সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী
ভারত থেকে পুশইনের মাধ্যমে আসাদের মধ্যে বাংলাদেশি থাকলে তাদের পুশব্যাক করার সুযোগ নেই। তবে ভারতের নাগরিক ও দেশটির রোহিঙ্গারা থাকলে তাদের আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ার ফেরত পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
শনিবার (১৭ মে) সাতক্ষীরার শ্যামনগরে সুন্দরবনে বিজিবির ‘বয়েসিং ভাসমান বিওপি’ উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ভারতে কোনো অবৈধ বাংলাদেশি থেকে থাকলে তাদের আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ায় ফেরত পাঠাতে হবে। ভারতের পুশইনের ঘটনায় প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। তবে এ ঘটনাকে উস্কানিমূলক মনে হচ্ছে না।
সুন্দরবনসহ বিভিন্ন সীমান্তে ভারতীয় পুশইনের বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, পুশইনের মাধ্যমে আসা ব্যক্তিদের মধ্যে রোহিঙ্গাও রয়েছে। এছাড়া, ইউএনএইচসিআরের কার্ডধারী ব্যক্তিরাও রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে কূটনীতিক চ্যানেলে যোগাযোগ করা হচ্ছে। এ সময় পুশইনের বিষয়ে সরকার কঠোর অবস্থানে রয়েছে বলেও জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, ভারত থেকে পুশইনের মাধ্যমে আসাদের মধ্যে বাংলাদেশি থাকলে তাদের পুশব্যাক করার সুযোগ নেই। তবে ভারতের নাগরিক ও দেশটির রোহিঙ্গারা থাকলে তাদের আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ার ফেরত পাঠানো হবে। এ সময় সবাই সহযোগিতা করলে ভারত পুশইন করত পারবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ভারত সুন্দরবনের জলসীমাসহ বিভিন্ন সীমান্তে পুশইন করেছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ভারত মান্দারবারি সীমান্ত এলাকা দিয়ে পুশইন করেছিল, সেখানে আমি পরিদর্শন করেছি। ভারতকে আমরা জানিয়েছি- আমাদের কোনো বাংলাদেশি যদি তাদের (ভারতে) ওখানে থেকে থাকে তাহলে প্রোপার চ্যানেলে পাঠান। যেমন ভারতের যারা বাংলাদেশে আছে তাদের আমরাও প্রোপার চ্যানেলে পাঠাই। আমরা কাউকে পুশইন করি না।
তিনি বলেন, গতকাল আপনারা দেখেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সীমান্ত দিয়ে ভারত পুশইনের চেষ্টা করেছিল। কিন্তু বিজিবির সঙ্গে আনসার এবং স্থানীয় জনগণের প্রতিরোধে ভারত পুশইন করতে পারেনি। আপনারা সবাই যদি সহযোগিতা করেন তাহলে ভারত পুশইন করতে পারবে না। বিজিবির সঙ্গে জনগণ এবং সাংবাদিক ভাই-বোনদের সহযোগিতা দরকার।
পুশইন ঠেকাতে প্রতিবাদমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ডিপ্লোমেটিক সল্যুশনের (কূটনৈতিক সমাধান) জন্য এরই মধ্যে চিঠি দেওয়া হয়েছে। কূটনৈতিক সমাধানের জন্য এ বিষয়ে আমাদের রাষ্ট্রদূত, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এবং নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমানের সঙ্গেও কথা হয়েছে।
ভোরের আকাশ/আজাসাা
সংশ্লিষ্ট
