ছবি: সংগৃহীত
গাজা শহরের সাবরা এলাকায় ভোরে ইসরায়েলি বিমান হামলায় একই পরিবারের অন্তত ২৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। রোববারের (২১ সেপ্টেম্বর) এসব হামলায় একাধিক বাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে।
ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও প্রায় ৫০ জন মানুষ আটকে থাকতে পারে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
উদ্ধারকারীরা ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে বেঁচে থাকা মানুষ বের করার চেষ্টা করছেন। এসময় ১৭ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। আহত বা আটকে পড়াদের প্রিয়জনেরা জানিয়েছেন, ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে এখনো পাওয়া যাচ্ছে চিৎকার ও আর্তনাদ।
এক স্বজন বলেন, বারবার তাদের চিৎকার শুনছি, কিন্তু পৌঁছাতে পারছি না। আমরা ও উদ্ধারকারীরা যেখানেই যাই, ড্রোন থেকে গুলি ছোড়ে হয়। পাঁচজন এগোলে চারজন মারে, একজন বড়ই কষ্টে বেঁচে যায়।
গাজা সিটির পশ্চিমে শাতি শরণার্থী শিবির, দক্ষিণ-পশ্চিমে তাল আল-হাওয়া এলাকা ও নাসর জেলায় এবং ল্যাভাল টাওয়ারের পাশের একটি বাড়িতেও হামলার খবর পাওয়া গেছে।
মধ্য গাজার বুরেইজ শরণার্থী শিবিরে নতুন হামলায় অন্তত সাতজন নিহত, যাদের মধ্যে চারজন শিশু রয়েছে।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় ৬৫ হাজার ২৮৩ জন নিহত ও ১ লাখ ৬৬ হাজারের বেশি আহত হয়েছেন। অনাহার ও দুর্ভিক্ষে মৃত হয়েছেন ৪৪০ জন, তাদের মধ্যে ১৪৭ শিশু রয়েছেন।
ভোরের আকাশ/মো.আ.
সংশ্লিষ্ট
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও চীনা নেতা শি জিনপিংয়ের মধ্যে বহুল প্রত্যাশিত বৈঠক নিয়ে আলোচনার সময় বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) ছয়টি মার্কিন কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেছে চীন।সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) জানিয়েছে, চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তিনটি কোম্পানিকে ‘অনির্ভরযোগ্য সত্তার তালিকায়’ অন্তর্ভুক্ত করেছে, যা কার্যত তাদেরকে বেইজিংয়ের সঙ্গে বাণিজ্য থেকে নিষিদ্ধ করে। মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, “কোম্পানিগুলো তাইওয়ানের সাথে সামরিক-প্রযুক্তিগত সহযোগিতায় জড়িত হয়েছে, যা চীনের জাতীয় সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা ও উন্নয়ন স্বার্থকে মারাত্মকভাবে ক্ষুন্ন করছে।”মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘কোম্পানিগুলো তাইওয়ানের সাথে তথাকথিত সামরিক-প্রযুক্তিগত সহযোগিতায় জড়িত হয়েছে, যা চীনের জাতীয় সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা এবং উন্নয়ন স্বার্থকে মারাত্মকভাবে ক্ষুন্ন করছে।’চীনের ‘অনির্ভরযোগ্য সত্তার তালিকায়’ যুক্ত করা কোম্পানিগুলো হলো– মনুষ্যবিহীন যানবাহন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান সারনিক টেকনোলজিস, স্যাটেলাইট প্রযুক্তি কোম্পানি অ্যারকম এবং সাবসি ইঞ্জিনিয়ারিং ফার্ম ওশানিয়ারিং ইন্টারন্যাশনাল।পৃথকভাবে, আরও তিনটি মার্কিন কোম্পানিকে চীনের রফতানি নিয়ন্ত্রণ তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে।এর ফলে তারা সামরিক এবং বেসামরিক উভয় ক্ষেত্রেই ‘দ্বৈত ব্যবহারের’ পণ্যের চীনা চালান গ্রহণ করতে পারবে না।কোম্পানিগুলো হলো– সামরিক জাহাজ নির্মাতা হান্টিংটন ইঙ্গলস ইন্ডাস্ট্রিজ, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ফ্যাসিলিটিস ম্যানেজার প্লানেট ম্যানেজমেন্ট গ্রুপ এবং ইন্টেলিজেন্স ফার্ম গ্লোবাল ডাইমেনশনস।এই তিন কোম্পানি ‘চীনের জাতীয় নিরাপত্তা এবং স্বার্থকে বিপন্ন করছে’ বলে জানিয়েছে চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ভোরের আকাশ/হ.র
নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে সশরীরে উপস্থিত হতে না পারলেও ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) ভিডিও ভাষণের মাধ্যমে স্বদেশ, নির্বাসন ও প্রবাসে থাকা ফিলিস্তিনিদের উদ্দেশে বার্তা দিয়েছেন, “স্বাধীনতার ভোর আসবেই। আমরা আমাদের স্বদেশ ছেড়ে যাব না।”তিনি বলেন, “যত বড় ক্ষত বা দীর্ঘ দুর্ভোগই হোক না কেন, তা আমাদের বেঁচে থাকার ও টিকে থাকার ইচ্ছাকে ভেঙে দিতে পারবে না। ফিলিস্তিন আমাদের। জেরুজালেম আমাদের হৃদয়ের রত্ন এবং চিরন্তন রাজধানী। আমরা আমাদের স্বদেশ ছেড়ে যাব না।”আব্বাস আরও জানিয়েছেন, ফিলিস্তিনিরা জলপাই গাছের মতো শিকড় গেঁড়ে থাকবে, ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে উঠে দেশ পুনর্গঠন করবে এবং পবিত্র ভূখণ্ড থেকে আশা, সত্য ও ন্যায়ের বার্তা পাঠাবে।তিনি ভাষণে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরেছেন:গাজায় যুদ্ধ বন্ধ: অবিলম্বে এবং স্থায়ীভাবে যুদ্ধের অবসান।মানবিক সহায়তা: জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থার মাধ্যমে মানবিক ত্রাণ নিশ্চিত এবং ক্ষুধাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার বন্ধ।বন্দী বিনিময়: উভয় পক্ষের সকল জিম্মি ও বন্দীর মুক্তি।দখলদারত্ব ও বসতি স্থাপন: গাজা থেকে দখলদার বাহিনীর প্রত্যাহার, ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ বা স্থানান্তরের প্রতিরোধ, বসতি স্থাপনকারীদের সন্ত্রাস বন্ধ এবং জমি ও পবিত্র স্থান রক্ষার নিশ্চয়তা।গাজা উপত্যকার দায়িত্ব: ফিলিস্তিনি সরকারের নেতৃত্বে প্রশাসন পরিচালনা ও পশ্চিম তীরের সঙ্গে সংযুক্তিকরণ।পুনর্গঠন ও বাস্তুচ্যুতি: গাজার বাসিন্দাদের তাদের ভূখণ্ডে রাখা এবং পুনর্গঠন ও পুনরুদ্ধার বাস্তবায়ন।অর্থনৈতিক অবরোধ: ইসরায়েলের মাধ্যমে আটকানো ফিলিস্তিনিদের অর্থ মুক্ত করা ও শহর, গ্রাম ও শরণার্থী শিবির থেকে বাধা তুলে নেওয়া। ভোরের আকাশ/হ.র
ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে অঙ্গীকার করেছেন, “তেহরান কখনো পারমাণবিক বোমা তৈরি করার চেষ্টা করবে না।” তিনি এই মন্তব্য করেছেন এমন সময়, যখন ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির কারণে জাতিসংঘের ওপর নিষেধাজ্ঞা (‘স্ন্যাপব্যাক’) পুনর্বহালের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা তীব্রভাবে চলছে। খবর আলজাজিরার।যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানি (ই৩) ইরানের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের জন্য ৩০ দিনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে, যার সময়সীমা ২৭ সেপ্টেম্বরের কাছাকাছি পৌঁছেছে। ই৩ অভিযোগ করেছে, ইরান ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত পারমাণবিক চুক্তি (যৌথ ব্যাপক কর্ম পরিকল্পনা) মেনে চলতে ব্যর্থ হয়েছে।ই৩ জানিয়েছে, ইরান যদি জাতিসংঘের পরিদর্শকদের প্রবেশাধিকার পুনরুদ্ধার করে, ইউরেনিয়াম মজুদ নিয়ে উদ্বেগ দূর করে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেয়, তবে তারা নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল ছয় মাস পর্যন্ত বিলম্বিত করতে পারে।জাতিসংঘে পেজেশকিয়ানের সঙ্গে বৈঠকের পর ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এক্স-এ লিখেছেন, “একটি চুক্তি সম্ভব। আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা বাকি। আমরা যে বৈধ বিষয়গুলো উত্থাপন করেছি, তার প্রতি সাড়া দেওয়ার দায়িত্ব ইরানের।”