বাড়ছে গোমতীর পানি
দিলীপ মজুমদার, কুমিল্লা
প্রকাশ : ০১ জুন ২০২৫ ০৮:০৪ পিএম
কুমিল্লায় বন্যার আশঙ্কা
ক্রমেই বাড়ছে গোমতী নদীর পানি।গত বছরের আগস্টে ভারী বৃষ্টিপাত ও উজানের পাহাড়ি ঢলে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার মুখোমুখি হয়েছিল কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া ও বুড়িচং উপজেলা। এতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতিও হয় দুই উপজেলায়। এদিকে সম্প্রতি বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে টানা বর্ষণে গোমতী নদীর পানি বাড়তে দেখে দুই উপজেলার মানুষের মধ্যে আবারও বন্যার আগাম আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
গোমতী নদীর পাড়ের এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে টানা বর্ষণে গোমতী নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে গোমতী নদীর পানি এখনো বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীতে পানির স্রোত স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি। এ নিয়ে তীর ঘেঁষা সদরের আংশিক এলাকাসহ তিন উপজেলার মানুষের মধ্যে আবারও বন্যার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। কোথাও কোথাও গোমতীর চর প্লাবিত হতে শুরু করেছে। এ নিয়ে গোমতী চরের চাষিদের মধ্যেও ফসল হারানোর ভয় চেপে বসেছে। উপজেলার বিভিন্ন জলাশয়, ডোবা ও খাল টানা বৃষ্টির কারণে পানিতে টইটম্বুর হয়ে উঠেছে।
মালাপাড়া ইউনিয়নের মনোহরপুর এলাকার গোমতী পাড়ের বাসিন্দা আহাদ মিয়া বলেন, গত বছর আমাদের সবকিছু ভাসিয়ে নিয়ে গেছে এই গোমতী। আমাদের পাকা ধান তলিয়ে গিয়েছিল। আমরা বাড়িঘরেও থাকতে পারিনি এতটা ভয়াবহ বন্যার মুখোমুখি হয়েছিলাম। এবারও গোমতী নদীর পানি বাড়তে দেখে আমাদের মধ্যে সেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে। গোমতীর চরে সদ্য আবাদ করা ফসল হারানোর ভয়ে আছি।
সাহেবাবাদ ইউনিয়নের জিরুইন এলাকার বাসিন্দা বশীর আহমেদ বলেন, বিভিন্ন মিডিয়ায় দেখছি আবারও বন্যা হতে পারে। গত বছরের ভয়াবহ বন্যার ক্ষতচিহ্ন এখনো রয়ে গেছে। আবারও যদি আমরা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হই তাহলে আমাদের আর কোনো উপায় থাকবে না।
সদর ইউনিয়নের নাইঘর এলাকার বাসিন্দা আবু ইউসুফ বলেন, শুনেছি গোমতী নদীর পানি বাড়ছে, আবারও নাকি বন্যার শঙ্কা রয়েছে। গত বছরের বন্যায় আমরা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। সেই ক্ষতি এখনো কাটিয়ে উঠতে পারিনি।
কুমিল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ ওয়ালিউজ্জামান জানান, নিম্নচাপের প্রভাবে টানা বৃষ্টিপাতে গোমতী নদীর পানি সামান্য বৃদ্ধি পেয়েছে বটে। তবে গোমতী নদীর পানি এখনো বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে আপাতত ভয়ের কিছু নেই।
দপ্তরের বরাত দিয়ে তিনি জানান, বৃষ্টির পূর্বাভাসে বলা হয়েছে বর্ষার শুরুর এ পর্যায়ে অর্থাৎ আগামী ৫ জুন পর্যন্ত অন্তত গোমতী নদী পারে বন্যার কোনো আশঙ্কা নেই। তাছাড়া, গোমতী নদীর পানিপ্রবাহ বিপৎ সীমার উপরে উঠবে না। তিনি গোমতী নদী পাড়ের কৃষকদের বর্ষার এ সময়ে বন্যার আশঙ্কা না করতে বলেন।
এদিকে বৃহস্পতিবার পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র স্থানীয়দের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে।
এতে বলা হয়েছে, দেশের ছয়টি জেলায় বন্যা হতে পারে। এসব এলাকার নদ-নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, চট্টগ্রাম বিভাগের গোমতী, মুহুরী ও ফেনী নদীর পানি সমতল বাড়তে পারে।
ভোরের আকাশ/এসএইচ