সাভারে বিএনপির বৈশাখী শোভাযাত্রা
বাংলা নববর্ষকে স্বাগত জানিয়ে বৈশাখী শোভাযাত্রা হয়েছে সাভারে। গতকাল সকালে সাভার পৌরসভার ছায়াবীথি এলাকা থেকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের পক্ষ থেকে এই আনন্দ র্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ঢাকা বিএনপির সাবেক যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মো: খোরশেদ আলম এর আয়োজনে আনন্দ শোভাযাত্রায় উপস্থিত ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য ডা: দেওয়ান মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বাবুসহ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের কয়েক হাজার নেতাকর্মী।
এ সময় তারা রংবেরঙের পোশাক পরে বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে আনন্দ উল্লাসের সাথে শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করে।
আনন্দ শোভাযাত্রায় বিএনপির বিভিন্ন সংগঠনের নেতা কর্মী ছাড়াও সর্বস্তরের জনগণের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।
ভোরের আকাশ/এসএইচ
সংশ্লিষ্ট
‘কোথায় যামু (যাবো), কুম্মে যামু, কি করমু (করবো) এহন (এখন) আল্লাহ-ই ভালো জানেন, জাগা-জমি (জায়গা) তো সবই নদীতে। আর কিচ্ছু (কিছু) নাই আমাগো’। কথাগুলো বলছিলেন নদীর তীরে এসে অপলোক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকা বয়োবৃদ্ধ রেনু বেগম। হারানো স্মৃতি তাকে প্রায়ই টেনে আনেন নদীর তীরে।গত ১০ বছরে তিনবার এই নদী কেড়ে নিয়েছে বয়োবৃদ্ধ রেনু বেগমের ভিটেবাড়ি। যেখানে ছিল হাসি-আনন্দ, ছিল স্বপ্ন। কিন্তু আজ শুধুই স্মৃতি। নতুন করে ঘুরে দাঁড়াতে না দাড়াতেই আবারও ভাঙনের কবলে পড়তে হয়েছে তাকে। রক্ষা করতে পারেননি তার সহায়-সম্পদ। এখন বাঁধ ঘেঁষে যেখানে বসবাস করছেন, তাও ভাঙনের মুখে।এই ভাঙনের গল্প শুধু রেনু বেগমের একার নয়, এটি উপকূলীয় পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ ইউনিয়ন চালিতাবুনিয়ার শত শত পরিবারের কষ্টের গল্প। শত শত পরিবার তাদের বসতভিটে-বাড়ি, জমি, সম্পদ হারিয়েছেন। সব হারিয়ে কেউ হয়েছেন নিঃস্ব। এমনকি অনেক প্রিয়জনের কবরও আজ নদী গ্রাস করেছে।জীবনের শেষ স্বপ্নগুলো, স্মৃতির জায়গাগুলো আজ নদী গ্রাস করেছে। আগুনমুখা নদীর স্রোতে হারিয়ে যাচ্ছে চালিতাবুনিয়া। ভিটেমাটি হারিয়ে কেউ কেউ চলে গেছে অন্য কোন এলাকায়, আবার কেউ শেষ সম্বলটুকু নিয়ে নদীর তীরে, বেড়িবাঁধের গায়ে কোনো রকমে ঠাঁই নিয়েছে। কিন্তু সেখানেও নিশ্চয়তা নেই। বছর পার হয়, ভাঙন বাড়ে কিন্তু জনপ্রনিধিদের দেয়া প্রতিশ্রুতির ফেলে আসা শব্দগুলো নদীর গর্জনে মিশে যায়।চালিতাবুনিয়ার আরেক বাসিন্দা নেছার হাওলাদার বলেন, ‘আমার প্রায় দুই কানি জমি আছিলো, (ছিলো) সবই এই আগুনমুখার প্যাডে (পেটে) চলে গেছে। এখন যে একটা ঘর উঠামু (উঠাবো) সেই জায়গাটুকু পর্যন্ত নাই। একে একে তিনবার বাড়ি পাল্টাইছি। পুকুর-ঘের করে মাছ চাষ করলে তাও নুনা পানি (লবন পানি) ঢুইক্কা (ঢুকে) তছনছ কইরা (করে) ফালায়।’স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে প্রায় ১৫ হাজার মানুষের বসবাস করা এ পর্যন্ত ইউনিয়নটির মূল ভূখন্ডের প্রায় তিন একাংশ বিলীন হয়েছে। এ জনপদে নদীভাঙন শুরু হয় ২০১৪ সাল থেকে। প্রশাসন ব্যবস্থা নেওয়ার আগে আরও কত বসভিটা, কত স্বপ্ন নদীর গহ্বরে তলিয়ে যাবে সে গল্প যেন চির অধরা আর অজানাই রয়ে যায়।