সংগৃহীত ছবি
গরু নয়, এবার জোয়াল বেঁধে দেওয়া হলো মানুষের ঘাড়েই। করানো হলো হালচাষ। পেছনে লাঠি আর দড়ি হাতে দাঁড়িয়ে গ্রামবাসী। হালচাষের সময় গরুর বলদকে যেমন মারধর করা হয়ে থাকে, তেমনই করা হচ্ছে ওই দুজনের সঙ্গে। এ দৃশ্য দেখে কেউ হাসছেন, কেউ আবার হাততালি দিচ্ছেন। কোনো অপরাধ নয়, বরং ভালোবেসে বিয়ে করায় এভাবেই এক নবদম্পতিকে শাস্তি দিলেন গ্রামবাসী। ভারতের ওড়িশার রায়গড়া জেলায় এমনি এক অমানবিক ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক মাধ্যমে। নবদম্পতিকে মাঠে নামিয়ে এভাবে লাঞ্ছনার ছবি সামনে আসতেই তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই গ্রামের দুই যুবক-যুবতী দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের সম্পর্কে ছিলেন। সম্প্রতি তারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। কিন্তু তাদের এই সম্পর্ক মেনে নিতে পারেননি গ্রামের মানুষজন। কারণ ছেলেটি মেয়েটির ফুফাতো ভাই যা ওই অঞ্চলের সামাজিক রীতিনীতির পরিপন্থী বলে মনে করা হয়। একে ‘পাপ’ হিসেবে চিহ্নিত করে গ্রামবাসী তাদের বাড়ি থেকে জোর করে বের করে এনে মাঠে নিয়ে যায়।
এরপরই ঘটে অমানবিক দৃশ্য। নবদম্পতির ঘাড়ে জোয়াল চাপিয়ে, পশুর মতো ব্যবহার করে তাদের দিয়ে হালচাষ করানো হয়। শুধু তাই নয়, পেছনে দাঁড়িয়ে থাকা গ্রামবাসীরা ছড়ি ও দড়ি দিয়ে তাদের আঘাত করে, যেন তারা গরু বা বলদ। মাঠে এই অপমানজনক ঘটনার সময় কেউ কেউ হাসছিলেন, আবার কেউ হাততালি দিচ্ছিলেন।
ঘটনার এখানেই শেষ নয়। মাঠে এই হেনস্তার পরে নবদম্পতিকে টেনে হিঁচড়ে গ্রামের মন্দিরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাদের উপর তথাকথিত "পাপমোচনের" শুদ্ধীকরণ আচার পালন করা হয়। ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নেটিজেনরা। অনেকে এই ঘটনাকে ‘বর্বরতা’, ‘অমানবিক’, ও ‘মানবাধিকার লঙ্ঘন’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। ঘটনার গুরুত্ব উপলব্ধি করে দ্রুত পদক্ষেপ নেয় প্রশাসন।
রায়গড়ার পুলিশ সুপার এস স্বাতী কুমার জানিয়েছেন, পুলিশ গ্রামে গিয়ে তদন্ত শুরু করেছে এবং স্বতঃপ্রণোদিতভাবে একটি মামলা রুজু করা হয়েছে। অভিযুক্তদের শনাক্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, একই জেলার রায়গাদা এলাকায় চলতি বছরের জানুয়ারিতেও ঘটে আরেকটি জাত-বর্ণবৈষম্যমূলক ঘটনা। সেখানে ভিন্ন বর্ণের ছেলেকে বিয়ে করায় এক নারীর পরিবারকে বাধ্য করা হয় মন্দিরে গিয়ে মাথা ন্যাড়া করতে। এই ধরনের ধারাবাহিক সামাজিক নিপীড়ন ভারতীয় সমাজে এখনো কতটা গভীরভাবে গেঁথে আছে, তা আবারও প্রমাণিত হলো এই ঘটনার মধ্য দিয়ে।
ভোরের আকাশ/এসএই
সংশ্লিষ্ট
ফিলিস্তিনকে অবিলম্বে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির প্রায় ৬০ জন এমপি সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। একইসঙ্গে গাজায় চলমান ‘জাতিগত নির্মূল অভিযান’ বন্ধে জরুরি পদক্ষেপ নিতেও আহ্বান জানিয়েছেন তারা। বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) লেবার ফ্রেন্ডস অব ফিলিস্তিন অ্যান্ড দ্য মিডল ইস্ট-এর এ দাবি সংক্রান্ত একটি চিঠি ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামির কাছে পাঠানো হয়। চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন, লেবার পার্টির মধ্যপন্থী ও বামঘরানার ৫৯ জন এমপি। এমপিরা গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফাহর ধ্বংসস্তূপে ত্রাণের অজুহাতে তাবু শহর গড়ে তোলার ইসরায়েলি পরিকল্পনা বন্ধে অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান। ব্রিটিশ এমপিরা হুঁশিয়ারি দেন, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের জোরপূর্বক স্থানান্তর এবং তাদের নিজেদের ঘরবাড়ি থেকে উচ্ছেদের শামিল হবে।