দিনাজপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৪ মে ২০২৫ ০৪:৪৯ পিএম
দিনাজপুরে গ্রীষ্মকালে টমেটো চাষ করে বাজিমাত করেছেন কৃষকরা
টমেটোকে শীতকালীন সবজির তালিকা থেকে বের করে এনেছেন দিনাজপুরের কৃষকরা। গ্রীষ্মকালে টমেটো চাষ করে তারা রীতিমতো বাজিমাত করেছেন। জেলার সদর উপজেলার গাবুড়া বাজারে তাদের উৎপাদিত টমেটোয় লাল হয়ে উঠেছে হাটবাজার। ইতোমধ্যে এ বাজারে ২০০ কোটি টাকার টমেটো বেচাকেনা হয়েছে। পাইকারদের ধারণা, আরও শতকোটি টাকার ফসল মাঠে রয়েছে।
সাধারণত ফেব্রুয়ারির মধ্যেই শীত শেষ হয়ে যায়, সঙ্গে টমেটোর মৌসুমও। কিন্তু দিনাজপুরের মাঠে এখনো টসটসে টমেটো ঝুলছে গাছেই। এগুলো বিশেষ গ্রীষ্মকালীন জাতের টমেটো, যা মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত চাষ করা যায়। মধ্য মার্চ থেকে শুরু করে জুন পর্যন্ত বাজারে আসে এসব টমেটো। এরপর জমি প্রস্তুত করা হয় অন্য ফসলের জন্য।
দিনাজপুর-চিরিরবন্দর সড়কসংলগ্ন গর্ভেশ্বরী নদীর তীরে অবস্থিত গাবুড়া বাজার জেলার সবচেয়ে বড় টমেটো হাট। আশপাশের এলাকা থেকে চাষিরা তাদের উৎপাদিত টমেটো এখানে নিয়ে আসেন। সেখান থেকে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে সরবরাহ করা হয়। স্থানীয় বাসিন্দারাও কম দামে পাচ্ছেন টাটকা টমেটো।
বাজারের ইজারাদার আরিফুল ইসলাম বলেন, গাবুড়া বাজারে প্রতিদিন ২ থেকে ২.৫ কোটি টাকার টমেটো বিক্রি হয়। গত ১৫ মার্চ থেকে ১০ মে পর্যন্ত ২০০ কোটি টাকার বেশি টমেটো বেচাকেনা হয়েছে। গর্ভেশ্বরী নদীর তীর থেকে মাস্তান বাজার পর্যন্ত প্রায় আধা কিলোমিটার এলাকাজুড়ে অস্থায়ী আড়ত গড়ে উঠেছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শতাধিক পাইকার টমেটো কিনতে আসেন।
এই বাজারে বিপুল প্লাস, প্রভেনসিভ, রোমা ভিএফ, মিন্টু সুপার, আনসাল, রানী, শক্তি প্লাসসহ নানা জাতের টমেটো পাওয়া যায়। জাতভেদে আকার, স্বাদ এবং দামে পার্থক্য রয়েছে। কৃষকরা জানান, এবার ফলন ভালো হলেও দাম কিছুটা কম। শরতে মণপ্রতি ৪০০-৫০০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন কেজিপ্রতি ১০-১২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কৃষকরা সরকারের কাছে টমেটো সংরক্ষণের জন্য হিমাগার নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন। তাদের মতে, এতে দীর্ঘদিন ফসল সংরক্ষণ করা সম্ভব হবে এবং চাষিরা বেশি লাভবান হবেন।
দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আফজাল হোসেন বলেন, টমেটো সংরক্ষণের জন্য হিমাগার নির্মাণের বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তারা ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন।
এভাবেই দিনাজপুরের কৃষকরা গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষে সাফল্য দেখিয়ে কৃষিখাতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছেন।
ভোরের আকাশ/এসআই