নাটোরে ঈদ-উল-আযহার নামাজ অনুষ্ঠিত
নাটোরে কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে ঈদ-উল-আযহার জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। নামাজ আদায় করতে ভোর থেকেই বিভিন্ন মহল্লা থেকে দলে দলে মুসল্লিরা ঈদগাহ মাঠে আসেন।
শনিবার (৭ জুন) সকাল ৬টা ৪৫ মিনিটে পবিত্র ঈদ-উল-আযহার প্রথম জামাত কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে অনুষ্ঠিত হয়।
প্রথম জামাতে ইমামতি করেন আলাইপুর মারকাজ মসজিদের ইমাম মওলানা মফিজুর রহমান মফিজ। একই মাঠে সকাল ৭ টা ৪৫ মিনিটে ঈদের দ্বিতীয় জামাতের ইমামতি করেন কান্দিভিটা জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা গোলাম মোস্তফা।
পরে ঈদের জামায়াত শেষে খুতবা পাঠ করা হয়। এরপর দেশ ও জাতীর মঙ্গল কামনায় দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
নাটোর শহরে মল্লিকহাটি ঈদগাহ মাঠে সকাল সাড়ে ৭টায়, বড়হরিশপুর টার্মিনাল ঈদগাহ, গাড়িখানা জামে মসজিদ ঈদগাহ, এনএস কলেজ ঈদগাহ, বুড়া দরগার ঈদগাহ, কুমদবাটী ঈদগাহ মাঠ, নাটোর সুগার মিলস্ ঈদগাহ, ফুলবাগান হেলিপ্যাড ঈদগাহ ও নাটোর রেল স্টেশন প্লাটফর্মে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
এছাড়াও নাটোর জেলার ৭টি উপজেলা ও ৮টি পৌরসভার ৮৩৬টি ঈদগাহ মাঠে যথাযথভাবে নামাজ ঈদ-উল-আযহার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে ঈদের জামাত আদায় করেন- বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট. এম রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আবুল হায়াত, জেলা বিএনপি নেতা মো. শহিদুল ইসলাম বাচ্চু নাটোর পৌরসভার সাবেক মেয়র এমদাদুল হক আল মামুন, বিএনপির নেতা কাজী শাহ আলম, মো. সাইফুল ইসলাম আফতাব, জিল্লুর রহমান বাবুল চৌধুরী, ফরহাদ আলী দেওয়ান শাহীন, নাসিম উদ্দিন নাসিমসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ।
ভোরের আকাশ/জাআ
সংশ্লিষ্ট
চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলায় ট্রাক, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলের ত্রিমুখী সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছেন মোটরসাইকেলের তিন আরোহী।শুক্রবার সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে উপজেলার পদুয়া ইউনিয়নের সিকদারদিঘী এলাকায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনা ঘটে।নিহতরা হলেন—সাতকানিয়া উপজেলার বাহাদিরপাড়া এলাকার মো. ছিদ্দিক আহমদের ছেলে মো. হুমায়ুন (৩৭), মো. মামুন (৩২) এবং করাইয়ানগর আকবরপাড়া গ্রামের আবদুল সাত্তারের ছেলে মনির হোসেন (৪৫)। তারা তিনজনই এক মোটরসাইকেলে ভ্রমণ করছিলেন।লোহাগাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুর রহমান জানান, “সিকদারদিঘী এলাকায় পাশের সড়ক থেকে একটি অটোরিকশা মূল মহাসড়কে ওঠার সময় চট্টগ্রামমুখী একটি মোটরসাইকেলের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। একই সময় কক্সবাজারমুখী একটি ট্রাক সেখানে পৌঁছালে তিনটি যানবাহনের মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষ ঘটে। ঘটনাস্থলেই দুইজন মারা যান। গুরুতর আহত অপরজনকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।”মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। দুর্ঘটনার পরপরই মহাসড়কে কিছু সময়ের জন্য যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে।ভোরের আকাশ//হ.র
