আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ : ৩০ জুলাই ২০২৫ ০১:১৮ এএম
হামাসকে নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগে ইরানের পাল্টা জবাব
গাজায় যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করতে চলমান আলোচনায় ইরান হস্তক্ষেপ করেছে—যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এমন অভিযোগকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে তেহরান। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বলেছে, হামাসকে ‘আদেশ’ দেওয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
স্কটল্যান্ড সফরের সময় সোমবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন, “আমি মনে করি, ইরানিরা এই আলোচনায় হস্তক্ষেপ করেছে। তারা হামাসকে সংকেত ও নির্দেশ দিচ্ছিল, এবং এটি মোটেও ভালো কিছু নয়।”
এই মন্তব্যের পর পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ইরানি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাকাই বলেন, “এই অভিযোগ মূলত দায় এড়ানোর কৌশল এবং দায় অন্যের ওপর চাপানোর প্রচেষ্টা।” তিনি আরও বলেন, “হামাস নিজেই গাজার নিপীড়িত জনগণের স্বার্থ সবচেয়ে ভালোভাবে বোঝে ও তা রক্ষায় সিদ্ধান্ত নেয়। তৃতীয় পক্ষের নির্দেশের প্রয়োজন তাদের নেই।”
চলমান যুদ্ধবিরতি আলোচনা ও ব্যর্থতা
মিসর, কাতার ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় এ মাসের শুরুতে দোহায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে পরোক্ষ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। তবে শেষ পর্যন্ত কোনো যুদ্ধবিরতির চুক্তি হয়নি। উভয় পক্ষই আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার জন্য একে অপরকে দায়ী করছে। এই আলোচনার ব্যর্থতার মধ্যেই ট্রাম্প ইরানের বিরুদ্ধে হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুললেন।
গত মাসেই ইসরায়েল হঠাৎ করে ইরানের বেশ কয়েকটি পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনায় হামলা চালায়। এতে আবাসিক এলাকাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যুক্তরাষ্ট্রও স্বল্প সময়ের জন্য এই সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে এবং ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়। জবাবে ইরান ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার মাধ্যমে শক্ত প্রতিক্রিয়া জানায়।
ট্রাম্প সোমবার বলেন, “ইসরায়েলের সঙ্গে ১২ দিনের যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর থেকে ইরান ‘খুবই খারাপ বার্তা’ পাঠাচ্ছে।” তবে তিনি ওই বার্তার বিষয়বস্তু বা প্রসঙ্গ বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করেননি। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি হয়তো যুক্তরাষ্ট্র-ইরান পারমাণবিক আলোচনার অচলাবস্থা কিংবা ইরানের আঞ্চলিক মিত্রদের প্রতি সমর্থন প্রসঙ্গে ইঙ্গিত করেছেন—যা পশ্চিমাদের মতে নিরাপত্তার জন্য হুমকি।
মুখপাত্র বাকাই যুক্তরাষ্ট্রের নীতিকে উল্টো দায়ী করে বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের উচিত ইসরায়েলের মতো দখলদার শক্তির কাছে প্রাণঘাতী অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করা এবং গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশের অনুমতি নিশ্চিত করা।” তিনি আরও বলেন, “গণহত্যা বন্ধে আন্তর্জাতিকভাবে চাপ প্রয়োগ করা এখন সময়ের দাবি।”
গাজা যুদ্ধ নিয়ে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টাপাল্টি অবস্থানের মধ্যে এই নতুন বাকযুদ্ধ পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে। আন্তর্জাতিক মহল উদ্বেগের সঙ্গে পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে।
ভোরের আকাশ//হ.র