স্বপ্নে কোরআন তিলাওয়াত করার অর্থ ও ব্যাখ্যা
কোরআন তিলাওয়াত হলো এক মহৎ আমল, যা আল্লাহ তায়ালা বিশেষভাবে প্রশংসা করেছেন। পবিত্র কোরআন তিলাওয়াতকারীদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে রয়েছে অসংখ্য বরকত ও সওয়াব।
সূরা ফাতিরের আয়াতে আল্লাহ বলেন, যারা তাঁর কিতাব তিলাওয়াত করে, নামাজ পালনে নিষ্ঠাবান এবং তাদের রিজিক থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে খরচ করে, তাদের জন্য এমন একটি ব্যবসা রয়েছে যা কখনো লোকসান হয় না। আল্লাহ তাদের পূর্ণ প্রতিদান দিবেন এবং তাঁর দয়ায় আরও বরকত দেবেন।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, প্রতিটি কোরআনের হরফ পড়ার জন্য দশ গুণ সওয়াব দেওয়া হয়। যেমন ‘আলিফ’, ‘লাম’ এবং ‘মীম’ প্রত্যেকটি আলাদা আলাদা হরফ হিসেবে গন্য হবে।
স্বপ্নে নিজেকে কোরআন তিলাওয়াত করতে দেখা অনেকেই দেখে এবং এর পেছনে রয়েছে বিশেষ মানসিক ও আধ্যাত্মিক অর্থ।
বিশেষ ব্যাখ্যা অনুযায়ী, স্বপ্নে কোরআন তিলাওয়াত দেখা মানে হলো আল্লাহ তায়ালা ব্যক্তি বা স্বপ্নদ্রষ্টার মর্যাদা বৃদ্ধি করবেন এবং তার জীবনে খুশি নেমে আসবে।
যদি কেউ স্বপ্নে কোরআন মুখস্থ করতে দেখে, তবে তার অর্থ তিনি আদালতে সঠিক ও ন্যায়পরায়ণ প্রমাণিত হবেন এবং একজন আমানতদার মুমিন হিসেবে সম্মানিত হবেন। সেই ব্যক্তি সৎ কাজ প্রচার করবেন এবং অসৎ কাজ থেকে বিরত রাখবেন।
স্বপ্নে কোরআন খতম করা দেখলে বোঝা যায়, তার কোনো বড় আশা পূরণ হবে এবং আল্লাহ তার জন্য প্রচুর সওয়াব দান করবেন।
অপরদিকে, যারা কোরআনের হাফেজ না হলেও স্বপ্নে দেখেন যে তিনি কোরআন মুখস্থ করেছেন, তা নির্দেশ করে যে তাদের সামাজিক মর্যাদা ও শক্তি বৃদ্ধি পাবে।
যদি স্বপ্নে দেখা যায় কেউ কোরআন পাঠ করছেন, কিন্তু কোন অংশ বা আয়াত মনে না থাকে, তবে বোঝা যাবে তিনি অসুস্থ হলে সুস্থ হবেন অথবা ব্যবসায়ী হলে ভালো মুনাফা লাভ করবেন।
স্বপ্নে কোরআন শ্রবণ করাও সুখবর বয়ে আনে—এটি শক্তির বৃদ্ধি ও ষড়যন্ত্র থেকে রক্ষা পাওয়ার ইঙ্গিত।
আর যদি কেউ স্বপ্নে দেখেন যে তিনি কোরআন তিলাওয়াত করছেন এবং অন্যরা তা শ্রবণ করছে, তাহলে তার সমাজে সম্মান ও প্রভাব বাড়বে এবং লোকেরা তার কথায় মেনে চলবে।
স্বপ্নের এই ব্যাখ্যাগুলো মানুষকে আত্মবিশ্বাস ও আধ্যাত্মিক শক্তি দেয়। তাই পবিত্র কোরআনের সঙ্গে সম্পর্কিত এই ধরনের স্বপ্নকে আশীর্বাদের দৃষ্টিতে দেখা হয়।
ভোরের আকাশ//হ.র
সংশ্লিষ্ট
পবিত্র কাবা শরিফকে নতুন গিলাফে (কিসওয়া) আচ্ছাদন করা হয়েছে। সৌদি আরবের মসজিদুল হারাম ও মসজিদে নববি পরিচালনা পরিষদের তত্ত্বাবধানে গত ২৫ জুন আসরের নামাজের পর গিলাফ পরিবর্তনের কাজ শুরু হয় এবং তা সম্পূর্ণ হয় ২৬ জুন সকালে। সৌদি প্রেস এজেন্সির (এসপিএ) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।এই বছরের নতুন কিসওয়া তৈরিতে প্রায় ১১ মাস ধরে নিরলসভাবে কাজ করেছেন ডিজাইনার, ক্যালিগ্রাফার ও অভিজ্ঞ তাঁতিরা। প্রায় ১,৪০০ কেজি ওজনের এই গিলাফে রয়েছে ৪৭টি রেশমি প্যানেল, যেগুলোর প্রতিটিতে সোনালি বর্ণের হিজাম (বেল্ট) এবং রুপা ও সোনার সুতোয় সূচিকর্মে লেখা রয়েছে কোরআনের ৬৮টি আয়াত।