এডিবির কাছে ৪ খাতে সহযোগিতা চাইলেন অর্থ উপদেষ্টা
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কাছে সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন টেকসই উন্নয়নের জন্য দ্রুত পরিবর্তনশীল বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তি, জলবায়ু কার্যক্রম, আঞ্চলিক সংযোগ এবং টেকসই অর্থায়ন। ইতালির মিলানে এডিবির ৫৮তম বার্ষিক সভায় দেয়া ভাষণ এ আহ্বান জানান তিনি।
মঙ্গলবার (৬ এপ্রিল) অর্থ মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
অর্থ উপদেষ্টা এডিবির প্রেসিডেন্ট মাসাতো কান্দা ও অন্যান্য প্রতিনিধির উদ্দেশে বলেন, নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বচ্ছতা, অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি ও টেকসই উন্নয়নের পথে এক ঐতিহাসিক রূপান্তরের মধ্যদিয়ে যাচ্ছে।
ড. সালেহউদ্দিন বলেন, ‘আজকের সংকটকে আগামীর সম্ভাবনায় রূপান্তর করতে হলে আমাদের সাহসী চিন্তাধারা, গভীর অংশীদারিত্ব ও সম্মিলিত সংকল্পের প্রয়োজন। এই বছরের প্রতিপাদ্য ‘অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেওয়া, আগামীর প্রস্তুতি’ অত্যন্ত সময়োপযোগী ও অনুপ্রেরণাদায়ক।’
তিনি বলেন, এই সংকটপূর্ণ সময়ে শুধু অর্থায়ন নয়, কাঠামোগত সংস্কার ও দীর্ঘমেয়াদি সহনশীলতা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এডিবির ভূমিকা আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল যুক্তরাজ্যের ফরেন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিসের (এফসিডিও) প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করে। গত পাঁচ দশকে যুক্তরাজ্য বাংলাদেশকে আনুমানিক ৩.১৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার উন্নয়ন সহায়তা দিয়েছে, যা মূলত দারিদ্র্য হ্রাস, স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে অনুদান হিসেবে প্রদান করা হয়েছে।
সাম্প্রতিক আর্থিক চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের মূল উন্নয়ন অগ্রাধিকারের প্রতি- যেমন জলবায়ু সহনশীলতা, মানবিক সহায়তা এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি- সমর্থন অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
এতে আরও বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্যের ২০২২ সালের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন কৌশল অনুসারে কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিস নবায়নযোগ্য জ্বালানি, বাণিজ্য, জলবায়ু অর্থায়ন, এসএমই উন্নয়ন, ডিজিটাল প্রশাসন এবং শিক্ষা খাতে সহযোগিতা সম্প্রসারণে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশ সবুজ বিনিয়োগ, কারিগরি প্রশিক্ষণ, নদী পুনরুদ্ধার, বেসরকারি খাত, কারিগরি সহায়তা, পয়ঃনিষ্কশন ব্যবস্থাপনা, সাইবার নিরাপত্তা এবং যৌথ গবেষণায় সহায়তার আহ্বান জানায়।
ভোরের আকাশ/এসআই
সংশ্লিষ্ট
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর বিষয়ে আরও অপেক্ষা করবো। আপাতত পর্যবেক্ষণ করছি ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধটা যদি বেশি দিন চলে তখন আমাদের ওপর একটা প্রভাব বা প্রেশার পড়বে। যুদ্ধটা পর্যবেক্ষণ করছি। আমরা দেখেছি ইতোমধ্যে কিছুটা বেড়েছে। তবে যেগুলোতে আমরা অর্ডার করেছি সেগুলোতে প্রভাব ফেলে নাই।মঙ্গলবার (১৭ জুন) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ এসব কথা বলেন।উপদেষ্টা বলেন, যদি এলএনজির দাম উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ে, তবে আমরা আমাদের পরিকল্পনায় এটি বিবেচনা করব। সৌভাগ্যবশত, আজ আমরা যে এলএনজি আমদানি প্রস্তাবটি অনুমোদন করেছি তা পুরোনো দামেই। আমরা ভাগ্যবান যে এটি আগের হারে পাচ্ছি।বাণিজ্যের ওপর বর্তমানে কোনো প্রভাব পড়ছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, না, বর্তমানে বাণিজ্যের ওপর কোনো প্রভাব পড়ছে না।ভবিষ্যতের প্রস্তুতি নিয়ে তিনি বলেন, বিশেষ প্রস্তুতির অংশ হিসেবে আমরা আজ এলএনজি ও সার আমদানির অনুমোদন দিয়েছি। যুদ্ধে যদি পরিস্থিতির অবনতি হয়, তখন নতুন আমদানিতে প্রভাব পড়তে পারে। তবে আমাদের ধারণা, এই যুদ্ধ খুব বেশি দিন চলবে না।ভোরের আকাশ/এসএইচ
ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে। তবে দেশে এখনই তেলের দাম বাড়ানোর কোনো পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।মঙ্গলবার (১৭ জুন) সচিবালয়ে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।তিনি বলেন, যুদ্ধ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। পরিস্থিতি দীর্ঘস্থায়ী হলে সার ও জ্বালানির দামসহ বিভিন্ন আমদানি পণ্যে প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। কারণ আমদানিকৃত মালামাল হরমুজ প্রণালী দিয়েই আসে।বিশ্ববাজারে জ্বালানির দাম বাড়লেও দেশে এখনো দাম বাড়ানোর চিন্তাভাবনা বলে জানিয়েছেন উপদেষ্টা।তিনি আরও বলেন, চলতি মূল্যেই এলএনজি ও সার আমদানির কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে।প্রসঙ্গত, শুক্রবার (১৩ জুন) ইরানে হামলা চালায় ইসরায়েল। প্রাথমিকভাবে তেহরানের উত্তর-পূর্বদিকে বেশ কয়েকটি বড় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এরপরই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি।ভোরের আকাশ/এসএইচ
পর্বতসম খেলাপি ঋণের জেরে বড় নিরাপত্তা সঞ্চিতি বা প্রভিশন ঘাটতিতে পড়েছে দেশের ব্যাংক খাত। যে হারে খেলাপি ঋণ বেড়েছে সেই হারে মুনাফা করতে না পারায় দুর্বল-সবল মিলিয়ে বেশ কিছু ব্যাংক পর্যাপ্ত প্রভিশন রাখতে ব্যর্থ হয়েছে। যে কারণে চলতি বছরের মার্চ শেষে মোট প্রভিশন ঘাটতি দাঁড়িয়েছে প্রায় পৌনে দুই লাখ কোটি। এই হিসেবে এক বছরের ব্যবধানে নিরাপত্তা সঞ্চিতির ঘাটতি বেড়েছে প্রায় সাড়ে ছয় গুণ বেশি যা দেশের ব্যাংক খাতের দুর্বল ভিত্তি নির্দেশ করছে।বিদ্যমান নিয়ম অনুযায়ী, বিতরণকৃত প্রতিটি ভালো ও মন্দ ঋণের বিপরীতে নির্দিষ্ট হারে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে নিরাপত্তা সঞ্চিতি রাখতে হয় ব্যাংকগুলোকে। ব্যাংক প্রতিবছর যে পরিচালন মুনাফা করে সেখান থেকে প্রভিশন রাখতে হয়। পরিচালন মুনাফা থেকে প্রভিশন রাখা ও কর্পোরেট ট্যাক্স পরিশোধের পর নিট মুনাফা প্রকাশ করে ব্যাংক।প্রভিশন সংরক্ষণের মাধ্যমে মূলত সঞ্চয়কারীদের আমানতের নিরাপত্তা বিধান করে বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু পর্যাপ্ত নিরাপত্ত সঞ্চিতি করতে ব্যর্থ হওয়ায় ব্যাংকগুলোতে থাকা আমানতকারীদের অর্থ আরও ঝুঁকিতে পড়ছে। এই তালিকায় দুর্বল ব্যাংকের পাশাপাশি কিছু সবল ব্যাংকও রয়েছে। তারা নিট বা প্রকৃত মুনাফা বেশি দেখাতে গিয়ে প্রভিশন সংরক্ষণ করছে কম।নিয়ম অনুযায়ী, ব্যাংকগুলো প্রতি বছর যে পরিচালন মুনাফা করে সেখান থেকে সাধারণ ক্যাটাগরির বা ভালো মানের ঋণের বিপরীতে ০.৫ থেকে ৫ শতাংশ পর্যন্ত প্রভিশন রাখতে হয়। বিতরণকৃত ঋণের ঝুঁকির ওপর প্রভিশনের হার বাড়ে-কমে।এছাড়া যেসব ঋণ নিম্নমানের খেলাপি হিসেবে শ্রেণিভুক্ত হয় সেগুলোর বিপরীতে ২০ শতাংশ এবং সন্দেহজনক খেলাপি ঋণের বিপরীতে ৫০ শতাংশ খেলাপি ঋণ রাখতে হয়। এ ছাড়া প্রতিটি ব্যাংকের জন্য মন্দ বা লোকসান ক্যাটাগরির খেলাপি ঋণের বিপরীতে ১০০ শতাংশ প্রভিশনিং করার বিধান রয়েছে। এসব ঋণ ফিরে আসার সম্ভাবনা কম থাকায় শতভাগ প্রভিশন রাখার নিয়ম।কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মূলত দুটি উদ্দেশ্য সামনে রেখে প্রভিশন সংরক্ষণের ব্যবস্থা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। প্রথমত যাতে আমানতকারীদের সঞ্চয় নিরাপদ থাকে। পাশাপাশি খারাপ ঋণ দিয়েও যাতে ব্যাংকের মালিকপক্ষ মুনাফা তুলে নিতে না পারে। কিন্তু ব্যাংকগুলো নানা অজুহাতে নিরাপত্তা সঞ্চিতি না রেখে পার পেয়ে যাচ্ছে। নিরাপত্তা সঞ্চিতি পরে রাখা হবে (ডেফার্ড সুবিধা) এই অজুহাত দিয়ে নিট মুনাফা বেশি দেখিয়ে ডিভিডেন্ড নিচ্ছেন কিছু ভালো ব্যাংকের মালিকরাও।বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২৫ সালের মার্চ শেষে ব্যাংক খাতের মোট প্রভিশন ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৭০ হাজার ৬৫৫ টাকা। এর আগের প্রান্তিকে অর্থাৎ ডিসেম্বর শেষে যার পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৬ হাজার ১৩০ কোটি টাকা টাকা। অর্থাৎ তিন মাসের ব্যবধানে ব্যাংকিং খাতের প্রভিশন ঘাটতি বেড়েছে ৬৪ হাজার ৫২৫ কোটি টাকা। তারও আগের প্রান্তিকে অর্থাৎ সেপ্টেম্বর শেষে যার পরিমাণ ছিল ৫৫ হাজার ৩৭৮ কোটি টাকা।এছাড়াও গত বছরের একই সময়ে অর্থাৎ ২০২৪ সালের মার্চে প্রভিশন ঘাটতি ছিল মাত্র ২৬ হাজার ৫৮৫ কোটি টাকা। সে হিসেবে এক বছরের ব্যবধানে প্রভিশন ঘাটতি বেড়েছে ১ লাখ ৪৪ হাজার কোটি টাকা। যা এক বছরের বেড়েছে প্রায় সাড়ে ছয় গুণ। তথ্য বলছে, মার্চ শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে প্রভিশন ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৬৩ হাজার ৯৬৬ কোটি টাকা। ডিসেম্বর শেষে যার পরিমাণ ছিল ৫৭ হাজার ৯৬৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ তিন মাসের ব্যবধানে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে প্রভিশন ঘাটতি বেড়েছে ৬ হাজার কোটি টাকা। তারও আগে গতবছরের সেপ্টেম্বর শেষে যার পরিমাণ ছিল ৪০ হাজার ২০৪ কোটি টাকা।তথ্যানুযায়ী, গত মার্চ পর্যন্ত বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে প্রভিশন ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৭ হাজার ৩৪০ কোটি টাকা। গত ডিসেম্বর শেষে বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে প্রভিশন ঘাটতির পরিমাণ ৪৮ হাজার ৮৮৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ মাত্র তিন মাসের ব্যবধানে বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুরোর প্রভিশন ঘাটতি বেড়েছে ৫৮ হাজার ৫০৭ কোটি টাকা বা দ্বিগুণেরও বেশি। তারও আগের প্রান্তিকে অর্থাৎ সেপ্টেম্বর শেষে যার পরিমাণ ছিল ১৫ হাজার ৮৩১ কোটি টাকা। তবে বিদেশি ও বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর প্রভিশন উদ্বৃত্ত রয়েছে। চলতি বছরের মার্চ শেষে বিদেশি ব্যাংকগুলোর প্রভিশন বা নিরাপত্তা সঞ্চিতি উদ্বৃত্ত রয়েছে ৪৩২ কোটি টাকাও বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর প্রবিশন উদ্বৃত্ত রয়েছে ২৪৮ কোটি টাকা।এদিকে ২০২৫ সালের মার্চ শেষে মোট বিতরণকৃত ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১৭ লাখ ৪১ হাজার ৯৯২ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ২০ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকা। যা বিতরণ করা মোট ঋণের ২৪ দশমিক ১৩ শতাংশ।গত ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৩ লাখ ৪৫ হাজার ৭৬৫ কোটি টাকা। সে হিসেবে তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৭৪ হাজার ৫৭০ কোটি টাকা। ২০২৪ সালের মার্চ শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৮২ হাজার ২৯৫ কোটি টাকা। যা তৎকালীন বিতরণকৃত ঋণের ১১ দশমিক ১১ শতাংশ। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২ লাখ ৩৮ হাজার ৪০ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে।প্রভিশন ঘাটতি বেড়ে যাওয়া প্রসঙ্গে অর্থনীতি বিশ্লেষক মো. মাজেদুল হক ভোরের আকাশ’কে বলেন, প্রভিশন হলো খেলাপি ঋণের বিপরীতে রক্ষাকবচ। ব্যাংক নিজের অর্থ ঋণ দেয় না। সঞ্চয়কারীরা যে আমানত রাখেন সেখান থেকেই ঋণ বিতরণ করে থাকে। তাই যেসব ব্যাংক বছরের পর বছর ধরে ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃতভাবে পর্যাপ্ত প্রভিশন রাখছে না তাদের ঋণ কার্যক্রম স্থগিত বা সীমিত করে দেওয়ার পরামর্শ দেন মাজেদুল হক।প্রভিশন ঘাটতির কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে এই অর্থনীতি বিশ্লেষক বলেন, মূলত তিনটি কারণে প্রভিশন ঘাটতি হতে পারে। যখন ঋণগ্রহীতারা ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয়, তখন ব্যাংক সেই ঋণের জন্য প্রভিশন রাখে। যদি প্রকৃত ক্ষতির পরিমাণ প্রভিশনের চেয়ে বেশি হয়, তাহলে ঘাটতি দেখা দেয়।এছাড়া ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান যদি ভবিষ্যত ঝুঁকির জন্য পর্যাপ্ত তহবিল গঠন না করে, তাহলে প্রভিশন ঘাটতি হতে পারে। পাশাপাশি যদি কোনো প্রতিষ্ঠান ঋণের ঝুঁকি সঠিকভাবে মূল্যায়ন না করে বা প্রভিশন কম ধরে, তাহলেও ঘাটতি তৈরি হয়। প্রভিশন ঘাটতির ফলে ব্যাংকের আর্থিক স্থিতিশীলতা কমে যায় বলে জানান মাজেদুল হক। এ পরিস্থিতি থেকে বেড়িয়ে আসতে নিয়মিত ঋণের মান মূল্যায়ন করা সহ ঋণ আদায়ের কঠোর নীতি প্রয়োগ করার পরামর্শ এই বিশ্লেষকের।ভোরের আকাশ/এসএইচ
দীর্ঘদিন পর ব্যবস্থাপনা পরিচালক পাচ্ছে বেসরকারি খাতে দেশের অন্যতম বৃহত্তম আর্থিক প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ব্যাংক। ব্যাংক এশিয়ার সাবেক কর্মকর্তা আরিফ বিল্লাহ আদিল চৌধুরী আগামী জুলাই মাস থেকে ন্যাশনালের দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে।এ বিষয়ে বাংলাদেশের ব্যাংকের অনুমোদন মিলেছে। আদিল চৌধুরীর মেয়াদ হবে ২০২৮ সালের জুন পর্যন্ত। তিনি ২০২০ সালের আগস্টে উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে ব্যাংক এশিয়ায় যোগ দেন। এরপর তিনি অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে পদোন্নতি পান। একই ব্যাংকে তিনি এমডি পদে বসেন ২০২২ সালের নভেম্বরে। তবে আট মাসের মাথায় ২০২৩ সালের জুলাইয়ে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেন তিনি।এদিকে চলতি বছরের জানুয়ারিতে ন্যাশনাল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পদ থেকে সরে দাঁড়ান তৌহিদুল আলম খান। তার সঙ্গে পদত্যাগ করেন ব্যাংকটির উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) আব্দুল মতিনও। বর্তমানে ন্যাশনাল ব্যাংকের (এনবিএল) এমডি পদে চলতি দায়িত্ব পালন করছেন ইমরান আহমেদ।ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালক ও কর্মকর্তাসহ ২৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। কাগুজে বিল সৃষ্টি করে ঋণের ৪৫৯ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয় ওই মামলায়। আসামি করা হয় দীর্ঘদিন ব্যাংকটির নিয়ন্ত্রণে থাকা সিকদার পরিবারের কয়েক সদস্যকে।সিকদার পরিবারের সদস্যদের মধ্যে বিবাদের জেরে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হয় সৈয়দ ফারহাত আনোয়ারকে। তার সময়ে ইউনাইটেড কমার্সিয়াল ব্যাংকের সঙ্গে এনবিএলকে একীভূত করার আলোচনা শুরু হয়। কিন্তু ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটলে সেই আলোচনা আর এগোয়নি।এর মধ্যে ঋণ জালিয়াতি ও অনিয়মে ধুঁকতে থাকা ন্যাশনাল ব্যাংক তারল্য সংকটে পড়ে। অগাস্টে ক্ষমতার পালাবদলের পর বাংলাদেশ ব্যাংক যখন ন্যাশনাল ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে দেয়, তার আগ পর্যন্ত পর্ষদের নিয়ন্ত্রণ ছিল চট্টগ্রামভিত্তিক ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলমের হাতে। পরে এ ব্যাংকের পুরনো উদ্যোক্তা বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু চেয়ারম্যান হিসেবে ফিরে আসেন।ভোরের আকাশ/এসএইচ