শেরপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৮ মে ২০২৫ ০১:১২ পিএম
শেরপুরে বোরোয় ‘ব্রাউন প্লান্ট হুপার’ পোকা, মাথায় হাত কৃষকের
মৌসুমের শেষদিকে শেরপুরের নকলা উপজেলাসহ বিভিন্নস্থানে বোরো ধানে ‘ব্রাউন প্লান্ট হুপার’ (বিপিএইচ) পোকা বা কারেন্ট পোকার আক্রমণে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। বিভিন্নস্থানে বোরো ধানের খেতেই এ পোকার আক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। এ ব্যাপারে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা কৃষক-কৃষাণীদের নিয়ে সচেতনতামূলক বিভিন্ন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। পোকার আক্রমণ ঠেকাতে ধান ক্ষেত রক্ষায় প্রয়োজনীয় ওষুধ ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছেন তারা।
কৃষক মজিবর রহমান বলেন, ‘আমি ২ কুর (একর) জমিতে ধান চাষ করেছি। আমার বেশিরভাগ জমিতেই কারেন্ট পোহা ধরেছে। কীটনাশক দিতাছি, কাম অইতাছে না। এই পোকা ধান গাছের গুড়ায় আক্রমণ করে।’ করিম মিয়া বলেন, ‘ধানের শীষ ও গাছ সম্পূর্ণ সোনালি বর্ণ ধারণ করে। ধান গাছ শুকিয়ে যায়। ফলে ফলন অর্ধেকে নেমে আসে। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠ ঘুরে ঘুরে কৃষকদের পরামর্শসহ বিভিন্ন চিকিৎসা দিচ্ছেন।’
নকলা ভূরদী কৃষিপণ্য উৎপাদক কল্যাণ সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আলহাজ্ব ছাইদুল হক বলেন, দূর থেকে আক্রান্ত ক্ষেত দেখলে মনে হয় ধান পেকে গেছে। বাস্তবে আক্রান্ত গাছের ধানের ভেতরে দানাই নেই। বাড়তি খরচের ফসল, ধানও ভালো হয়েছিলো। কিন্তু কারেন্ট পোকার আক্রমণে মাথায় হাত পড়েছে।
নকলার কবুতরমারী গ্রামের আব্দুল মজিদ বলেন, খেতে কারেন্ট পোকার আক্রমণ হয়েছে। কারেন্ট পোকা মনে হয়, ছোঁয়াচে পোকা। আক্রমণ করলে দ্রুত অন্য জমিতে ছড়িয়ে পড়ে। কৃষকরা ফসল ঘরে তোলা নিয়ে মহাচিন্তায় আছে।
শেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের খামারবাড়ির অতিরিক্ত উপপরিচালক (উদ্ভিদ সংরক্ষণ) হুমায়ূন কবীর সাংবাদিকদের বলেন, যেখানে সূর্যের আলো বাতাস প্রবেশ করতে না পারে। সেখানেই ব্রাউন প্লান্ট হুপার (বিপিএইচ) বা কারেন্ট পোকার আক্রমণ হয়। পোকা সূর্যের আলো বা তাপ সহ্য করতে পারেনা। ধান রোপণের সময় কৃষি বিভাগের পরামর্শ মোতাবেক গাছের সাড়ি ও গুছার মধ্যে প্রয়োজনীয় ফাঁকা রাখাতে হয়।
ব্রাউন প্লান্ট হুপার (বিপিএইচ) বা কারেন্ট পোকার আক্রমণ ছিল না। হঠাৎ বিভিন্ন এলাকায় এই পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। ক্ষতির হাত থেকে রক্ষায় মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা ছুটির দিনসহ প্রতিদিনই নিরলসভাবে কাজ করছেন। এতে পোকার আক্রমণ কিছুটা হলেও কমে যাবে। এছাড়া ৮০ ভাগ ধান পাকলে ধান কেটে ফেলার পরামর্শও দেয়া হচ্ছে।”
চলতি মৌসুমে শেরপুর জেলায় ৯২ হাজার ৯ শ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ করা হয়েছে।
ভোরের আকাশ/আজাসা