মো. রেজাউর রহিম
প্রকাশ : ০২ অক্টোবর ২০২৫ ১২:৪৩ এএম
ছবি: সংগৃহীত
দেশের মানুষের সুষম উন্নয়নের পাশাপাশি বিদ্যমান আঞ্চলিকসহ বিভিন্ন বৈষম্য দূরীকরণে এবং উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ত্বরান্বিত ও গতিশীল করতে বাজেট বাস্তবায়নে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। এক্ষেত্রে বাজেটের বরাদ্দের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগের বরাদ্দ বন্ধ করতে পারে সরকার। সম্প্রতি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দপ্তর থেকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোতে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে অর্থ মন্ত্রণালয়সহ একাধিক সূত্রে জানা গেছে।
এছাড়া উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ত্বরান্বিত করতে বাধা বা প্রতিবন্ধকতা থাকলে সেসব দ্রুত দূর করার এবং বাস্তবায়ন কর্মকাণ্ড মনিটরিং জোরদার করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে কোন ধরনের দুর্নীতি যাতে না হয়- সে ব্যাপারে বিশেষভাবে সতর্ক হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের শুরুতে বাজেট বাস্তবায়নে ধীরগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নের অগ্রগতি জানতে চেয়ে চিঠিতে বাস্তবায়নের আনুপাতিক হার বাড়াতে না পারলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের এবং প্রতিষ্ঠান ও মন্ত্রণালয়কে ভর্ৎসনা করা হবে। পাশাপাশি উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়নে কোন কর্মকর্তার গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া গেলে সেক্ষেত্রে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ ভোরের আকাশকে বলেন, উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়ন ও দেশের সুষম উন্নয়ন নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাজেটের শতভাগ যথাযথ বাস্তবায়নে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়েছে। সরকার সেই লক্ষ্য নিয়েই কাজ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, নীতিমালা অনুযায়ী-বাজেট বরাদ্দের অর্থ যথাযথভাবে ব্যবহার করা না হলে সরকার সেই অর্থ ফিরিয়ে নেয়। সরকার বাজেট বাস্তবায়নে গতিশীলতা বৃদ্ধি এবং উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ত্বরান্বিত করতে কঠোরতা অবলম্বন করবে এবং প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের শুরুতে বাজেট বাস্তবায়নে ধীরগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এই সমস্যা মোকাবিলায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে তাদের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) দ্রুত বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছে সরকার। এক্ষেত্রে বাজেটের অর্থ খরচে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগের বরাদ্দ বন্ধ করে দেওয়ার মতো কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে যেসব মন্ত্রণালয় ও বিভাগ এডিপি বাস্তবায়নে বেশি পিছিয়ে রয়েছে, সেসব বিভাগে মনিটরিং জোরদারের নির্দেশনা দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
এ ব্যাপারে অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ভোরের আকাশকে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার শতভাগ বাজেট বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে চায় এবং সেই লক্ষ্য নিয়েই কাজ শুরু হয়েছে। তবে প্রকল্প প্রণয়ন ও অনুমোদন বিলম্ব, টেন্ডার প্রক্রিয়ায় জটিলতা, আমলাতান্ত্রিক সঙ্কট এবং ভূমি অধিগ্রহণের মতো সমস্যার কারণে অনেক সময় বরাদ্দকৃত অর্থ খরচ করতে পারে না সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগুলো।
তিনি জানান, উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে ব্যর্থতার জন্য শাস্তির বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। তবে আশা করা হচ্ছে, সবাই জারিকৃত পরিপত্রের বিষয়গুলো অনুসরণ করবে এবং ঠিক মতো বাজেট বাস্তবায়ন করতে তৎপর হবে।
সম্প্রতি অর্থ বিভাগের এক পরিপত্রে বলা হয়- অর্থবছরের প্রথম তিন প্রান্তিকের (৯ মাস) মধ্যে ৬০ শতাংশ অর্থ খরচ করতে না পারলে শেষ অর্থাৎ চতুর্থ প্রান্তিকের অর্থছাড় স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যাবে। সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের উদ্দেশে এই পরিপত্র জারি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
