ছবি- সংগৃহীত
গাজায় যুদ্ধ বন্ধে শান্তি পরিকল্পনার প্রথম দফায় ইসরায়েল ও হামাস রাজি হয়েছে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
বুধবার (৮ অক্টোবর) নিজের মালিকানাধীন সামাজিক মাধ্যম ট্রুথে এক পোস্টে তিনি এ তথ্য জানান বলে নিশ্চিত করেছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লিখেছেন, শান্তি চুক্তির অর্থ হল খুব শীঘ্রই সব জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে। ইসরায়েল গাজা থেকে তাদের সৈন্যদের প্রত্যাহার করবে। এটি শক্তিশালী, টেকসই এবং চিরস্থায়ী শান্তির দিকে প্রথম পদক্ষেপ।
এর আগে, ট্রাম্প আরও বলেছেন, গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি ঘোষণা করতে এই সপ্তাহের শেষে মিশরে যেতে পারেন।
গত মাসে ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজা নিয়ে ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। ইসরায়েল ও হামাস দুই পক্ষই ট্রাম্পের পরিকল্পনায় ইতিবাচক সাড়া দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত সোমবার মিসরের পর্যটন শহর শারম আল শেখে দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়।
বুধবার (৮ অক্টোবর) মিসরে তৃতীয় দিনের মতো আলোচনা হয়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে তারা আলোচনা করেন। এদিন আলোচনায় যোগ দেন যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী মধ্যস্থতাকারীরা। তাদের মধ্যে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ ও ট্রাম্পের জামাতা জ্যারেড কুশনার, কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুর রহমান আল থানি এবং তুরস্কের গোয়েন্দাপ্রধান ইব্রাহিম কালিন।
এদিকে কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি সামাজিক মাধ্যম এক্সে এক পোস্টে বলেছেন, ‘মধ্যস্থতাকারীরা ঘোষণা করেছেন যে, গাজা যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনার প্রথম পর্যায়ের সমস্ত বিধান এবং বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া’ সম্পর্কে একটি চুক্তিতে পৌঁছেছে উভয় পক্ষ। এর ফলে যুদ্ধের অবসান হবে। এই চুক্তির ফলে ইসরায়েলি জিম্মিরা দেশে ফিরে যাবে। ফিলিস্তিনি বন্দীরা মুক্তি পাবে। গাজা উপক্যকায় খাবারও প্রবেশ করবে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস। এতে ১ হাজার ২১৯ জন নিহত হন। জিম্মি করা হয় ২৫১ জনকে। তাদের মধ্যে ৪৭ জন এখনো জিম্মি। এর মধ্যে ২৫ জন আর বেঁচে নেই বলে দাবি করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।
এদিকে, ওই দিন থেকেই গাজায় টানা নৃশংসতা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য, গত দুই বছরে ইসরায়েলের হামলায় গাজায় অন্তত ৬৭ হাজার ১৭৩ জন নিহত হন। তাদের মধ্যে ২০ হাজার ১৭৯টি শিশু।
ভোরের আকাশ/তা.কা
সংশ্লিষ্ট
রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতায় টালমাটাল ফান্সে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নতুন প্রধানমন্ত্রীর নিয়োগ দেবেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবন এবং দপ্তর এলিসি প্রেসিডেন্সিয়াল প্যালেসের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বুধবার এ তথ্য রয়টার্সকে নিশ্চিত করেছেন।ওই কর্মকর্তা বলেছেন, অধিকাংশ আইনপ্রণেতা পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার বিপক্ষে। তারা স্থিতিশীলতা চান। আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে নতুন একটি বাজেট গৃহীত হওয়ার কথা আছে। সেজন্য সবার আগে প্রয়োজন পার্লামেন্টে স্থিতিশীলতা।তাই সবদিক বিবেচনা করে প্রেসিডেন্ট একজন নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এ সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন হবে।গত ৬ অক্টোবর পদত্যাগ করেন ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী সেবাস্টিয়ান লেকোর্নো। ম্যাক্রোঁর বিশ্বস্ত অনুসারী হিসেবে পরিচিত এই রাজনীতিবিদ এখন দেশটির তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকায় আছেন। নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ পেলে বিদায় নেবেন তিনি।সম্প্রতি জাতীয় বাজেট কাটছাঁট নিয়ে সরকারে প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে ফ্রান্সের জনগণ ও বিরোধী দলগুলো। ঋণের দেনায় জর্জরিত ফ্রান্সের সরকারে স্বস্তি দিতে গত সেপ্টেম্বরের প্রথম দিকে কল্যাণমূলক ও জনস্বার্থ সম্পর্কিত বিভিন্ন খাত থেকে সরকারি বরাদ্দের অর্থ কাটছাঁট করার একটি প্রস্তাব পাস করে ফ্রান্সের মন্ত্রিসভা; পাস হওয়া সেই প্রস্তাব অনুযায়ী বাজেট সংস্কারের অংশ হিসেবে বিভিন্ন খাত থেকে রাষ্ট্রীয় বরাদ্দের মোট ৪ হাজার ৪০০ কোটি ডলার ছেঁটে ফেলা হয়।এতে ব্যাপক ক্ষুব্ধ হন ফ্রান্সের সাধারণ জনগণ। জনগণের ক্ষোভকে আমলে নিয়ে পার্লামেন্টে লেকোর্নোর পূর্বসূরী প্রধানমন্ত্রী ফাঙ্কোইস বায়রোকে আস্থাভোটের চ্যালেঞ্জ জানান বিরোধী দলীয় এমপিরা। সেই ভোটে হেরে গিয়ে ৮ সেপ্টেম্বর বিদায় নেন বায়রো। তার বিদায়ের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে লেকোর্নোকে নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন ম্যাক্রোঁ।কিন্তু লেকোর্নো আসার পরও পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। ফ্রান্সের কট্টর বামপন্থি রাজনৈতিক দল ও ট্রেড ইউনিয়নগুলো একের পর এক কর্মসূচি ঘোষণা করে যাচ্ছিল। ফলে দায়িত্ব গ্রহণের ২৭ দিনের এবং মন্ত্রিসভা গঠনের ১৪ ঘণ্টার মাথায় প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ান লেকোর্নো।এলিসি প্রাসাদ থেকে বিবৃতি আসার আগের দিন মঙ্গলবার ফ্রান্সের সম্প্রচার সংবাদমাধ্যম ফান্স ২ টিভিকে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন লেকোর্নো। সেখানে লেকোর্নো বলেছিলেন, যে সংকটের মধ্যে দিয়ে আমরা যাচ্ছি, আমি মনে করি এ থেকে এখনও উত্তরণ সম্ভব। আমি আজ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক করেছি এবং যত শিগগির সম্ভব নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের পরামর্শ দিয়েছি।তার এই সাক্ষাৎকার প্রচারের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের ঘোষণা এসেছে এলিসি প্রাসাদ থেকে।ভোরের আকাশ/তা.কা
