ছবি : সংগৃহীত
বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব ‘প্রবারণা পূর্ণিমা’ উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন বৌদ্ধ ধর্মের নেতাদের একটি প্রতিনিধি দল।
রোববার (৫ অক্টোবর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এ শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠিত হয়। এসময় বৌদ্ধ ধর্মীয় নেতারা প্রবারণা পূর্ণিমার মাহাত্ম্য বর্ণনা করে প্রধান উপদেষ্টাকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। তারা প্রধান উপদেষ্টাকে বিহার পরিদর্শনেরও আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
এ সময় রাজধানীর উত্তরায় বৌদ্ধদের শেষকৃত্যের জন্য জায়গা বরাদ্দ দেওয়ায় প্রধান উপদেষ্টাকে বিশেষভাবে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন বৌদ্ধ নেতৃবৃন্দ।
বৌদ্ধ নেতৃবৃন্দ বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বিষয়টি অবহিত করার পর ১০ দিনের মধ্যে শ্মশানের জন্য স্থান বরাদ্দ করে দেওয়া হয়েছে। এটা ইতিহাসে অনন্য। ঢাকায় বৌদ্ধধর্মের কেউ মারা গেলে শেষকৃত্যের জন্য বহু পথ পারি দিয়ে চট্টগ্রামে যেতে হতো। এখন মৃত্যুর পরে একটা জায়গা হলো। বৈঠকে এ বছর কঠিন চীবর দান উদযাপনের প্রস্তুতি সম্পর্কেও প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করা হয়েছে।
এছাড়া সার্বক্ষণিক সহযোগিতার জন্য ধর্ম মন্ত্রণালয় ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়েছেন বৌদ্ধ নেতৃবৃন্দ। পাশাপাশি, তীর্থযাত্রার জন্য সরকারি ব্যবস্থাপনা, বৌদ্ধ পন্ডিত, ধর্মগুরু ও দার্শনিক অতীশ দীপঙ্করের নামে সরকারিভাবে একটি জ্ঞানচর্চা কেন্দ্র গড়ে তোলাসহ বিভিন্ন দাবির বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন বৌদ্ধ নেতৃবৃন্দ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ধর্মরাজিক বৌদ্ধ মহাবিহারের অধ্যক্ষ বুদ্ধপ্রিয় মহাথের, বাংলাদেশ বুদ্ধিস্ট ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ভিক্ষু সুনন্দপ্রিয়, পার্বত্য ভিক্ষু সংঘের ভিক্ষু কল্যাণ জ্যোতি, বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান ভবেশ চাকমা, বাংলাদেশ বৌদ্ধ সমিতির ঢাকা অঞ্চলের সাধারণ সম্পাদক স্বপন বড়ুয়া চৌধুরী, বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের সচিব জয় দত্ত বড়ুয়া এবং বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রফেসর ড. সুকোমল বড়ুয়া, মং হলা চিং, সুশীল চন্দ্র বড়ুয়া, অধ্যাপক ববি বড়ুয়া, রুবেল বড়ুয়া ও রাজীব কান্তি বড়ুয়া।
পাশাপাশি ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
ভোরের আকাশ/এসএইচ
সংশ্লিষ্ট