পরিপত্রে বলা হয়েছে, মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো বর্তমানে এমনভাবে বাজেট বাস্তবায়ন করছে যাতে আর্থিক শৃঙ্খলা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে বাজেট বাস্তবায়নের গতি বেশ ধীর, যার ধারাবাহিকতা দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রান্তিকেও থাকার আশঙ্কা রয়েছে। বাজেট বাস্তবায়নের হার বেশি দেখা যায় চতুর্থ অর্থাৎ শেষ প্রান্তিকে গিয়ে। এ কারণে সরকারি ব্যয়ের গুণগত মান নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না। ওই পরিপত্রে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কাছে বাজেট বাস্তবায়নের পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন অগ্রগতির চিত্রও জানতে চাওয়া হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের পরিপত্রে আরো বলা হয়েছে, বাজেট বাস্তবায়ন পরিকল্পনার মধ্যে রাজস্ব আহরণ, কেনাকাটা, খরচ এবং বৈদেশিক অনুদান ও ঋণ সংগ্রহের পরিকল্পনা থাকতে হবে। প্রথম প্রান্তিকের সবকিছু ঠিকঠাকভাবে শেষ করতে না পারলে দ্বিতীয় প্রান্তিক থেকে অর্থছাড় স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যাবে।
এ বিষয়ে সাবেক অর্থসচিব মাহবুব আহমেদ ভোরের আকাশকে বলেন, এবারের পরিপত্রে অবশ্য একটি নতুন দিক লক্ষ্য করা গছে, যা প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রান্তিকের মধ্যে ৬০ শতাংশ অর্থ খরচ করতে না পারলে, স্বয়ংক্রিয়ভাবে চতুর্থ প্রান্তিকের অর্থছাড় না করা-এটা অত্যন্ত ভালো উদ্যোগ। তবে এভাবে পদক্ষেপ নেওয়ার একটি ঝুঁকির দিকও আছে। তখন তাড়াহুড়া করে সরকারি কেনাকাটার প্রবণতাও তৈরি হতে পারে। এ বিষয়গুলোও ভালভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে- যাতে কোনরকম দুর্নীতি-অনিয়মের সুযোগ তৈরি না হয়।
সংশ্লিষ্টদের মতে, দীর্ঘদিনের আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, প্রশাসনিক অদক্ষতা ও জেঁকে বসা ‘অনিয়ম-দুর্নীতির চক্র’ এখনও পুরোপুরি ভাঙতে পারেনি না অন্তর্বর্তী সরকার। প্রশাসনের কোনো কোনো স্তরে এখনও দুর্নীতিবাজ ও অদক্ষ কর্মকর্তারা সক্রিয় রয়েছেন বলে মনে করছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ও অর্থ মন্ত্রণালয়। এ কারণে বাজেট বাস্তবায়নের হার এখনও বাড়ানো সম্ভব হয়নি। এই অবস্থায় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোতে সম্প্রতি এ সংক্রান্ত কঠোর বার্তা দিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) ১ শতাংশও বাস্তবায়ন হয়নি, যা গত ৮ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। পরিমাণের দিক থেকে জুলাইয়ে খরচ হয়েছে ১ হাজার ৬৪৪ কোটি টাকা, যা আগের বছরের চেয়ে ১ হাজার ৩০০ কোটি টাকার মতো কম।
সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে ৫টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের ৩২টি প্রকল্পে মোট বরাদ্দের পরিমণ প্রায় ২ হাজার ২০০ কোটি টাকা। কিন্ত প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) এই বিপুল বরাদ্দের এক টাকাও খরচ করতে পারেনি পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়, জননিরাপত্তা বিভাগ, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, দুর্নীতি দমন কমিশন এবং সংসদবিষয়ক সচিবালয়। অর্থাৎ এই পাঁচ মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রকল্প বাস্তবায়ন হার ‘শূন্য’।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) জুলাই মাসের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নের হালনাগাদ চিত্র প্রকাশ করেছে। পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, আগের বছরগুলোর মতো এবারও প্রস্তাবিত এডিপির ১৫টি খাতের মধ্যে পাঁচটি খাতে সর্বোচ্চ ৭০ শতাংশ বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এই পাঁচ খাত হলো-পরিবহন ও যোগাযোগ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, শিক্ষা, গৃহায়ন ও কমিউনিটি সুবিধাবলি এবং স্বাস্থ্য।
সূত্র জানায়, বাজেট বাস্তবায়নে চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিক গত ৩০ সেপ্টেম্বর শেষ হয়েছে। এ অবস্থায় চলতি মাসের মধ্যে সবাইকে বাজেট বাস্তবায়নের পরিকল্পনা করতে হবে এবং প্রথম প্রান্তিক শেষ হওয়ার এক মাসের মধ্যে সবাইকে বাজেট বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ প্রতিবেদনও অর্থ মন্ত্রলণালয়ে জমা দিতে হবে।
এছাড়া অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে, সময়মতো বিভিন্ন পরিষেবা (ইউটিলিটি বিল) পরিশোধ, মেরামত, সংরক্ষণ, নির্মাণ ও পূর্ত, মালামাল ক্রয় ও সংগ্রহের ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো অর্থবছরের শেষ দিকে পদক্ষেপ নিয়ে থাকে-যা অগ্রহণযোগ্য। এসব কর্মকান্ড দুনীতি-অনিয়মকে উৎসাহিত করে বলেও মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। এসব কারণে প্রতিবছরের শেষে সরকারকে অপরিকল্পিত ঋণের দায়ও মাথায় বহন করতে হয়। অথচ যথাযথ আগাম পরিকল্পনা করা থাকলে এসব অপরিকল্পিত ঋণ এড়ানো এবং ঋণজনিত ব্যয় অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব।
