২০২১ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাকিস্তানের কাছে ১০ উইকেটে হেরেছিল ভারত। ওই ম্যাচে ভারতীয় দলের পেসার মোহাম্মদ শামি ওভারপ্রতি সবচেয়ে বেশি রান (১১) খরচা করেছিলেন। যার জেরে ভারতীয় দলের সমর্থকরা শামির দিকে সমালোচনার তির ছুঁড়েছিলেন। কেউ কেউ তাকে ‘পাকিস্তানি’ বলেও গালাগাল করেছিলেন।শুধু ওই বারই নয়, বিভিন্ন সময়েই ভারতীয় উগ্র সমর্থকরা শামিকে নিয়ে নেতিবাচক ও বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্য করেন। মুসলিম হওয়ার কারণেই অনেকে তাকে সমালোচনার লক্ষ্যবস্তু বানান বলে মনে করেন শামি নিজেই।সম্প্রতি মিড়িয়ায় খোলামেলা কথা বলতে গিয়ে ৩৪ বছর বয়সী এই পেসার জানান, পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচের পর বেশি অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণের শিকার হন তিনি। তবে এসব নিয়ে মোটেও চিন্তিত নন ডানহাতি অভিজ্ঞ পেসার।তার ভাষায়, ‘অনেকে আমাকে মুসলিম হওয়ার কারণে টার্গেট করে, বিশেষ করে পাকিস্তানের ম্যাচের পর। আমি এসব নিয়ে ভাবি না। আমি তো মেশিন নই; ভালো দিন যেমন আসবে, খারাপ দিনও আসবে। যখন আমি দেশের হয়ে খেলি, তখন আমার ফোকাস থাকে উইকেট নেওয়া আর ম্যাচ জেতার দিকে; সোশ্যাল মিডিয়ার দিকে নয়। ট্রলিং আমাকে প্রভাবিত করতে পারে না, কারণ আমি সেটি এড়িয়ে যাই।’আগামী ৯ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হতে যাওয়া এশিয়া কাপে গ্রুপ পর্বেই মুখোমুখি হবে ভারত-পাকিস্তান। তবে পহেলগামের সন্ত্রাসী হামলা ও গেল মে মাসে দুই পক্ষের সামরিক উত্তেজনার পর ভারতীয় সাবেক ক্রিকেটারদের অনেকেই পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ না খেলার কথা বলেছেন।এই প্রসঙ্গে মতামত জানতে চাইলে একেবারেই স্পষ্ট ভাষায় জবাব দেন শামি। তিনি বলেন, ‘আমি বিতর্কের বাইরে থাকি। সরকার আর বোর্ড যা সিদ্ধান্ত নেবে, আমরা তাই মেনে চলি।’পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ অন্য দলের বিপক্ষে খেলার চেয়ে আলাদা, নাকি সব ম্যাচকেই সমানভাবে দেখা হয়, এমন প্রশ্নে শামি স্বীকার করেন, পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলা সত্যিই আলাদা।তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলার আলাদা অনুভূতি আছে, কারণ সমর্থকদের উন্মাদনা অন্য রকম। তবে খেলোয়াড়দের জন্য এটা পারফর্ম করার ব্যাপার।’পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলার সময় স্লেজিং বা উত্ত্যক্ত করার কোনো ঘটনা ঘটেছিল কিনা জানতে চাইলে শামি জানান, তিনি কখনো এমন কিছু মুখোমুখি হননি।শামি বলেন, না, ‘একেবারেই না। শুধু একবার টেস্ট ম্যাচে বিরক্ত হয়েছিলাম, যখন কেউ সময় নষ্ট করছিল। তখন বলেছিলাম— তোমার খেলা খেলো। এটাই ছিল আমার আগ্রাসন।’এখন পর্যন্ত ভারতীয় দলের হয়ে ১০৮টি ওয়ানডে, ৬৪টি টেস্ট ও ২৫টি টি–টোয়েন্টি খেলেছেন শামি। তবে অনেকদিন ধরেই জাতীয় দলের বাইরে তিনি। এশিয়া কাপের স্কোয়াডেও জায়গা পাননি।বর্তমানে জাতীয় দলে ফেরার জন্য কঠোর পরিশ্রম করছেন শামি। তবে নির্বাচকরা যেভাবে এখন তরুণদের সুযোগ দিচ্ছেন, তাতে শামির ভবিষ্যৎ কী হতে চলেছে, তা সময়ই বলে দেবে।ভোরের আকাশ/মো.আ.