ইন্টারনেটের দাম কমিয়ে জনগণের ব্যবহার উপযোগী করার আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।শনিবার (১৭ মে) রাজধানীর বিটিআরসি ভবনে বিশ্ব টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সংঘ দিবস উপলক্ষে এক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, ইন্টারনেটের দাম কীভাবে আরও কমানো যায়, জনগণের ব্যবহার উপযোগী করা যায় তা নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষায় ইন্টারনেট ব্যবহারে আমরা অনেক এগিয়ে গেছি, তবে কৃষি ও স্বাস্থ্যে অনেক পিছিয়ে রয়েছি। এই দুই খাতে ইন্টারনেটের ব্যবহার বাড়াতে হবে।ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেন, দেশে বন্যা ও ঝড়ের সময় মোবাইল ইন্টারনেট ব্যাহত হয়। বন্যা ও ঝড় আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। তবে সেই সময়ে ইন্টারনেট সেবা কীভাবে নিশ্চিত করা যায় তা ভাবতে হবে। দুর্যোগের সময় কীভাবে টেলিযোগাযোগ যেন নির্বিঘ্ন থাকে, সেই উদ্যোগ নিতে হবে।সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ আইনটি পাস হলে সাইবার স্পেস নারীদের জন্য আরও বেশি সুরক্ষিত হবে জানিয়ে আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি ও ইন্টারনেটের নিরাপদ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। সাইবার স্পেসে নারীদের নিরাপত্তা দিতে আমরা ব্যর্থ হচ্ছি, সেটি স্বীকার করতে আমাদের দ্বিধা নেই। অনুষ্ঠানে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, দেশের আইসিটি খাতে নারীদের আরও বেশি সম্পৃক্ত করতে সরকার কাজ করছে। সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ আইনটি কয়েক সপ্তাহের মধ্যে পাস হবে। তখন সাইবার স্পেসে নারীদের সুরক্ষা দিতে সক্ষম হবো। ন্যাশনাল ইনোভেশন চ্যালেঞ্জে নারী উদ্যোক্তা ও কর্মীদের প্রাধান্য দেওয়া হবো। সবুজ পাতা নামের যে উদ্যোগ সেখানেও নারীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বিটিআরসি এরই মধ্যে ই-লাইসেন্সিং সেবা চালু করেছে। অনুষ্ঠানে একটি ন্যাশন ওয়াইড আইএসপি ও অপর এক ডিভিশনাল আইএসপির হাতে ই-লাইসেন্স তুলে দেওয়া হয়। বেশ কিছু ক্যাটাগরিতে অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।অনুষ্ঠানে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবা ফারজানা, বিটিআরসি চেয়ারম্যান (অব.) মেজর জেনারেল এমদাদ উল বারী। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আইসিটি সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী, ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব জহিরুল ইসলাম প্রমুখ।ভোরের আকাশ/এসএইচ
ভারত থেকে পুশইনের মাধ্যমে আসাদের মধ্যে বাংলাদেশি থাকলে তাদের পুশব্যাক করার সুযোগ নেই। তবে ভারতের নাগরিক ও দেশটির রোহিঙ্গারা থাকলে তাদের আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ার ফেরত পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।শনিবার (১৭ মে) সাতক্ষীরার শ্যামনগরে সুন্দরবনে বিজিবির ‘বয়েসিং ভাসমান বিওপি’ উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ভারতে কোনো অবৈধ বাংলাদেশি থেকে থাকলে তাদের আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ায় ফেরত পাঠাতে হবে। ভারতের পুশইনের ঘটনায় প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। তবে এ ঘটনাকে উস্কানিমূলক মনে হচ্ছে না।সুন্দরবনসহ বিভিন্ন সীমান্তে ভারতীয় পুশইনের বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, পুশইনের মাধ্যমে আসা ব্যক্তিদের মধ্যে রোহিঙ্গাও রয়েছে। এছাড়া, ইউএনএইচসিআরের কার্ডধারী ব্যক্তিরাও রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে কূটনীতিক চ্যানেলে যোগাযোগ করা হচ্ছে। এ সময় পুশইনের বিষয়ে সরকার কঠোর অবস্থানে রয়েছে বলেও জানান তিনি।