স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশ : ২২ জুলাই ২০২৫ ০৪:০৬ পিএম
সাফের মঞ্চে অনুপস্থিত সালাউদ্দিন, সাগরিকার পুরস্কার নিয়ে বিভ্রান্তি
নানান নাটকীয়তা ও অনিয়মের মধ্য দিয়ে পর্দা নেমেছে সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী টুর্নামেন্টের। বাংলাদেশ-ভুটান ম্যাচে দুই অর্ধ দুই মাঠে পরিচালনার বিরল ঘটনার পর, শেষ দিনেও নতুন করে বিতর্ক তৈরি হয়েছে— বিশেষ করে বাংলাদেশের ফুটবলার সাগরিকা ও পুরস্কার বিতরণ ঘিরে।
টুর্নামেন্ট শেষে সাফের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে সাগরিকাকে "মোস্ট ভ্যালুয়েবল প্লেয়ার" (টুর্নামেন্ট সেরা) হিসেবে উল্লেখ করে পোস্ট দেওয়া হয়। তার হাতে দেওয়া ট্রফিতেও লেখা ছিল সেই শিরোনাম। অথচ পুরস্কার বিতরণ মঞ্চে উপস্থাপক সাগরিকাকে "গতকালের ম্যাচ সেরা" হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন।
পরবর্তীতে বাফুফের ফেসবুক ও অন্যান্য মিডিয়ায় সাগরিকার স্বীকৃতিকে বলা হয় "মোস্ট ভ্যালুয়েবল প্লেয়ার (ফাইনাল)"— অথচ এই টুর্নামেন্টে কোনো আনুষ্ঠানিক ফাইনাল ম্যাচই ছিল না।
ফলে এক ফুটবলারের জন্য তিন ধরনের স্বীকৃতির ব্যাখ্যা উঠে আসে— সাফের পোস্ট অনুযায়ী পুরো টুর্নামেন্টের সেরা, মঞ্চে ঘোষিত ম্যাচসেরা, আর বাফুফে বলছে ফাইনালের সেরা। এই বিভ্রান্তি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হলে সাফের সাধারণ সম্পাদক পুরুষোত্তম ক্যাটেল বলেন, "টুর্নামেন্ট সেরা নয়, গতকালের ম্যাচ সেরার স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।"
তবে প্রশ্ন উঠেছে, ডাবল রাউন্ড রবিন লিগ ভিত্তিক এই টুর্নামেন্টে ১১টি ম্যাচে কোনো ম্যাচসেরা দেওয়া হয়নি, শুধুমাত্র বাংলাদেশ-নেপাল ম্যাচেই কেন ব্যতিক্রম ঘটল? বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা অব্যাহত থাকায় সাফ তাদের মূল পোস্ট এডিট করেছে।
সাগরিকা টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় ম্যাচে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন, ফলে তিনি পরবর্তী তিন ম্যাচ খেলতে পারেননি। টুর্নামেন্টের অর্ধেকের বেশি সময় মাঠের বাইরে ছিলেন। এমন একজন খেলোয়াড়কে যদি টুর্নামেন্ট সেরা হিসেবে পুরস্কৃত করা হয়, সেটি নিঃসন্দেহে সমালোচনার জন্ম দেয়।
উল্লেখ্য, এই টুর্নামেন্টে টুর্নামেন্ট সেরা গোলরক্ষকের পুরস্কার পেয়েছেন বাংলাদেশের মিলি এবং সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছেন পূর্ণিমা রায়। তাদের হাতে সুনির্দিষ্ট ট্রফি তুলে দেওয়া হয়।
টুর্নামেন্টের আরেকটি আলোচিত বিষয় ছিল সাফ সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের অনুপস্থিতি। বাংলাদেশের মাটিতে অনুষ্ঠিত একটি আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট হলেও তিনি স্টেডিয়ামে উপস্থিত ছিলেন না। এমনকি পুরস্কার বিতরণ মঞ্চেও তাকে দেখা যায়নি। এর আগেও ভারতে অনুষ্ঠিত সাফের বেশ কয়েকটি টুর্নামেন্টে তিনি অনুপস্থিত ছিলেন, আর ঢাকায় থাকলেও মঞ্চে উঠেননি।
সাফের সাধারণ সম্পাদক ক্যাটেল এই বিষয়ে বলেন, "সভাপতির উপস্থিতি বাধ্যতামূলক নয়।"
এবারের টুর্নামেন্টে কোনো প্রাইজমানি ছিল না, শুধু ট্রফিই ছিল ফুটবলারদের অর্জন। অথচ টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ের জন্য আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি ছিল না— যা খেলোয়াড়দের অনুপ্রেরণায় বড় ঘাটতির ইঙ্গিত দেয়। এ প্রসঙ্গে সাফ সচিব বলেন, "আমরা এখান থেকে শিক্ষা নিচ্ছি। ভবিষ্যতে প্রতিটি ম্যাচেই সেরার স্বীকৃতি দেওয়ার চেষ্টা থাকবে। পাশাপাশি টুর্নামেন্টের অন্যান্য পুরস্কারও বিবেচনায় রাখা হবে।"
ভোরের আকাশ//হ.র