ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৬ অক্টোবর ২০২৫ ০৭:৪৩ পিএম
ছবি: ভোরের আকাশ
দিনাজপুরে খাদ্য অধিদপ্তরের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের সাথে জড়িত ও ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করে উত্তর সরবরাহ চক্রের ৩ সদস্যকে গ্রেফতার করে জেলা পুলিশ।
বরিবার (২৬ অক্টোবর) প্রেস বিফ্রিং এ দিনাজপুর জেলার পুলিশ সুপার মো. মারুফাত হুসাইন বলেন, দিনাজপুর জেলা পুলিশ সর্বদা পরীক্ষা ও নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতা বজায় রাখতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। পরীক্ষার স্বচ্ছতা বিনষ্টকারী ও প্রতারণার সঙ্গে জড়িত কোনো ব্যক্তি বা চক্রকে কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না।
এর ওই ধারাবাহিকতায় গত ২৫ অক্টোবর (শনিবার) বাংলাদেশ খাদ্য অধিদপ্তরের উপ-খাদ্য পরিদর্শক পদে নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস ও ইলেকট্রনিক ডিভাইসের মাধ্যমে উত্তর সরবরাহের অভিযোগে দিনাজপুর জেলা পুলিশের একটি টিম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দিনাজপুর শহরের কেরী মেমোরিয়াল হাইস্কুল (মিশন রোড) পরীক্ষা কেন্দ্রে অভিযান পরিচালনা করে পরীক্ষার্থী কৃষ্ণকান্ত রায় (২৯)-কে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করা হয়।
উপস্থিত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও কেন্দ্রের প্রধানের অনুমতিতে তল্লাশি চালিয়ে তার উভয় কানে দুটি ব্লুটুথ ইয়ারডিভাইস এবং গেঞ্জির ভেতরে বিশেষভাবে লুকানো একটি ইলেকট্রনিক ডিভাইস উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কৃষ্ণকান্ত রায় স্বীকার করে, সে একটি সংঘবদ্ধ চক্রের মাধ্যমে ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করে পরীক্ষার প্রশ্নের উত্তর গ্রহণ ও পরীক্ষায় লেখার কাজে যুক্ত ছিল। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে একই দিন দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে দিনাজপুর সদর থানার ফকিরপাড়া এলাকার স্বপ্নচূড়া ছাত্রাবাসে অভিযান পরিচালনা করে চক্রের অপর সদস্য মামুন (৩৫)-কে আটক করা হয়।
অভিযানকালে মামুনের কাছ থেকে Redmi Note 14 Pro ও Vivo Y85 ব্র্যান্ডের দুইটি স্মার্টফোন, ৫টি ইলেকট্রনিক ডিভাইস, ৫টি বিভিন্ন রংয়ের সেন্ড্রো গেঞ্জির সাথে বিশেষ কায়দায় সাদা তারের সাথে প্যাঁচানো, ২৪টি উপ-খাদ্য পরিদর্শক পদের পরীক্ষার্থীর প্রবেশপত্রের কপি, ১০টি স্বাক্ষরিত ফাঁকা নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পসহ বিভিন্ন আলামত জব্দ করা হয়। জব্দ তালিকা প্রস্তুত করে উপস্থিত স্বাক্ষীদের স্বাক্ষর গ্রহণ করা হয়।
মামুনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী একই দিন দুপুর ২টায় দিনাজপুর-গোড় এ শহীদ ময়দান এলাকায় অভিযান চালিয়ে চক্রের আরেক সদস্য হর সুন্দর রায় সবুজ (৩৯)-কে গ্রেফতার করা হয়। তার কাছ থেকে একটি OPPO A53 স্মার্টফোন উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে, তারা পরীক্ষার প্রশ্ন সংগ্রহ করে উত্তর তৈরি করে ইলেকট্রনিক ডিভাইস ও মোবাইল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে পরীক্ষার্থীদের কাছে সরবরাহ করত। পরীক্ষার আগে তারা পরীক্ষার্থীর সঙ্গে নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে লিখিত চুক্তি সম্পাদন করে প্রতিজনের কাছ থেকে বিকাশ, নগদ, রকেট ও ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে টাকা গ্রহণ করে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত পলাতক আসামীসহ অজ্ঞাতনামা সহযোগিদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে দিনাজপুর জেলা পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
গ্রেফতারকৃত আসামীরা হচ্ছেন: কৃষ্ণকান্ত রায় (২৯), পিতা-আশুতোষ রায়, মাতা-শেফালী রাণী বায়, সাং-পূর্ব বাঞ্চারামপুর, থানা-বিরল, জেলা-দিনাজপুর, মামুন (৩৫), পিতা-মতিউর রহমান, নাতা-আম্বুল্লয়ারা, স্থায়ী পোষ-কৃষ্ণ চন্দ্রপুর, খানা-চিরিরবন্দর, বর্তমান সাং-ফকিরপাড়া, থানা-কোতয়ালী, জেলা-দিনাজপুর, হর সুন্দর রায় সবুজ (৩৯), পিতা-করলা কান্ত রায়, মাতা-পক্ষীরানী রায়, সাং-পশ্চিম সাইবারা, থানা-চিরিরবন্দর, জেলা-দিনাজপুর।
ভোরের আকাশ/জাআ