তিনি আরও বলেন, ভারত থেকে পুশইনের মাধ্যমে আসাদের মধ্যে বাংলাদেশি থাকলে তাদের পুশব্যাক করার সুযোগ নেই। তবে ভারতের নাগরিক ও দেশটির রোহিঙ্গারা থাকলে তাদের আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ার ফেরত পাঠানো হবে। এ সময় সবাই সহযোগিতা করলে ভারত পুশইন করত পারবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।ভারত সুন্দরবনের জলসীমাসহ বিভিন্ন সীমান্তে পুশইন করেছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ভারত মান্দারবারি সীমান্ত এলাকা দিয়ে পুশইন করেছিল, সেখানে আমি পরিদর্শন করেছি। ভারতকে আমরা জানিয়েছি- আমাদের কোনো বাংলাদেশি যদি তাদের (ভারতে) ওখানে থেকে থাকে তাহলে প্রোপার চ্যানেলে পাঠান। যেমন ভারতের যারা বাংলাদেশে আছে তাদের আমরাও প্রোপার চ্যানেলে পাঠাই। আমরা কাউকে পুশইন করি না।তিনি বলেন, গতকাল আপনারা দেখেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সীমান্ত দিয়ে ভারত পুশইনের চেষ্টা করেছিল। কিন্তু বিজিবির সঙ্গে আনসার এবং স্থানীয় জনগণের প্রতিরোধে ভারত পুশইন করতে পারেনি। আপনারা সবাই যদি সহযোগিতা করেন তাহলে ভারত পুশইন করতে পারবে না। বিজিবির সঙ্গে জনগণ এবং সাংবাদিক ভাই-বোনদের সহযোগিতা দরকার।পুশইন ঠেকাতে প্রতিবাদমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ডিপ্লোমেটিক সল্যুশনের (কূটনৈতিক সমাধান) জন্য এরই মধ্যে চিঠি দেওয়া হয়েছে। কূটনৈতিক সমাধানের জন্য এ বিষয়ে আমাদের রাষ্ট্রদূত, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এবং নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমানের সঙ্গেও কথা হয়েছে।ভোরের আকাশ/আজাসাা
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ক্ষুদ্রঋণকে এনজিওর পর্যায়ে রাখলে ব্যাংকিং মেজাজ আসবে না। তাই আলাদাভাবে মাইক্রোক্রেডিট ব্যাংক করতে হবে। এর জন্য পৃথক আইন প্রণয়ন করতে হবে। শনিবার (১৭ মে) সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি (এমআরএ) ভবনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন প্রধান উপদেষ্টা।তিনি বলেন, পরিসংখ্যানে দেখা যায় মাইক্রোক্রেডিট ব্যাংকগুলো সদস্যদের সঞ্চয় নিতে পারলেও বাইরের কারও ডিপোজিট নিতে পারে না। এটি একটা সীমাবদ্ধতা। তাই এর জন্য আইন করা প্রয়োজন। তবে মাইক্রোক্রেডিট ব্যাংকগুলোকে লাইসেন্স দেয়ার সময় কার্যপরিধি স্পষ্ট উল্লেখ থাকতে হবে। আইনগতভাবে এটি একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠান হবে। যেখান থেকে মুনাফা করা যাবে না। এর জন্য গ্রামীণ ব্যাংক তাদের হাতে সরঞ্জাম তুলে দেবে। তখন আর কেউ চাকরির পেছনে দৌড়াবে না।প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, গ্রামীণ ব্যাংকই প্রকৃত ব্যাংক, অন্যগুলো লোক দেখানো ব্যাংক। গ্রামীণ ব্যাংক গড়ে উঠেছে বিশ্বাসের ভিত্তিতে। তাই এখানে জামানতের প্রয়োজন পড়ে না। যেটা অন্য কোনো ব্যাংকে নেই। বর্তমানে যারা নিজেদের প্রকৃত ব্যাংক বলছে তারা কেউ নেই। সেসব ব্যাংক শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু গ্রামীণ ব্যাংক হারিয়ে যায়নি। কারণ এখানে মানুষের পরিচয় আর বিশ্বাসের ওপর ভিত্তি করে ব্যাংকিং হয়। এ সময় গ্রামীণ ব্যাংকের কার্যক্রমই আগামী দিনের ব্যাংকিং হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।এর আগে, রাজধানীর আগারগাঁওয়ে মাইক্রো ক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটির (এমআরএ) নতুন ভবন উদ্বোধন করেন প্রধান উপদেষ্টা। আরও উপস্থিত ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদ, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. এম আনিসুজ্জামান চৌধুরী, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারক প্রমুখ।ভোরের আকাশ/আজাসা