চালিতাবুনিয়া এমন একটি জনপদ যার পরতে পরতে এখন শুধু ক্ষতি আর অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ। আগুনমুখা নদীর তীব্র স্রোতের সঙ্গে মানুষের জীবনযুদ্ধ চলছেই। একদিকে নদীর ভাঙন, অন্যদিকে দুর্বল বেড়িবাঁধের এমন এক বাস্তবতা, যা প্রতিদিন এখানে বসবাস করা মানুষের জীবনকে বিপন্ন করে তুলছে। শোক আর ক্ষতিতে ডুবে থাকা এসব মানুষদের জীবন যেন এক অদৃশ্য যুদ্ধের নাম।স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি ভাঙনকবলিত চালিতাবুনিয়ায় এখনই টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের পাশাপাশি ব্লক দিয়ে নদীর তীর রক্ষার দীর্ঘমেয়াদি বা স্থায়ী পরিকল্পনা গ্রহণের কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হোক। একদিকে নদীর স্রোত, অন্যদিকে দুর্বল বাঁধ এমনি পরিস্থিতিতে চলতে থাকা এসব মানুষের চাওয়া-তাদের বসবাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। ক্ষতিগ্রস্তরা চাইছেন স্থায়ী টেকসই বাঁধ, নদীর তীর রক্ষায় কার্যকর উদ্যোগ।চালিতাবুনিয়ার প্যানেল চেয়ারম্যান বিপ্লব হাওলাদার জানান, এ ইউনিয়নের ১,২,৭,৮,৯ এ পাঁচটি ওয়ার্ড ভাঙ্গন কবলিত। লিখিতভাবে পানি উন্নয়ন বোর্ডে জানিয়েছি। তারা দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে এ ভাঙনকবলিত চালিতাবুনিয়ার মানুষের সামনে ঢাল হয়ে না আসলে এ জনপদ বিলীন হয়ে যাবে।রাঙ্গাবালী ইউএনও মো. ইকবাল হাসান বলেন, ভাঙনকবলিত চালিতাবুনিয়া রক্ষার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে স্থায়ী ব্লক বাঁধ নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
নেত্রকোণার দুর্গাপুরে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে বাদাম চাষ। কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় বাদাম চাষে ঝুঁকছেন উপজেলার কৃষকেরা। উপজেলায় দুইটি মৌসুমে বাদাম চাষ করা হয়।কৃষি বিভাগ বলছে, পুরো উপজেলার ২৫ হেক্টর জমিতে বাদাম চাষ করা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি চাষ করা হয়েছে গাঁওকান্দিয়া ইউনিয়নে। ফলন হয়েছে সন্তোষজনক। বালু মাটি বাদাম চাষের উপযোগী হওয়া ও এতে ধানের ফলন ভালো না হওয়ায় বাদাম চাষ করছেন কৃষকরা।সরেজমিন গাঁওকান্দিয়া ইউনিয়নের ফসলের মাঠে দেখা যায়, বিস্তীর্ণ বাদাম ক্ষেত। বাতাসে দোল খাচ্ছে বাতাম গাছের সবুজ পাতা। সূর্যের তাপ উপেক্ষা করে বাদাম ক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা।এ সময় কথা হয় শংকরপুর গ্রামের কৃষক মো. নূর মোহাম্মদের সঙ্গে। তিনি প্রায় ৩০ বছর ধরে বাদামের চাষ করে আসছেন। চার একর জমিতে লাখ টাকা খরচ করে বাদাম চাষ করেছেন। তাতে কয়েকগুণ লাভের আশা করছেন তিনি।কৃষক নূর মোহাম্মদ বলেন, আমাদের এখানে ধানের ফলন ভালো হয় না। কিন্তু বাদামের ফলন ভালো হয়। আমার ক্ষেতের বাদাম ১৫-২০ দিনের মধ্যে তুলে বাজারজাত করব। আশা করছি, আগের থেকে অনেক বেশি লাভ হবে।একই গ্রামের বাদাম চাষি আব্দুল মান্নান। তিনিও ২০ বছর ধরে বাদাম চাষ করেছেন। তার দেড় একর জমিতে বাদামের বাম্পার ফলন হয়েছে। এ জন্য তিনিও খুশি। তবে সেচের সুযোগ-সুবিধা বাড়লে আরো বেশি চাষাবাদ করা সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।দুর্গাপুর উপজেলা কৃষি অফিসার নিপা বিশ্বাস বলেন, বাদাম লাভজনক আবাদ। অন্যান্য বারের চেয়েও এবার ফলন ভালো হয়েছে। এ বছর বাদাম বিক্রি করে কৃষকরা তাদের খরচ মিটিয়েও প্রায় ৫০ লাখ টাকা লাভবান হবেন আশা করছি।ভোরের আকাশ/এসএইচ
