একটি চুক্তি সম্ভব। আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা বাকি। আমরা যে বৈধ বিষয়গুলো উত্থাপন করেছি, তার প্রতি সাড়া দেওয়ার দায়িত্ব ইরানের।”পেজেশকিয়ান ইউরোপীয় শক্তিগুলোর ওপর ‘খারাপ বিশ্বাস’ এর অভিযোগ এনেছেন। তিনি বলেন, ২০১৮ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্প পারমাণবিক চুক্তি থেকে প্রত্যাহার করার পর ইরানের সহযোগিতার অভাব ছিল এর প্রতিক্রিয়া। এছাড়া, ইউরোপীয় শক্তিগুলো ইরানের আন্তরিক প্রচেষ্টাকে যথাযথভাবে মূল্যায়ন করেনি।এদিকে মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) এক রেকর্ড করা ভাষণে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি পুনর্ব্যক্ত করেছেন, “তেহরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে চাইছে না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার বিষয়টি কোনো আলোচনা নয়; এটি একটি চাপিয়ে দেওয়া সিদ্ধান্ত।”নতুন নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হলে, বিদেশে ইরানের সম্পদ জব্দ করা হবে, তেহরানের সঙ্গে অস্ত্র চুক্তি বন্ধ হবে এবং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির উন্নয়নে বাধা দেওয়া হবে। ভোরের আকাশ/হ.র