গ্যাস ও সয়াবিন তেলের দাম বৃদ্ধিতে বাড়তি চাপ
তাকী মোহাম্মদ জোবায়ের
প্রকাশ : ১৮ এপ্রিল ২০২৫ ১০:৩৫ এএম
জীবনযাত্রায় ব্যয় আরো বাড়লো
রাজস্ব আয় বাড়ানো ও ভর্তুকি ব্যয় কমাতে গিয়ে শিল্পগ্যাস ও সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানোর ফলে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রভাব পড়েছে দ্রব্যমূল্যেও ওপর। ফলে, ইতোমধ্যে পেঁয়াজ, ডিম ও সবজির দাম বাড়তে শুরু করেছে। কমার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না আগে থেকেই বাড়তে থাকা চাল ও ডালের দামে। এছাড়া সরকারের মুদ্রানীতি ও রাজস্বনীতিতে সমন্বয় না থাকায় মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা খুব সফল হচ্ছে না। গত মাসেও সার্বিক মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের বেশি ছিল। যে কারণে মূল্যস্ফীতির চাপ আরো জেঁকে বসার শঙ্কা অর্থনীতিবিদ-রাজনীতিবিদদের।
এদিকে, প্রবৃদ্ধির পরিবর্তে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণকে প্রাধান্য দিয়ে বর্তমানে কঠোর মুদ্রানীতি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে বাজারে টাকার সরবরাহ কমে গেছে। সর্বনিম্ন অবস্থানে গেছে বেসরকরি খাতে বিনিয়োগ প্রবৃদ্ধি। সংকুচিত হয়েছে কর্মসংস্থান। বৃহত্তর স্বার্থে এই পরিস্থিতি মেনে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হলেও উল্টো পথে হাঁটছে সরকার।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) গতকালের হিসাবে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে ঢাকার বাজারে দেশি পেঁয়াজ, মোটা চাল, খোলা আটা, সয়াবিন তেল, পাম তেল, ডিমের দাম বেড়েছে। দেশি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ১০ থেকে ২০ টাকা। সবজির দাম বেড়েছে গড়ে ২০ টাকার মতো। প্রতি ডজন ডিমের দাম বেড়েছে ১০ টাকা।
এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার প্রতি লিটার তেলের দাম ১৪ টাকা বাড়িয়েছে সরকার। এতে সরকারের মাসে রাজস্ব আয় বাড়বে সাড়ে ৫শ কোটি টাকা। শিল্পে নতুন সংযোগের ক্ষেত্রে গ্যাসের দাম প্রতি ঘনমিটারে বাড়ানো হয়েছে ৩৩ শতাংশ। পাশাপাশি পুরনো ব্যবহারকারীরা প্রতিশ্রুতির অতিরিক্ত গ্যাস ব্যবহার করলে একই হারে বাড়তি দাম দিতে হবে।
এতে সরকারের কী পরিমাণ ভর্তুকি কমে আসবে সেটি অবশ্য নির্দিষ্ট করে বলতে পারেনি বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কর্পোরেশন। তবে, এর প্রভাবে কারখানাগুলোর উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাবে বলে জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা। কারণ, অনেক কারখানাই ঘোষিত লোডের অতিরিক্ত গ্যস ব্যবহার করে বাড়তি উৎপাদনের চাহিদা মেটাতে।
পেট্রোবাংলার হিসাবে, ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে ২০২৪ সালের অক্টোবর পর্যন্ত শিল্পে অনুমোদিত লোডের চেয়ে ১৪ কোটি ৭৮ লাখ ঘনমিটার গ্যাস বাড়তি ব্যবহার করা হয়েছে। আর কারখানার নিজস্ব বিদ্যুৎকেন্দ্র (ক্যাপটিভ) ৫ কোটি ৭৬ লাখ ঘনমিটার গ্যাস বাড়তি ব্যবহার করা হয়েছে। নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী এই পরিমাণ গ্যাসের দাম বাড়তি হারে দিতে হবে শিল্প মালিকদের।
এর আগে গত ৯ ডিসেম্বর সর্বশেষ বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানো হয়েছিল। তখন বেড়েছিল লিটারে ৮ টাকা। এরপরও ব্যবসায়ীরা আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যবৃদ্ধির কথা জানিয়ে দাম বাড়ানোর চিঠি দিয়েছিলেন। তবে সরকার শুল্ক-করে ছাড় দিয়ে মূল্য বৃদ্ধি ঠেকিয়ে রাখে। গত ১৭ অক্টোবর ভোজ্যতেল আমদানি, উৎপাদন ও ব্যবসায়ী পর্যায়ে মূল্য সংযোজন করের হার (মূসক/ভ্যাট) ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করে সরকার। নভেম্বরে আরও কমিয়ে ভ্যাট ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়।