নতুন কিসওয়ার কাপড় প্রস্তুত করা হয়েছে কিং আবদুল আজিজ কমপ্লেক্স ফর দ্য কিসওয়া অব দ্য কাবা-তে। ২০২৪ সালের জুলাইয়ে এর উৎপাদন শুরু হয়। কাবার মাহাত্ম্য তুলে ধরতে এবারের কিসওয়ায় যুক্ত করা হয়েছে আল্লাহর গুণবাচক নাম, কালেমা তাইয়্যিবা, একত্ববাদের আহ্বান ও ভক্তিভাব প্রকাশকারী আয়াত।কিসওয়ার বাইরের অংশ তৈরি হয়েছে উন্নতমানের কালো রেশম দিয়ে, যা দীপ্তি ও দীর্ঘস্থায়িত্ব বজায় রাখে। ভিতরের স্তরে ব্যবহার করা হয়েছে সবুজ রেশম, সাদা সুতির কাপড় ও লাল রেশম, যা সৌন্দর্য ও কাঠামোগত দৃঢ়তা নিশ্চিত করে।পুরো প্রস্তুতি ও তৈরি প্রক্রিয়ায় প্রতিটি ধাপে উচ্চমান বজায় রাখা হয়— কাপড় কাটা, বোনা, সূচিকর্ম ও সেলাইসহ সব কাজ অত্যন্ত যত্নসহকারে সম্পন্ন করা হয়, যেন এটি পবিত্রতা ও সৌন্দর্যের মাপকাঠি পূরণ করে।নতুন কিসওয়ায় ঈমান, ঐক্য, দয়া ও তাওহিদের (একেশ্বরবাদ) বার্তা প্রতিফলিত হয়েছে। এটি কেবল ধর্মীয় ভাবগম্ভীরতা নয়, ইসলামী ঐতিহ্য ও শিল্পকলার এক অনন্য নিদর্শন হিসেবেও বিবেচিত। ভোরের আকাশ/হ.র
পরমহংস সত্যানন্দ মহারাজ ও ১০৮ স্বামী মঙ্গলদাশ মোহন্ত মহারাজ যোগসিদ্ধাশ্রমের প্রয়াত আশ্রমাধ্যক্ষ মহাত্মা স্বামী নিত্যানন্দ পুরী মহারাজের ৭৩তম আবির্ভাব উৎসব আজ মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হবে। জগন্নাথ দেবের রথযাত্রার শুভদিনে মহাত্মা স্বামী নিত্যানন্দ পুরী মহারাজের শুভ আবির্ভাব দিবসটি পালিত হবে।চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার কেলিশহর ইউনিয়নের স্বামী সত্যানন্দ ও মঙ্গলদাস মোহন্ত কালাবাবা যোগসিদ্ধাশ্রমে এ উৎসবের আয়োজন করা হবে। আজ ভোরে পবিত্র চণ্ডীপাঠ, সকালে গীতাপাঠ ও পুষ্পযজ্ঞ এবং দুপুরে মহাপ্রসাদ বিতরণ করে উৎসবটি পালন করা হবে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সাধু, সন্ন্যাসী ও স্বামীজির ভক্ত সেখানে উপস্থিত থাকবেন। শুভ আবির্ভাব উৎসবে পৌরহিত্য করবেন আশ্রম অধিপতি শ্রী অজিত বিশ্বাস (পুরী) মহারাজ।যোগসিদ্ধাশ্রম প্রাঙ্গণের মাঙ্গলিক কর্মসূচি ও স্মৃতিচারণ সভার মাধ্যমে অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাতিঘর নিত্যানন্দ পুরী মহারাজকে স্মরণ করা হবে। ২০২১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি রোববার সকালে নিজ আশ্রমে পরলোকগমন করেন নিত্যানন্দ পুরী। যোগসিদ্ধাশ্রমটিতে ছয় ধর্মের অংশগ্রহণে আন্তঃধর্ম সম্মেলন ও সম্প্রীতি সভার প্রবর্তক তিনি। যেখানে অংশ নিয়ে সম্প্রীতির ও মানবতার কথা বলতেন হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, মুসলিম, শিখ ও বাহাইয়ের ধর্মগুরু ও প্রজ্ঞাবানরা। নিত্যানন্দ পুরী মহারাজ এ পুণ্যময় রথযাত্রার দিনে রাউজান উপজেলার কোয়াপাড়া গ্রামে আবির্ভূত হন।ভোরের আকাশ/জাআ
