নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২২ জুন ২০২৫ ১২:৪৫ এএম
নির্বাচনের প্রস্তুতিতে পুরোদমে কাজ করছে ইসি
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন (ইসি) পুরোদমে প্রস্তুতি নিচ্ছে। সরকারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে ইসি সব কার্যক্রম জোরদার করেছে বলে জানিয়েছেন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী নেওয়াজ।
রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা বাসসকে তিনি জানান, “আমাদের নির্বাচনী আইনের কিছু সংশোধনী নিয়ে কাজ চলছে, যাতে নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন আয়োজন সম্ভব হয়। সরকার থেকে যখনই সিদ্ধান্ত আসবে, নির্বাচন কমিশন তখনই তফসিল ঘোষণা করবে।”
ইসির প্রস্তুতি নিয়ে আলী নেওয়াজ বলেন, “নির্বাচন একটি জটিল প্রক্রিয়া হলেও তা অসাধ্য নয়। সতর্কতার সঙ্গে সবকিছু সম্পন্ন করার লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি।”
এরই মধ্যে ভোটার তালিকা হালনাগাদ, সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ, ভোটকেন্দ্র সংস্কার, নির্বাচনী সামগ্রী কেনাকাটা, নতুন রাজনৈতিক দল ও দেশি পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধনসহ বিভিন্ন প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
ইসির কর্মপরিকল্পনার অংশ হিসেবে অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপ, নির্বাচন সংক্রান্ত আইন ও বিধিমালা সংশোধন এবং বিভিন্ন নির্দেশিকা হালনাগাদের কাজও এগিয়ে চলছে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন শনিবার সাংবাদিকদের বলেন, “নির্বাচনের সময়সূচি যথাসময়ে ঘোষণা করা হবে। আমরা আমাদের প্রস্তুতির দিকে মনোনিবেশ করছি।”
তিনি আরও জানান, নির্বাচন পরিচালনার জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ কর্মপরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে, যাতে প্রতিটি কাজের শুরু ও শেষের নির্ধারিত সময় নিরূপণ করা আছে।
সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন ‘রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা ২০২৫’-এর খসড়াও চূড়ান্ত করেছে। এতে পোস্টারের ব্যবহার নিষিদ্ধ, পরিবেশবান্ধব উপকরণ ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা এবং বিধি লঙ্ঘনে সর্বোচ্চ দেড় লাখ টাকা জরিমানার বিধান যুক্ত করা হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ জানান, চলতি সপ্তাহের শেষ নাগাদ ৭৬টি সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণের কাজ শেষ হতে পারে। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে ৬৩৮টি আবেদন জমা পড়েছে।
ভোটার তালিকা তৈরির কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। ৩০ জুন পর্যন্ত এই কাজ শেষ করার সময় রয়েছে কমিশনের হাতে।
কমিশন সূত্র জানায়, নির্বাচন পরিচালনায় প্রয়োজনীয় সামগ্রী যেমন স্বচ্ছ ব্যালটবাক্স, ব্যালট পেপার, অমোচনীয় কালি, সিল, থলে, খামসহ অন্যান্য উপকরণ কেনার প্রক্রিয়া শেষের পথে। জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে এসব ক্রয়ের ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়া হতে পারে।
এছাড়াও ভোটকেন্দ্র নির্মাণ, পর্যবেক্ষক নীতিমালা তৈরি, নতুন দল নিবন্ধন ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক কাজেও অগ্রগতি হয়েছে। নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের জন্য আবেদন গ্রহণের সময়সীমা ২২ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এ পর্যন্ত ৬৫টি রাজনৈতিক দল আবেদন করেছে।
সবশেষে, অতিরিক্ত সচিব আলী নেওয়াজ আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, “আমরা আশা করছি, সব প্রস্তুতি সময়মতো সম্পন্ন করে নির্ধারিত সময়েই নির্বাচন আয়োজন করতে পারব।”
সূত্র: বাসস
ভোরের আকাশ//হ.র