টঙ্গীতে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলায় পাইলট স্কুল এন্ড গার্লস কলেজের তিনজন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছেন।বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) বিকেলে টঙ্গী পাইলট স্কুল এন্ড কলেজের মাঠে এ ঘটনা ঘটে।এতে গুরুতর আহত হন রাফি (১৬), বাবু আরিফ (১৭), দুর্জয় (১৭)। এরা সবাই টঙ্গী পাইলট স্কুল এন্ড গার্লস কলেজের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী।শিক্ষার্থীরা তাদের হামলায় গুরুতর আঘাত প্রাপ্তদের টঙ্গী সরকারি হাসপাতালে জরুরী বিভাগে দুইজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয় এবং রাফি (১৬) নামে একজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল রেফার করা হয়েছে।তাৎক্ষণিকভাবে এই সন্ত্রাসী হামলার সাথে জড়িত কয়েকজনের নাম জানা যায়। তারা হলেন, ইমরান, নাইম, রানা, জীবন, ইমন, জয়, বিজয়, সানিম, রিমন, ইশরাক, উজ্জলসহ আরো অনেকেই এই হামলার সাথে জড়িত বলে জানান আহতদের স্বজনরা।আহতদের কয়েকজন স্বজন বলেন, হামলাকারী সকলেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সরাসরি জড়িত ছিলো এবং কয়েকজন নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবে মাঠে সক্রিয় ছিলো।জানা যায়, ঘটনার সময় উপস্থিত জনতা হামলাকারী নাঈমসহ তিনজনকে আটক করে টঙ্গী পাইলট স্কুল এন্ড গার্লস কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হারুনর রশীদদের কাছে রেখে আহতদের নিয়ে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে গেলে শিক্ষকরা তাদের ছেড়ে দেন।এ বিষয়ে টঙ্গী পাইলট স্কুল এন্ড গার্লস কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হারুনর রশীদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলে ফোনে তাকে পাওয়া যায়নি।এ সময় টঙ্গী পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ ইস্কান্দার হাবিবুর বলেন, দুই গ্রুপের মারামারির তথ্য পেয়ে থানা থেকে পুলিশ পাঠানো হয়েছিলো। এখন পর্যন্ত কেউ থানায় অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।ভোরের আকাশ/জাআ
পিরোজপুরের নাজিরপুরে জামায়াতের উদ্যোগে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প করে প্রায় ৩ হাজার রোগীকে চিকিৎসা সেবা ও ওষুধ প্রদান করা হয়েছে।শুক্রবার (২৫ জুলাই) নাজিরপুর উপজেলা জামায়াতের উদ্যোগে এ ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়।উপজেলার শাখারীকাঠী ইউনিয়নের ভাইজোড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে সকাল ৮টা থেকে দিনব্যাপী চলে এই ফ্রি ক্যাম্পের চিকিৎসা।উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নাজিরপুর উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক, সাবেক ছাত্র নেতা এড. আবু সাঈদ মোল্লা, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন এর উপজেলা সভাপতি মাফুজুর রহমান, উপজেলা সমাজ কল্যাণ সেক্রেটারী আনিচুর রহমান মল্লিক, মাটিভাঙ্গা ইউনিয়ন জামায়াতের সেক্রেটারী মো. মিজানুর রহমান, এস এম জাহীদ হক, শিবির সভাপতি মো. আবু হানিফ প্রমুখ।বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হিসেবে উপস্থিত থেকে চিকিৎসা প্রদান করেন গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি বিশেষজ্ঞ ডা. দিপংকর নাগ, শিশু বিশেষজ্ঞ ডা.শিমুল কৌশিক শাহা, গাইনী বিশেষজ্ঞ ডা. প্রিতিশ বিশ্বাস, নাক, কান ও গলা বিশেষজ্ঞ ডাঃ জোনায়েদ, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাঃ শুভ ওঝা সহ মোট ২১ জন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার উপস্থিত থেকে চিকিৎসা প্রদান করেন।উপজেলা জামায়াতের আমির আব্দুর রাজ্জাক বলেন, "শরীরকে রোগমুক্ত করে সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করার প্রচেষ্টাই হলো স্বাস্থ্যসেবা। মহান আল্লাহই মানুষের জীবন ও মৃত্যুর মালিক। কেউ যেমন জীবন দিতে পারে না, তেমন মৃত্যুও স্থগিত করতে পারে না। তবে স্বাস্থ্যসেবা নির্ধারিত মৃত্যুর সময় আসা পর্যন্ত জীবনকে সুস্থ, স্বাভাবিক, সুন্দর ও সচল রাখতে সাহায্য করে। আমাদের এই ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প চলমান থাকবে ইনশাআল্লাহ।ভোরের আকাশ/জাআ