আফ্রিকা মহাদেশের ছোট্ট একটি দেশ ইসোয়াতিনি (পূর্বতন সোয়াজিল্যান্ড)। এই ক্ষুদ্র দেশটির বর্তমান নৃপতি তৃতীয় এমসোয়াতি। দেশটি আড়ে-বহরে ছোট হলেও রাজার পরিবার একেবারেই ছোট নয়।আফ্রিকার এই ছোট দেশটির নাগরিকদের জীবনযাত্রার মান খুবই সাদামাঠা। অর্থনৈতিক ভাবেও দেশটির বেহাল দশা। এত কিছু হলে কী হবে, দেশের রাজা কাটান বিলাসী জীবন। ঠাঁটবাটও নেহাত কম নয়।রাজার মোট ৩০ জন স্ত্রী, সব মিলিয়ে ৩০-৩৫ জন সন্তান। গৃহকর্ম সহায়কের সংখ্যা গুনে গুনে একশো। পুরো পরিবার ও পরিচারকদের নিয়ে আবু ধাবিতে এসেছিলেন আফ্রিকার অবশিষ্ট নিরঙ্কুশ রাজতন্ত্রের সদস্য এমসোয়াতি। চলতি বছরের ১০ জুলাই ব্যক্তিগত বিমানে করে রাজা ও রাজপরিবারের সদস্যেরা হাজির হন সংযুক্ত আরব আমিরশাহির আবু ধাবি বিমানবন্দরে। সেই পুরনো ভিডিয়ো নিয়ে নতুন করে চর্চা শুরু হয় সমাজমাধ্যমে।ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে ব্যক্তিগত জেট থেকে নামছেন এক জন পুরুষ। পোশাকটি দিয়ে শুধুমাত্র রাজার শরীরের নিম্নাংশ ঢাকা। উর্ধ্বাঙ্গ প্রায় নিরাবরণ। তাঁর পিছনে সুসজ্জিত ও আধুনিক পোশাক পরা কয়েক জন রমণী। ভিডিয়োটি প্রথমে সকলের নজর কেড়েছিল বেশ কয়েকটি কারণে। নেটাগরিকদের মনে প্রশ্ন জেগেছিল কেন হঠাৎ করে অর্ধেক পোশাক পরা ব্যক্তিটিকে তাঁর আশপাশের লোকেরা মাথা ঝুঁকিয়ে কুর্নিশ জানিয়ে অভিবাদন করছেন ও সেলাম ঠুকছেন। স্বাভাবিক ভাবেই সকলের কৌতূহলী প্রশ্ন ছিল, কে এই ব্যক্তি? অর্ধেক পোশাক পরে কেন তিনি এত বিলাসবহুল ভ্রমণ করছেন? তাঁর সঙ্গে থাকা মহিলারাই বা কারা?জানা যায়, তিনি রাজা এমসোয়াতি। তাঁর সঙ্গে ছিলেন রাজপুত্র-কন্যারাও। রাজপরিবারের দেখভালের দায়িত্বে থাকা ১০০ জন পরিচারকও ছিল। বৈষয়িক ও অর্থনৈতিক আলোচনার জন্য আবু ধাবিতে এলেও রাজার বিলাসী জীবন নিয়ে তুমুল আলোচনা শুরু হয় সমাজমাধ্যমে ও সংবাদমাধ্যমে। সংবাদ প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজা ও তাঁর বিরাট সংসার নিয়ে হঠাৎ করে চলে আসার ফলে আবু ধাবি বিমানবন্দরের কাজকর্ম সাময়িক ভাবে লাটে ওঠে।রাজার আগমন এতটাই আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল যে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থার দেখভালকারীরা তিনটি টার্মিনাল বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে অস্থায়ী লকডাউনও জারি করে দেওয়া হয় সেখানে। রাজা এমসোয়াতিকে চিতাবাঘের ছাপের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরা অবস্থায় দেখা গিয়েছে সেই ভিডিয়োয়। রানিরা ধরা দিয়েছেন উজ্জ্বল, রঙিন পোশাকে। রাজার ১০০ জন পরিচারকের দল রাজকীয় জিনিসপত্র এবং রসদ ব্যবস্থাপনায় ব্যস্ত ছিল।দেশ গরিব হলে কী হবে, রাজা এমসোয়াতির জীবন বৈচিত্রে ভরপুর। বিদেশে গেলে ব্যক্তিগত বিমান ছাড়া চলেন না। গ্যারাজে রয়েছে রোলস রয়েস থেকে শুরু করে একাধিক বিদেশি বিলাসবহুল গাড়ি। কয়েকশো কোটি টাকা দিয়ে স্ত্রীদের রোলস রয়েস কিনে দিয়েছিলেন রাজা, এমনটাই দাবি তুলেছিল বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম।তৃতীয় এমসোয়াতি ১৯৮৬ সাল থেকে দক্ষিণ আফ্রিকার এই ছোট্ট দেশটি শাসন করে আসছেন। একাধিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, তাঁর ব্যক্তিগত সম্পদ ১ হাজার কোটি ডলারেরও বেশি। নির্মাণ, পর্যটন, কৃষি, টেলি যোগাযোগের মতো বিভিন্ন সংস্থার শেয়ারের মালিক রাজা নিজে। রাজার বিলাসবহুল জীবনযাত্রা এবং দেশের নাগরিকদের দৈনন্দিন সংগ্রামের মধ্যে আকাশ-পাতাল তফাত বলেও অভিযোগ।