বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশ : ৩১ জুলাই ২০২৫ ০১:৫৪ এএম
"নারীকেই কামনা-বাসনার বস্তু হিসেবে তুলে ধরা হয়" — মন্তব্য জয়া আহসানের
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিখ্যাত উপন্যাস ‘পুতুলনাচের ইতিকথা’ অবলম্বনে নির্মিত চলচ্চিত্রের মুক্তিকে সামনে রেখে কলকাতার প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় সরব ছিলেন পরিচালক ও অভিনয়শিল্পীরা।
সুমন মুখার্জি পরিচালিত এই ছবিতে ‘কুসুম’ চরিত্রে অভিনয় করেছেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান।
আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন ছবির পরিচালক সুমন মুখার্জি, অভিনেত্রী জয়া আহসান ছাড়াও প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক সুমিত চক্রবর্তী এবং বাংলা বিভাগের অধ্যাপক সন্দীপকুমার মণ্ডল।
ছবির নির্মাতা সুমন মুখার্জি বলেন, “উপন্যাসে ‘শরীর, শরীর, শরীর—তোমার মন নেই কুসুম’ এই সংলাপটি ঘিরে বহু আলোচনা হয়েছে। এটি শশীর কথা, না মানিকের নিজস্ব ভাবনা—সেটা উপন্যাসে পরিষ্কার না হলেও, আমাদের চিত্রনাট্যে বিষয়টি স্পষ্টভাবে তুলে ধরা হয়েছে।”
সভায় কুসুমের চরিত্রে নিজের উপলব্ধি প্রকাশ করতে গিয়ে জয়া আহসান বলেন, “বরাবর নারীকেই কামনা ও বাসনার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করা হয়। অথচ কুসুম নিজেও একজন স্বকীয় ব্যক্তিত্ব যার নিজস্ব চাহিদা ও অনুভূতি রয়েছে, যা সে লুকায় না। কুসুম আসলে একটি খোলা বইয়ের মতো।”
তিনি আরও বলেন, “কুসুমের মন, শরীর ও আত্মা একসঙ্গে কাজ করে। এখানেই সে শশীর চেয়ে আলাদা। কুসুম এমন একজন নারী, যে শশীর মতো পুরুষ চরিত্রকেও চ্যালেঞ্জ করতে পারে।”
জয়ার ভাষায়, “আমাদের সমাজে নারীদের একটি 'লক্ষ্মণরেখা' দিয়ে ঘিরে রাখা হয়, কিন্তু কুসুম সেই রেখার বাইরের মানুষ। তার মধ্যে কোনো জড়তা নেই। সে সতেজ, স্বাধীনচেতা। এ কারণেই কুসুম এত আধুনিক। এমনকি আমি নিজেও তার মতো হতে পারব না।”
গ্রামবাংলার বাউলদের উদাহরণ টেনে অভিনেত্রী বলেন,“বাউলরা যেমন দেহ, মন ও আত্মাকে একাকার করে দেখে, তেমনি কুসুমও নিজের অস্তিত্বকে একত্রে ধারণ করে। সে যা ভাঙে, তা-ই হয় নতুন করে গড়ার সূচনা।”
চলচ্চিত্রটি শিগগিরই প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে, যেখানে দর্শকরা দেখতে পাবেন সাহসী, স্বাধীনচেতা এক নারীর ভিন্ন মাত্রার উপস্থাপনা।
ভোরের আকাশ//হ.র