গাজার সব ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিককে রাফাহর ধ্বংসস্তূপে একটি ক্যাম্পে জোরপূর্বক স্থানান্তরের পরিকল্পনা করা হচ্ছে জানিয়ে চিঠিতে বলা হয়, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর ঘোষণার পর আমরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। যেখানে তাদের বের হওয়ার কোনো সুযোগ থাকবে না। আমরা এটিকে ‘জাতিগত নিধন’ হিসেবে দেখছি।যুক্তরাজ্যকে দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়ে তারা বলেন, ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের ত্রাণ সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ-র তহবিল পুনরায় চালু করা, জিম্মিদের মুক্তির জন্য পদক্ষেপ নেওয়া এবং অধিকৃত পশ্চিমতীরে ইসরায়েলি বসতিতে উৎপাদিত পণ্যের ওপর বাণিজ্য অবরোধ আরোপ করা। আমরা ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি না দিয়ে আমাদের নিজেদের দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের নীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করছি এবং এই বার্তা দিচ্ছি যে, বর্তমান পরিস্থিতি চলতে থাকবে এবং এর মাধ্যমে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড মানচিত্র থেকে কার্যত মুছে ফেলা ও দখলের পথ তৈরি হবে।নতুন লেবার প্রশাসনের অধীনে যুক্তরাজ্য সরকার এখনও ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র স্বীকৃতির ক্ষেত্রে আনুষ্ঠানিক অবস্থান পরিবর্তন করেনি। গাজায় যুদ্ধ দশম মাসে গড়িয়েছে। এ সময় ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা ব্যাপক স্থানচ্যুতি, অবকাঠামোর ধ্বংস এবং যুদ্ধবিরতি আলোচনার ভেঙে পড়ার কথা উল্লেখ করেছেন।ভোরের আকাশ/এসএইচ
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের অব্যাহত হামলায় নিহতের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। শনিবার (স্থানীয় সময়) দিনভর চালানো হামলায় আরও অন্তত ১১০ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে হাসপাতাল সূত্র। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা এই তথ্য নিশ্চিত করে।প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছে, রাফাহের আল-শাকুশ এলাকায় জিএইচএফের একমাত্র সক্রিয় কেন্দ্রের সামনে ত্রাণ নিতে আসা ফিলিস্তিনিদের লক্ষ্য করে হঠাৎ গুলি চালায় ইসরায়েলি সেনারা। এতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান অন্তত ৩৪ জন, যাদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু। আহত হয়েছেন আরও বহু মানুষ।আল জাজিরার প্রতিবেদক তারেক আবু আজ্জুম জানান, কোনো ধরনে পূর্ব সতর্কতা ছাড়াই ক্ষুধার্ত মানুষের ভিড় লক্ষ্য করে সরাসরি গুলি চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। হামলার পরপরই এলাকায় হাহাকার ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।মানবাধিকার সংস্থাগুলোর অভিযোগ, জিএইচএফের সহায়তা কেন্দ্রগুলো এখন কার্যত ‘মানব হত্যা কেন্দ্রে’ পরিণত হয়েছে। স্থানীয় চিকিৎসা সূত্রে জানা গেছে, মে মাসের শেষদিকে সংস্থাটি কার্যক্রম শুরু করার পর থেকে এসব সহায়তা কেন্দ্রে নিহত হয়েছে অন্তত ৮০০ ফিলিস্তিনি, আহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫ হাজার।এদিকে, গতকাল শনিবার গাজার উত্তরাঞ্চলের জাবালিয়ায় দুটি আবাসিক ভবনে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত হন ১৫ জন। গাজা সিটির তুফাহ এলাকার জাফা স্ট্রিটে এক পরিবারকে লক্ষ্য করে চালানো হামলায় প্রাণ হারান চারজন, আহত হয়েছেন আরও ১০ জন। শাতি শরণার্থী ক্যাম্পেও সাতজন নিহত হন। বাইত হানুন উত্তর-পূর্বাঞ্চলে একযোগে ৫০টির বেশি বোমা ফেলেছে ইসরায়েলি বাহিনী। ফলে পুরো এলাকা এখন কার্যত ধ্বংসস্তূপ।ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, গত ৪৮ ঘণ্টায় গাজার বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ২৫০ বার হামলা চালিয়েছে তারা। গাজা উপত্যকায় চলমান অবরোধে খাদ্য ও জরুরি সহায়তা পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়েছে। গাজা সরকারের তথ্য অনুযায়ী, অপুষ্টির কারণে এ পর্যন্ত ৬৭ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া, পাঁচ বছরের কম বয়সী ৬ লক্ষাধিক শিশু মারাত্মক পুষ্টিহীনতার ঝুঁকিতে রয়েছে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
গরু নয়, এবার জোয়াল বেঁধে দেওয়া হলো মানুষের ঘাড়েই। করানো হলো হালচাষ। পেছনে লাঠি আর দড়ি হাতে দাঁড়িয়ে গ্রামবাসী। হালচাষের সময় গরুর বলদকে যেমন মারধর করা হয়ে থাকে, তেমনই করা হচ্ছে ওই দুজনের সঙ্গে। এ দৃশ্য দেখে কেউ হাসছেন, কেউ আবার হাততালি দিচ্ছেন। কোনো অপরাধ নয়, বরং ভালোবেসে বিয়ে করায় এভাবেই এক নবদম্পতিকে শাস্তি দিলেন গ্রামবাসী। ভারতের ওড়িশার রায়গড়া জেলায় এমনি এক অমানবিক ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক মাধ্যমে। নবদম্পতিকে মাঠে নামিয়ে এভাবে লাঞ্ছনার ছবি সামনে আসতেই তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই গ্রামের দুই যুবক-যুবতী দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের সম্পর্কে ছিলেন। সম্প্রতি তারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। কিন্তু তাদের এই সম্পর্ক মেনে নিতে পারেননি গ্রামের মানুষজন। কারণ ছেলেটি মেয়েটির ফুফাতো ভাই যা ওই অঞ্চলের সামাজিক রীতিনীতির পরিপন্থী বলে মনে করা হয়। একে ‘পাপ’ হিসেবে চিহ্নিত করে গ্রামবাসী তাদের বাড়ি থেকে জোর করে বের করে এনে মাঠে নিয়ে যায়।এরপরই ঘটে অমানবিক দৃশ্য। নবদম্পতির ঘাড়ে জোয়াল চাপিয়ে, পশুর মতো ব্যবহার করে তাদের দিয়ে হালচাষ করানো হয়। শুধু তাই নয়, পেছনে দাঁড়িয়ে থাকা গ্রামবাসীরা ছড়ি ও দড়ি দিয়ে তাদের আঘাত করে, যেন তারা গরু বা বলদ। মাঠে এই অপমানজনক ঘটনার সময় কেউ কেউ হাসছিলেন, আবার কেউ হাততালি দিচ্ছিলেন।ঘটনার এখানেই শেষ নয়। মাঠে এই হেনস্তার পরে নবদম্পতিকে টেনে হিঁচড়ে গ্রামের মন্দিরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাদের উপর তথাকথিত "পাপমোচনের" শুদ্ধীকরণ আচার পালন করা হয়। ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নেটিজেনরা। অনেকে এই ঘটনাকে ‘বর্বরতা’, ‘অমানবিক’, ও ‘মানবাধিকার লঙ্ঘন’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। ঘটনার গুরুত্ব উপলব্ধি করে দ্রুত পদক্ষেপ নেয় প্রশাসন। রায়গড়ার পুলিশ সুপার এস স্বাতী কুমার জানিয়েছেন, পুলিশ গ্রামে গিয়ে তদন্ত শুরু করেছে এবং স্বতঃপ্রণোদিতভাবে একটি মামলা রুজু করা হয়েছে। অভিযুক্তদের শনাক্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।উল্লেখ্য, একই জেলার রায়গাদা এলাকায় চলতি বছরের জানুয়ারিতেও ঘটে আরেকটি জাত-বর্ণবৈষম্যমূলক ঘটনা। সেখানে ভিন্ন বর্ণের ছেলেকে বিয়ে করায় এক নারীর পরিবারকে বাধ্য করা হয় মন্দিরে গিয়ে মাথা ন্যাড়া করতে। এই ধরনের ধারাবাহিক সামাজিক নিপীড়ন ভারতীয় সমাজে এখনো কতটা গভীরভাবে গেঁথে আছে, তা আবারও প্রমাণিত হলো এই ঘটনার মধ্য দিয়ে।ভোরের আকাশ/এসএই