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) কৃষিবিদ সমিতির দ্বি-বার্ষিক নির্বাচনে সভাপতি পদে কৃষিবিদ মো. হুমায়ুন কবির ও সাধারণ সম্পাদক পদে কৃষিবিদ ড. মো. আকিকুল ইসলাম আকিক বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন।নির্বাচনে ৩০টি পদে দুইটি প্যানেলে মোট ৬০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এই নির্বাচনে হুমায়ুন-আতিকুল প্যানেল ৩০টি পদের মধ্যে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ২১টি পদেই জয়লাভ করে বিএডিসিতে ইতিহাস সৃষ্টি করেছে।রবিবার (৫ অক্টোবর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।জানা যায়, হুমায়ুন-আতিকুল প্যানেল বিএনপি সমর্থিত এবং মাহমুদুল আলম-শফিকুল প্যানেল জামায়াত সমর্থিত সম্মিলিত প্যানেল হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।রাজধানীর গাবতলী বিএডিসি কেন্দ্রীয় বীজ পরীক্ষাগার অডিটোরিয়ামে শনিবার (৪ অক্টোবর) এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে ভোট গ্রহণ। নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩০০ জন। এর মধ্যে ঢাকা কেন্দ্রে ঢাকা অঞ্চলে ১৫৬ জন এবং যশোর, রাজশাহী, রংপুর ও ময়মনসিংহ কেন্দ্রে ১৪৪ জন ভোটার। ঢাকাসহ পাঁচটি বিভাগে একযোগে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।বিএডিসি কৃষিবিদ সমিতির নির্বাচনে হুমায়ুন-আতিকুল প্যানেলে সভাপতি পদে কৃষিবিদ মো. হুমায়ুন কবির ২০২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বিতা কৃষিবিদ মোহাম্মদ মাহমুদুল আলম পেয়েছেন ৮৯ ভোট। সাধারণ সম্পাদক পদে কৃষিবিদ ড. মো. আকিকুল ইসলাম আকিক ১৯১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বিতা কৃষিবিদ ড. মো. শফিকুল ইসলাম পেয়েছেন ১০৩ ভোট।হুমায়ুন-আতিকুল প্যানেলে নির্বাচিত অন্যরা হলেন- যুগ্ম সম্পাদক কৃষিবিদ মীর এনামুল হক (মুন্না) ও কৃষিবিদ মো. ফারুক হোসেন, দপ্তর সম্পাদক কৃষিবিদ মো. নেয়ামুল নাসির, সাংগঠনিক সম্পাদক কৃষিবিদ কে এম আবুল কালাম (আজাদ), কোষাধ্যক্ষ কৃষিবিদ মো. আব্দুর রহমান চৌধুরী (দুলাল), সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পাদক কৃষিবিদ লায়লা আক্তার, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক কৃষিবিদ শাহীনুর ইসলাম (সুমন)। এছাড়াও সদস্য পদে কৃষিবিদ ড. মো. নাজমুল ইসলাম মানিক, কৃষিবিদ মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ, কৃষিবিদ এ কে এম কামরুজ্জামান (শাহীন), কৃষিবিদ মো. শহীদুল ইসলাম (শিপন), কৃষিবিদ মো. এনামুল হক, কৃষিবিদ মো. হারুন অর রশীদ, কৃষিবিদ মো. আশরাফুল আলম, কৃষিবিদ মো. আওলাদ হাসান সিদ্দিকী।মোহাম্মদ মাহমুদুল আলম-শফিকুল প্যানেলের নির্বাচিতরা হলেন- জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি কৃষিবিদ ড. মো. মাহাবুবুর রহমান, সহ-সভাপতি কৃষিবিদ খালেদুম মনিরা, প্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ মো. নাসির উদ্দিন, সমাজকল্যাণ সম্পাদক কৃষিবিদ মো. হাফিজুর রহমান, কৃষি, পরিবেশ ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক কৃষিবিদ ড. মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম। সদস্য পদে নির্বাচিত হয়েছেন কৃষিবিদ ড. মো. ইসবাত, কৃষিবিদ মো. আল মামুন মেহেদী হাসান, কৃষিবিদ ড. মো. ইব্রাহিম খলিল, কৃষিবিদ ড. বশির আহম্মেদ।ভোরের আকাশ/মো.