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের টানাপড়েন আরও জটিল রূপ নিচ্ছে। গত ৯ মাস ধরে ভারত নানা কৌশলে বাংলাদেশকে চাপে রাখার কূটনীতি অব্যাহত রেখেছে বলে মনে করছেন কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, বাংলাদেশবিরোধী বক্তব্য ও মন্তব্য করেই ক্ষান্ত থাকছে না ভারত। ভিসা সীমিতকরণ, অবাধ বাণিজ্যে হস্তক্ষেপ অব্যাহত রেখেছে তারা। সীমান্তে বেড়া নির্মাণকেন্দ্রিক সংঘাত তৈরির ষড়যন্ত্রও করা হচ্ছে। এবার তারা বাংলাদেশের ভূখণ্ডে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে বেছে নিয়েছে ‘ পুশইন’ কৌশল। গত এক মাস ধরে এই বেআইনি ও অপরাধমূলক কাজ করে যাচ্ছে তারা। গত বৃহস্পতিবার রাতেও ভারতের ৭৫০ জনের পুশইন প্রতিহত করেছে বর্ডার গার্ড, বাংলাদেশ (বিজিবি)।কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ঢাকা ও দিল্লির মধ্যে সুসম্পর্ক থাকলেও ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ অগাস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন এবং তার ভারতে আশ্রয় নেয়াকে ঘিরে দুই দেশের মধ্য অস্বস্তি শুরু হয়। বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা নিপীড়নের শিকার হচ্ছে- এমন বক্তব্য দিতে দেখা যায় ভারতের গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন পর্যায় থেকে- মূলত এ ধরনের পরিস্থিতিতে দুই দেশের সম্পর্কের অস্বস্তি বাড়ে। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার শুরু থেকে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচার নিশ্চিত করতে চাইছে। কিন্তু শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর প্রশ্নে ভারতের অবস্থান পরিষ্কার নয় বলে অভিযোগ করে আসছে বাংলাদেশ।এছাড়া ভারতে বসে শেখ হাসিনার রাজনৈতিক বক্তব্য দেওয়ার বিষয় নিয়েও ঢাকা আপত্তি জানিয়েছে একাধিকবার। এ নিয়ে দুই দেশই একে অন্যের রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে এর আগে। সেই সাথে গত বছরের জুলাই থেকেই বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য ভারতের ভিসা দেওয়া প্রায় বন্ধ রয়েছে। সেইসাথে সীমান্ত হত্যা প্রসঙ্গ তো আছেই।আর সবশেষ সম্প্রতি চীন সফরের সময় ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সাত রাজ্য সম্পর্কে অধ্যাপক ইউনূসের বক্তব্য নিয়ে সম্পর্কের টানাপড়েন আরও বেড়ে যায় বলে বিশ্লেষকেরা বলছেন। সেখানে তিনি ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সাতটি রাজ্যকে ‘ল্যান্ডলকড’ বা ভূ-বেষ্টিত এবং এই অঞ্চলে বাংলাদেশ হলো সমুদ্রের একমাত্র অভিভাবক হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন। তার এই মন্তব্য ভারতের রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে।ড. ইউনূসের কথার সূত্র ধরে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বিমসটেকে ভারতের কৌশলগত ভূমিকার কথা তুলে ধরেন। এমন নানা ইস্যুতে দুই দেশের সম্পর্কে আস্থার ঘাটতি দেখা দেয়ার প্রেক্ষাপটে ব্যাংককে ড. ইউনূস এবং নরেন্দ্র মোদির মধ্যকার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু সেই বৈঠকের পরও বাংলাদেশের প্রতি বিমাতাসুলভ আচরণ করে যাচ্ছে ভারত। তবে অগাধ ধৈর্যের পরিচয় দিয়ে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে সব ধরনের কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশ।ভারতের নতুন কৌশল ‘পুশইন’কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশের ওপর চাপ সৃষ্টির জন্য ভারত এবার ‘পুশইন’ কৌশল বেছে নিয়েছে। এর অংশ হিসেবে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) বিভিন্ন রাজ্য থেকে ধরে আনা বাংলাভাষীদের সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশের ভেতরে ঢুকিয়ে দিচ্ছে। সম্প্রতি বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকা চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় বিএসএফের তত্ত্বাবধানে কাঁটাতারের বেড়া দিতে গিয়ে স্থানীয় গ্রামবাসী এবং বিজিবির সাথে চরম উত্তেজনায় পিছু হটতে বাধ্য হয় বিএসএফ। বেশ কয়েক দিন ধরে সীমান্ত এলাকায় উত্তেজনা পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে নতুন কৌশল হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতের বিভিন্ন স্থান থেকে আটক করা বাংলাভাষীদের জোরপূর্বক ঠেলে (পুশইন) দিচ্ছে বিএসএফ।গোয়েন্দা সূত্রগুলো বলছে, ভারতীয়রা বাংলাদেশের ভূখণ্ডে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে নতুন এই কৌশলের পথ বেছে নিয়েছে। বিশ্লেষকরা মনে করেন, জোরপূর্বক এক দেশ থেকে আরেক দেশে ঠেলে দেয়া আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। গত ৪ মে থেকে গতকাল ১৫ মে পর্যন্ত মোট ৩৭০ জনকে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় পুশইন করেছে বিএসএফ।এর মধ্যে গত বুধবার মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলসহ কয়েকটি সীমান্ত এলাকা দিয়ে পুশইন করার সময় ৩০ জনকে আটক করে বিজিবি। আর গতকাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলা সীমান্তে ৭৫০ জনকে বিএসএফের পুশইনের চেষ্টা রুখে দেয় বিজিবি-জনতা।বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশের উচিত কূটনৈতিক চ্যানেলে এ ঘটনার জোরালো প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি অবৈধভাবে ঠেলে দেয়া ভারতীয় নাগরিক ও ভারতে নিবন্ধিত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বৈধ প্রক্রিয়ায় সে দেশে ফেরত পাঠানো। সেই সঙ্গে ভারত যেন সীমান্ত দিয়ে এভাবে পুশইন করতে না পারে, সে জন্য সীমান্তে নজরদারি আরো জোরদার করা দরকার। এরপরও অবৈধ পুশইন বন্ধ না হলে বাংলাদেশকে বিষয়টি নিয়ে জাতিসঙ্ঘের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিতে হবে।এ বিষয়ে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি স্ট্যাডিজের সভাপতি মেজর জেনারেল (অব:) আ ন ম মুনীরুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, পুশইন সম্মত আইন পরিপন্থী। তা জেনেও ভারত অবৈধভাবে পুশইন করছে বাংলাদেশে। তারা কাদেরকে পাঠাচ্ছে, কেনই বা পাঠাচ্ছে দুই দেশের সরকারের সঙ্গে দেন দরবার না করে কেনইবা পাঠাচ্ছে সে বিষয়টি কিন্তু উদ্বেগের। এক দেশ থেকে আরেক দেশে লোক পাঠাতে হলে দুই দেশের মধ্যে সম্মতি থাকতে হয়। ভারত তার কোনো কিছুই মানছে না। পুশইন করা লোকেরা আদৌ বাংলাদেশী নাকি রোহিঙ্গা সে বিষয়গুলোও কিন্তু স্পষ্ট করেনি ভারত। তারা দুই দেশের যে আইন তা সম্পূর্ণভাবে লঙ্ঘন করেছে। মানবাধিকারও চরমভাবে লঙ্ঘন করেছে দেশটি।