বরিশাল সিটি করপোরেশনের ২০২৩ সালের নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিমকে মেয়র ঘোষণা করার দাবিতে বরিশালে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।শুক্রবার বিকেল ৪টায় নগরীর সদর রোডের অশ্বিনী কুমার হলের সামনে এই মানববন্ধনের আয়োজন করেন বরিশাল সিটি করপোরেশনের সর্বস্তরের জনগণ। ব্যানারে লেখা ছিল “বরিশালবাসী চায় প্রকৃত বিজয়ী মেয়র”।মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, ২০২৩ সালের সিটি নির্বাচনে ‘হাতপাখা’ প্রতীক নিয়ে মুফতি ফয়জুল করিম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও, আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বাহিনী ও দলীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় তাকে জোরপূর্বক পরাজিত ঘোষণা করা হয়। তারা বলেন, নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়েছে এবং নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেছে।বক্তারা আরও দাবি করেন, ভোটের দিন বরিশালে সহিংসতা, হামলা ও জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে। এ অবস্থায় তারা নির্বাচন বাতিল করে মুফতি ফয়জুল করিমকে বৈধ মেয়র হিসেবে ঘোষণা করার দাবি জানান।এদিকে, এই দাবির প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) বরিশাল সদর সিনিয়র সহকারী জজ আদালত ও সিটি নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা দায়ের করেন মুফতি ফয়জুল করিম। মামলায় তিনি নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে তাঁকে বিজয়ী ঘোষণা করার আবেদন জানান। তাঁর পক্ষে মামলাটি দাখিল করেন আইনজীবী শেখ আবদুল্লাহ নাসির। ভোরের আকাশ/মি
চট্টগ্রামে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নালায় পড়ে নিখোঁজ হওয়া ছয় মাসের শিশু সেহেরিশের মরদেহের হদিস মিলেছে। নিখোঁজের প্রায় ১৪ ঘণ্টা পর শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করা হল।শনিবার (১৯ এপ্রিল) সকাল ১০টার দিকে চাক্তাই খাল এলাকায় শিশুটির মরদেহ ভেসে উঠে। নিখোঁজ হওয়া শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়েছে জানিয়েছেন তল্লাশির দায়িত্বে থাকা নৌবাহিনীর ডুবুরি টিমের প্রধান লেফটেন্যান্ট বেলাল হোছাইন। তিনি বলেন, নিখোঁজ শিশুটিকে তার পরিবারের লোকজন শনাক্ত করেছেন।এর আগে, শুক্রবার রাত ৮টার দিকে ব্যাটারিচালিত একটি রিকশা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে হিজড়া খালে তলিয়ে যায়। ওই রিকশায় ভুক্তভোগী শিশুর মা ও নানি ছিলেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছিলেন। দুর্ঘটনার পর মা ও নানি উঠতে সক্ষম হলেও তলিয়ে যায় ৬ মাস বয়সী ওই শিশুটি। ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রামে ঝুম বৃষ্টি হয়। রাত সাড়ে ৮টার দিকে কাপাসগোলা এলাকায় একটি ব্যাটারিচালিত রিকশা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যাত্রীসহ নালায় পড়ে যায়। রিকশায় ছয় মাস বয়সী শিশুসহ এক নারী যাত্রী ছিলেন। স্থানীয়রা চালক এবং ওই নারী যাত্রীকে উদ্ধার করেন। তবে, নারীর কোলে থাকা শিশুটি বৃষ্টির পানির স্রোতে ভেসে যায়।খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস, নৌবাহিনী, আনসার ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার অভিযানে অংশ নেয়। রাত ১২টা পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান চালালেও শিশুটির খোঁজ মেলেনি। শনিবার সকালে ফের অভিযান শুরু হয়। আজ সকাল ১০টার দিকে শিশুটির লাশ ভেসে উঠে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