পেজেশকিয়ান ইউরোপীয় শক্তিগুলোর ওপর ‘খারাপ বিশ্বাস’ এর অভিযোগ এনেছেন। তিনি বলেন, ২০১৮ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্প পারমাণবিক চুক্তি থেকে প্রত্যাহার করার পর ইরানের সহযোগিতার অভাব ছিল এর প্রতিক্রিয়া। এছাড়া, ইউরোপীয় শক্তিগুলো ইরানের আন্তরিক প্রচেষ্টাকে যথাযথভাবে মূল্যায়ন করেনি।এদিকে মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) এক রেকর্ড করা ভাষণে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি পুনর্ব্যক্ত করেছেন, “তেহরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে চাইছে না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার বিষয়টি কোনো আলোচনা নয়; এটি একটি চাপিয়ে দেওয়া সিদ্ধান্ত।”নতুন নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হলে, বিদেশে ইরানের সম্পদ জব্দ করা হবে, তেহরানের সঙ্গে অস্ত্র চুক্তি বন্ধ হবে এবং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির উন্নয়নে বাধা দেওয়া হবে। ভোরের আকাশ/হ.র
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে যোগ দিতে বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) ভোরে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী বিমান ‘উইং অব জায়ন’ যোগে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেন।যাত্রাপথে তিনি কেবল গ্রিস ও ইতালির আকাশসীমা ব্যবহার করেছেন। ইউরোপের অন্যান্য দেশগুলোর আকাশসীমা এড়িয়ে বিমানটি শত শত কিলোমিটার বেশি পথ ঘুরে গন্তব্যে পৌঁছেছে। ফ্লাইট ট্র্যাকারের তথ্য অনুযায়ী, পরিবর্তিত এই রুটের কারণে নেতানিয়াহুর যাত্রাপথ অন্তত ৬০০ কিলোমিটার (৩৭২ মাইল) দীর্ঘ হয়েছে।ইসরায়েলি দৈনিক হারেৎজ জানায়, এই দীর্ঘ রুট বেছে নেওয়ার পেছনে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) কর্তৃক নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে জারি করা গ্রেফতারি পরোয়ানার আশঙ্কা কাজ করেছে। গাজার ওপর যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে জারি এই পরোয়ানাকে ইসরায়েল অস্বীকার করছে।আইসিসি’র সদস্যভুক্ত বহু ইউরোপীয় দেশ জানিয়েছে, তাদের ভূখণ্ডে প্রবেশ করলে তারা আইসিসি’র নির্দেশনা অনুযায়ী নেতানিয়াহুকে গ্রেফতার করতে বাধ্য হবে। এই প্রেক্ষাপটেই নেতানিয়াহুর বিমান স্পেনসহ একাধিক দেশের আকাশসীমা এড়িয়ে চলে।ফ্রান্সে প্রবেশের জন্য ইসরায়েল আগে থেকেই অনুমতি চেয়েছিল, যা দেওয়া হয়েছিল। তবে বাস্তবে বিমানটি ফরাসি আকাশসীমা ব্যবহার করেনি। ফরাসি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “ওরা অন্য রুট বেছে নিয়েছে, তবে এর কারণ আমাদের জানা নেই।”নেতানিয়াহুর কার্যালয় গত সপ্তাহে জানিয়েছিল, এই সফরে সাংবাদিকদের না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে নিরাপত্তাজনিত কারণে। তবে আই২৪ নিউজ জানিয়েছে, দীর্ঘ রুটে বেশি জ্বালানি প্রয়োজন হওয়ায় যাত্রীসংখ্যা সীমিত রাখার জন্য সাংবাদিকদের বিমানে নেয়া হয়নি।ফেব্রুয়ারিতেও যুক্তরাষ্ট্র সফরে নেতানিয়াহুর বিমানকে বর্ধিত পথ বেছে নিতে হয়েছিল। চলতি বছরের মে মাসে তিনি আজারবাইজান সফরও বাতিল করেছিলেন, কারণ তুরস্কের আকাশসীমা ব্যবহার করতে হতো। প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান, যিনি ইসরায়েলের কঠোর সমালোচক, বিমানকে তুর্কি আকাশ ব্যবহার করতে দেননি।মাস দুই আগে জুলাইয়ে যুক্তরাষ্ট্র সফরে নেতানিয়াহুর বিমান সরাসরি রুট ব্যবহার করতে পেরেছিল। তবে পরিস্থিতি পাল্টেছে। সম্প্রতি ফ্রান্সসহ ১০টি দেশ ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ায় নেতানিয়াহু হয়তো চাপ অনুভব করছেন। ভোরের আকাশ/হ.র