সূত্র জানায়, গত কয়েক বছর ধরে ঘোষিত বাজেটের চেয়ে প্রায় ১ লাখ কোটি টাকা কম ব্যয় হচ্ছে। অর্থাৎ বাজেটের অর্থ ব্যয় করতে পারছে না সরকার। অর্থ বিভাগের ১০ বছরের তথ্য-উপাত্ত অনুযায়ী, প্রতিবারই বাজেট বাস্তবায়ন হচ্ছে ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশ। আগের ধরাবাহিকতা চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরেও অব্যাহত রয়েছে। বিষয়টি কঠোরভাবে নিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে এজন্য বিষয়টি পর্যালোচনা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে এডিপি বাস্তবায়নের হার না বাড়ার কারণ অনুসন্ধান করছে অর্থ মন্ত্রণালয় ও পরিকল্পনা কমিশন। এছাড়া সরকারি কোনো প্রকল্পের কাজে ধীরগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অন্যদিকে অর্থছাড় প্রক্রিয়া সহজ করা হলেও বরাদ্দ পাওয়া অর্থ বেশ কিছু মন্ত্রণালয় ও বিভাগ যথাযথভাবে খরচ করতে পারছে না।
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী ফ্যাসিষ্ট সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন প্রতিবছর রাজনৈতিক বিবেচনায় বিশাল বাজেট প্রণয়ন করলেও তার যথাযথ বাস্তবায়ন করতে পারেনি। এছাড়া তাদের বিভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের অনেককে ‘তুষ্ট’ করতে তারা বাজেটে বড় ধরণের অপ্রয়োজনীয় বরাদ্দও রাখতো। যা মুলত অনিয়ম ও দুণীতি বৃদ্ধিকে তরান্বিত করেছিল। বর্তমান সরকার এ ধরণের প্রকল্পকে প্রায় পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছে।
এছাড়া ২০২৪ সালে ছাত্র-জনতার গণ অভ্যুত্থানে পতিত আওয়ামীলীগ সরকারের রেখে যাওয়া অপ্রয়োজনীয় অনেক প্রকল্প বাদ দেওয়া হয়েছে। কিছু প্রকল্পের কাজ স্থগিত করা হয়েছে। তবে গুরুত্বপূর্ণ এবং পুরনো প্রয়োজনীয় কোনো প্রকল্প বাদ দেওয়া হয়নি। পাশাপাশি প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরেও পরিবর্তন আনা হয়েছে, তারপরেও বাজেট বাস্তবায়ন আশাব্যঞ্জক নয়। এ অবস্থায় বাজেটের যথাযথ বাস্তবায়নে সরকার কঠোর অবস্থান নিতে যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যয়-সংকোচন নীতি ও কম গুরুত্বের প্রকল্পে কাটছাঁটের ধারাবাহিকতায় পরিকল্পনা কমিশন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার প্রাথমিক বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) অনুমোদন করে। এটি গত অর্থবছরের মূল এডিপির তুলনায় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কম।
পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, অন্তর্বর্তী সরকার ব্যয়-সংকোচন নীতির অংশ হিসেবে এবং আগের সরকারের রেখে যাওয়া অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প ছাঁটাই করায় এবারের প্রস্তাবিত এডিপির আকার তুলনামূলকভাবে ছোট।
এ ব্যাপারে পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশর চেয়ারম্যান ও সিইও এম মাসরুর রিয়াজ বলেন, প্রস্তাবিত এডিপি চলতি বছরের মূল এডিপির চেয়ে ১৩ শতাংশ কম এবং সংশোধিত এডিপির তুলনায় মাত্র ৬ শতাংশ বেশি, যা ইতিবাচক পদক্ষেপ। তিনি বলেন, বড় এডিপি অনেক সময় মুদ্রাস্ফীতি বাড়িয়ে দিতে পারে।
তুলনামূলকভাবে ছোট এডিপি অভ্যন্তরীণ চাহিদা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে এবং রাজস্ব নীতির সঙ্গে সরকারের কৃচ্ছতাসাধন ও দুণীতি বন্ধে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। তিনি বলেন, নতুন এডিপিতে বৈদেশিক ঋণের পরিমাণও কমানো হয়েছে, যা বেশ ইতিবাচক। এ অবস্থায় এডিপি বাস্তবায়নে বিশেষ জোর দেওয়া জরুরি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রকল্প প্রণয়ন ও অনুমোদন বিলম্ব, টেন্ডার প্রক্রিয়া ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতা জটিলতা এবং ভূমি অধিগ্রহণের মতো নানা প্রতিবন্ধকতায় কোন কোন ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগুলো বরাদ্দকৃত অর্থ সঠিকভাবে খরচ করতে পারে না। এ কারণে শতভাগ বাজেট বাস্তবায়ন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে এ বং প্রায় প্রতিবছরই বরাদ্দকৃত অর্থেও শতভাগ ব্যয় করা বা উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নিশ্চিত করা সম্ভব হয় না। এজন্য সঙ্কট ও চ্যালেঞ্জগুলো আগেই চিহ্নিত করে সেসব দূর করার জন্য সরকারের ‘বিশেষ উদ্যোগ’ জরুরি।
ভোরের আকাশ/এসএইচ