কী প্রভাব পড়বে বাংলাদেশে
ভারত ও পাকিস্তানের চলমান উত্তেজনার তীব্রতা বেড়েই চলেছে। অব্যাহত রয়েছে পাল্টাপাল্টি হুমকি প্রদান। ইতোমধ্যে সীমান্তে দুই দফা গুলি বিনিময় করেছেন দুই দেশের সেনারা। গত কয়েক দিন ধরে দুই দেশের সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের মুখেই নানাভাবে ‘যুদ্ধ’ শব্দটি বেরিয়ে আসছে। তাই যুদ্ধের শঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন না আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা ও কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, যুদ্ধ বেঁধে গেলে তা বাংলাদেশের মারাত্মক উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াবে। এর মধ্যে রয়েছে-আঞ্চলিক নিরাপত্তা, রাজনীতি, অর্থনীতি, কূটনীতি, সীমান্ত নিরাপত্তা ও সন্ত্রাসবাদ ইস্যু।আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধ বাংলাদেশের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। দেশের অর্থনীতি থেকে শুরু করে সার্বিক পর্যায়ে এর চরম নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। পারমাণবিক শক্তি ধর দেশ দু’টির সংঘাত কেবল তাদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। বাংলাদেশের চতুর্দিকে ভারত। দু’দেশের মধ্যে রয়েছে চার হাজার কিলোমিটারের বেশি সীমান্তরেখা। যুদ্ধে ব্যবহৃত সামরিক উপাদানের স্ফুলিঙ্গের ক্ষতিকর প্রভাব বাংলাদেশে পড়বেই। চরম ঝুঁকিতে থাকবে দেশটির নিরাপত্তা। আর পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার হলে জীবনঝুঁকিতে পড়বে বাংলাদেশের মানুষ। নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, পাক-ভারত যুদ্ধ হলে বাংলাদেশের প্রতি ভারতের মনোযোগ কিছুটা কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ হলে বিচ্ছিন্নতাবাদী কিংবা জঙ্গি দলগুলোর তৎপরতা বেড়ে যেতে পারে। কাশ্মীর, আসাম, অন্ধপ্রদেশ এবং সেভেন সিস্টার্সসহ বেশকিছু এলাকায় ভারতের অনেকগুলো বিচ্ছিন্নতাপন্থি সংগঠন আছে। পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়লে ভারত স্বাভাবিকভাবেই এই সংগঠনগুলোর ওপর দৃষ্টি দিতে পারবে না। তখন চাপে পড়বে বাংলাদেশ। কারণ বিচ্ছিন্নতাবাদী বা জঙ্গি সংগঠনগুলোর একটি বহিরাগমন পথের দরকার হয়। ভারত সীমান্তবর্তী বাংলাদেশকে এই পথ হিসেবে বেছে নিতে পারে সংগঠনগুলো। তাছাড়া পাকিস্তান এই সংগঠনগুলোকে নিয়মিতভাবে অস্ত্র-অর্থ দিয়ে সহযোগিতা করে বলে অভিযোগ আছে। পাক-ভারত যুদ্ধ শুরু হলে, দিল্লিকে চাপে ফেলতে ইসলামাবাদ এই জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোকে অর্থ সাহায্য বাড়িয়ে দেবে। এতে করে বাংলাদেশেও জঙ্গি তৎপরতা বেড়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন বিশ্লেষকরা।ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ বেঁধে গেলে ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ ক্ষেত্রে অপূরণীয় ক্ষতির বিষয়টি তুলে ধরে অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ভারত থেকে বাংলাদেশ বড় অংকের পণ্য আমদানি করে। সে দেশে আমদানির তুলনায় রপ্তানি কম। ভারতের বাজারে পণ্য রপ্তানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা পায় বাংলাদেশ। সে দেশে রপ্তানি এক বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাতে বাংলাদেশের ৪০ বছর লেগেছিল। পরের ৭ বছরে দুই বিলিয়ন ডলারে পৌঁছায়। বর্তমান পরিস্থিতিতে ভারত যদি সামরিক খাতে বেশি মনোযোগী হয়, তাহলে তাদের বাণিজ্য প্রভাবিত হতে পারে, যার প্রভাব বাংলাদেশের ওপরেও পড়তে পারে। বিশ্লেষকরা বলছেন, সামরিক ও কূটনৈতিকভাবে বাংলাদেশকে কৌশলী হতে হবে। নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে যে কোনো বক্তব্য বুঝে-শুনে দেওয়া উচিত। একই সঙ্গে সীমান্ত নিরাপত্তা বৃদ্ধি ও সাইবার যুদ্ধে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য এড়াতে কঠোর নজরদারি রাখতে হবে।পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের বিষয়ে কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারতে পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের ক্ষমতাচ্যুতির পর থেকেই বড় ধরনের পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে বাংলাদেশের রাজনীতিতে। রাজনৈতিক পট পরিবর্তন বড় ধরনের প্রভাব দৃশ্যমান হচ্ছে ভূ-রাজনৈতিক সম্পর্কেও। বিশেষ করে, ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক অবনমনের পাশাপাশি পাকিস্তানের সঙ্গে সাম্প্রতিক ঘনিষ্ঠতার বিষয়টি দারুণভাবে লক্ষ্যণীয় হয়ে উঠেছে। সম্প্রতি দুই দেশের সেনাবাহিনীর উচ্চপর্যায়ের এক বৈঠকেও বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫৪ বছরের মধ্যে ঢাকা ও ইসলামাবাদের মধ্যে সম্পর্কের এতটা উষ্ণতা আগে দেখা যায়নি কখনও।দ্য নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পাকিস্তানে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার ইকবাল হোসেন খান বলেন, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে বাণিজ্য ছাড়িয়ে গেছে ১০০ কোটি ডলার। বাংলাদেশে পাকিস্তানি বহু পণ্যের ব্যাপক চাহিদা আছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই বাণিজ্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। একই সঙ্গে বাংলাদেশি পণ্যের বিরাট বাজার আছে পাকিস্তানে। তা থেকে পাকিস্তান সুবিধা পেতে পারে। ভ্রাতৃত্বপূর্ণ দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য পুনঃপ্রতিষ্ঠা হওয়ায় ইকবাল হোসেন খান সন্তোষ প্রকাশ করেন।কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারত ও পাকিস্তান কোনো দেশের পক্ষেই সরাসরি অবস্থান নিতে পারবে না বাংলাদেশ। ভারতের দিকে তাকিয়ে আপাতত পাকিস্তানের সঙ্গে দীর্ঘ বছর পর গড়ে ওঠা সম্পর্ক ও বাণিজ্য ইস্যু নিয়ে বাংলাদেশকে খুব ভেবে-চিন্তে এগোতে হবে।ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধ মানেই বাংলাদেশের ক্ষতি : নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) মুনরিুজ্জামান বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় বর্তমানে শান্তি বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। যে দুটি দেশের মধ্যে বর্তমানে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে, তাদের মধ্যে সংঘাতের ইতিহাস আছে। তারা দুটি বৃহৎ সামরিক শক্তি এবং পারমাণবিক শক্তিধর দেশ। কাজেই পুরো পরিস্থিতির ওপর আমাদের সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে এবং সব ধরনের সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। কারণ খুব দ্রুত অনেক কিছু পরিবর্তন হচ্ছে। ফলে প্রতিনিয়ত আমাদের দেখতে হবে যে কি কি ধরনের পরিবর্তন হচ্ছে। একই সঙ্গে প্রতিনিয়ত পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করতে হবে। তবে আমাদের প্রত্যাশা এই অঞ্চলে যেন কোনোভাবেই শান্তি বিঘ্নিত না হয়।নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) নাঈম আশফাক চৌধুরী বলেন, এখন পর্যন্ত যে পর্যায়ে আছে, তাতে করে ‘এ কাইন্ড অব পক্সি ওয়ার’র দিকেই সম্ভবত যাচ্ছে। দুটো দেশের পক্সি ওয়ারের মধ্যে আমরা যেন অযথা জড়িয়ে না পড়ি।তিনি আরও বলেন, যখন বিবৃতি বা অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে অভ্যন্তরীণভাবে বা কোনো আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে তখন এই কথাটা মনে রাখতে হবে-আমরা ন্যায়ের পথে, সত্যের পথে।গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান মনে করেন, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বর্তমানের যুদ্ধ পরিস্থিতি বাংলাদেশের জন্য ভালো নয়। দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগের জন্য বড় শঙ্কার কারণ না হলেও উদ্বেগের। কেননা পরমাণু শক্তির অধিকারী দুটি দেশের মধ্যে যুদ্ধাবস্থার সম্ভাব্য তাদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নাও থাকতে পারে। তিনি বলেন, ভারত-পাকিস্তানের উত্তেজনা আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। সার্ক দীর্ঘদিন ধরে তেমন সক্রিয় নয়। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা সার্কের মাধ্যমে আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়ানোর চেষ্টা করছেন। এরই মধ্যে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। তিনি আশা করেন, অতীতের মতো এবারও আলোচনার মাধ্যমে সংকট এড়ানো যাবে।মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ভারত থেকে বাংলাদেশ বড় অংকের পণ্য আমদানি করে। সে দেশে আমদানির তুলনায় রপ্তানি কম। ভারতের বাজারে পণ্য রপ্তানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা পায় বাংলাদেশ। সে দেশে রপ্তানি এক বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাতে বাংলাদেশের ৪০ বছর লেগেছিল। পরের ৭ বছরে দুই বিলিয়ন ডলারে পৌঁছায়। বর্তমান পরিস্থিতিতে ভারত যদি সামরিক খাতে বেশি মনোযোগী হয়, তাহলে তাদের বাণিজ্য প্রভাবিত হতে পারে, যার প্রভাব বাংলাদেশের ওপরেও পড়তে পারে।সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবির বলেন, বাংলাদেশকে বাইরের বিশ্বের মানুষ তো দক্ষিণ এশিয়ার বাইরের দেশ হিসেবে দেখছে না। তাই দক্ষিণ এশিয়ায় যখন উত্তেজনা বা যুদ্ধাবস্থা তৈরি হয় তখন তাদের (বহির্বিশ্ব) বাংলাদেশকে তার মধ্যেই দেখার একটা প্রবণতা তৈরি হয়।’তিনি আরও বলেন, ‘অবশ্যই আমরা বিনিয়োগের কথা ভাবি, ব্যবসা-বাণিজ্যের কথা ভাবি, বাইরে লোক পাঠানোর কথা বলি- এইসব বিষয়গুলো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। কূটনৈতিকভাবে এটা একটা বড় জায়গা।’ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার যুদ্ধমনোভাবাপন্ন পরিস্থিতি প্রসঙ্গে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব তৌহিদ হোসাইন বলেন, ‘এই অঞ্চলের বাসিন্দা হিসেবে বিষয়টি আমাদের জন্যও যথেষ্ট দুঃশ্চিন্তার। দুটি দেশই পরমাণু শক্তিসম্পন্ন হওয়ায় তারা চূড়ান্তভাবে যুদ্ধে অবতীর্ণ হলে তা এই অঞ্চলের মানুষের ওপর চরম নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।’বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ-এর প্রেসিডেন্ট মেজর জেনারেল (অব.) আ ন ম মুনিরুজ্জামান বলেন, ‘কাশ্মীরের পরিস্থিতি এখনো দেশ দুটির মধ্যে বিরাজমান। স্থানীয়ভাবে এর সমাধান না করা গেলে বৃহৎ পরিসরে এর প্রভাব পড়বে।’ দক্ষিণ এশিয়া অধিভুক্ত হওয়ায় বাংলাদেশেও এর প্রভাব পড়বে বলে মনে করেন তিনি।বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের গবেষক অর্থনীতিবিদ ড. নাজনীন আহমেদ বলেন, ‘আপাতত বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর কোনো কিছু না হলেও সার্কভুক্ত দেশ হিসেবে বাণিজ্যিক যেসব সুযোগ-সুবিধা পেতে পারত সেটা এই চলমান উত্তেজনা বাংলাদেশের জন্য একটা চ্যালেঞ্জ তৈরি করল।’ভারত-পাকিস্তানের উত্তেজনার প্রভাব শুরু বাংলাদেশ : ভারত-পাকিস্তানের সামরিক উত্তেজনার নেতিবাচক প্রভাব বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্যসহ বিভিন্ন খাতে পড়তে শুরু করেছে। বিশেষ করে শেয়ার বাজারে এরই মধ্যে মন্দার ঢেউ লেগেছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্র জানায়, ভারতের যুদ্ধবিমান পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের জঙ্গি আস্তানায় আঘাত হানায় বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগ থেকে গত কয়েকদিন বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে বড় ধরনের দরপতন ঘটে।বিনিয়োগকারীরা জানান, সবাই এখন বাজার পর্যবেক্ষণ করছে। দুই দেশের সামরিক পরিস্থিতি কোন দিকে যায় এর ওপর শেয়ারবাজারের ওঠানামা নির্ভর করবে। দুদেশের চলমান হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনা চূড়ান্তভাবে যুদ্ধের রূপ নিলে শেয়ার বাজারে বড় ধরনের অস্থিতিশীলতা তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তারা। অন্যদিকে হামলা-পাল্টা হামলার জের ধরে ভারতীয় মুদ্রার দর পতন হওয়ায় সে দেশের সঙ্গে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের আর্থিক লেনদেনে নতুন সঙ্কট তৈরির আশঙ্কা রয়েছে। এরই মধ্যে এশিয়ার সবচেয়ে বাজে পারফর্মিং মুদ্রার খ্যাতি পেয়েছে ভারতীয় রুপি। তাই প্রভাব পড়ছে।ব্যবসায়ীদের সূত্রগুলো জানায়, দুদেশের যুদ্ধের প্রস্তুতিতে বাজারে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। যেকোনো খবরই বাজারকে উত্তেজিত করছে। তাই বড় ব্যবসায়ীরা ভারতের সঙ্গে তাদের ব্যবসায়িক লেনদেনের লাগাম অনেকটা টেনে ধরেছেন। যার প্রভাব সহসাই বাজারে পড়বে।যুদ্ধ বাঁধলে দেখা দেবে দুর্ভিক্ষ : এদিকে ইন্টারন্যাশনাল ফিজিশিয়ানস ফর দ্য প্রিভেনশন অব নিউক্লিয়ার ওয়্যার এবং ফিজিশিয়ানস ফর সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটি এই দুটি সংগঠনের গবেষণামূলক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে পারমাণবিক যুদ্ধ বাধলে বিশ্বে দুর্ভিক্ষ দেখা দেবে। এতে অন্তত ২০০ কোটি মানুষের মৃত্যু হতে পারে। প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে মানবসভ্যতা।প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই দুই দেশের মধ্যে সীমিত পর্যায়েও পারমাণবিক অস্ত্রের লড়াই হলে বিশ্বের আবহাওয়ামন্ডলের ব্যাপক ক্ষতি ও শস্যক্ষেত্র ধ্বংস হবে। পরিণামে খাদ্যপণ্যের বিশ্ববাজারে বহু গুণ খারাপ প্রভাব পড়বে। খাদ্যশৃঙ্খলায় চরম বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়ার প্রকট আশঙ্কা রয়েছে। পরমাণু যুদ্ধের ফলে আবহাওয়ামন্ডলে যে কার্বন অ্যারোসল কণা ছড়াবে, তাতে সুদূর যুক্তরাষ্ট্রেও এক দশক শস্যকণা ও সয়াবিনের উৎপাদন প্রায় ১০ শতাংশ কমে যাবে। এ কণার প্রভাবে চীনে প্রথম চার বছর গড়ে ২১ শতাংশ ও পরের ছয় বছর আরও ১০ শতাংশ ধানের উৎপাদন কমে যাবে। মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হবে গমের উৎপাদনও।ভোরের আকাশ/এসএইচ