সাতকানিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৮ জুন ২০২৫ ০৮:২৮ পিএম
সাতকানিয়ায় মাদক ব্যবসাকে কেন্দ্র করে হামলা, আহত ৬
সাতকানিয়া উপজেলার ছদাহা ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড পাহাড়কুল এলাকায় মাদক ব্যবসার আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সমাজের প্রধানসহ ৬ জনকে হামলা করেছে দুর্বৃত্তরা। রবিবার (৮ জুন) দুপুর ১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন- মো. ইদ্রিস (৬০), মো. ছাবের হোসেন (২৭), মো. মুরাদ হোসেন (২৬), মোহাম্মদ জুনায়েদ (২৫), মাহমুদুল হক (৫৫) এবং শাফায়াত উল্লাহ (২৬)।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বেশ কিছুদিন ধরে পাহাড়কুল এলাকায় মাদক সেবন করে মহিলাদের ইভটিজিং, ঘরের চালায় ঢিল ছোড়া, অকথ্য ভাষায় গালাগাল করছিল স্থানীয় মহিউদ্দিন, ছৈয়দ আমিন (মিয়ানমারের নাগরিক), জামাল, মিনহাজ, জসিম, আজিজ, আরফাত, জমির, মনির (খুনের আসামি), আমির হামজা, উত্তর ছদাহার আনোয়ার শহীদ, সিফাতসহ বেশ কয়েকজন মাদকসেবী। গত ৬ জুন মাদকাসক্ত অবস্থায় তারা একই কাজ পুনরাবৃত্তি করায় স্থানীয়ভাবে সমাজ প্রধান মো. ইদ্রিস মৌখিকভাবে নিষেধ করেন।
একইসাথে রবিবার সালিশ (সামাজিক বৈঠক) করার নির্দেশ দেন। রবিবার সালিশের সময় আসলে স্থানীয়রা বৈঠকে যাওয়ার জন্য নতুন পাড়া (পাহাড়কুল) জামে মসজিদের পাশে চায়ের দোকানে গেলে অতর্কিতভাবে হামলা চালায় মাদকসেবীসহ দুর্বৃত্তরা। এতে ১৫০ থেকে ১৬০ জন আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে গুরুতর জখম করেন। পরে স্থানীয় ব্যক্তিবর্গের সহায়তায় সাতকানিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে আহতরা।
সমাজ প্রতিনিধি ও আহত মো. ইদ্রিস বলেন, আজকে সামাজিকভাবে সালিশের মাধ্যমে সমাধান করার কথা ছিল। ঘটনাস্থলে ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. তৌহিদুল ইসলামও উপস্থিত ছিলেন। আজকে মাদক, ইভটিজিংসহ নানা বিষয়ে সমাধানের কথা ছিল। কিন্তু ইউপি সদস্যের কথায় সালিশের সময় একদিন পিছিয়ে দেয়া হয়। এরই মধ্যে মাদকসেবিদের একটা গ্রুপ শর্টগান দিয়ে আমার উপর তেড়ে আসে। আমার স্ত্রী এবং পূত্রবধূর উপর হামলা চালিয়ে ঘরের স্বর্ণালঙ্কার লুট করে নিয়ে যায়।
বৈঠকে যারা এসেছিলেন, তাদের অনেকের মোবাইল-মানিব্যাগ ছিনতাই করে নেয়। আমি তিনজনের হাতে শর্ট গান দেখেছি। কিছু দূরে আরও একটি গ্রুপ ফাঁকা গুলি ছুড়ে এলাকায় ভীতি ছড়াচ্ছিলো। তারমধ্যে একজন আমার মাথায়-গায়ে বেধড়ক মারধর করে, এক পর্যায়ে আমি মাটিতে লুটিয়ে পড়ি। পরে কয়েকজনের সহায়তায় এবং আহতদের সাতকানিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা প্রদান করে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সাতকানিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হওয়ার পর অভিযুক্তরা এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যাওয়ায় তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে অভিযুক্ত মো.আয়াতের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে সংযোগ না পাওয়ায় তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মো. জাহেদুল ইসলাম জানান, দু’পক্ষের সংঘর্ষের খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ এবং সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। এখনো পর্যন্ত তাদের পক্ষে থেকে লিখিত কোন অভিযোগ পায়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ভোরের আকাশ/এসএইচ