নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৫:৩০ পিএম
ছবি: ভোরের আকাশ
বাংলাদেশ জাতীয় স্কুল, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা গ্রীষ্মকালীণ ক্রীড়া" প্রতিযোগিতায় এবছরে ফুটবল খেলায় জাতীয় পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় প্রসংশায় ভাসছেন আশুলিয়ার গাজিরচট আকবর মন্ডল উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ। মাদক মুক্ত সমাজ গড়ার লক্ষ্যে লেখাপড়ার মানোন্নয়ন ও শিক্ষার্থীদেরকে পড়াশোনার প্রতি মনোনিবেশ হতে তাদের সুপ্ত প্রতিভা বিকশিত করতে ভিন্নধর্মী খেলাধুলার আয়োজন করে আসছেন প্রতিষ্ঠানটি। তাদের খেলাধুলার মধ্যে ফুটবল খেলা হচ্ছে অন্যতম।
খেলাধুলার ধারাবাহিকতায় শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানটি "৫২ তম বাংলাদেশ জাতীয় স্কুল, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা গ্রীষ্মকালীণ ক্রীড়া-২০২৫" প্রতিযোগিতায় ফুটবল বালক জাতীয় পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। এই গৌরব অর্জনে পুরো উপজেলায় প্রশংসায় ভাসছেন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানটি। প্রথমে প্রতিষ্ঠানটির বালকরা ৫০তম আন্ত গ্রীষ্মকালীণ ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় উপজেলা চ্যাম্পিয়ন হয়ে জেলা ও বিভাগ পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হন। পরে অঞ্চল পর্যায়ে রানার্সআপ অর্জণ করেন। ২০২৩ সালের আয়োজিত খেলায় উপজেলা চ্যাম্পিয়ন হয়ে জেলা চ্যাম্পিয়ন এবং এরপরে বিভাগী পর্যায়ে রানার্সআপ হন।
পরবর্তীতে ২০২৫ সালে ৫২তম আন্ত গ্রীষ্মকালীন ক্রিড়া প্রতিযোগিতায় পর্যায়ক্রমে উপজেলা, জেলা এবং পরে বিভাগী পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হয়। এরপরে ময়মনসিংহ বিভাগের সাথে উপ-অঞ্চল চ্যাম্পিয়ন হয়ে পদ্মা অঞ্চলকে ৭-০ গোলে এবং চাপা অঞ্চলকে ২-০ গোলে রাজশাহী অঞ্চল তাদের কাছে পরাজিত হয়। শেষে চট্টগ্রাম অঞ্চলের সাথে হাড্ডি- হাড্ডি লড়াই হয়। একপর্যায়ে তাদেরকে ৩-১ গোলে পরাজিত করে জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির বালকরা। গ্রীষ্মকালীণ আন্ত স্কুল, মাদ্রাসা ও কারিগরি ফুটবল চ্যাম্পিয়ন পদ্মা অঞ্চল জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পিছনে নানা প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে হয়েছে তাদেরকে। এবং আগামীতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ফুটবল খেলায় অংশগ্রহণের আগ্রহ প্রকাশ করেন সাধারন শিক্ষার্থী। কোচ ও ক্রিড়া শিক্ষক।
সাধারন শিক্ষার্থীরা বলেন, প্রতিষ্ঠানটি জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় দেশজুড়ে যে সুনাম বয়ে এনেছেন তাতে আমরা আনন্দিত ও গর্বিত। আর এই প্রতিষ্ঠানে মনোরম পরিবেশে লেখাপড়া করতে পেরে আমাদের আরও ভালো লাগছে। সামনের দিনে খেলোয়াড়রা যেন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে খেলতে পারে আমরা এই কামনা করছি।
প্রতিষ্ঠানের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ও টিমের অধিনায়ক মো: সায়েম মল্লিক বলেন, আমি ক্যাপ্টেন সি হয়ে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হয়েছি এবং আমাদের টিমের খেলোয়াড়রা যেভাবে সহযোগীতা করেছেন এজন্য তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। সামনে যাতে করে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে খেলতে পারি এজন্য আমার প্রতিষ্ঠানের শিক্ষাগুরু সহ সকলের দোয়া ও প্রার্থনা কামনা করছি।
প্রতিষ্ঠানের ক্রিড়া শিক্ষক মনিরুজ্জামান মনির বলেন, এই প্রতিষ্ঠানটি ১৯৫৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ৫৩ সাল থেকে এই অর্জন আমাদের ছিলো না। এরআগে আমরা অঞ্চল পর্যায়ে সুযোগ পেয়ে বিভাগ পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। এটাই এই প্রথম প্রতিষ্ঠানের অর্জন। এই ধারা যাতে করে ধরে রাখতে পারি, এই জন্য সকলের সহযোগীতা কামনা করছি। তবে সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এই প্রতিষ্ঠানের টিমটি সামনের দিকে আরও এগিয়ে যাবেন বলে এমনটাই আশাবাদ ব্যাক্ত করেন, শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো: মোকলেছুর রহমান ইলিয়াচ শাহী।
প্রতিষ্ঠানটির প্রিন্সিপাল মো: মোজাফফর হোসাইন বলেন, আমি সব সময় চেষ্টা করি, যারা খেলার কোটায় ভর্তি হয়, তাদেরকে অত্র প্রতিষ্ঠানে বিনা বেতনে লেখা-পড়ার সুযোগ করে দেওয়াসহ সার্বিক সহযোগিতাও করা হয়। এছাড়াও তাদেরকে সকল প্রকার সুযোগ-সুবিধািও দেওয়া হয়ে থাকে।আগামীতে যেসকল খেলোয়াড় থাকবে, তাদেরকে পূর্ব থেকেই অনুশীলন দিয়ে এমনভাবে প্রস্তুত করবো, যাতে করে তারা আরও সুনাম বয়ে আনতে পারে। এছাড়া লেখাপড়া ও খেলাধুলার পাশাপাশি সাভার অঞ্চলের মধ্যে একটি আধুনিক ও মডেল প্রতিষ্ঠানে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার লক্ষেই নিরলসভাবে কাজ করে যাবেন বলে আরও জানান তিনি।
এদিকে, সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: সাইফুল ইসলাম বলেন, গাজিরচট আকবর মন্ডল উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ ফুটবল খেলায় এবছর, যে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে, তা সাভার বাসীর জন্যে গর্বের এবং আনন্দের বিষয়। তাদের এই ধারা যাতে করে অব্যাহত থাকে, এক্ষেত্রে উপজেলা প্রশাসন তাদের সাথে থাকবে। তাদের পৃষ্ঠপোষকতা তো থাকবেই, খেলাধুলার জন্য যদি কোন অনুশীলন করার দরকার হয়, তা আমরা সরবরাহ করবো বলেও এই আশ্বাস দেন তিনি।
ভোরের আকাশ/এসএইচ