কিউবার প্রেসিডেন্ট মিগুয়েল দিয়াস-কানেলের বিরুদ্ধে প্রথমবারের মতো নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। শুক্রবার (১১ জুলাই) দেওয়া এই নিষেধাজ্ঞায় বলা হয়েছে, কিউবান জনগণের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় নিষ্ঠুরতায় প্রেসিডেন্ট দিয়াস-কানেল ‘গুরুতর ভূমিকা’ পালন করেছেন। এই পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের সময় শুরু হওয়া কিউবা-বিরোধী চাপ প্রয়োগের ধারাবাহিকতার সর্বশেষ অংশ।যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও শুক্রবার এক্স-এ দেওয়া পোস্টে জানান, কিউবার প্রেসিডেন্ট ও সরকারের অন্যান্য শীর্ষ কর্মকর্তাদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।কিউবায় ২০২১ সালের জুলাইয়ে হওয়া ঐতিহাসিক সরকারবিরোধী বিক্ষোভের চতুর্থ বর্ষপূর্তিতে এই ঘোষণা দেওয়া হয়। বিরল ওই আন্দোলনে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নামেন, যেখানে খাদ্য, ওষুধ, পানীয় জল, বিদ্যুৎসহ মৌলিক প্রয়োজনীয় জিনিসের তীব্র সংকটের প্রতিবাদ জানানো হয়। ওই সময় শত শত মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়। একজন নিহত হন এবং বহু মানুষ আহত হন। এ ঘটনা ছিল ১৯৫৯ সালের ফিদেল কাস্ত্রোর কমিউনিস্ট বিপ্লবের পর সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ।যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর জানায়, ‘গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে যুক্ত নেতাদের বিরুদ্ধে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হয়েছে।’ নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছে কিউবার প্রতিরক্ষামন্ত্রী আলভারো লোপেজ মিয়েরা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লাজারো আলবার্তো আলভারেজ কাসাসকে। এ ছাড়াও ২০২১ সালের বিক্ষোভের সময় ‘বেআইনি আটক ও নির্যাতনের’ সঙ্গে যুক্ত বিচার বিভাগ ও কারাগার বিভাগের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।রুবিও বলেন, ‘কিউবান জনগণ যখন খাদ্য, পানি, ওষুধ ও বিদ্যুতের ঘাটতিতে ভোগে, তখন শাসকগোষ্ঠী বিলাসিতা করছে।’ তিনি আরো দাবি করেন, সরকার বিরোধী দল ‘কিউবার দেশপ্রেমিক ইউনিয়ন (ইউএনপিএসিইউ)’-এর নেতা হোসে ড্যানিয়েল ফেরেরকে নির্যাতন করা হচ্ছে এবং তার জীবিত থাকার প্রমাণ দাবি করেন।যুক্তরাষ্ট্রের মতে, ২০২১ সালের বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার অভিযোগে এখনো প্রায় ৭০০ জন কারাবন্দি রয়েছেন, যদিও মানবাধিকার সংগঠনগুলোর হিসাবে এই সংখ্যা ৩৬০ থেকে ৪২০-এর মধ্যে। গত জানুয়ারিতে ভ্যাটিকানের মধ্যস্থতায় কিছু বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হয়। তখন বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন কিউবার নাম সন্ত্রাসে পৃষ্ঠপোষকতা প্রদানকারী দেশগুলোর তালিকা থেকে সরিয়ে নেন। তবে এপ্রিলে ফেরারের প্যারোল বাতিল করা হলে যুক্তরাষ্ট্র এর কড়া সমালোচনা করে। ট্রাম্প আবার ক্ষমতায় ফিরে আসার পর কিউবাকে সেই তালিকায় ফের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।যুক্তরাষ্ট্র ‘টরে কে’ নামের হাভানার নতুন ৪২ তলা একটি বিলাসবহুল হোটেলকেও নিষিদ্ধ তালিকায় যুক্ত করেছে। এর মাধ্যমে মার্কিন ডলার যেন ‘কিউবা সরকারের দমন-পীড়ন কার্যক্রমে’ ব্যবহৃত না হয়, সে উদ্দেশ্যেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।কিউবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রুনো রদ্রিগেজ এক্স-এ দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘এই নিষেধাজ্ঞা কিউবার জনগণ কিংবা নেতৃত্বের ইচ্ছাশক্তিকে নত করতে পারবে না।’ কিউবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মার্কিন বিভাগের উপপরিচালক জোহানা তাবলাদা মার্কো রুবিওকে ‘গণহত্যা, বন্দিত্ব ও গণনির্বাসনের রক্ষাকর্তা’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে তার সমালোচনা করেন।উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র কিউবার ওপর প্রায় ছয় দশক ধরে বাণিজ্যিক অবরোধ বজায় রেখেছে। সাম্প্রতিক নিষেধাজ্ঞাগুলো দেশটির অভ্যন্তরীণ বিষয়ের ওপর বিদেশি হস্তক্ষেপের অভিযোগ ঘিরে আবারও বিতর্ক তৈরি করেছে। কিউবা এবং যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠছে।ভোরের আকাশ/এসএইচ