তেলকল মালিক সমিতি বলছে, ভ্যাট অব্যাহতির মেয়াদ গত ৩১ মার্চ শেষ হয়েছে। ফলে সয়াবিন তেলের এক লিটারের বোতলের দাম হওয়ার কথা ১৯৮ টাকা। তবে ভোক্তার স্বার্থ বিবেচনায় নির্ধারণ করা হয়েছে ১৮৯ টাকা।গত মঙ্গলবার সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানো নিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা সেখ বশিরউদ্দীন।
বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এত দিন সরকার প্রতি মাসে প্রায় ৫৫০ কোটি টাকা রাজস্ব ছাড় দিয়েছে। রমজান পর্যন্ত গত কয়েক মাসে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার রাজস্ব ছাড় দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সরকার পরিচালনার ব্যয়ের কথা বিবেচনা করে এভাবে রাজস্ব ছাড় দেওয়ার ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা আছে।
মূল্যবৃদ্ধির প্রসঙ্গে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ভোক্তাপর্যায়ে আজ যে মূল্যবৃদ্ধি করতে বাধ্য হলাম, আমি মনে করছি, এই বাধ্যবাধকতা সাময়িক। অদূর ভবিষ্যতে এই দাম কমানো সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, ভ্যাট অব্যাহতি আরেকটু দীর্ঘায়িত করা যেত কি না, সরকার সেই চেষ্টা করেছে। কিন্তু শেষমেশ দেখা গেল, এ মুহূর্তে ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া সরকারের জন্য খুবই সংবেদনশীল বিষয়।
এদিকে বাজারে অন্যান্য নিত্যপণ্যের দামও বাড়ছে। পবিত্র রমজান মাসে পেঁয়াজের দাম কম ছিল। ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি পেঁয়াজ কেনা গেছে। তবে গত চার দিন ধরে দাম বাড়ছে। গতকাল প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। জানা গেছে, চার দিন আগে পেঁয়াজের দাম হঠাৎ বাড়তে শুরু করেছে।
সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশও (টিসিবি) জানিয়েছে, দেশি পেঁয়াজের দর কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে। বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকায়।
ব্যবসায়ীরা জানান, চলতি বছর পেঁয়াজের ফলন ভালো হয়েছে। এ কারণে মৌসুমের শুরু থেকেই দাম গত বছরের তুলনায় কম ছিল। তবে এখন দাম বেড়ে গেছে।
মগবাজারের কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, ফার্মের মুরগির বাদামি এক ডজন ডিম বড় বাজারে ১২০-১২৫ টাকা এবং মহল্লার মুদি দোকানে ১৩০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। বিক্রেতাদের দাবি, এক সপ্তাহে ডজনে ১০ টাকার মতো বেড়েছে। পবিত্র ঈদুল ফিতরের পর চাহিদা কমায় বাজারে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম কমেছে।
বুধবার প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ১৬০-১৭০ টাকা এবং সোনালি মুরগি বিক্রি হয়েছে ২২০-২৬০ টাকায়। চালের দাম অনেক দিন ধরেই চড়া। নতুন করে দাম বাড়েনি বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
তবে টিসিবি জানাচ্ছে, খোলা আটার সর্বনিম্ন দাম কেজিতে ২ টাকা বেড়েছে। ডালের দাম আগের মতোই বেশি। নতুন করে হেরফের হয়নি। চিনির দামও আগের মতো রয়েছে, কেজি ১২০ টাকার আশপাশে। এদিকে বেড়েছে সবজির দাম।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, শীতের সবজির সরবরাহ শেষ। এখন গ্রীষ্মের সবজির চাহিদা বেশি। নতুন সবজি আসছে, দাম চড়া। কৃষি বিপণন অধিদপ্তর ১৪টি সবজির দামের হিসাব দেয়।
গত বুধবারের হিসাবে দেখা যায়, এক মাসের ব্যবধানে সবজির দাম বেড়েছে ১৪ থেকে ৫৬ শতাংশ পর্যন্ত।
ভোরের আকাশ/এসএইচ