কয়েকদিনের টানা ভারী বৃষ্টি আর উজানের পাহাড়ি ঢলে দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজ এলাকার ডালিয়া পয়েন্টে পানি প্রবাহ বিপৎসীমার (স্বাভাবিক ৫২.১৫ মিটার) ১০ সেন্টিমিটার ওপরে। এর প্রভাবে উত্তরের চার জেলা লালমনিরহাট, রংপুর, নীলফামারী ও কুড়িগ্রামে তিস্তাপাড়ে বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। ভারী বর্ষণ ও উজানে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। এর ফলে জেলার বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল ও সড়কসহ বহু এলাকার ঘরবাড়ি প্লাবিত হয়েছে।সোমবার (৬ অক্টোবর) সকাল ৬টায় তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে পানির প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ২৫ মিটার, যা বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপরে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গত দুই দিনের ভারী বৃষ্টি আর উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বাড়ছে। আজ সকাল থেকে ৯ ঘণ্টার ব্যবধানে ৭০ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। বেলা ৩টায় ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে; যা ক্রমেই বাড়ছে। ফলে নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের বেশ কিছু পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। ডুবে গেছে মৎস্য খামার, আমন ধানসহ নানান জাতের সবজির খেত। ডুবে গেছে চরাঞ্চলের রাস্তাঘাট। নৌকায় যোগাযোগ করছে চরাঞ্চলের মানুষ। এখন নৌকা ও কলার ভেলায় চলাচল করছে পানিবন্দি মানুষ।বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, সোমবার সকাল ৯টা পর্যন্ত অন্তত ১২ ঘণ্টা তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও কুড়িগ্রাম জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।অন্যদিকে তিস্তা নদীর কাউনিয়া পয়েন্টে রোববার (৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় পানির প্রবাহ রেকর্ড করা হয় বিপৎসীমার ৮০ সেন্টিমিটার নিচে, যা সোমবার সকালে বেড়ে দাঁড়ায় ২৫ সেন্টিমিটার নিচে। ধরলা নদীর শিমুলবাড়ি পয়েন্টে রোববার সন্ধ্যায় পানি ছিল বিপৎসীমার ১৮০ সেন্টিমিটার নিচে, সোমবার সকালে তা বেড়ে বিপৎসীমার মাত্র ৩ সেন্টিমিটার নিচে পৌঁছেছে।লালমনিরহাট আদিতমারী উপজেলার গোবর্দ্ধন গ্রামের শিউলী বেগম বলেন, রাস্তাঘাট ডুবে গেছে, আমাদের পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। দিন যত যাচ্ছে, পানি ততই বাড়ছে। গতরাতে পানি বাড়িতে ঢুকে গেছে, সারারাত গরু-ছাগল নিয়ে কষ্টে রয়েছি। এখন বাড়িতে কোমরসমান পানি। তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন না হলে এই কষ্ট থেকে মুক্তি পাব না।সিন্দুর্না এলাকার বাসিন্দা শামসুল ইসলাম জানান, রোববার (৫ অক্টোবর) দুপুরের পর থেকে নদীতে পানি বাড়ছে। নিম্নাঞ্চলের ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে। আমরা এখন পানিবন্দি। গত দুই মাস ধরে বারবার পানি ঢুকে আবার নেমে যাচ্ছে, এতে আমরা ভীষণ কষ্টে আছি।লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. শায়খুল আরিফিন বলেন, তিস্তা তীরবর্তী এলাকায় এখন রোপা আমন, চিনাবাদাম ও সবজির চাষ চলছে। পানি যদি তিন থেকে চার দিন স্থায়ী হয়, তাহলে কৃষকদের ব্যাপক ক্ষতি হবে। তবে এক থেকে দুই দিনের মধ্যে পানি নেমে গেলে ক্ষতি তুলনামূলক কম হবে।লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনিল কুমার জানান, ভারী বৃষ্টি ও উজানের ঢলের কারণে তিস্তার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এই প্রবণতা থাকতে পারে। আমরা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি এবং নদীপাড়ের বাসিন্দাদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে মাইকিং করা হয়েছে।সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনোনীত দাস বলেন, উজান আর বাংলাদেশের কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। বন্যা মোকাবিলায় উপজেলা প্রশাসনের সকল প্রস্তুতি রয়েছে।ভোরের আাকাশ/মো.আ.
