ভোরের আকাশ ডেস্ক
প্রকাশ : ০৬ অক্টোবর ২০২৫ ১০:১৮ এএম
ছবি : ভোরের আকাশ
বিশ্ব শিশু দিবস আজ সোমবার (৬ অক্টোবর)। ঢাকাসহ সারা দেশে এই দিবসটি পালন হবে। মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ শিশু একাডেমি প্রতিবছর অক্টোবর মাসের প্রথম সোমবার বিশ্ব শিশু দিবস পালন করে থাকে।
এ ছাড়া শিশুর অধিকার, সুরক্ষা এবং শিশুর উন্নয়ন ও বিকাশে সংশ্লিষ্ট সবাইকে অধিকতর উদ্যোগী ও সচেতন করার লক্ষ্যে এ বছর ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত পালন করা হয়েছে শিশু অধিকার সপ্তাহ।
এবারের বিশ্ব শিশু দিবসের প্রতিপাদ্য ‘শিশুর কথা বলব আজ, শিশুর জন্য করব কাজ’। শিশু দিবস উদযাপন উপলক্ষে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ শিশু একাডেমির আয়োজনে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে মহিলা ও শিশুবিষয়ক উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মমতাজ আহমেদ এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ইউনিসেফের প্রতিনিধি ও শিশু প্রতিনিধিরা।
বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহ-২০২৫’ উপলক্ষে যা বললেন প্রধান উপদেষ্টা
‘বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহ-২০২৫’ উপলক্ষে রোববার দেওয়া এক বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘বাংলাদেশে ‘বিশ্ব শিশু দিবস-২০২৫’ উদযাপন উপলক্ষে আমি বাংলাদেশের শিশুদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা।’
তিনি বলেন, ‘শিশুদের হাসি-খুশি মুখই নতুন বাংলাদেশের আশার প্রতীক। তাদের স্বপ্ন ও সৃজনশীলতা দিয়েই গড়ে উঠবে আগামী দিনের সমৃদ্ধ বাংলাদেশ। আমাদের অঙ্গীকার হোক প্রতিটি শিশুর জন্য নিরাপদ শৈশব, মানসম্মত শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, পুষ্টি, খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক বিকাশের পূর্ণ সুযোগ নিশ্চিত করা।’
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, শিশুদের সৎ, মমতাময় ও মুক্তচিন্তার পরিবেশে বড় হতে দিলে তারা আগামী দিনে হবে যোগ্য নাগরিক-যারা বিজ্ঞান, শিল্প-সাহিত্য, প্রযুক্তি, ক্রীড়া ও নেতৃত্বে বাংলাদেশকে বিশ্বে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেবে।
তবে আজও দারিদ্র্য, শিশুশ্রম, সহিংসতা ও বৈষম্যের মতো চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রয়োজন সম্মিলিত প্রয়াস। আর এ প্রয়াসের মাধ্যমেই পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের সমন্বিত উদ্যোগেই কেবল শিশুদের অধিকার রক্ষা ও সুরক্ষিত ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা সম্ভব।’
ড. ইউনূস আরও বলেন, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি ‘বিশ্ব শিশু দিবস-২০২৫’ আমাদের নতুন প্রতিজ্ঞায় উজ্জীবিত করবে, যাতে প্রতিটি শিশু নিরাপদ ও সৃজনশীল পরিবেশে বেড়ে ওঠে। শিশুদের জন্য একটি আলোকিত আগামী গড়াই হবে নতুন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অর্জন।
শিশু দিবসের ঐতিহাসিক পটভূমি
প্রথম আন্তর্জাতিক ঘোষণা (১৯২৫): জেনেভায় অনুষ্ঠিত বিশ্ব শিশু কল্যাণ সম্মেলনে প্রথম আন্তর্জাতিক শিশু দিবস ঘোষণা করা হয়।
প্রথম উদযাপন (১৮৫৭): এরও আগে ১৮৫৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটসের চেলসিতে চার্চ অফ দ্য রিডিমারের যাজক রেভারেন্ড ডা. চার্লস লিওনার্ড শিশুদের জন্য বিশেষ সেবা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দিনটি পালন শুরু করেন। প্রথমে এর নাম ছিল ‘রোজ ডে’, পরে ‘ফ্লাওয়ার সানডে’, আর শেষ পর্যন্ত ‘শিশু দিবস’।
তুরস্কের জাতীয় ছুটি (১৯২০): তুরস্ক ২৩ এপ্রিলকে শিশু দিবস হিসেবে জাতীয় ছুটি ঘোষণা করে, যা ১৯২৯ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত হয়।
জাতিসংঘের ভূমিকা
শিশু দিবস উদযাপনের বিস্তারে জাতিসংঘ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
১ জুন নির্ধারণ (১৯৪৯): উইমেন্স ইন্টারন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ফেডারেশন ১ জুনকে আন্তর্জাতিক শিশু সুরক্ষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে।
সর্বজনীন শিশু দিবস (১৯৫৪): জাতিসংঘ ১৯৫৪ সালে সর্বজনীন শিশু দিবস পালনের আহ্বান জানায়, শিশুদের মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া ও বিশ্বব্যাপী কল্যাণ নিশ্চিত করতে।
২০ নভেম্বর বিশ্ব শিশু দিবস (১৯৫৯): জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ ১৯৫৯ সালের ২০ নভেম্বর শিশু অধিকারের ঘোষণাপত্র গ্রহণ করে। এরপর থেকে বিশ্বব্যাপী এ দিনকে শিশু দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে।
ভোরের আকাশ/মো.আ.