গ্যাস ও সয়াবিন তেলের দাম বৃদ্ধিতে বাড়তি চাপ
তাকী মোহাম্মদ জোবায়ের
প্রকাশ : ১ দিন আগে
আপডেট : ২ ঘন্টা আগে
জীবনযাত্রায় ব্যয় আরো বাড়লো
রাজস্ব আয় বাড়ানো ও ভর্তুকি ব্যয় কমাতে গিয়ে শিল্পগ্যাস ও সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানোর ফলে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রভাব পড়েছে দ্রব্যমূল্যেও ওপর। ফলে, ইতোমধ্যে পেঁয়াজ, ডিম ও সবজির দাম বাড়তে শুরু করেছে। কমার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না আগে থেকেই বাড়তে থাকা চাল ও ডালের দামে। এছাড়া সরকারের মুদ্রানীতি ও রাজস্বনীতিতে সমন্বয় না থাকায় মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা খুব সফল হচ্ছে না। গত মাসেও সার্বিক মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের বেশি ছিল। যে কারণে মূল্যস্ফীতির চাপ আরো জেঁকে বসার শঙ্কা অর্থনীতিবিদ-রাজনীতিবিদদের।
এদিকে, প্রবৃদ্ধির পরিবর্তে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণকে প্রাধান্য দিয়ে বর্তমানে কঠোর মুদ্রানীতি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে বাজারে টাকার সরবরাহ কমে গেছে। সর্বনিম্ন অবস্থানে গেছে বেসরকরি খাতে বিনিয়োগ প্রবৃদ্ধি। সংকুচিত হয়েছে কর্মসংস্থান। বৃহত্তর স্বার্থে এই পরিস্থিতি মেনে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হলেও উল্টো পথে হাঁটছে সরকার।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) গতকালের হিসাবে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে ঢাকার বাজারে দেশি পেঁয়াজ, মোটা চাল, খোলা আটা, সয়াবিন তেল, পাম তেল, ডিমের দাম বেড়েছে। দেশি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ১০ থেকে ২০ টাকা। সবজির দাম বেড়েছে গড়ে ২০ টাকার মতো। প্রতি ডজন ডিমের দাম বেড়েছে ১০ টাকা।
এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার প্রতি লিটার তেলের দাম ১৪ টাকা বাড়িয়েছে সরকার। এতে সরকারের মাসে রাজস্ব আয় বাড়বে সাড়ে ৫শ কোটি টাকা। শিল্পে নতুন সংযোগের ক্ষেত্রে গ্যাসের দাম প্রতি ঘনমিটারে বাড়ানো হয়েছে ৩৩ শতাংশ। পাশাপাশি পুরনো ব্যবহারকারীরা প্রতিশ্রুতির অতিরিক্ত গ্যাস ব্যবহার করলে একই হারে বাড়তি দাম দিতে হবে।
এতে সরকারের কী পরিমাণ ভর্তুকি কমে আসবে সেটি অবশ্য নির্দিষ্ট করে বলতে পারেনি বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কর্পোরেশন। তবে, এর প্রভাবে কারখানাগুলোর উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাবে বলে জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা। কারণ, অনেক কারখানাই ঘোষিত লোডের অতিরিক্ত গ্যস ব্যবহার করে বাড়তি উৎপাদনের চাহিদা মেটাতে।
পেট্রোবাংলার হিসাবে, ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে ২০২৪ সালের অক্টোবর পর্যন্ত শিল্পে অনুমোদিত লোডের চেয়ে ১৪ কোটি ৭৮ লাখ ঘনমিটার গ্যাস বাড়তি ব্যবহার করা হয়েছে। আর কারখানার নিজস্ব বিদ্যুৎকেন্দ্র (ক্যাপটিভ) ৫ কোটি ৭৬ লাখ ঘনমিটার গ্যাস বাড়তি ব্যবহার করা হয়েছে। নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী এই পরিমাণ গ্যাসের দাম বাড়তি হারে দিতে হবে শিল্প মালিকদের।
এর আগে গত ৯ ডিসেম্বর সর্বশেষ বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানো হয়েছিল। তখন বেড়েছিল লিটারে ৮ টাকা। এরপরও ব্যবসায়ীরা আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যবৃদ্ধির কথা জানিয়ে দাম বাড়ানোর চিঠি দিয়েছিলেন। তবে সরকার শুল্ক-করে ছাড় দিয়ে মূল্য বৃদ্ধি ঠেকিয়ে রাখে। গত ১৭ অক্টোবর ভোজ্যতেল আমদানি, উৎপাদন ও ব্যবসায়ী পর্যায়ে মূল্য সংযোজন করের হার (মূসক/ভ্যাট) ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করে সরকার। নভেম্বরে আরও কমিয়ে ভ্যাট ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়।
