এন এস কাঞ্চন, চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৫ এপ্রিল ২০২৫ ০৯:০৯ পিএম
জব্বারের বলীখেলায় আবারও চ্যাম্পিয়ন 'বাঘা শরীফ'
চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক আবদুল জব্বারের বলীখেলার ১০৬তম আসরে এবারো চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন কুমিল্লার বাঘা শরীফ। এ নিয়ে টানা দুবারের চ্যাম্পিয়ন হলো শরীফ। এছাড়া টানা দ্বিতীয়বারের মত রানার্সআপ হয়েছে একই জেলার রাশেদ। ১১৫ তম আসরে এই বাঘা শরীফকেই হাত তুলে বিজয়ী ঘোষণা করেছে রাশেদ নিজেই। শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) বিকেল ৪টায় এই বলীখেলার উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজ। এবার বলীখেলার স্পন্সর প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ ফোন।
এর আগে দুপুর ১টায় থেকে লালদীঘি মাঠের বলীখেলা প্রাঙ্গণে তীব্র গরম ও রোদ উপেক্ষো করে ভিড় জমাতে থাকে নানা বয়সী দর্শকরা। বেলা বাড়ার সাথে সাথে কানায় পূর্ণ হয়ে যায় লালদীঘি মাঠ। এছাড়া মাঠের আশপাশ ও বিভিন্ন বিল্ডিংয়ের ছাদ ও গাছে মানুষ বলীখেলা দেখতে উঠে পড়ে। এবার ১২০ জন বলীর মধ্যে থেকে ৮০ জন বলীখেলায় অংশ নেয়। এদের মধ্যে প্রথম রাউন্ডে উঠেন ৩৫ জন। পরে ৮ জনের মধ্যে কোয়ার্টার ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হয়। সেখান থেকে ৪ জন সেমিফাইনালে উত্তীর্ণ হয়।
কোয়ার্টার রাউন্ডে চট্টগ্রামের কাঞ্চনকে হারিয়ে কুমিল্লার কামাল, নিজ জেলা কুমিল্লার দিপুকে হারিয়ে শরীফ, সীতাকুণ্ডের রাসেলকে হারিয়ে কুমিল্লার শাহজালাল ও রাঙামাটির রুবেলকে হারিয়ে কুমিল্লার রাশেদ সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেন।সেমিফাইনালে শরীফ নিজ জেলার কামালকে হারিয়ে ও রাশেদ শাহজালালকে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করেন। প্রায় আধ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলা ফাইনাল খেলায় ‘বাঘা শরীফ’ ও রাশেদ কেউ কাউকে পরাজিত করতে পারেনি।
একপর্যায়ে প্রধান রেফারি হাফিজুর রহমান রাশেদকে ‘টেকনিক্যাল আউট’ ঘোষণা করে বাঘা শরীফকে বিজয়ী ঘোষণা করেন। তবে রেফারির এমন সিদ্ধান্তে ক্ষোভে ফেটে পড়েন রাশেদ। তিনি এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাতে থাকেন মঞ্চ থেকেই। একপর্যায়ে মঞ্চে তৈরি হয় উত্তেজনা। এদিকে রেফারির সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হওয়ায় বাঘা শরীফকে চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করা হয়। খেলা শেষে চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপকে পুরস্কার তুলে দেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। তবে পুরস্কার বিতরণেও তৈরি হয় বিশৃঙ্খলা।
বলী খেলা আয়োজক কমিটি সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালে ১১৩তম আসরে কুমিল্লার শাহজালাল বলীকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন চকরিয়ার তারেকুল ইসলাম জীবন। ২০২৩ সালে ১১৪তম আসরে কুমিল্লার জীবনকে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হন শাহজালাল বলী। এর আগে বলীখেলার ১১০তম আসরে কুমিল্লার শাহজালাল ও ১০৯তম আসরে চকরিয়ার জীবন চ্যাম্পিয়ন হন।
এদিকে আবদুল জব্বারের বলীখেলা ঘিরে প্রতিবছরের মত এবারও নগরের লালদীঘি মাঠ ও এর আশপাশের এলাকাজুড়ে বসেছে তিনদিনের বৈশাখী মেলা। ২৪ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া এ মেলা চলবে আগামী ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত। মেলায় তৈজসপত্র, খেলনা, ফুলদানি, পুতুল, বেত-কাঠ ও বাঁশের তৈরি আসবাব, হাতপাখা, মাছ ধরার পলো, বেতের তৈরি ডালা, কুলো, ফলদ ও বনজ গাছের চারা, ফুল গাছের চারা, মুড়ি মুড়কি, পাটি, মাদুর, চুড়ি, প্রসাধনী সামগ্রী, দা-বটি, ছুরিসহ প্রায় সব পণ্যই রয়েছে। ইতিমধ্যে পছন্দের পণ্য কেনাকাটা করতে মেলায় ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের ভিড় বেড়েছে।
উল্লেখ্য, ১৯০৯ সালে চট্টগ্রাম নগরের বদরপাতি এলাকার ধনাঢ্য ব্যবসায়ী আবদুল জব্বার সওদাগর এ বলীখেলার সূচনা করেন। তাঁর মৃত্যুর পর এ খেলা জব্বারের বলীখেলা নামে পরিচিতি লাভ করে। প্রতিবছর ১২ বৈশাখ নগরের লালদীঘি মাঠে এ বলীখেলা ও তিনদিনের বৈশাখী মেলা অনুষ্ঠিত হয়।
ভোরের আকাশ/এসএইচ