বাংলাদেশের আকাশে ১৪৪৭ হিজরি সালের পবিত্র মহররম মাসের চাঁদ দেখা গেছে। সেই হিসেবে শুক্রবার (২৭ জুন) থেকে শুরু হচ্ছে হিজরি নববর্ষ। ফলে আগামী ৬ জুলাই (রোববার) দেশব্যাপী পালিত হবে পবিত্র আশুরা।বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) সন্ধ্যায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন।তিনি জানান, চাঁদ দেখা সংক্রান্ত তথ্য দেশের বিভিন্ন জেলা প্রশাসন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কার্যালয়সমূহ, আবহাওয়া অধিদফতর এবং মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান থেকে সংগ্রহ করে তা যাচাই-বাছাই করা হয়। এতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশের আকাশে মহররম মাসের চাঁদ দেখা যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়।সভায় ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব এ কে এম আফতাব হোসেন প্রামাণিক, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক আ. ছালাম খান, ওয়াকফ প্রশাসক মো. নূর-ই-আলমসহ বিভিন্ন সরকারি সংস্থার প্রতিনিধি ও কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।উল্লেখ্য, হিজরি বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী মহররম মাসের দশম দিনটি ‘আশুরা’ নামে পরিচিত। এই দিনটি ইসলামী ঐতিহ্যে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা এ দিনে রোজা পালন করে থাকেন। নবী মুহাম্মদ (সা.) এ দিন রোজা রাখার প্রতি গুরুত্বারোপ করেছিলেন। হাদিস শরিফে এসেছে, আশুরার রোজার মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা বিগত বছরের ছোটখাটো গুনাহ ক্ষমা করে দেন (মুসলিম, হাদিস: ১১৬২)। অনেক মুসলমান এ দিন এবং তার আগের বা পরের দিন মিলিয়ে দুদিন রোজা পালন করে থাকেন।ভোরের আকাশ/হ.র
পবিত্র হজ পালন শেষে সৌদি আরব থেকে বুধবার (২৫ জুন) রাত পর্যন্ত ৫১ হাজার ৬১৫ জন হাজি দেশে ফিরেছেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৫ হাজার ৭ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনার ৪৬ হাজার ৬০৮ জন দেশে ফিরেছেন।বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) হজ সম্পর্কিত সর্বশেষ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এ পর্যন্ত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইটে ২২ হাজার ১৪৯ জন, সৌদি পতাকাবাহী সাউদিয়া এয়ারলাইনসের ফ্লাইটে ২১ হাজার ২৫ এবং ফ্লাইনাস এয়ারলাইনসের ফ্লাইটে ৮ হাজার ৪৪১ জন দেশে ফিরেছেন। মোট ১৩৪টি ফিরতি ফ্লাইট পরিচালিত হয়েছে এখন পর্যন্ত। এর মধ্যে ৫৮টি ছিল বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের, ৫৪টি সাউদিয়ার এবং ২২টি ফ্লাইনাস এয়ারলাইনসের।হজ পালনে গিয়ে এখন পর্যন্ত ৩৮ জন বাংলাদেশি সৌদি আরবে মারা গেছেন। তাদের মধ্যে ২৭ জন পুরুষ এবং ১১ জন নারী। এদের মধ্যে ২৫ জন মক্কায়, ১১ জন মদিনায় এবং জেদ্দা ও আরাফায় ১ জন করে মারা গেছেন।সৌদি আরবের সরকারি হাসপাতালগুলো এ পর্যন্ত ৩০৮ জন বাংলাদেশিকে চিকিৎসা সেবা দিয়েছে। এদের মধ্যে এখনো ২৪ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন।হজযাত্রীদের শেষ ফিরতি ফ্লাইট আগামী ১০ জুলাই। ভোরের আকাশ/আজাসা