নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৯:৩৩ এএম
সংগৃহীত ছবি
গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গীতে একটি রাসায়নিকের গুদামে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে তিনজন ফায়ার ফাইটারসহ চারজনের মৃত্যুতে গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।
রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) এক শোকবার্তায় তিনি বলেন, অগ্নিকাণ্ডে জীবন রক্ষার মহৎ দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আমাদের তিনজন সাহসী ফায়ার ফাইটারসহ চারজন প্রাণ হারিয়েছেন। এটি একটি হৃদয়বিদারক ঘটনা। আমি নিহতদের আত্মার শান্তি কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।
ড. ইউনূস বলেন, অগ্নি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা দিনরাত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষের জীবন ও সম্পদ রক্ষায় নিয়োজিত থাকেন। নিজেদের জীবনের মায়া ত্যাগ করে তারা অন্যের জীবন বাঁচানোর জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েন। তাদের এই আত্মত্যাগের কাছে জাতি চিরঋণী। আজকের এই দুর্ঘটনা আমাদের স্মরণ করিয়ে দিল যে দায়িত্ব পালনের সময় তারা কত বড় ঝুঁকি বহন করেন। তাদের এ মহৎ ত্যাগ জাতির ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
তিনি বলেন, এই দুর্ঘটনায় আমরা শুধু কয়েকজন প্রাণ হারাইনি, বরং দৃষ্টান্ত দেখলাম আমাদের সাহস, মানবিকতা আর কর্তব্যনিষ্ঠার প্রতীকের। ফায়ার সার্ভিস দেশের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য এবং সাহসী বাহিনী। সংকটময় সময়ে তারাই প্রথম ঝাঁপিয়ে পড়ে মানুষের পাশে দাঁড়ায়। আজ সেই মহৎ দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তাদের জীবন দিতে হয়েছে। এটি সমগ্র জাতির জন্য গভীর শোকের বিষয়।
প্রধান উপদেষ্টা শোকসন্তপ্ত পরিবারগুলোর প্রতি সান্ত্বনা জানিয়ে বলেন, আপনাদের প্রিয়জনরা নিছক প্রাণ হারাননি, তারা জাতির জন্য নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। দেশের প্রতিটি মানুষ তাদের আত্মত্যাগকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে। আমি আপনাদের বেদনা ভাগ করে নিচ্ছি এবং দোয়া করছি আল্লাহ যেন আপনাদের ধৈর্য ও শক্তি দেন এই কঠিন সময়ে।
নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে তিনি বলেন, এই বেদনাবহ ক্ষতি কখনো পূরণ হওয়ার নয়। তবে তাদের আত্মত্যাগ আমাদের অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে, যাতে আমরা একটি নিরাপদ বাংলাদেশ গড়তে পারি।
উল্লেখ্য, গত ২২ সেপ্টেম্বর বিকেলে টঙ্গীর সাহারা মার্কেট টিনশেড সেমিপাকা ভবনে অবস্থিত একটি কেমিক্যালের গুদামে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের আটটি ইউনিটের ৫৩ জন সদস্য আগুন নিয়ন্ত্রণ করে। তবে, প্রতিষ্ঠানটিতে থাকা কেমিক্যালের ড্রাম বিস্ফোরণে ফায়ার সার্ভিসের চারজন ও স্থানীয় একজনসহ পাঁচজন দগ্ধ হন। এরমধ্যে চারজনই মারা গেছেন।
তারা হলেন ফায়ার সার্ভিসের ওয়্যারহাউজ ইন্সপেক্টর জান্নাতুল নাঈম, ফায়ার ফাইটার নুরুল হুদা, ফায়ার ফাইটার মো. শামীম ও দোকান কর্মচারী বাবু হাওলাদার।
ভোরের আকাশ/তা.কা