তেলকল মালিক সমিতি বলছে, ভ্যাট অব্যাহতির মেয়াদ গত ৩১ মার্চ শেষ হয়েছে। ফলে সয়াবিন তেলের এক লিটারের বোতলের দাম হওয়ার কথা ১৯৮ টাকা। তবে ভোক্তার স্বার্থ বিবেচনায় নির্ধারণ করা হয়েছে ১৮৯ টাকা।গত মঙ্গলবার সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানো নিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা সেখ বশিরউদ্দীন।
বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এত দিন সরকার প্রতি মাসে প্রায় ৫৫০ কোটি টাকা রাজস্ব ছাড় দিয়েছে। রমজান পর্যন্ত গত কয়েক মাসে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার রাজস্ব ছাড় দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সরকার পরিচালনার ব্যয়ের কথা বিবেচনা করে এভাবে রাজস্ব ছাড় দেওয়ার ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা আছে।
মূল্যবৃদ্ধির প্রসঙ্গে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ভোক্তাপর্যায়ে আজ যে মূল্যবৃদ্ধি করতে বাধ্য হলাম, আমি মনে করছি, এই বাধ্যবাধকতা সাময়িক। অদূর ভবিষ্যতে এই দাম কমানো সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, ভ্যাট অব্যাহতি আরেকটু দীর্ঘায়িত করা যেত কি না, সরকার সেই চেষ্টা করেছে। কিন্তু শেষমেশ দেখা গেল, এ মুহূর্তে ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া সরকারের জন্য খুবই সংবেদনশীল বিষয়।
এদিকে বাজারে অন্যান্য নিত্যপণ্যের দামও বাড়ছে। পবিত্র রমজান মাসে পেঁয়াজের দাম কম ছিল। ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি পেঁয়াজ কেনা গেছে। তবে গত চার দিন ধরে দাম বাড়ছে। গতকাল প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। জানা গেছে, চার দিন আগে পেঁয়াজের দাম হঠাৎ বাড়তে শুরু করেছে।
সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশও (টিসিবি) জানিয়েছে, দেশি পেঁয়াজের দর কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে। বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকায়।
ব্যবসায়ীরা জানান, চলতি বছর পেঁয়াজের ফলন ভালো হয়েছে। এ কারণে মৌসুমের শুরু থেকেই দাম গত বছরের তুলনায় কম ছিল। তবে এখন দাম বেড়ে গেছে।
মগবাজারের কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, ফার্মের মুরগির বাদামি এক ডজন ডিম বড় বাজারে ১২০-১২৫ টাকা এবং মহল্লার মুদি দোকানে ১৩০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। বিক্রেতাদের দাবি, এক সপ্তাহে ডজনে ১০ টাকার মতো বেড়েছে। পবিত্র ঈদুল ফিতরের পর চাহিদা কমায় বাজারে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম কমেছে।
বুধবার প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ১৬০-১৭০ টাকা এবং সোনালি মুরগি বিক্রি হয়েছে ২২০-২৬০ টাকায়। চালের দাম অনেক দিন ধরেই চড়া। নতুন করে দাম বাড়েনি বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
তবে টিসিবি জানাচ্ছে, খোলা আটার সর্বনিম্ন দাম কেজিতে ২ টাকা বেড়েছে। ডালের দাম আগের মতোই বেশি। নতুন করে হেরফের হয়নি। চিনির দামও আগের মতো রয়েছে, কেজি ১২০ টাকার আশপাশে। এদিকে বেড়েছে সবজির দাম।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, শীতের সবজির সরবরাহ শেষ। এখন গ্রীষ্মের সবজির চাহিদা বেশি। নতুন সবজি আসছে, দাম চড়া। কৃষি বিপণন অধিদপ্তর ১৪টি সবজির দামের হিসাব দেয়।
গত বুধবারের হিসাবে দেখা যায়, এক মাসের ব্যবধানে সবজির দাম বেড়েছে ১৪ থেকে ৫৬ শতাংশ পর্যন্ত।
ভোরের আকাশ/এসএইচ