২৮ আগস্ট ২০২৫ ০৪:১৬ পিএম
যে কারণে টেস্ট থেকে অবসরে রোহিত শর্মা
গত বছর ভারতকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতিয়ে ঐ ফরম্যাট থেকে অবসরের ঘোষণা দেন রোহিত শর্মা। তার পাশাপাশি রোহিতের সঙ্গে টি-টোয়েন্টিকে বিদায় বলেন বিরাট কোহলি এবং রবীন্দ্র জাদেজা। এরপর সবাইকে চমকে দিয়ে গত মে মাসে টেস্টকেও বিদায় বলেন ভারতের ওয়ানডে দলের অধিনায়ক। রোহিত ইংল্যান্ড সিরিজ শুরুর ঠিক আগেই অবসরের ঘোষণা দেন বলে অনেকেই তা সন্দেহের চোখে দেখে। অবশেষে তিন মাস পর এবার টেস্ট থেকে হঠাৎ অবসরের কারণ খোলাসা করলেন রোহিত।ভারতের সাবেক অধিনায়ক অবশ্য সরাসরি অবসরের কারণ জানাননি। তবে কেন অবসর নিতে হয়েছে তার একটা ইঙ্গিত দিয়েছেন। রোহিত জানিয়েছেন, তার শরীর আর টেস্ট খেলার ধকল নিতে পারবে না বুঝেই সরে গিয়েছেন।রোহিতের আক্ষেপ, ভারতের তরুণ ক্রিকেটারেরা এখন প্রস্তুতি নেওয়ার উপরে যথেষ্ট গুরুত্ব দেন না। তিনি বলেন, টেস্টের জন্য আলাদা করে প্রস্তুতি নিতে হয়। কারণ খেলাটা দীর্ঘমেয়াদী। টেস্টে আপনাকে পাঁচ দিন টিকে থাকতেই হবে। মানসিকভাবে সেটা খুব চাপের। শরীর বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে। তবে এটাও ঠিক, প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলেই সবাই বড় হয়।রোহিত এ প্রসঙ্গে নিজের উদাহরণ টেনেছেন। তিনি বলেছেন, আমরা মুম্বাইয়ে ক্লাব ক্রিকেটের মাধ্যমে প্রথম পেশাদার ক্রিকেটে খেলা শুরু করি। তখন দু’-তিন দিন ধরে খেলাগুলো চলত। তাই আমরা তৈরি হয়ে গিয়েছিলাম। খুব ছোটবেলা থেকে শুরু করার ফলে ভবিষ্যতে পরিস্থিতি সামলাতে কোনো অসুবিধা হয়নি।রোহিতের মতে, তরুণ খেলোয়াড়রা ধীরে ধীরে বুঝতে পারেন আগে থেকে তৈরি হওয়া কতটা দরকার। ভারতের সাবেক টেস্ট অধিনায়কের কথায়, আমি ক্রিকেট শুরু করার সময় খুব মজা করতাম। তারপর বয়সভিত্তিক ক্রিকেট খেলেছি। ধীরে ধীরে সিনিয়র ক্রিকেটার এবং কোচেদের মুখোমুখি হয়েছি। বুঝতে শিখেছি কীভাবে সঠিক প্রস্তুতি দরকার।তিনি নিজে যে বরাবর প্রস্তুতিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখেছেন সেটাও স্পষ্ট করেছেন রোহিত। তিনি বলেন, এমন অনেক কাজ করতে হয় যা চোখের সামনে দেখা যায় না। প্রস্তুতি সে রকমই একটা জিনিস। বারবার একই কাজ করতে হয়। কারণ ওখান থেকেই সব শুরু হয়েছে। মাঠে লম্বা সময় ধরে টিকে থাকার জন্য নিজেকে তৈরি করতে হয়।ভোরের আকাশ/তা.কা