সাকিবের সঙ্গে সম্পর্কের বরফ গলবে, আশাবাদী তামিম
দীর্ঘদিনের সহযোদ্ধা, একসময় ছিলেন বন্ধুত্বের প্রতীক। কিন্তু সময়ের বিবর্তনে তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসানের সম্পর্ক আজ অনেকটাই শীতল। যদিও সেই দূরত্ব ঘোচানোর আশার কথা শুনিয়েছেন দেশের অন্যতম সফল ওপেনার তামিম ইকবাল।
সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তামিম অকপটে স্বীকার করেন, সাকিবই বাংলাদেশের ক্রীড়া ইতিহাসের সর্বকালের সেরা ক্রীড়াবিদ। তার ভাষায়, “সত্যটা বলতেই হবে। আর আমি এটা প্রথমবার বলছি না। বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে যদি একজনের নাম নিতে হয়, তবে সেটা হবে সাকিব আল হাসান। ক্রিকেটে সে যা অর্জন করেছে, তা অবিশ্বাস্য। আমাদের ব্যক্তিগত সম্পর্ক যেমনই হোক, সত্য তো সত্যই থাকবে।”
তামিম জানান, সাকিবের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক কখনোই তার এই মতামতকে প্রভাবিত করেনি। “অনেকে বলে, আমরা দুজন তারকা—তাই নাকি দ্বন্দ্ব! আমি তা মনে করি না। আমি তো বলেই আসছি, সাকিবই সেরা,” বলেন তিনি।
একসময় একসঙ্গে সময় কাটানো, একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া, এমনকি মাঠে একসঙ্গে দলকে টেনে তোলার স্মৃতিগুলোও তুলে ধরেন তামিম। তার মতে, এখনো যদি দুইজন একসাথে কাজ করতে পারেন, তাহলে দেশের ক্রিকেট উপকৃত হবে। যদিও তামিম এখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বাইরে, তবুও ভবিষ্যতে ভিন্ন ভূমিকায় দুইজন একসঙ্গে কাজ করতে পারেন বলেই ইঙ্গিত দেন তিনি।
তিনি বলেন, “আমি কখনো বিশ্বাস করি না যে সম্পর্ক আর কখনও ঠিক হবে না। আমি হয়তো কিছু ভুল করেছি, সেও করেছে। যেদিন আমরা বুঝে একসাথে বসতে পারব, সেদিন সব সমস্যার সমাধান হবে। এখন আমরা একসঙ্গে মাঠে না খেললেও, আমি বিশ্বাস করি—দুজন মিলে আবারও বাংলাদেশ ক্রিকেটকে উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারব।”
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে সর্বশেষ বাংলাদেশের জার্সি গায়ে দেন তামিম ইকবাল। এরপর বিপিএলের সময় জানান, জাতীয় দলে ফেরা হচ্ছে না আর। অপরদিকে, সাকিব আল হাসান রাজনৈতিক যোগসূত্রে পড়ে গেছেন বিতর্কের মুখে।
গত বছর ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন তিনি। রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে জনরোষের ভয়ে দেশে ফিরতে পারছেন না বলেই ধারণা করা হচ্ছে। যদিও ওই সময়ের পর দেশের হয়ে চারটি ম্যাচ খেলেছিলেন সাকিব, এরপর আর মাঠে দেখা যায়নি তাকে।
তামিম-সাকিবের দ্বন্দ্বের অবসান এবং দেশের ক্রিকেটের স্বার্থে তাদের পুনর্মিলনের প্রত্যাশায় বুক বেঁধে আছে ক্রিকেটপ্রেমীরা।
ভোরের আকাশ//হ.র
সংশ্লিষ্ট
আসন্ন বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) ঘিরে যখন প্রস্তুতি শুরু করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি), তখনই জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবালের মাঠে ফেরার সম্ভাবনা নিয়ে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা। যদিও সম্প্রতি নিজেই বিপিএলে ফেরার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন তামিম, তবে তার শারীরিক সক্ষমতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন জাতীয় দলের ট্রেইনার ইয়াকুব চৌধুরী ডালিম।গতকাল (মঙ্গলবার) মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ডালিম বলেন,“ক্রিকেটে ফেরার বিষয়ে তামিম ইকবালকে নিয়ে বলব— বিনোদনের জন্য খেলতে পারেন। কিন্তু বিপিএল বা সেমিফাইনাল-ফাইনালের মতো উচ্চ মানের প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচে অংশ নেওয়া থেকে বিরত থাকাই ভালো। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত তামিমকেই নিতে হবে।”তিনি আরও বলেন, “আমি বলব, তামিম যেন অনুশীলনে ফিরে আসে, হালকা খেলে। তবে সেটা যেন চাপমুক্ত, মজার অংশ হিসেবে হয়।”টানা দুটি বিপিএল আসরে চ্যাম্পিয়ন হওয়া তামিম চলতি বছরের ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ (ডিপিএল)-এর সময় বিকেএসপিতে হৃদরোগে আক্রান্ত হন। ম্যাচ চলাকালীন হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে দ্রুত তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। মাঠে প্রাথমিক সিপিআর (কার্ডিওপালমোনারি রিসাসিটেশন) দিয়ে জীবনরক্ষার গুরুত্বপূর্ণ কাজটি করেছিলেন ইয়াকুব ডালিম নিজেই।বর্তমানে শারীরিকভাবে তুলনামূলক স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছেন তামিম। তবে প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে ফেরার আগে তার শরীর কতটা প্রস্তুত, সেটি গভীরভাবে মূল্যায়ন করা জরুরি। ট্রেইনারের মতে, ঝুঁকির জায়গাটা বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।তবে ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য আশার খবর হলো—তামিম নিজেই জানিয়েছেন, বিপিএলের মাধ্যমে আবার মাঠে ফেরার চেষ্টা করবেন।ভোরের আকাশ//হ.র
বাংলাদেশের ফুটবলে প্রবাসী ফুটবলারদের অংশগ্রহণে নতুন এক জোয়ার বইছে। সেই স্রোতের কেন্দ্রবিন্দুতে আছেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ ক্লাব লেস্টার সিটির মিডফিল্ডার হামজা দেওয়ান চৌধুরী। লাল-সবুজের জার্সিতে খেলার পর থেকে দেশজুড়ে তার প্রতি ভক্তদের ভালোবাসা এবং আগ্রহ অনেক গুণ বেড়েছে। সেই উন্মাদনার মাঝেই দেশের দুই ক্রিকেট আইকন সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবালের প্রশংসা করেছেন এই তারকা ফুটবলার।লেস্টার সিটির অফিসিয়াল মিডিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হামজা বলেন, “সাকিব একজন সত্যিকারের আইকন। তামিম ইকবালের সঙ্গে মিলে তিনি বহু বছর ধরে বাংলাদেশের ক্রিকেটকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। তামিম একজন মেগাস্টার।”তবে এখনই তাদের সঙ্গে নিজের তুলনায় যেতে নারাজ ২৭ বছর বয়সী এই ফুটবলার।সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ সফরের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন হামজা। বলেন, “প্রথমবার বাংলাদেশে গেলে আমি আমার গ্রামে ফিরে যাই। সেটা একেবারেই গ্রামীণ পরিবেশ। আমার শৈশবের বড় একটি অংশ কেটেছে সেখানে। যেভাবে মানুষ আমাকে স্বাগত জানিয়েছে, তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়।”তিনি আরও যোগ করেন, “সেই সফর এখনো আমার সতীর্থদের আলোচনার বিষয়। তারা বলে, এমন ভালোবাসা কল্পনাতীত। এটা কখনোই স্বাভাবিক মনে হয় না।”হামজা মনে করেন, বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসার তুলনা হয় না। বলেন, “ফুটবলার হিসেবে যুক্তরাজ্যে আমরা অনেক মনোযোগ পাই ঠিকই, তবে বাংলাদেশে যেটা পেয়েছি, তার সঙ্গে কোনো দেশের তুলনা চলে না। অনেকে বলবে এটা বাড়াবাড়ি বা ভীতিকর, কিন্তু আমার কাছে এটা হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া এক অভিজ্ঞতা।”বাংলাদেশের হয়ে এখন পর্যন্ত দুটি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন হামজা চৌধুরী। অভিষেক ম্যাচেই তার করা গোলে ভারত ম্যাচ ১-১ গোলে ড্র করে লাল-সবুজের দল। এরপর দ্বিতীয় ম্যাচে সিঙ্গাপুরের কাছে ২-১ গোলে পরাজিত হয় বাংলাদেশ। বর্তমানে ইংল্যান্ডে অবস্থান করছেন এই মিডফিল্ডার, প্রস্তুত হচ্ছেন লেস্টার সিটির হয়ে নতুন মৌসুম শুরুর জন্য।ভোরের আকাশ//হ.র