তিনি আরো বলেন, এক দেশের কোনো নাগরিক আরেক দেশে অবৈধ অনুপ্রবেশ করলে তাকে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি ও আন্তর্জাতিক আইনকানুন অনুসরণ করে ফেরত পাঠাতে হয়। কিন্তু ভারত যেভাবে কোনো ধরনের প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে এই মানুষগুলোকে বাংলাদেশে পুশইন করল, তা সম্পূর্ণ বেআইনি, মানবাধিকার ও আন্তর্জাতিক রীতিনীতির পরিপন্থী।গোয়েন্দা সূত্র জানায়, ভারত মিয়ানমারের মতো একই পন্থায় এগোচ্ছে। মিয়ানমার যেমন নির্যাতন-নিপীড়নের পর হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে মুসলিম রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে প্রবেশ করতে বাধ্য করেছে। ঠিক একই পন্থায় ভারত শুধু মুসলিমদের ওপর নির্মম নির্যাতনের পর পুশইন শুরু করেছে। ২০ বছর আগের ওই দেশের বাস্তুচ্যুতদের বাংলাদেশে আসতে বাধ্য করছে।ওই সূত্র জানায়, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর দেশের অভ্যন্তরে থাকা আওয়ামী লীগপন্থী নেতাকর্মীরা যে অস্থিতিশীলতা শুরু করেছিল ঠিক একইভাবে ভারত পুশইনের মাধ্যমে দেশের সীমান্তগুলোতে অস্থিরতা তৈরি করতে এই ভয়ঙ্কর খেলা শুরু করেছে।ওই সূত্র আরো জানায়, ১৯৪৮ সাল থেকে ভারতে জাতিসঙ্ঘের মাধ্যমে অনুপ্রবেশ করা শরণার্থীদের নিবন্ধন শুরু করে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের সাথে পাকিস্তানে যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে অনেক বাংলাদেশী ভারতে আশ্রয় নিয়ে ওই দেশের নাগরিক হয়েছে। তাছাড়া অনেক বাংলাদেশীকে শরণার্থী হিসেবে ভারতের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে রাখা হয়। বর্তমানে শরণার্থীদের এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে এনে জোরপূর্বক বাংলাদেশে ঠেলে দিয়ে চরমভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে ভারত। গোয়েন্দা সূত্র জানায় তাদের উদ্দেশ্য বাংলাদেশের সীমান্তে অস্থিতিশীল করা।জানা গেছে, এখন পর্যন্ত ভারত থেকে পুশইনের মাধ্যমে আসা ব্যক্তিদের বিজিবি আটক করেছে ২৯২ জনকে। তাদের মধ্যে ২৫৩ জন বাংলাদেশী, ১৯ জন রোহিঙ্গা এবং বাকি ২০ জনের পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। আর সাতক্ষীরা সীমান্ত থেকে কোস্টগার্ড আটক করেছে ৭৮ জনকে। সাতক্ষীরায় ৭৮ জনের মধ্যে তিনজন জন্মসূত্রে ভারতের নাগরিক। মোট আটকের সংখ্যা ৩৭০ জন।গত ৪ থেকে ৭ মে বাংলাদেশের ৫টি জেলা দিয়ে ভারত থেকে ১৬৭ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৭৩ জনকে খাগড়াছড়ি, ৪৬ জনকে কুড়িগ্রাম, ২৩ জনকে সিলেট, ১৫ জনকে মৌলভীবাজার, ১০ জনকে চুয়াডাঙ্গায় পুশইন করা হয়েছে। ৯ মে শ্যামনগর উপজেলার পশ্চিম সুন্দরবনের মান্দারবাড়িয়া চরে ৭৮ জনকে ফেলে রেখে যায় বিএসএফ। তারা কয়েক দিন না খেয়ে থাকার কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাদের মধ্যে একজনের হাত ভেঙে গেছে আর কয়েকজনের শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন দেখা গেছে। ভুক্তভোগীদের ভাষ্য অনুসারে, তাদের বেশ নিষ্ঠুরতার সঙ্গে চোখ বেঁধে গুজরাট থেকে উড়োজাহাজ-লঞ্চে করে বাংলাদেশে আনা হয়েছে।