রাজার সম্পত্তি ফুলেফেঁপে উঠলেও সে দেশের জনগণের অবস্থা শোচনীয়। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশটির স্বাস্থ্য ও শিক্ষা ব্যবস্থার বেহাল দশা। সরকারি হাসপাতালে রয়েছে ওষুধের ঘাটতি। আর্থিক ভাবে পিছিয়ে থাকা শিক্ষার্থীরা অনুদানের অভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ শেষ না করে মাঝপথে পড়াশোনা ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছেন।বিশ্ব ব্যাঙ্ক জানিয়েছে, ইসোয়াতিনিতে ২০২১ সালে বেকারত্ব ২৩% থেকে বেড়ে ৩৩.৩% হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশের জাতীয় সম্পদ রাজপরিবারের কুক্ষিগত বলে জনগণের ৬০ শতাংশই দারিদ্রসীমার নীচে বাস করেন বলে জানা গিয়েছে।ইসোয়াতিনির জনতা যতই কষ্টে দিনপাত করুক না কেন, রাজা আছেন মহাসুখে! প্রতি বছর একটি করে বিয়ে সারেন এমসোয়াতি। প্রতি বছর তিনি ঐতিহ্যবাহী ‘রিড ড্যান্স’ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এক জন করে নতুন কনে নির্বাচন করেন। সেইমতো বর্তমান রাজার ৩০ জন স্ত্রী রয়েছেন। যদিও সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে বর্তমানে তাঁর সঙ্গে ১৫ জন স্ত্রী রয়েছেন। ৩৫টিরও বেশি সন্তান রয়েছে রাজার।এই দেশের রাজাদের ঐতিহ্যবাহী একটি নামে ডাকা হয়, তা হল ‘দ্য লায়ন’। তাঁদের পোশাকও রাজার পরিচয় বহন করে। বিয়ে করার জন্য স্ত্রী বাছাই করার পদ্ধতিটিও স্বতন্ত্র। প্রতি বছর অগস্টের শেষে বা সেপ্টেম্বরের শুরুতে সোয়াজি সম্প্রদায়ের হাজার হাজার কুমারী নারী এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন। রাজা এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকেন এবং তাঁদের প্রতি সম্মান জানান। এই সমস্ত তরুণীর মধ্যে থেকে এক জনকে নিজের স্ত্রী হিসাবে বেছে নেন রাজা।শোনা যায়, বর্তমান রাজার বাবা প্রাক্তন রাজা দ্বিতীয় সোভুজার ১২৫ জন স্ত্রী ছিলেন। কিছু প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে যে, ২১০ জনেরও বেশি সন্তান এবং প্রায় ১ হাজার নাতি-নাতনি ছিলেন তাঁর। আবার কেউ কেউ বলেন, প্রাক্তন রাজার ৭০ জন ঘরনি ছিলেন।রাজার আবু ধাবি সফরের ভিডিয়োটি প্রকাশ্যে আসার পরে সমালোচনার বন্যা বয়ে গিয়েছে সমাজমাধ্যম জুড়ে। দেশের নাগরিকদের দুর্দশার মধ্যেও রাজার অমিতব্যয়ী ও জাঁকজমকপূর্ণ জীবন নিয়ে কটাক্ষ ধেয়ে এসেছে রাজা ও তাঁর পরিবারের দিকে। কেউ কেউ বলছেন, রাজার পরিবারকে পুরো একটা গ্রামের মতো মনে হচ্ছে। কেউ কেউ আরও তীব্র ভাষায় রাজার নিন্দা করেছেন। এক জন লিখেছেন, “এই ব্যক্তি যখন ব্যক্তিগত বিমানে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, তখন তাঁর দেশের লোকেরা অনাহারে মারা যাচ্ছেন।’’নেটমাধ্যমে অনেকের দাবি, দেশটিতে সমস্ত জায়গায় এখনও বিদ্যুৎ পৌঁছোতে পারেনি। সেখানে রাজা এতগুলি বিয়ে করে দামি দামি উপহারে দেশের জনগণের টাকা উড়িয়ে দিতে কসুর করছেন না।দেশটির নামের সঙ্গে সুইজারল্যান্ডের নামের মিল থাকায় অনেকেই ভুল বুঝতেন। তাই ২০১৮ সালে দেশের স্বাধীনতার ৫০ বছরে পূর্তি উপলক্ষে রাজা এমসোয়াতি দেশের নাম পাল্টে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। সোয়াজিল্যান্ডের নতুন নামকরণ করা হয় ইসোয়াতিনি। ৬,৭০৪ বর্গমাইলের এই দেশটির পুরো নাম ‘দ্য কিংডম অফ ইসোয়াতিনি’। এর অর্থ সোয়াজিদের ভূমি।