এন এস কাঞ্চন, চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১ ঘন্টা আগে
আপডেট : ১ ঘন্টা আগে
জব্বারের বলীখেলায় আবারও চ্যাম্পিয়ন 'বাঘা শরীফ'
চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক আবদুল জব্বারের বলীখেলার ১০৬তম আসরে এবারো চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন কুমিল্লার বাঘা শরীফ। এ নিয়ে টানা দুবারের চ্যাম্পিয়ন হলো শরীফ। এছাড়া টানা দ্বিতীয়বারের মত রানার্সআপ হয়েছে একই জেলার রাশেদ। ১১৫ তম আসরে এই বাঘা শরীফকেই হাত তুলে বিজয়ী ঘোষণা করেছে রাশেদ নিজেই। শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) বিকেল ৪টায় এই বলীখেলার উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজ। এবার বলীখেলার স্পন্সর প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ ফোন।
এর আগে দুপুর ১টায় থেকে লালদীঘি মাঠের বলীখেলা প্রাঙ্গণে তীব্র গরম ও রোদ উপেক্ষো করে ভিড় জমাতে থাকে নানা বয়সী দর্শকরা। বেলা বাড়ার সাথে সাথে কানায় পূর্ণ হয়ে যায় লালদীঘি মাঠ। এছাড়া মাঠের আশপাশ ও বিভিন্ন বিল্ডিংয়ের ছাদ ও গাছে মানুষ বলীখেলা দেখতে উঠে পড়ে। এবার ১২০ জন বলীর মধ্যে থেকে ৮০ জন বলীখেলায় অংশ নেয়। এদের মধ্যে প্রথম রাউন্ডে উঠেন ৩৫ জন। পরে ৮ জনের মধ্যে কোয়ার্টার ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হয়। সেখান থেকে ৪ জন সেমিফাইনালে উত্তীর্ণ হয়।
কোয়ার্টার রাউন্ডে চট্টগ্রামের কাঞ্চনকে হারিয়ে কুমিল্লার কামাল, নিজ জেলা কুমিল্লার দিপুকে হারিয়ে শরীফ, সীতাকুণ্ডের রাসেলকে হারিয়ে কুমিল্লার শাহজালাল ও রাঙামাটির রুবেলকে হারিয়ে কুমিল্লার রাশেদ সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেন।সেমিফাইনালে শরীফ নিজ জেলার কামালকে হারিয়ে ও রাশেদ শাহজালালকে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করেন। প্রায় আধ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলা ফাইনাল খেলায় ‘বাঘা শরীফ’ ও রাশেদ কেউ কাউকে পরাজিত করতে পারেনি।
একপর্যায়ে প্রধান রেফারি হাফিজুর রহমান রাশেদকে ‘টেকনিক্যাল আউট’ ঘোষণা করে বাঘা শরীফকে বিজয়ী ঘোষণা করেন। তবে রেফারির এমন সিদ্ধান্তে ক্ষোভে ফেটে পড়েন রাশেদ। তিনি এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাতে থাকেন মঞ্চ থেকেই। একপর্যায়ে মঞ্চে তৈরি হয় উত্তেজনা। এদিকে রেফারির সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হওয়ায় বাঘা শরীফকে চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করা হয়। খেলা শেষে চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপকে পুরস্কার তুলে দেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। তবে পুরস্কার বিতরণেও তৈরি হয় বিশৃঙ্খলা।
বলী খেলা আয়োজক কমিটি সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালে ১১৩তম আসরে কুমিল্লার শাহজালাল বলীকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন চকরিয়ার তারেকুল ইসলাম জীবন। ২০২৩ সালে ১১৪তম আসরে কুমিল্লার জীবনকে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হন শাহজালাল বলী। এর আগে বলীখেলার ১১০তম আসরে কুমিল্লার শাহজালাল ও ১০৯তম আসরে চকরিয়ার জীবন চ্যাম্পিয়ন হন।
এদিকে আবদুল জব্বারের বলীখেলা ঘিরে প্রতিবছরের মত এবারও নগরের লালদীঘি মাঠ ও এর আশপাশের এলাকাজুড়ে বসেছে তিনদিনের বৈশাখী মেলা। ২৪ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া এ মেলা চলবে আগামী ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত। মেলায় তৈজসপত্র, খেলনা, ফুলদানি, পুতুল, বেত-কাঠ ও বাঁশের তৈরি আসবাব, হাতপাখা, মাছ ধরার পলো, বেতের তৈরি ডালা, কুলো, ফলদ ও বনজ গাছের চারা, ফুল গাছের চারা, মুড়ি মুড়কি, পাটি, মাদুর, চুড়ি, প্রসাধনী সামগ্রী, দা-বটি, ছুরিসহ প্রায় সব পণ্যই রয়েছে। ইতিমধ্যে পছন্দের পণ্য কেনাকাটা করতে মেলায় ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের ভিড় বেড়েছে।
উল্লেখ্য, ১৯০৯ সালে চট্টগ্রাম নগরের বদরপাতি এলাকার ধনাঢ্য ব্যবসায়ী আবদুল জব্বার সওদাগর এ বলীখেলার সূচনা করেন। তাঁর মৃত্যুর পর এ খেলা জব্বারের বলীখেলা নামে পরিচিতি লাভ করে। প্রতিবছর ১২ বৈশাখ নগরের লালদীঘি মাঠে এ বলীখেলা ও তিনদিনের বৈশাখী মেলা অনুষ্ঠিত হয়।
ভোরের আকাশ/এসএইচ