বিজিবি সূত্র জানায়, ভারতে জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) নিবন্ধিত পাঁচ রোহিঙ্গা নাগরিককে বাংলাদেশে পুশইন করেছে বিএসএফ। আটক ব্যক্তিরা একই পরিবারের সদস্য এবং ভারতের আসামের মাটিয়া রিফিউজি ক্যাম্পে বসবাস করছিলেন। গত ৭ মে ভোর ৬টার দিকে কুড়িগ্রাম জেলার চরভুরুঙ্গামারী ইউনিয়নের ভাওয়ালকুড়ি সীমান্তবর্তী নতুনহাট বাজার এলাকায় ২২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের টহল দল তাদের আটক করে। স্থানীয়দের কাছ থেকে সন্দেহজনক গতিবিধির খবর পেয়ে বিজিবি অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে আটক করে।এ বিষয়ে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী সাংবাদিকদের বলেন, ভারত তাদের দেশের রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বাংলাদেশে ঠেলে দেয়াকে (পুশইন) মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল।তিনি বলেন, বিএসএফ অমানবিকভাবে জনবসতি নেই- এমন সব জায়গায় পুশইন করেছে। যাদের পুশইন করেছে, তারা গত দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে এমনকি অনেকে ২০ থেকে ২৫ বছর আগে নানান কাজে ভারতে গিয়েছিল। তাদের মধ্যে অনেকেরই সন্তান-সন্তানাদি আছে। তাদের মধ্যে অনেকেই ভারতের আধারকার্ডসহ অন্যান্য ডকুমেন্টস ছিল। ভারতের পুলিশ বা বিএসএফ সেগুলো রেখে দিয়ে তাদের বাংলাদেশে পুশইন করেছে।তিনি আরো বলেন, এর মধ্যে একটি উদ্বেগজনক বিষয় হলো কিছু রোহিঙ্গা পাওয়া গেছে- যারা ভারতের ইউএনএইচসিআর (জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক কমিশন) এর তালিকাভুক্ত শরণার্থী। তাদের আইডি কার্ডও আমাদের কাছে আছে।এ বিষয়ে ভারতের সরকারি কর্মকর্তারা দ্য হিন্দু পত্রিকাকে জানিয়েছেন, গত এক মাস ধরে ভারত পূর্বসীমান্ত দিয়ে আটক অবৈধ বাংলাদেশী অভিবাসীদের ‘ফেরত পাঠাচ্ছে’। একটি ঘটনায়, ৪ মে গুজরাটে আটক করা ‘৩০০ অবৈধ অভিবাসীকে’ দু’টি এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান ত্রিপুরার আগরতলায় নিয়ে স্থলসীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে পাঠানো হয়। তাদের মধ্যে ২০০ জন নারী ও শিশু। সরকারি অভিযানের পর বাংলাদেশ সীমান্তে অবৈধ অভিবাসীদের স্বেচ্ছায় প্রত্যাবর্তন বৃদ্ধি পায় বলে কর্মকর্তারা পত্রিকাটিকে জানিয়েছেন। ২৬ এপ্রিল, গুজরাট পুলিশ আহমেদাবাদ এবং সুরাট থেকে ১,০০০ জনেরও বেশি সন্দেহভাজন বাংলাভাষীকে আটক করে।একজন সরকারি কর্মকর্তা পত্রিকাটিকে জানায়, ২০২৪ সালে ২৯৫ জন বাংলাদেশীকে ‘বিতাড়িত’ করা হয়েছে এবং এই বছর ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত প্রায় ১০০ জন বাংলাদেশীকে বিতাড়িত করে বর্ডার গার্ডস বাংলাদেশের (বিজিবি) কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ৮ মে ভারতকে একটি চিঠি পাঠিয়েছে, যেখানে নয়াদিল্লিকে প্রতিষ্ঠিত প্রত্যাবাসন ব্যবস্থা মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়েছে। ভারতের বিদেশ মন্ত্রণালয় এখনো এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।গত ১৪ মে বুধবার রাজস্থানের আইন ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী যোগরাম প্যাটেল জয়পুরে বলেছেন, রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে বসবাসকারী প্রায় ১,০০০ সন্দেহভাজন বাংলাদেশী নাগরিককে চিহ্নিত করা হয়েছে। ১৪৮ জন বাংলাদেশী নাগরিকের প্রথম দলকে যোধপুরে নিয়ে যাওয়া হয় এবং বুধবার বিমানে কলকাতায় পাঠানো হয়। সেখান থেকে তাদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে বলে মি. প্যাটেল বলেন।