ভোরের আকাশ ডেস্ক
প্রকাশ : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ১২:৪৮ পিএম
ছবি- সংগৃহীত
সরকারের অনুমতি ছাড়াই প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ৯ টাকা বাড়িয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে আমদানি না থাকায় মৌসুমের শেষ মুহূর্তে পেঁয়াজের দামও বাড়িয়েছেন তারা। শেষ দুই-তিন দিনের ব্যবধানে কেজিতে বেড়েছে ২০-৩০ টাকা। এখন প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা দামে। এ ছাড়া রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোতে শীতকালীন সবজির সরবরাহ প্রতিদিনই বাড়ছে।
দাম কিছুটা কমলেও অধিকাংশ সবজির দাম ক্রেতাদের নাগালের বাইরে। নতুন বেগুন, শিম, ফুলকপি, বাঁধাকপি, শালগমসহ বেশিরভাগ শীতের সবজি বিক্রি হচ্ছে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় বেশি দামে।

শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
পেঁয়াজের ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরবরাহ সংকটের কারণেই পুরনো পেঁয়াজের দাম চড়েছে।
তবে বাজারে মুড়িকাটা নতুন পেঁয়াজ আসতে শুরু করেছে। যদিও সেটা পরিমাণে খুব অল্প। আর পাতাসহ পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকায়।

অন্যদিকে, বাজার এখন শীতের বিভিন্ন সবজিতে পরিপূর্ণ- শিম, বেগুন, ফুলকপি, বাঁধাকপি, শালগম, টমেটো, গাজর, মিষ্টিকুমড়া, পালং শাক, লাউ, মুলা- সবই পাওয়া যাচ্ছে। তবে ক্রেতারা দামে সন্তুষ্ট নন।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে ভালো মানের বেগুনের দাম কেজিতে ৮০–১০০ টাকা, ফুলকপি ও বাঁধাকপি প্রতি পিস ৫০–৬০ টাকা। নতুন শিমের দাম কেজিতে ১০০ টাকা বা তারও বেশি। কোথাও ভালো শিম ৭০–৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অথচ অন্যান্য বছর এ সময় শিম ৫০ টাকা এবং কপি ২০–৩০ টাকায় পাওয়া যেত।
নতুন আলু সবসময় একটু বেশি দামে বিক্রি হয়। এবারও ব্যতিক্রম নয়-কেজিতে ১২০–১৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া সবজির মধ্যে বরবটি বিক্রি হচ্ছে ৭০–৮০ টাকায়। ঢ্যাঁড়স ও পটোলের দাম কেজিতে ৫০–৭০ টাকা। নতুন মিষ্টিকুমড়া প্রতিটি ৮০–১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কেউ কেউ কেজিতে ৫০ টাকা বিক্রি করছেন৷

তবে শাকের দাম কিছুটা কম রয়েছে। যদিও ক্রেতাদের দাবি, মুঠিতে আগে যে পরিমাণ স্বাদ পাওয়া যেত তা পরিমাণে কমে গেছে। ফলে দামও কিছুটা কম।
ক্ষোভ প্রকাশ করে রফিকুল ইসলাম নামে এক ক্রেতা বলেন, ‘শীতের সবজি বাজারে এসেছে বেশ কয়েক সপ্তাহ হলো। সাধারণত এ সময় দামের স্বস্তি পাওয়া যায়। কিন্তু এ বছর উল্টো দাম আরও বাড়ছে। পরিবারের বাজার সামলানো এখন খুব কঠিন।’
এক নারী ক্রেতা জানান, সবজি ছাড়া রান্না চলে না। কিন্তু প্রতিদিন দাম বাড়ছে, বাজেটই মেলাতে পারছি না।

এদিকে, বাজারে বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে স্থিতিশীল ডিম-মুরগির দাম। ফার্মের মুরগির ডিমের দাম একেবারেই কম। গত তিন-চারদিন ধরেই প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হয়েছে ১১৫-১২০ টাকা দরে। যদিও বৃহষ্পতিবার ডিমের দাম আবারও খানিকটা বেড়েছে। পাইকারিতে বেড়ে যাওয়ার কারণে ফার্মের মুরগির ডিমের ডজন আবারও ১৩০ টাকায় উঠবে বলে ধারণা করছেন ভোক্তারা।
ব্রয়লার মুরগির দাম স্থিতিশীল রয়েছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৭০ টাকার মধ্যে।
অন্যদিকে, দুদিন ধরেই সয়াবিন তেলের দাম নিয়ে বেশ হইচই হচ্ছে বাজারে। কারণ ব্যবসায়ীরা সরকারের অনুমোদন ছাড়াই বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম বাড়িয়েছেন ৯ টাকা। একইভাবে ৫ লিটারের বোতলের দাম ৪৩ টাকা এবং দুই লিটারের বোতলের দাম বাড়িয়েছেন ১৮ টাকা।
তবে, বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন গত বুধবার সাংবাদিকদের জানান, সরকারের অনুমতি ছাড়াই ব্যবসায়ীরা তেলের দাম বাড়াতে পারেন না। এটা আইনের ব্যত্যয়। আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা।
ভোরের আকাশ/মো.আ.