সাভারে বিএনপির বৈশাখী শোভাযাত্রা
বাংলা নববর্ষকে স্বাগত জানিয়ে বৈশাখী শোভাযাত্রা হয়েছে সাভারে। গতকাল সকালে সাভার পৌরসভার ছায়াবীথি এলাকা থেকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের পক্ষ থেকে এই আনন্দ র্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ঢাকা বিএনপির সাবেক যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মো: খোরশেদ আলম এর আয়োজনে আনন্দ শোভাযাত্রায় উপস্থিত ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য ডা: দেওয়ান মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বাবুসহ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের কয়েক হাজার নেতাকর্মী।
এ সময় তারা রংবেরঙের পোশাক পরে বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে আনন্দ উল্লাসের সাথে শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করে।
আনন্দ শোভাযাত্রায় বিএনপির বিভিন্ন সংগঠনের নেতা কর্মী ছাড়াও সর্বস্তরের জনগণের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।
ভোরের আকাশ/এসএইচ
সংশ্লিষ্ট
‘কোথায় যামু (যাবো), কুম্মে যামু, কি করমু (করবো) এহন (এখন) আল্লাহ-ই ভালো জানেন, জাগা-জমি (জায়গা) তো সবই নদীতে। আর কিচ্ছু (কিছু) নাই আমাগো’। কথাগুলো বলছিলেন নদীর তীরে এসে অপলোক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকা বয়োবৃদ্ধ রেনু বেগম। হারানো স্মৃতি তাকে প্রায়ই টেনে আনেন নদীর তীরে।গত ১০ বছরে তিনবার এই নদী কেড়ে নিয়েছে বয়োবৃদ্ধ রেনু বেগমের ভিটেবাড়ি। যেখানে ছিল হাসি-আনন্দ, ছিল স্বপ্ন। কিন্তু আজ শুধুই স্মৃতি। নতুন করে ঘুরে দাঁড়াতে না দাড়াতেই আবারও ভাঙনের কবলে পড়তে হয়েছে তাকে। রক্ষা করতে পারেননি তার সহায়-সম্পদ। এখন বাঁধ ঘেঁষে যেখানে বসবাস করছেন, তাও ভাঙনের মুখে।এই ভাঙনের গল্প শুধু রেনু বেগমের একার নয়, এটি উপকূলীয় পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ ইউনিয়ন চালিতাবুনিয়ার শত শত পরিবারের কষ্টের গল্প। শত শত পরিবার তাদের বসতভিটে-বাড়ি, জমি, সম্পদ হারিয়েছেন। সব হারিয়ে কেউ হয়েছেন নিঃস্ব। এমনকি অনেক প্রিয়জনের কবরও আজ নদী গ্রাস করেছে।জীবনের শেষ স্বপ্নগুলো, স্মৃতির জায়গাগুলো আজ নদী গ্রাস করেছে। আগুনমুখা নদীর স্রোতে হারিয়ে যাচ্ছে চালিতাবুনিয়া। ভিটেমাটি হারিয়ে কেউ কেউ চলে গেছে অন্য কোন এলাকায়, আবার কেউ শেষ সম্বলটুকু নিয়ে নদীর তীরে, বেড়িবাঁধের গায়ে কোনো রকমে ঠাঁই নিয়েছে। কিন্তু সেখানেও নিশ্চয়তা নেই। বছর পার হয়, ভাঙন বাড়ে কিন্তু জনপ্রনিধিদের দেয়া প্রতিশ্রুতির ফেলে আসা শব্দগুলো নদীর গর্জনে মিশে যায়।চালিতাবুনিয়ার আরেক বাসিন্দা নেছার হাওলাদার বলেন, ‘আমার প্রায় দুই কানি জমি আছিলো, (ছিলো) সবই এই আগুনমুখার প্যাডে (পেটে) চলে গেছে। এখন যে একটা ঘর উঠামু (উঠাবো) সেই জায়গাটুকু পর্যন্ত নাই। একে একে তিনবার বাড়ি পাল্টাইছি। পুকুর-ঘের করে মাছ চাষ করলে তাও নুনা পানি (লবন পানি) ঢুইক্কা (ঢুকে) তছনছ কইরা (করে) ফালায়।’স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে প্রায় ১৫ হাজার মানুষের বসবাস করা এ পর্যন্ত ইউনিয়নটির মূল ভূখন্ডের প্রায় তিন একাংশ বিলীন হয়েছে। এ জনপদে নদীভাঙন শুরু হয় ২০১৪ সাল থেকে। প্রশাসন ব্যবস্থা নেওয়ার আগে আরও কত বসভিটা, কত স্বপ্ন নদীর গহ্বরে তলিয়ে যাবে সে গল্প যেন চির অধরা আর অজানাই রয়ে যায়।