বিশ্ব শিশু দিবস আজ সোমবার (৬ অক্টোবর)। ঢাকাসহ সারা দেশে এই দিবসটি পালন হবে। মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ শিশু একাডেমি প্রতিবছর অক্টোবর মাসের প্রথম সোমবার বিশ্ব শিশু দিবস পালন করে থাকে।এ ছাড়া শিশুর অধিকার, সুরক্ষা এবং শিশুর উন্নয়ন ও বিকাশে সংশ্লিষ্ট সবাইকে অধিকতর উদ্যোগী ও সচেতন করার লক্ষ্যে এ বছর ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত পালন করা হয়েছে শিশু অধিকার সপ্তাহ।এবারের বিশ্ব শিশু দিবসের প্রতিপাদ্য ‘শিশুর কথা বলব আজ, শিশুর জন্য করব কাজ’। শিশু দিবস উদযাপন উপলক্ষে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ শিশু একাডেমির আয়োজনে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।অনুষ্ঠানে মহিলা ও শিশুবিষয়ক উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মমতাজ আহমেদ এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ইউনিসেফের প্রতিনিধি ও শিশু প্রতিনিধিরা।বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহ-২০২৫’ উপলক্ষে যা বললেন প্রধান উপদেষ্টা‘বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহ-২০২৫’ উপলক্ষে রোববার দেওয়া এক বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘বাংলাদেশে ‘বিশ্ব শিশু দিবস-২০২৫’ উদযাপন উপলক্ষে আমি বাংলাদেশের শিশুদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা।’তিনি বলেন, ‘শিশুদের হাসি-খুশি মুখই নতুন বাংলাদেশের আশার প্রতীক। তাদের স্বপ্ন ও সৃজনশীলতা দিয়েই গড়ে উঠবে আগামী দিনের সমৃদ্ধ বাংলাদেশ। আমাদের অঙ্গীকার হোক প্রতিটি শিশুর জন্য নিরাপদ শৈশব, মানসম্মত শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, পুষ্টি, খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক বিকাশের পূর্ণ সুযোগ নিশ্চিত করা।’প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, শিশুদের সৎ, মমতাময় ও মুক্তচিন্তার পরিবেশে বড় হতে দিলে তারা আগামী দিনে হবে যোগ্য নাগরিক-যারা বিজ্ঞান, শিল্প-সাহিত্য, প্রযুক্তি, ক্রীড়া ও নেতৃত্বে বাংলাদেশকে বিশ্বে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেবে।তবে আজও দারিদ্র্য, শিশুশ্রম, সহিংসতা ও বৈষম্যের মতো চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রয়োজন সম্মিলিত প্রয়াস। আর এ প্রয়াসের মাধ্যমেই পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের সমন্বিত উদ্যোগেই কেবল শিশুদের অধিকার রক্ষা ও সুরক্ষিত ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা সম্ভব।’ড. ইউনূস আরও বলেন, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি ‘বিশ্ব শিশু দিবস-২০২৫’ আমাদের নতুন প্রতিজ্ঞায় উজ্জীবিত করবে, যাতে প্রতিটি শিশু নিরাপদ ও সৃজনশীল পরিবেশে বেড়ে ওঠে। শিশুদের জন্য একটি আলোকিত আগামী গড়াই হবে নতুন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অর্জন।শিশু দিবসের ঐতিহাসিক পটভূমিপ্রথম আন্তর্জাতিক ঘোষণা (১৯২৫): জেনেভায় অনুষ্ঠিত বিশ্ব শিশু কল্যাণ সম্মেলনে প্রথম আন্তর্জাতিক শিশু দিবস ঘোষণা করা হয়।প্রথম উদযাপন (১৮৫৭): এরও আগে ১৮৫৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটসের চেলসিতে চার্চ অফ দ্য রিডিমারের যাজক রেভারেন্ড ডা. চার্লস লিওনার্ড শিশুদের জন্য বিশেষ সেবা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দিনটি পালন শুরু করেন। প্রথমে এর নাম ছিল ‘রোজ ডে’, পরে ‘ফ্লাওয়ার সানডে’, আর শেষ পর্যন্ত ‘শিশু দিবস’।তুরস্কের জাতীয় ছুটি (১৯২০): তুরস্ক ২৩ এপ্রিলকে শিশু দিবস হিসেবে জাতীয় ছুটি ঘোষণা করে, যা ১৯২৯ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত হয়।জাতিসংঘের ভূমিকাশিশু দিবস উদযাপনের বিস্তারে জাতিসংঘ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।১ জুন নির্ধারণ (১৯৪৯): উইমেন্স ইন্টারন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ফেডারেশন ১ জুনকে আন্তর্জাতিক শিশু সুরক্ষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে।সর্বজনীন শিশু দিবস (১৯৫৪): জাতিসংঘ ১৯৫৪ সালে সর্বজনীন শিশু দিবস পালনের আহ্বান জানায়, শিশুদের মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া ও বিশ্বব্যাপী কল্যাণ নিশ্চিত করতে।২০ নভেম্বর বিশ্ব শিশু দিবস (১৯৫৯): জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ ১৯৫৯ সালের ২০ নভেম্বর শিশু অধিকারের ঘোষণাপত্র গ্রহণ করে। এরপর থেকে বিশ্বব্যাপী এ দিনকে শিশু দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে।ভোরের আকাশ/মো.আ.