শতাংশের হিসাবে বিশ্বে এইচআইভি রোগীর পরিমাণ সবচেয়ে বেশি এই ইসোয়াতিনিতে। দেশের জনসংখ্যার ২৭ শতাংশই রোগাক্রান্ত। ১০ কোটি ৩০ লক্ষ জনসংখ্যার দেশটিতে এইচআইভি রোগীর সংখ্যা প্রায় ২ লক্ষ ১০ হাজার জন। লিঙ্গবৈষম্য, বিভিন্ন অধিকার থেকে দেশবাসীকে বঞ্চিত করা খুব সাধারণ ব্যাপার দেশটিতে এমনটাই দাবি তুলেছে সে দেশের জনসংখ্যার অধিকাংশ। দেশের অভ্যন্তরীণ অরাজকতা বিশ্বের দরবারে যাতে প্রকাশিত না হয় সে জন্য সংবাদমাধ্যমগুলির উপর নিয়ন্ত্রণ জারি করা হয়েছে।সূত্র: আনন্দবাজারভোরের আকাশ/মো.আ.
ঘুমন্ত স্বামীর গায়ে ফুটন্ত তেল ঢেলে ও মরিচ গুঁড়া ছিটিয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে স্ত্রীর বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে গত ৩ অক্টোবর গভীর রাতে। গুরুতর দগ্ধ ওই স্বামী বর্তমানে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন।পুলিশ জানায়, হামলার শিকার ব্যক্তির নাম দিনেশ (২৮)। তিনি একটি ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিতে কর্মরত। ঘটনার সময় ঘরে উপস্থিত ছিল তাদের আট বছর বয়সী কন্যা সন্তানও।জানা গেছে ঘটনাটি ভারতের রাজধানী দিল্লির মাদনগিরি এলাকায় ঘটেছে।দিনেশের বর্ণনা অনুযায়ী, সে দিন রাতে কাজ শেষে বাড়ি ফিরে খাওয়াদাওয়া সেরে ঘুমিয়ে পড়েন। মাঝরাতে হঠাৎ শরীরে তীব্র জ্বালা অনুভব করে জেগে ওঠেন তিনি। তখনই দেখতে পান— স্ত্রী তার গায়ে ফুটন্ত তেল ঢালছেন। এরপর ক্ষতস্থানে মরিচ গুঁড়া ছিটিয়ে দেন। দিনেশ প্রতিবাদ করলে স্ত্রী হুমকি দেন, “শব্দ করলে আরও গরম তেল ঢেলে দেব।”দিনেশের আর্তচিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। স্থানীয় এক বাসিন্দা অঞ্জলি বলেন, “আমার বাবা দরজায় কড়া নাড়লে ভেতর থেকে লক করা ছিল। দরজা খুলতেই দেখি দিনেশ যন্ত্রণায় ছটফট করছেন, আর তার স্ত্রী ঘরের কোণে লুকিয়ে আছেন।”অঞ্জলি আরও জানান, তার বাবাই দ্রুত একটি অটোরিকশা ডেকে দিনেশকে হাসপাতালে পাঠান। প্রথমে তাকে স্থানীয় এক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য স্থানান্তর করা হয় সাফদারজং হাসপাতালে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, দিনেশের শরীরের বড় অংশ দগ্ধ হয়েছে এবং তার অবস্থা ‘অত্যন্ত আশঙ্কাজনক’।পুলিশ জানায়, দিনেশ ও তার স্ত্রীর বিয়ে হয়েছিল আট বছর আগে। দীর্ঘদিন ধরেই তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ চলছিল। প্রায় দুই বছর আগে স্ত্রী ‘ক্রাইম এগেইনস্ট উইমেন’ সেলে অভিযোগ করেছিলেন, তবে পরে বিষয়টি আপসে মীমাংসা হয়।এ ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে দিনেশের স্ত্রীর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১১৮, ১২৪ ও ৩২৬ ধারায় মামলা করা হয়েছে। তবে ঘটনার পর থেকে ওই নারী পলাতক রয়েছেন এবং তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। প্রতিবেশীরা বলছেন, ওই পরিবারে কলহের কথা তারা জানতেন বটে, কিন্তু এমন ভয়াবহ পরিণতি হবে তা কেউ কল্পনাও করেননি।সূত্র: এনডিটিভিভোরের আকাশ/মো.আ.
