নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৩ অক্টোবর ২০২৫ ০৯:১২ পিএম
জাতিসংঘে গণতন্ত্র ও মানবিক সংহতির বার্তা দিলেন ড. ইউনূস
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৮০তম অধিবেশনে অংশ নিয়ে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অঙ্গীকার ও মানবিক সংহতির প্রতিফলন ঘটিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। এ সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশের দায়িত্বশীল বৈশ্বিক ভূমিকাকে আরও শক্তিশালী করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
শুক্রবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক বার্তায় তিনি বলেন, নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত ইউএনজিএর উচ্চপর্যায়ের অধিবেশনে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলকে নেতৃত্ব দেন ড. ইউনূস। সেখানে তিনি বিশ্বনেতাদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখার পাশাপাশি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকেও অংশ নেন।
প্রেস সচিব জানান, বক্তব্যে ড. ইউনূস বাংলাদেশে গণতন্ত্র, স্বচ্ছতা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক শাসনব্যবস্থার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি স্বাধীন, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের প্রস্তুতির কথা তুলে ধরে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আশ্বস্ত করেছেন যে, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ রক্ষায় অটল।
শফিকুল আলম উল্লেখ করেন, তিন রাজনৈতিক দলের ছয়জন প্রতিনিধিকে নিয়ে এ সফরে গঠিত দলটি ছিল বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ। তারা কূটনীতিক, প্রবাসী নেতৃবৃন্দ ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করে শক্তিশালী বার্তা দিয়েছেন যে, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে ঐক্যবদ্ধভাবে এগোচ্ছে।
ড. ইউনূস সফরে ইতালি, ফিনল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়া, আলবেনিয়া, কসোভো ও ভুটানের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এসব বৈঠকে গণতন্ত্র, বাণিজ্য, জলবায়ু সহনশীলতা ও মানব উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। এছাড়া জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস, ইউএনএইচসিআর প্রধান ফিলিপো গ্রান্ডি, ইউনিসেফ নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেলসহ বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গেও আলোচনা করেন তিনি।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আয়োজিত নৈশভোজে যোগ দিয়ে ড. ইউনূস বিভিন্ন রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূতের সঙ্গে আলোচনায় আঞ্চলিক সহযোগিতা ও বহুপাক্ষিক কূটনীতিতে বাংলাদেশের ভূমিকাও গুরুত্ব পায়।
রোহিঙ্গা সংকট প্রসঙ্গে প্রেস সচিব বলেন, ড. ইউনূস সফরের কেন্দ্রীয় আলোচ্য বিষয় হিসেবে এক মিলিয়নের বেশি বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান। তিনি নিরাপদ, স্বেচ্ছায় ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য থেকে মোট ৯৬ মিলিয়ন ডলারের নতুন সহায়তার প্রতিশ্রুতি আনতে সক্ষম হন।
এছাড়া তিনি জাতিসংঘকে অনুরোধ করেন বাংলাদেশের এলডিসি থেকে উত্তরণের অগ্রগতি নিয়ে একটি স্বাধীন মূল্যায়ন পরিচালনার। যা আন্তর্জাতিক মহলে আস্থা বৃদ্ধি এবং উন্নয়নযাত্রায় স্বচ্ছতার প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হবে।
ইউএনজিএ সফরে বিদেশে কর্মসংস্থানের নতুন সম্ভাবনাও উন্মোচিত হয়েছে বলে জানান শফিকুল আলম। কসোভো, আলবেনিয়া ও ইউরোপের কয়েকটি দেশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় বাংলাদেশের শ্রমিকদের জন্য নতুন শ্রমবাজার সৃষ্টির বিষয়ে অগ্রগতি হয়, যা প্রবাসী আয় বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে।
ভোরের আকাশ//হ.র