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বর্তমান সরকার দেশের নগরাঞ্চলের টেকসই ও পরিবেশবান্ধব উন্নয়নে বদ্ধপরিকর। ঢাকাসহ দেশের সব নগরাঞ্চলের উন্নয়নে সরকার বহুবিধ কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করছে। সোমবার (৬ অক্টোবর) ‘বিশ্ব বসতি দিবস-২০২৫’ উপলক্ষে রোববার (৫ অক্টোবর) দেওয়া এক বাণীতে তিনি এ কথা বলেন।ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, প্রতি বছরের ন্যায় এবারও বাংলাদেশে যথাযোগ্য মর্যাদা ও উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ‘বিশ্ব বসতি দিবস-২০২৫’ উদযাপিত হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। এ বছর দিবসটির জাতিসংঘ নির্ধারিত প্রতিপাদ্য- ‘পরিকল্পিত উন্নয়নের ধারা, নগর সমস্যায় সাড়া’ বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত সময়োপযোগী ও তাৎপর্যপূর্ণ হয়েছে বলে আমি মনে করি।তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার দ্রুততম নগরায়িত দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। তবে যথাযথ পরিকল্পনার অভাবে নাগরিক জীবনযাত্রায় এ নগরায়নের কাঙ্ক্ষিত সুফল দেখা যাচ্ছে না। একদিকে যেমন রাজধানীকেন্দ্রিক অপরিকল্পিত নগরায়ন ও ভারসাম্যহীন উন্নয়ন হচ্ছে, অন্যদিকে দেশের অন্যান্য নগর এলাকার যথাযথ বিকাশ ও উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। একইসঙ্গে রাজধানীকেন্দ্রিক বিভিন্ন সংকট ক্রমাগত নাগরিক জীবনকে সমস্যাগ্রস্ত করছে। এসব সংকট মোকাবিলায় দ্রুত, স্বচ্ছ, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন জরুরি, যা এ বছরের বিশ্ব বসতি দিবসের প্রতিপাদ্যের সঙ্গে নিবিড়ভাবে সংশ্লিষ্ট।নগর সংকট মোকাবিলায় দ্রুততা ও স্বচ্ছতার সঙ্গে নানাবিধ পদক্ষেপ বাস্তবায়নে ঐকান্তিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আমরা একটি সম্ভাবনাময় নতুন বাংলাদেশ গড়ার পথে এগিয়ে চলেছি। এরই ধারাবাহিকতায় অচিরেই নগর সমস্যার টেকসই ও পরিবেশবান্ধব সমাধান এবং দেশের সব নগরাঞ্চলের সুষম উন্নয়ন নিশ্চিত করা সম্ভব হবে বলে আমি মনে করি।তিনি বলেন, বাংলাদেশের নগরাঞ্চলের সংকট মোকাবিলায় সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরকারি বিনিয়োগকারী, কমিউনিটি গ্রুপ, এনজিও এবং আন্তর্জাতিক সহযোগীসহ সংশ্লিষ্ট সব অংশীজনকে সমন্বিতভাবে ভূমিকা রাখতে হবে। ড. ইউনূস বলেন, আমি বিশ্বাস করি, সকলের যৌথ ও সচেতন অংশীদারিত্বের মাধ্যমেই আমাদের জাতীয় উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাসমূহ নগর জীবনের অবিচ্ছেদ্য বাস্তবতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে।প্রধান উপদেষ্টা বিশ্ব বসতি দিবস-২০২৫ উপলক্ষে গৃহীত সব কার্যক্রমের সাফল্য কামনা করেন।ভোরের আকাশ/মো.আ.