গাজায় যুদ্ধ বন্ধে শান্তি পরিকল্পনার প্রথম দফায় ইসরায়েল ও হামাস রাজি হয়েছে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।বুধবার (৮ অক্টোবর) নিজের মালিকানাধীন সামাজিক মাধ্যম ট্রুথে এক পোস্টে তিনি এ তথ্য জানান বলে নিশ্চিত করেছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা। ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লিখেছেন, শান্তি চুক্তির অর্থ হল খুব শীঘ্রই সব জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে। ইসরায়েল গাজা থেকে তাদের সৈন্যদের প্রত্যাহার করবে। এটি শক্তিশালী, টেকসই এবং চিরস্থায়ী শান্তির দিকে প্রথম পদক্ষেপ।এর আগে, ট্রাম্প আরও বলেছেন, গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি ঘোষণা করতে এই সপ্তাহের শেষে মিশরে যেতে পারেন।গত মাসে ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজা নিয়ে ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। ইসরায়েল ও হামাস দুই পক্ষই ট্রাম্পের পরিকল্পনায় ইতিবাচক সাড়া দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত সোমবার মিসরের পর্যটন শহর শারম আল শেখে দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়।বুধবার (৮ অক্টোবর) মিসরে তৃতীয় দিনের মতো আলোচনা হয়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে তারা আলোচনা করেন। এদিন আলোচনায় যোগ দেন যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী মধ্যস্থতাকারীরা। তাদের মধ্যে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ ও ট্রাম্পের জামাতা জ্যারেড কুশনার, কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুর রহমান আল থানি এবং তুরস্কের গোয়েন্দাপ্রধান ইব্রাহিম কালিন।এদিকে কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি সামাজিক মাধ্যম এক্সে এক পোস্টে বলেছেন, ‘মধ্যস্থতাকারীরা ঘোষণা করেছেন যে, গাজা যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনার প্রথম পর্যায়ের সমস্ত বিধান এবং বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া’ সম্পর্কে একটি চুক্তিতে পৌঁছেছে উভয় পক্ষ। এর ফলে যুদ্ধের অবসান হবে। এই চুক্তির ফলে ইসরায়েলি জিম্মিরা দেশে ফিরে যাবে। ফিলিস্তিনি বন্দীরা মুক্তি পাবে। গাজা উপক্যকায় খাবারও প্রবেশ করবে।২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস। এতে ১ হাজার ২১৯ জন নিহত হন। জিম্মি করা হয় ২৫১ জনকে। তাদের মধ্যে ৪৭ জন এখনো জিম্মি। এর মধ্যে ২৫ জন আর বেঁচে নেই বলে দাবি করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।এদিকে, ওই দিন থেকেই গাজায় টানা নৃশংসতা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য, গত দুই বছরে ইসরায়েলের হামলায় গাজায় অন্তত ৬৭ হাজার ১৭৩ জন নিহত হন। তাদের মধ্যে ২০ হাজার ১৭৯টি শিশু।ভোরের আকাশ/তা.কা