‘ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ অফ লেজেন্ডস’ (ডব্লিউসিএল)-এর গ্রুপ পর্বে বাতিল হয়েছিল ভারত ও পাকিস্তানের বহু প্রতীক্ষিত লড়াই। এবার সেই দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দল মুখোমুখি হওয়ার কথা সেমিফাইনালে।কাশ্মীরের পেহেলগাম কাণ্ডের জেরে গ্রুপ পর্বে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন পাকিস্তানের ক্রিকেটাররা। ভারতের বেশ কয়েকজন সাবেক ক্রিকেটার নিরাপত্তাজনিত কারণে ম্যাচ খেলতে অস্বীকার করেন। যার মধ্যে সবচেয়ে কড়া অবস্থান নেন শিখর ধাওয়ান।তিনি সামাজিক মাধ্যমে জানিয়ে দেন, পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলবেন না এবং সেই সিদ্ধান্তের পক্ষে আয়োজকদের কাছে চিঠিও পাঠান। এরপরই ম্যাচ বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় আয়োজক কমিটি।এই ম্যাচ বাতিল হওয়ায় উভয় দলকে এক পয়েন্ট করে দেওয়া হয়, যদিও পাকিস্তান এতে আপত্তি জানায়। তাদের দাবি ছিল, ভারতের সিদ্ধান্তে ম্যাচ বাতিল হওয়ায় পূর্ণ পয়েন্ট তাদেরই প্রাপ্য।গ্রুপ পর্ব শেষে চার ম্যাচে জয়লাভ করে শীর্ষে পাকিস্তান এবং মাত্র একটি ম্যাচে জয় পাওয়া ভারত চতুর্থ স্থানে থেকে সেমিফাইনালে ওঠে। প্রতিযোগিতার নিয়ম অনুযায়ী প্রথম ও চতুর্থ স্থানের দল খেলবে সেমিফাইনালে, ফলে ফের মুখোমুখি হওয়ার কথা ভারত ও পাকিস্তানের।মাঠের বাইরের এই উত্তাপ দুই দলের সাবেক ক্রিকেটারদের মধ্যে বাকযুদ্ধেও রূপ নেয়। পাকিস্তানের প্রাক্তন অলরাউন্ডার শাহিদ আফ্রিদি প্রকাশ্যে শিখর ধাওয়ানকে আক্রমণ করেন। অন্যদিকে, হরভজন সিং, সুরেশ রায়না, ইরফান পাঠান ও ইউসুফ পাঠানও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে খেলতে অস্বীকৃতি জানালেও ধাওয়ানের মতো প্রকাশ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখাননি।সব মিলিয়ে লিজেন্ডদের এই টুর্নামেন্টে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ এবারও অনুষ্ঠিত হবে কি না, তা নিয়ে বড় প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। তবে সাবেকদের লিগে এই দ্বৈরথ না হলেও, সামনেই রয়েছে এশিয়া কাপ। সেখানে একই গ্রুপে পড়েছে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশ, ফলে একাধিকবার মুখোমুখি হওয়ার সুযোগ থাকছেই। ভোরের আকাশ/জাআ
৩৭ বছর পর আবারও ইংলিশ চ্যানেলের বিশাল জলরাশি জয় করলেন দুই বাংলাদেশি সাঁতারু—মাহফিজুর রহমান সাগর ও নাজমুল হক হিমেল।মঙ্গলবার (স্থানীয় সময়) এই দুরূহ চ্যালেঞ্জে অংশ নিয়ে সফলভাবে ৩৩.৪ কিলোমিটার দীর্ঘ ইংলিশ চ্যানেল অতিক্রম করেন তারা।বাংলাদেশ সাঁতার ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শাহিন জানিয়েছিলেন, দুজনই এক ফ্লাইটে লন্ডন যাচ্ছেন। ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিতে যুক্তরাজ্য গিয়ে অন্তত ১০ দিন অনুশীলন করবেন এই দুই সাঁতারু।এর আগে বাংলাদেশের তিনজন সাঁতারু ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়েছেন। ইংলিশ চ্যানেল অতিক্রমকারী প্রথম এশীয় সাঁতারু ব্রজেন দাস। ১৯৫৮ থেকে ১৯৬১ সালের মধ্যে মোট ছয়বার চ্যানেলটি অতিক্রম করেন তিনি। তখন এই চ্যানেল সবচেয়ে কম সময়ে সাঁতরে পার হওয়ার রেকর্ডও গড়েছিলেন তিনি।এরপর ১৯৬৫ সালে আবদুল মালেক ও ১৯৮৭ সালে মোশাররফ হোসেন ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেন। ইংলিশ চ্যানেলের পানির তাপমাত্রা ১৫ থেকে ১৯ ডিগ্রির মতো থাকে। সেখানে সাঁতরানো যেকোনো সাঁতারুর জন্যই চ্যালেঞ্জিং।ভোরের আকাশ/এসএইচ