চালিতাবুনিয়া এমন একটি জনপদ যার পরতে পরতে এখন শুধু ক্ষতি আর অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ। আগুনমুখা নদীর তীব্র স্রোতের সঙ্গে মানুষের জীবনযুদ্ধ চলছেই। একদিকে নদীর ভাঙন, অন্যদিকে দুর্বল বেড়িবাঁধের এমন এক বাস্তবতা, যা প্রতিদিন এখানে বসবাস করা মানুষের জীবনকে বিপন্ন করে তুলছে। শোক আর ক্ষতিতে ডুবে থাকা এসব মানুষদের জীবন যেন এক অদৃশ্য যুদ্ধের নাম।স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি ভাঙনকবলিত চালিতাবুনিয়ায় এখনই টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের পাশাপাশি ব্লক দিয়ে নদীর তীর রক্ষার দীর্ঘমেয়াদি বা স্থায়ী পরিকল্পনা গ্রহণের কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হোক। একদিকে নদীর স্রোত, অন্যদিকে দুর্বল বাঁধ এমনি পরিস্থিতিতে চলতে থাকা এসব মানুষের চাওয়া-তাদের বসবাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। ক্ষতিগ্রস্তরা চাইছেন স্থায়ী টেকসই বাঁধ, নদীর তীর রক্ষায় কার্যকর উদ্যোগ।চালিতাবুনিয়ার প্যানেল চেয়ারম্যান বিপ্লব হাওলাদার জানান, এ ইউনিয়নের ১,২,৭,৮,৯ এ পাঁচটি ওয়ার্ড ভাঙ্গন কবলিত। লিখিতভাবে পানি উন্নয়ন বোর্ডে জানিয়েছি। তারা দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে এ ভাঙনকবলিত চালিতাবুনিয়ার মানুষের সামনে ঢাল হয়ে না আসলে এ জনপদ বিলীন হয়ে যাবে।রাঙ্গাবালী ইউএনও মো. ইকবাল হাসান বলেন, ভাঙনকবলিত চালিতাবুনিয়া রক্ষার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে স্থায়ী ব্লক বাঁধ নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
নেত্রকোণার দুর্গাপুরে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে বাদাম চাষ। কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় বাদাম চাষে ঝুঁকছেন উপজেলার কৃষকেরা। উপজেলায় দুইটি মৌসুমে বাদাম চাষ করা হয়।কৃষি বিভাগ বলছে, পুরো উপজেলার ২৫ হেক্টর জমিতে বাদাম চাষ করা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি চাষ করা হয়েছে গাঁওকান্দিয়া ইউনিয়নে। ফলন হয়েছে সন্তোষজনক। বালু মাটি বাদাম চাষের উপযোগী হওয়া ও এতে ধানের ফলন ভালো না হওয়ায় বাদাম চাষ করছেন কৃষকরা।সরেজমিন গাঁওকান্দিয়া ইউনিয়নের ফসলের মাঠে দেখা যায়, বিস্তীর্ণ বাদাম ক্ষেত। বাতাসে দোল খাচ্ছে বাতাম গাছের সবুজ পাতা। সূর্যের তাপ উপেক্ষা করে বাদাম ক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা।এ সময় কথা হয় শংকরপুর গ্রামের কৃষক মো. নূর মোহাম্মদের সঙ্গে। তিনি প্রায় ৩০ বছর ধরে বাদামের চাষ করে আসছেন। চার একর জমিতে লাখ টাকা খরচ করে বাদাম চাষ করেছেন। তাতে কয়েকগুণ লাভের আশা করছেন তিনি।কৃষক নূর মোহাম্মদ বলেন, আমাদের এখানে ধানের ফলন ভালো হয় না। কিন্তু বাদামের ফলন ভালো হয়। আমার ক্ষেতের বাদাম ১৫-২০ দিনের মধ্যে তুলে বাজারজাত করব। আশা করছি, আগের থেকে অনেক বেশি লাভ হবে।একই গ্রামের বাদাম চাষি আব্দুল মান্নান। তিনিও ২০ বছর ধরে বাদাম চাষ করেছেন। তার দেড় একর জমিতে বাদামের বাম্পার ফলন হয়েছে। এ জন্য তিনিও খুশি। তবে সেচের সুযোগ-সুবিধা বাড়লে আরো বেশি চাষাবাদ করা সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।দুর্গাপুর উপজেলা কৃষি অফিসার নিপা বিশ্বাস বলেন, বাদাম লাভজনক আবাদ। অন্যান্য বারের চেয়েও এবার ফলন ভালো হয়েছে। এ বছর বাদাম বিক্রি করে কৃষকরা তাদের খরচ মিটিয়েও প্রায় ৫০ লাখ টাকা লাভবান হবেন আশা করছি।ভোরের আকাশ/এসএইচ