১ জুলাই দুপুর ১টা ছয় মিনিট। ঢাকার উত্তরার দিয়াবাড়ি যেন হঠাৎ রূপ নেয় এক বিভীষিকাময় মৃত্যুপুরীতে। বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভবনের ওপর আছড়ে পড়ে। মুহূর্তেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে, চারদিক ঘন কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায়। সেই দিনের বিভীষিকাময় ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার কাইলানী গ্রামের মেয়ে কলেজটির একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী আকাশ লিনা রিয়া সেই দিনের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা আজও তাড়া করে ফিরছে তাকে।বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) বিকালে আকাশ লিনা রিয়ার সাথে কথা হয় এসময় তিনি জানান। প্রত্যক্ষদর্শী আকাশ লিনা রিয়া বলেন, ঘটনার দিন দুপুর ১টার দিকে আমাদের কলেজ ছুটি হয়, এরপর আমরা কোচিং ক্লাসে ছিলাম। আমি জানালার পাশে বসা ছিলাম। হঠাৎ বিকট শব্দ শুনতে পেলাম মনে হলো যেন কিছু একটা ব্লাস্ট হলো। জানালার পাশ থেকে হঠাৎ আগুনের শিখা দেখতে পাই মনে হলো আকাশটা আগুন হয়ে গেল।রিয়া বলেন, আমরা তখন কলেজ ভবনের ছয়তলায় ছিলাম। ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে সবাই দৌড়ে নিচে নেমে যাই। প্রথমে মনে হচ্ছিল ছেলেদের বিল্ডিংয়ে কিছু হয়েছে। নিচে গিয়ে দেখি, শিশুদের ভবনের সামনে একটি বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। আমরা তখনো পুরো ব্যাপারটা বুঝে উঠতে পারিনি। কিন্তু কিছু সময় পর যখন একটার পর একটা পোড়া দেহ বের করে আনা হচ্ছিল তখন মনে হলো যেন পুরো পৃথিবী থেমে গেছে।তিনি বলেন, বিমানটি যেখানে পড়েছে, সেটি ছিল শিশুদের ‘স্কাই’ সেকশনের গেটের সামনে। প্রতিদিন বাচ্চারা ছুটির পর সেই গেট দিয়েই বের হয়। মাত্র ১০ মিনিট পর তাদের ছুটি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই সব শেষ হয়ে যায়। বাচ্চাগুলো আগুনে ঝলসে যায়।এই মর্মান্তিক দৃশ্যের সাক্ষী হয়ে রিয়া মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। ঘটনার পরপরই তিনি ঢাকায় অবস্থান না করে নিজের গ্রামের বাড়ি নাজিরপুরে ফিরে আসেন। এখনো তিনি স্বাভাবিক হতে পারেননি।রিয়ার প্রতিবেশী অপর্না মৈত্র বলেন, রিয়া বাড়িতে আসার পর থেকে কারো সঙ্গে বেশি কথা বলে না। আমরাও রিয়ার কাছে তেমন কিছু জিজ্ঞেস করি না। ও ওই ঘটনা মনে করলে কেমন যেনো একটা আতঙ্কে থাকে।মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী রিয়ার মা স্কুল শিক্ষিকা অরতি মজুমদার বলেন, ঘটনার একদিন আগে আমি আমার মেয়েকে হোস্টেলে রেখে বাড়িতে আসি। আসার দিন রিয়া আর একটা দিন ওর সঙ্গে থাকার কথা বলে কান্নাকাটি করে। রিয়া ভর্তি হবার পর এমন কান্নাকাটি কখনো করেনি। বিমান দূর্ঘটনার পরপরই রিয়া আমাকে ফোন করে বলে মা আগুন, আগুন আর কিছুই বলতে পারছিলো না। এরপর টিভিতে ঘটনাটি দেখে আমরা বাড়ির সবাই কান্নাকাটি শুরু করি। রিয়ার বাবাকে ফোন দিয়ে বললে সে সঙ্গে সঙ্গেই ঢাকা রওনা দেন। ওই ঘটনার পর রিয়া কেমন যেন হয়ে গেছে, খুব একটা কথা বলে না। চুপচাপ থাকে আর মাঝে মাঝে আতকে ওঠে।রিয়ার বাবা রিপন মৈত্র বলেন, আমি রিয়ার মায়ের ফোন পেয়ে যে অবস্থায় এবং যে পোশাকে ছিলাম সেই ভাবে ঢাকা রওনা দেই। এরকম বিভীষিকাময় দৃশ্য আমি আগে কখনো দেখি নাই। ছোট ছোট বাচ্চাদের কষ্ট দেখে নিজেকে সামলে রাখা যায় না। ভগবান আমার মেয়েকে রক্ষা করছে। আমি ঘটনার দিন রাতেই রিয়াকে নিয়ে বাড়িতে চলে আসি।ভোরের আকাশ/জাআ