এর আগে ১০ মে, আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা গুয়াহাটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন যে, সরকার আইনি পথ না মেনে অনুপ্রবেশ রোধে পুশব্যাক ব্যবস্থা বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।হিন্দু পত্রিকা উল্লেখ করেছে, ২০২৪ সালের আগস্টে বাংলাদেশে রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে, রাজ্যগুলো দেশে অবৈধভাবে বসবাসকারী বিদেশীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে। ২২ এপ্রিল পহেলগাম সন্ত্রাসী হামলার পর এই গতি আরো বৃদ্ধি পেয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। দ্য হিন্দু ৩১ মার্চ রিপোর্ট করেছে যে অভিযানের পর অবৈধ বাংলাদেশীদের স্বেচ্ছায় প্রত্যাবর্তনের ঘটনাও বৃদ্ধি পেয়েছে।পত্রিকাটি উল্লেখ করে, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত পূর্ব সীমান্ত অতিক্রম করার সময় ভিসা এবং পাসপোর্ট বিহীন ৩৩৭ জন অবৈধ বাংলাদেশীকে আটক করা হয়েছিল, পরবর্তী মাসগুলোতে, ২০২৪ সালের আগস্ট থেকে এই বছরের ২১ মার্চ পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়েছে ৯০৬ জন। এর মধ্যে জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত ৪১১ জন বহির্গমন রেকর্ড করা হয়েছে।সীমান্তে ৭৫০ জনকে পুশইনের চেষ্টা বিএসএফের, রুখে দিল বিজিবি-জনতাব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলা সীমান্ত দিয়ে গত বৃহস্পতিবার রাতে ৭৫০ জনকে পুশইন চেষ্টা করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। তবে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি ও স্থানীয় জনতার কঠোর প্রতিরোধের মুখে তারা সেটা পারেনি। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাতভর সীমান্তে উত্তেজনা বিরাজ করে। তবে পরিস্থিতি টের পেয়ে বিএসএফ সরে যাওয়ায় কোনো সমস্যা দেখা দেয়নি।একাধিক সূত্র জানায়, বিভিন্ন সময়ে ত্রিপুরায় আটক ৬০০ জনের বেশি ও সম্প্রতি রাজস্থানে আটক ১৪৮ জনকে পুশইনের সিদ্ধান্ত নেয় সেখানকার সংশ্লিষ্টরা। আটককৃতদের মধ্যে বেশির ভাগ বাংলাদেশি ও কিছু রোহিঙ্গা রয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত ২টার দিকে বিজয়নগর উপজেলার সিঙ্গারবিল ইউনিয়নের সীমান্ত দিয়ে ওই ৭৫০ জনকে পুশইন করতে জড়ো হয় বিএসএফ। খবর পেয়ে সতর্ক অবস্থান নেয় বিজিবি। যোগ দেয় স্থানীয় লোকজন। মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে সিঙ্গারবিল, বিষ্ণুপুর, নলঘরিয়া, মেরাসানী, নোয়াবাদী সীমান্তে শত শত লোক দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে জড়ো হয়। অনেকে ফেসবুকে লাইভে এসে লোকজনকে জড়ো হওয়ার আহ্বান জানান। এতে শত শত লোক জড়ো হয়ে পড়লে পিছু হটে বিএসএফ।বিজয়নগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সাধনা ত্রিপুরা বলেন, ‘সীমান্তের পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। পুশইন চেষ্টার খবরে জনগণ বিজিবির সঙ্গে থেকে প্রতিহত করেছে। এখনও সতর্ক অবস্থানে আছেন সবাই।’বিজিবি-২৫ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল জাব্বার আহাম্মেদ সাংবাদিকদেরকে জানান, বিএসএফ পুশইন করবে বলে খবর আসে। এ অবস্থায় বিজিবি সতর্ক অবস্থান নেয়। পাশাপাশি স্থানীয় জনতা সীমান্তে জড়ো হয়।ভোরের আকাশ/এসএইচ