বরিশাল সিটি করপোরেশনের ২০২৩ সালের নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিমকে মেয়র ঘোষণা করার দাবিতে বরিশালে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।শুক্রবার বিকেল ৪টায় নগরীর সদর রোডের অশ্বিনী কুমার হলের সামনে এই মানববন্ধনের আয়োজন করেন বরিশাল সিটি করপোরেশনের সর্বস্তরের জনগণ। ব্যানারে লেখা ছিল “বরিশালবাসী চায় প্রকৃত বিজয়ী মেয়র”।মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, ২০২৩ সালের সিটি নির্বাচনে ‘হাতপাখা’ প্রতীক নিয়ে মুফতি ফয়জুল করিম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও, আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বাহিনী ও দলীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় তাকে জোরপূর্বক পরাজিত ঘোষণা করা হয়। তারা বলেন, নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়েছে এবং নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেছে।বক্তারা আরও দাবি করেন, ভোটের দিন বরিশালে সহিংসতা, হামলা ও জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে। এ অবস্থায় তারা নির্বাচন বাতিল করে মুফতি ফয়জুল করিমকে বৈধ মেয়র হিসেবে ঘোষণা করার দাবি জানান।এদিকে, এই দাবির প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) বরিশাল সদর সিনিয়র সহকারী জজ আদালত ও সিটি নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা দায়ের করেন মুফতি ফয়জুল করিম। মামলায় তিনি নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে তাঁকে বিজয়ী ঘোষণা করার আবেদন জানান। তাঁর পক্ষে মামলাটি দাখিল করেন আইনজীবী শেখ আবদুল্লাহ নাসির। ভোরের আকাশ/মি
চট্টগ্রামে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নালায় পড়ে নিখোঁজ হওয়া ছয় মাসের শিশু সেহেরিশের মরদেহের হদিস মিলেছে। নিখোঁজের প্রায় ১৪ ঘণ্টা পর শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করা হল।শনিবার (১৯ এপ্রিল) সকাল ১০টার দিকে চাক্তাই খাল এলাকায় শিশুটির মরদেহ ভেসে উঠে। নিখোঁজ হওয়া শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়েছে জানিয়েছেন তল্লাশির দায়িত্বে থাকা নৌবাহিনীর ডুবুরি টিমের প্রধান লেফটেন্যান্ট বেলাল হোছাইন। তিনি বলেন, নিখোঁজ শিশুটিকে তার পরিবারের লোকজন শনাক্ত করেছেন।এর আগে, শুক্রবার রাত ৮টার দিকে ব্যাটারিচালিত একটি রিকশা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে হিজড়া খালে তলিয়ে যায়। ওই রিকশায় ভুক্তভোগী শিশুর মা ও নানি ছিলেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছিলেন। দুর্ঘটনার পর মা ও নানি উঠতে সক্ষম হলেও তলিয়ে যায় ৬ মাস বয়সী ওই শিশুটি। ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রামে ঝুম বৃষ্টি হয়। রাত সাড়ে ৮টার দিকে কাপাসগোলা এলাকায় একটি ব্যাটারিচালিত রিকশা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যাত্রীসহ নালায় পড়ে যায়। রিকশায় ছয় মাস বয়সী শিশুসহ এক নারী যাত্রী ছিলেন। স্থানীয়রা চালক এবং ওই নারী যাত্রীকে উদ্ধার করেন। তবে, নারীর কোলে থাকা শিশুটি বৃষ্টির পানির স্রোতে ভেসে যায়।খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস, নৌবাহিনী, আনসার ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার অভিযানে অংশ নেয়। রাত ১২টা পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান চালালেও শিশুটির খোঁজ মেলেনি। শনিবার সকালে ফের অভিযান শুরু হয়। আজ সকাল ১০টার দিকে শিশুটির লাশ ভেসে উঠে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
মন্তব্য করুন